জাপানি ঘড়ি

উইকিপিডিয়া, মুক্ত বিশ্বকোষ থেকে
দুটি পৃথক ফোলিওট পাল্লা ব্যবহারের মাধ্যমে দুটি ভিন্ন গতিতে চলা অষ্টাদশ শতকের এই জাপানি ঘড়িটি অসম ঘন্টা-কাল নির্দেশ করে।

জাপানি ঘড়ি (和時計|wadokei}}) হল একটি যান্ত্রিক ঘড়ি যা জাপানে যুগযুগ ধরে চলে আসা সময় ব্যবস্থা প্রকাশের জন্য তৈরি করা হয়েছে। উক্ত ব্যবস্থায় দিন এবং রাতকে সর্বদা ছয়টি কাল-ব্যবধানে বিভক্ত করা হয় এবং সে ব্যবধানের দৈর্ঘ্য ঋতুর সঙ্গে সঙ্গে পরিবর্তিত হয়। জাপানে সর্বপ্রথম জেসুইট মিশনারি (ষোড়শ শতকে) বা ডাচ বণিকরা (সপ্তদশ শতকে) যান্ত্রিক ঘড়ি নিয়ে আসেন। সেগুলো ছিল লণ্ঠনের নকশার ঘড়ি, সাধারণত পিতল বা লোহা দিয়ে তৈরি। সেগুলোতে প্রাচীন গঠনের ফলা এবং ফোলিওট এস্কেপমেন্ট ব্যবহার করা হত। জাপানের সম্রাট তোকুগাওয়া ইইয়াসুয়ের ইউরোপে তৈরি একটি লণ্ঠন ঘড়ি ছিল।

সেই সময়ের ইউরোপীয় ঘড়িগুলির মধ্যে পেন্ডুলাম বা ভারসাম্য স্প্রিংয়ের কোনোটিই ব্যবহার শুরু হয়নি। অন্যদিকে১৬৪১ সাল থেকে শুরু হয় জাপানি ইতিহাসের নতুন অধ্যায়, যা বিচ্ছিন্নতাবাদী সময় হিসাবে পরিচিত। সে সময়ের জাপানে ঘড়ি নির্মাতাদের নাগালে ছিলো না ইউরোপীয় ঘড়িগুলোর প্রযুক্তিসমূহ। বিচ্ছিন্নতাবাদী সময়ের জাপানি ঘড়ি নির্মাতাদের পাশ্চাত্যের ঘড়ি তৈরির সাফল্যের পথ অনুসরণ ছাড়াই খুঁজে বের করতে হয়েছে নিজস্ব উপায়। তা সত্ত্বেও, জাপানি ঘড়ি নির্মাতারা জাপানের প্রচলিত সময় পদ্ধতি নির্দেশ করতে ইউরোপীয় ঘড়ির যান্ত্রিক প্রযুক্তির সঙ্গে খাপ খাইয়ে নিতে যথেষ্ট দক্ষতা দেখিয়েছেন।

ইতিহাস[সম্পাদনা]

খ্রিস্টীয় ৭ম শতাব্দীর মাঝামাঝি থেকে জাপানে জল ঘড়ি নামক ঘড়ির আবির্ভাব ঘটেছে।[১] জাপানি লোকগাঁথা নিহন শোকি তে বর্ণিত রয়েছে সম্রাট টেনচি ৬৬০ এবং ৬৭১ সালে একটি জল ঘড়ি বা rōkoku (漏刻) তৈরি করেছিলেন[১]। ষোড়শ শতকে জাপানে খ্রিস্টধর্মের আগমনের আগ পর্যন্ত এই ঘড়িগুলি প্রায় ৮০০ বছর ধরে ব্যবহার করা হয়েছে।

