টিপ

উইকিপিডিয়া, মুক্ত বিশ্বকোষ থেকে
বাঙালি টিপ পরা মেয়ে
হিমাচল প্রদেশের কুল্লুতে বিন্দি পরা হিন্দু নারী৷

টিপ বাঙালি মেয়েদের একটি ঐতিহ্যবাহী প্রসাধনী[১]বিন্দি (সংস্কৃত বিন্দু শব্দ থেকে উৎপত্তি যার অর্থ ছোট কণা") বা পোট্টু ( তামিল: பொட்டு ) [২] [৩] হল একধরনের ভারতীয় ধর্মীয় প্রসাধনী। টিপ একটি রঙিন আঠালো স্টিকার। অন্যদিকে বিন্দি হচ্ছে একটি বিন্দু বা ফোটা যা নারীরা কপালের দুই ভুরুর মাঝখানে পরিধান করে। ভারতীয় উপমহাদেশের হিন্দু, জৈন, বৌদ্ধ এবং শিখ নারীরা সাধারণত এই বিন্দি পরিধান করেন।

বিন্দি হল এক বা একাধিক রঙের উজ্জ্বল বিন্দু যা কপালের মাঝখানে ভ্রুর কাছাকাছি বা কপালের মাঝখানে প্রয়োগ করা হয়। ভারত, পাকিস্তান, বাংলাদেশ, নেপাল, ভুটান এবং শ্রীলংকার হিন্দুরা এই বিন্দি পরিধান করে। [৪] দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ায় বালিনিজ, ফিলিপিনো, জাভানিজ, সুন্দানিজ, মালয়েশিয়ান, সিঙ্গাপুরিয়ান, ভিয়েতনামি এবং বার্মিজ অঞ্চলের হিন্দুদের মধ্যে বিন্দি পরিধানের রীতি আছে। টিপের অনুরূপ একটি চিহ্ন চীনে শিশুরা পরিধান করে। ভারতীয় উপমহাদেশ এবং দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার মতো দেশে এই টিপ তৃতীয় নেত্র বা জ্ঞান নেত্রের চিহ্নস্বরূপ। [৫] হিন্দু, বৌদ্ধ এবং জৈন ধর্মে বিন্দি অজ্ঞান চক্রের সাথে যুক্ত, এবং বিন্দু [৬] তৃতীয় চক্ষু চক্র নামে পরিচিত। ধর্মীয় বিশ্বাস অনুসারে তৃতীয় নেত্র হল সেই বিন্দু যার চারপাশে মন্ডলা তৈরি হয়, যা মহাবিশ্বের প্রতিনিধিত্ব করে। [৭] [৮] বৃহত্তর ভারতের বিভিন্ন অঞ্চলে বিন্দির ঐতিহাসিক ও সাংস্কৃতিক গুরুত্ব রয়েছে। [৯] [১০]

বাঙালি মেয়েরা নীল, বাদামী, সাদা ও লাল রঙের টিপ পরতে পছন্দ করে এবং এ টিপ যেকোন আকৃতির হতে পারে। ঐতিহ্যবাহী বিন্দি জাফরানী রঙের হয়। প্রথমে এক চিমটি সিঁদুরের গুঁড়া আঙুলের ডগায় লাগিয়ে নিতে হয়, তারপর দুই ভুরু বা কপালের মাঝ বরাবর এই টিপ পরা হয়। লাক্ষা, চন্দন, 'আগুরু', মাইকা, 'কস্তুরি', কুমকুম (লাল হলুদ দিয়ে তৈরি) এবং সিঁদুরের মতো বিভিন্ন উপকরণ দিয়ে টিপ পরা হয় বা রঙ করা হয়। জাফরানের গুড়োর সঙ্গে 'কুসুম্বা' ফুল যোগ করেও টিপ তৈরি করা যেতে পারে। ঐতিহ্যগতভাবে টিপে একটি লাল বিন্দুর সাথে সবুজ রঙের মিশ্রণ থাকে। [১১] বিন্দির রঙ বা আকার সীমাবদ্ধ বা নির্দিষ্ট নয়। [১২] [১৩]

তথ্যসূত্র[সম্পাদনা]

  1. https://www.bbc.com/bengali/news-60988562
  2. "History and Etymology for bindi"Merriam-Webster। সংগ্রহের তারিখ ১৬ জানুয়ারি ২০২২borrowed from Hindi bindī, literally, "dot, mark" (or a cognate Indo-Aryan word), going back to the Middle Indo-Aryan and Sanskrit stem bindu- "drop, spot," it’s worn by Sikhs, Buddhist, Jains and Hindus 
  3. "Bindi etymology" (English ভাষায়)। Etymologeek। সংগ্রহের তারিখ ১৬ জানুয়ারি ২০২২English word bindi comes from Hindi बिंदी 
  4. Khanna 1979: p. 171
  5. Xiaoou, Yu (১০ সেপ্টেম্বর ২০১৪)। "Guidelines for school entrance in ancient China"। ChinaCulture.org। সংগ্রহের তারিখ ১৬ ফেব্রুয়ারি ২০১৮ 
  6. Mercier (2007). p. 267.
  7. Swami Ranganathananda (১৯৯১)। Human Being in Depth: A Scientific Approach to Religion। SUNY Press। পৃষ্ঠা 21। আইএসবিএন 0791406792 
  8. Shakya, pp. 82–83
  9. Southeast Asia: A Historical Encyclopedia, from Angkor Wat to East Timor, by Keat Gin Ooi p. 642
  10. Hindu-Buddhist Architecture in Southeast Asia by Daigorō Chihara p. 226
  11. Bahadur, Om Lata (১৯৯৬)। The book of Hindu festivals and ceremonies (3rd সংস্করণ)। UBS Publishers Distributors ltd.। পৃষ্ঠা 168আইএসবিএন 81-86112-23-5 
  12. Khadi and Village Industries Commission, Government of India
  13. Parvesh Handa, "Home Beauty Clinic", Pustak Mahal, আইএসবিএন ৮১-২২৩-০০৯৯-৫