খ্রিস্টান ধর্ম প্রচারকেরা প্রথম জাপানকে ইউরোপে তৈরি যান্ত্রিক স্প্রিং চালিত ঘড়ির সঙ্গে পরিচয় করিয়ে দেন। স্পেনের সোসাইটি অফ যিশু এর একজন সাধক এবং ধর্মপ্রচারক ফ্রান্সিস জেভিয়ার, সেনগোকু যুগের ডেইমিও ওউচি ইয়োশিতাকাকে ১৫৫১ সালে একটি যান্ত্রিক ঘড়ি দিয়েছিলেন।[২] অন্যান্য ধর্ম প্রচারক এবং সংঘগুলো দ্রুতই সে রীতিটি অনুসরণ শুরু করেন। পোপের দূত ১৫৬৯ সালে ওদা নোবুনাগাকে এবং ১৫৭১ সালে টয়োটোমি হিদেয়োশিকে একটি করে যান্ত্রিক ঘড়ি উপঢৌকন দেয়।একজন ধর্মপ্রচারক ১৬০৬ সালে এবং একজন পর্তুগীজ দূত ১৬১১ সালে টোকুগাওয়া ইয়েয়াসুকে একটি করে মোট দুটি পশ্চিমে তৈরি যান্ত্রিক ঘড়ি উপহার দেন।[২] জাপানে সংরক্ষিত প্রাচীনতম পশ্চিমা ঘড়িটি ১৬১২ সালের; এটি মেক্সিকো (তখন নিউ স্পেন) এর ভাইসরয় দিয়েছিলেন শোগুন ইয়েসুকে।[২]

তানাকা হিসাশিগের man-nen dokei (万年時計) । ১৮৫১ সালে নির্মাণ সম্পন্ন করেন।

সপ্তদশ শতকের শেষভাগে জাপানীরা স্থানীয়ভাবে প্রথমবার পাশ্চাত্য-শৈলীর যান্ত্রিক ঘড়ি নির্মাণ করে। সুদা সুকেযাইমন পশ্চিম থেকে আমদানি করা অনেক ঘড়ি পরীক্ষা ও মেরামত করতে গিয়ে ১৫৯৮ সালে নিজেই একটি ঘড়ি নির্মাণ করেছিলেন বলে জানা যায়।[২]সপ্তদশ শতকে জাপানে বসবাসকারী ধর্মপ্রচারকদের হাত দিয়েই জাপানি ঘড়ি তৈরি হয়।[২] খ্রিস্টান ধর্মপ্রচারকরাই প্রথম জাপানিদের আনুমানিক সপ্তদশ শতকের দিকে আমাকুসা দ্বীপপুঞ্জে ঘড়ি তৈরির নির্দেশ দিয়েছিলেন।[৩]

এডো যুগে (১৬০৩-১৮৬৮) জাপানে পশ্চিমা কৌশলগুলির ব্যবহার করে সেগুলির পরিমার্জনের মাধ্যমে ঘড়ি তৈরির একটি অভিনব পদ্ধতির সৃষ্টি হয়। জাপানের ঐতিহ্যবাহী অসমান সময়সূচি অনুসরণ করবে এমন একটি ঘড়ি তৈরি করতে জাপানি ঘড়ি নির্মাতারা একটি ডাবল এস্কেপমেন্ট ডিজাইন করেছিলেন।[৪] এই ঘড়িগুলিকে বলা হয়, ওয়াডোকেই। টেম্পোরাল আওয়ার সিস্টেম বা অস্থায়ী ঘণ্টা রীতি (ফুটেই জিহো不定時法) অনুসরণ করার উদ্দেশ্যে বিভিন্ন পদ্ধতিতে এগুলো তৈরি করা হয়েছিল। ঘড়িগুলোর ফলিওটে বেশ কয়েকটি ভাগে বিভক্ত, যার মাধ্যমে ব্যবহারকারীরা তুলনামূলক নির্ভুলভাবে সময়ের হার স্থির করতে পারেন।[৫] ইউরোপে ফলিওট নিয়ন্ত্রিত ঘড়িকে ঘূর্ণন ভিত্তিক ভারসাম্যযুক্ত ঘড়ি ব্যাপকভাবে প্রতিস্থাপন করলেও, অস্থায়ী ঘণ্টা রীতির সঙ্গে তাল মিলিয়ে চলার কারণে জাপানে সেগুলোর বেশ প্রচলন ছিলো।[৬] অপরিবর্তনীয় ওজন এবং ডায়ালের মাপ বদলের সুবিধার ফলে জাপানী ঘড়ি নির্মাতারা ১৭৮০ সালের দিকে nichō-tenpu tokei (二挺天府時計) বা "দুই-দণ্ড নির্ভর ঘড়ি" নির্মাণ করে।[৭] tenpu (天府) (টেনপো) নামের দুটি ভারসাম্য দণ্ডের মাধ্যমে দিন ও রাতের সময়কে সয়ংক্রিয়ভাবে সংশোধন করার জন্য নিচো-টেম্পু টোকেইয়ে ওজনগুলো সংযুক্ত করা হয়েছিলো।[৭]

১৭৯৬ সালে হোসোকাওয়া হানজোর কারাকুরি জুই বইটি প্রকাশ পেলে তা জাপানি ঘড়ি বিকাশের মূল উপাদান হিসাবে কাজ করেছে। বইটির প্রথম খণ্ডে তিনি ঘড়ি তৈরির পদ্ধতি ব্যাখ্যা করেছেন এবং দ্বিতীয় এবং তৃতীয় খণ্ডে karakuri ningyō (絡繰人形) বা "যান্ত্রিক পুতুল" বিষয়টির ব্যাখ্যা করেছেন।[৭] প্রথম খণ্ডটিতে তিনি ওজন দিয়ে আঘাত করা একটি ঘড়ি তৈরির বিস্তারিত বর্ণনা দিয়েছেন। ঘড়িটিতে একটি ফোলিওট নিয়ন্ত্রিত প্রান্ত বেরিয়ে থাকে।[৮] জাপানের তুলনামূলক উচ্চ সাক্ষরতার হার এবং একটি আগ্রহী, বই ধার দেওয়া সমাজ কাঠামোর জন্য বইটি ব্যাপকভাবে পঠিত হয়।

তানাকা হিসাশিগের man-nen dokei (万年時計) অনন্ত ঘড়ির মাধ্যমে ঘড়ির উৎপাদন জটিলতা শীর্ষে পৌঁছে যায়। এতে রয়েছে ছয়টি অংশ, সেগুলো হলো একটি পশ্চাত্য ঘড়ি, একটি চাঁদের পর্যায় নির্দেশক, একটি প্রাচ্য রাশিচক্র, একটি জাপানি অস্থায়ী ঘড়ি, জাপানের প্রাচীন ২৪-ধাপ বিভাজন নির্দেশক এবং একটি সপ্তাহের দিন নির্দেশক।[৯] বলা হয়ে থাকে ঘড়িটিতে একবার দম দিলে তা পুরো এক বছর যাবত চলতে সক্ষম।[৯]

১৮৬৮ সালে মেইজি শাসনের পুনঃপ্রতিষ্ঠার পর, জাপান অবশেষে তার অস্থায়ী ঘণ্টা পদ্ধতির ব্যবহার বাতিল করে। মেইজি মন্ত্রিসভা ১৮৭২ সালে ৪৫৩ নং অধ্যাদেশ জারির মাধ্যমে জাপানে প্রচলিত চান্দ্র ক্যালেন্ডার থেকে পাশ্চাত্য সৌর ক্যালেন্ডার গ্রহণ করে।[১০] এই পরিবর্তনের ফলে ওয়াডোকেই বা জাপানি ঘড়ির পতন এবং দেশটিতে পাশ্চাত্য-শৈলীর একটি ঘড়ি শিল্পের উত্থান ঘটে।

অস্থায়ী ঘন্টা[সম্পাদনা]

একটি জাপানি ঘড়ির কার্যপ্রণালীর নকশা। কারাকুরি জুই, 1796।

জাপানের ঐতিহ্যবাহী সময় রীতিকে ইউরোপীয় ঘড়ির নকশার সঙ্গে খাপ খাইয়ে নেওয়ার বাধ্যবাধকতা জাপানি ঘড়ি প্রস্তুতকারকদের কাছে একটি চ্যালেঞ্জ হিসাবে আবির্ভূত হয়। জাপানি ঐতিহ্যবাহী সময় রীতি ব্যবহারের জন্য অনুশীলনের জন্য অসম সময় একক ব্যবহার করতে হয়: স্থানীয় সূর্যোদয় থেকে স্থানীয় সূর্যাস্ত পর্যন্ত দিনের ছয়টি একক এবং সূর্যাস্ত থেকে সূর্যোদয় পর্যন্ত রাতের ছয়টি একক।

এর ফলে, জাপানি সময় প্রকাশে ঘণ্টার হিসাব ছিলো ঋতুভেদে ভিন্ন ভিন্ন। বেশি সময় ধরে দিনের আলো থাকার কারণে গ্রীষ্মকালে সময় ছিলো দীর্ঘ ও শীতকালে ছোট ছিল, এবং রাতে এর বিপরীতে। অন্যদিকে, ইউরোপীয় যান্ত্রিক ঘড়িগুলির সমান ঘন্টা প্রকাশের জন্য বানানো হয়েছিল, যা ঋতুর সাথে পরিবর্তনের সঙ্গে যার কোনো সম্পর্ক ছিলো না।

বেশিরভাগ জাপানি ঘড়ি চলে ওজন দিয়ে। তবে, জাপানিরা স্প্রিংচালিত ঘড়ির সঙ্গে জাপানীদের পরিচয় ছিলো এবং কদাচিৎ তারা সে ঘরানার ঘড়ি বানাতেন। পশ্চিমা লণ্ঠন ঘড়ি সেগুলোর নকশাকে অনুপ্রাণিত করেছিল। ওজন চালিত ঘড়িগুলি প্রায়শই বিশেষভাবে নির্মিত টেবিল বা তাকের উপর রাখা হতো এবং সেগুলোতে ঘড়িটিতে ব্যবহৃত ওজন নীচে নেমে যাওয়ার সুযোগ ছিলো।স্প্রিং চালিত জাপানি ঘড়িগুলি সহজে বহনের জন্য তৈরি করা হয়েছিল। সবচেয়ে ছোটগুলো ছিল বড় হাত ঘড়ির আকারের, এবং তাদের মালিকরা সেগুলোকে ইনরো পাউচে বহন করতেন।

ঐতিহ্যবাহী জাপানি সময় ব্যবস্থা[সম্পাদনা]

ঐতিহ্যবাহী জাপানি সময় ব্যবস্থায় দিন ও রাতের সময়কে আলাদা আলাদা করে ছয়টি সময়ে ভাগ করা হয়। এর অর্থ হল কাল-ব্যবধানের দৈর্ঘ্য ঋতুর সঙ্গে সঙ্গে পরিবর্তিত হয়।

একটি প্রচলিত ঘড়িতে ঘণ্টা প্রকাশে নয় থেকে চার পর্যন্ত ছয়টি সংখ্যা ব্যবহার করা হতো, যা দুপুর থেকে মধ্যরাত পর্যন্ত পিছনের দিকে গণনা করা হত। জাপানে ধর্মীয় কারণে এক, দুই এবং তিন সংখ্যাগুলো ঘণ্টা হিসাবে ব্যবহার করা হয়নি, কারণ বৌদ্ধ ধর্মাবলম্বীরা প্রার্থনা করার জন্য এই সংখ্যাগুলো ব্যবহার করতেন। গণনাটি পিছনের দিকে শুরু হয় কারণ প্রথম দিকের জাপানের কৃত্রিমভাবে সময় গণনা করার জন্য ধূপ জ্বালানো হতো। তাই ভোর এবং সন্ধ্যা উভয়ই জাপানের সময় গণনা পদ্ধতিতে ষষ্ঠ ঘন্টা হিসাবে চিহ্নিত করা হয়।

তানাকা হিসাশিগের ১৮৫১ সালের অগণিত বছরের ঘড়ি জাপানি, সমান ঘন্টা এবং ক্যালেন্ডার তথ্য প্রদর্শন করে।

সংখ্যাযুক্ত অসম ঘন্টা ছাড়াও, প্রতিটি ঘন্টার জন্য জাপানি রাশিচক্র থেকে একটি করে চিহ্ন বরাদ্দ করা হয়েছিল। ভোর থেকে শুরু করে, দিনের ছয় ঘন্টা ছিল:

ঐতিহ্যবাহী চীনা ১২ পার্থিব শাখা এবং ২৪ মৌলিক দিকনির্দেশ ; ১২ টি পার্থিব শাখা হল জাপানি সময়ের রাশিচক্রের নিয়োগের ভিত্তি।

সন্ধ্যা থেকে, রাতের ছয়টি ঘণ্টার স্বরূপ:

বিভিন্ন ঘন্টার দৈর্ঘ্যের সংকট[সম্পাদনা]

ইউরোপীয় লণ্ঠনের ঘড়ি যা ছিল জাপানি ঘড়ি নকশার সূচনা বিন্দু।

১৮৪৪ সালের শুরুতে বছরের বিভিন্ন অংশে ভিন্ন ভিন্ন ঘন্টার দৈর্ঘ্য প্রদানের জন্য ক্যালেন্ডারটি সংশোধন করা হয়েছিল । জাপানি ঘড়িগুলি পরিবর্তিত অস্থায়ী ঘন্টা প্রদর্শনের জন্য বিভিন্ন ধরনের প্রক্রিয়া ব্যবহার করা হতো। সবচেয়ে ব্যবহারিক উপায়টি ছিল ঘড়ির সঙ্গে একটি স্তম্ভ যুক্ত করা। সেখানে ঘড়িটি একটি ঘড়ির মুখে মাধ্যমে নির্দেশ না করে, একটি সূচকের সাথে সংযুক্ত একটি ট্র্যাক বেয়ে নেমে আসা একটি ওজনের মাধ্যমে সময় নির্দেশ করতো। চলমান সময়ের সূচকগুলি ওজনের ট্র্যাক এবং এর সংযুক্ত সূচকের পাশাপাশি চলতো। দিনের দৈর্ঘ্য এবং রাতের সময় দেখাতে এই সূচকগুলি ঋতুগুলির জন্য সামঞ্জস্য করা যেতো। ঘড়িটি অকার্যকর হয়ে গেলে, নির্দেশকটিকে আবার ট্র্যাকের উপরে সঠিক মার্কারে বসানো হতো। এই পদ্ধতিটিতে ঘড়ির গতির থেকে স্বাধীন হওয়ার সুবিধা ছিল।

ঘড়ির মুখের ব্যবহার ইউরোপীয় প্রযুক্তির অংশ ছিল পরবর্তীতে জাপানি ঘড়ি নির্মাতারা সেটিকে গ্রহণ করেন এবং ঘড়ির মুখে জাপানি ঘন্টা প্রদর্শনের জন্য বেশ কিছু নতুন ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়েছিল। কোনো কোনো ঘড়ির রিমের চারপাশে ২৪ ঘন্টায় পূর্ণ ঘূর্ণন সৃষ্টিকারী চলমান ডায়াল ছিল। অন্য ঘড়িগুলোতে একাধিক ঘড়ির মুখ ছিল যা ঋতুর সাথে পরিবর্তন করা যেতো। জাপানি সময় প্রকাশ করবে এমন একটি আকর্ষণীয় ঘড়ি তৈরি করতে, ঘড়ি নির্মাতারা এমন একটি পদ্ধতি ব্যবহার করেছিলেন যা দুটি ভারসাম্যের ওপর চলতো; যার মধ্যে একটি ছিলো ধীর এবং অপরটি দ্রুত। সময় দিন থেকে রাতের দিকে যাওয়ার সাথে সাথে উপযুক্ত বদলের জায়গাটি স্বয়ংক্রিয়ভাবে পরিবর্তিত হতো। তানাকা হিসাশিগের ১৮৫০ সালে নকশা করা অগণিত বছরের ঘড়িটিতে এই প্রক্রিয়াটি ব্যবহার করা হয়েছে।

তার কিছু কব্জি ঘড়িতে সাময়িক সময়ের জটিলতার জন্য, অসম ঘণ্টার জটিলতার কারণে মাসাহিরো কিকুনো তার তৈরি বেশকিছু হাত ঘড়িতে পৃথক ঘন্টার জন্য আলাদা আলদা একগুচ্ছ বাহু ব্যবহার করেন। এই বাহুগুলো একটি অভিন্ন খাঁজ কাটা অংশের সঙ্গে সংযুক্ত থাকতো। প্রতিটি ঘড়িতে আলদা আলাদাভাবে প্রত্যেক ক্রেতার বসবাসরত অক্ষাংশের সঙ্গে সামঞ্জস্য বাজায় রাখা হতো। এক বছর পর পর ক্যামের চলাচল ঘড়ির মুখে ঘন্টার অবস্থান পরিবর্তন করতো।

১৮৭৩ সালে জাপান সরকার পশ্চাত্য রীতির সময় বর্ণনা পধতিগুলো গ্রহণ করে, যার মধ্যে রয়েছে ঋতুর সঙ্গে অপরিবর্তনীয় সমান ঘন্টা এবং গ্রেগরিয়ান ক্যালেন্ডার

  1. Yokota, Yasuhiro. "A Historical Overview of Japanese Clocks and Karakuri." International Symposium on History of Machines and Mechanisms (2008), 176.
  2. Yokota, Yasuhiro. "A Historical Overview of Japanese Clocks and Karakuri". International Symposium on History of Machines and Mechanisms (2008), 177.
  3. "History of the Japanese Horological Industry." History of the Japanese Horological Industry. N.p., n.d. Web. 02 April 2013. Section 1.
  4. Pacey, Arnold. Technology in World Civilization: A Thousand-year History. Cambridge, MA: MIT, 1990. Page 88.
  5. Fernandez, M. P., and P. C. Fernandez. 1996. "Precision Timekeepers of Tokugawa Japan and the Evolution of the Japanese Domestic Clock". Technology and Culture. 37 (2), 223.
  6. Fernandez, M. P., and P. C. Fernandez. 1996. "Precision Timekeepers of Tokugawa Japan and the Evolution of the Japanese Domestic Clock". TECHNOLOGY AND CULTURE. 37 (2), 224.
  7. Yokota, Yasuhiro. "A Historical Overview of Japanese Clocks and Karakuri". International Symposium on History of Machines and Mechanisms' (2008), 179.
  8. Fernandez, M. P., and P. C. Fernandez. 1996. "Precision Timekeepers of Tokugawa Japan and the Evolution of the Japanese Domestic Clock". TECHNOLOGY AND CULTURE. 37 (2), 225.
  9. "Toshiba : Press Releases 8 March, 2005". Toshiba: Press Releases 8 March 2005. N.p., n.d. Web. 06 Apr. 2013.
  10. "History of the Japanese Horological Industry". History of the Japanese Horological Industry. N.p., n.d. Web. 2 April 2013. Section 3.

গ্যালারি[সম্পাদনা]

আরো দেখুন[সম্পাদনা]

তথ্যসূত্র[সম্পাদনা]

গ্রন্থপঞ্জি[সম্পাদনা]

বহিঃসংযোগ[সম্পাদনা]