জাতির পিতার পরিবার-সদস্যগণের নিরাপত্তা আইন, ২০০৯

উইকিপিডিয়া, মুক্ত বিশ্বকোষ থেকে

জাতির পিতার পরিবার-সদস্যদের নিরাপত্তা আইন-২০০৯ বাংলাদেশের একটি বিশেষ আইন এবং বাংলাদেশে সমালোচিত আইনগুলোর মধ্যে অন্যতম। আইনটি ১৩ অক্টোবর ২০০৯-এ বাংলাদেশ জাতীয় সংসদে গৃহীত হয়।[১]

ইতিহাস[সম্পাদনা]

২০০১ সালে আওয়ামী লীগ নেতৃত্বাধীন তৎকালীন সরকার কর্তৃক এই আইনটি 'জাতির পিতার পরিবারের সদস্যদের নিরাপত্তা বিল-২০০১' নামে সংসদে উপস্থাপিত হয় এবং ২০ জুন ২০০১ খ্রীস্টাব্দের ২৯ নম্বর আইন[২] হিসাবে গৃহীত হয়। পরবর্তীতে বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল নেতৃত্বাধীন সরকার অষ্টম সংসদে ২ ডিসেম্বর ২০০১ খ্রীস্টব্দের ৬০ নম্বর আইনের[২] মাধমে তা্ রহিত করে।[৩][৪][৫] ৫ অক্টোবর ২০০৯ তারিখে উপর্যুক্ত রহিত আইনটি নতুনভাবে প্রণয়নের জন্য সংসদে একটি বিল উত্থাপন করা হয়।[৬] ২০০৯-এ আ্ইনটি সংসদে সর্বোসম্মতভাবে গৃহীত হলেও এ সময় সংসদে প্রধান বিরোধী দল বিএনপির নেতৃত্বাধীন চারদলীয় জোটের কোনো শরিক দল সংসদে উপস্থিত ছিলো না।[৩]

আইনের উদ্দেশ্য[সম্পাদনা]

বাংলাদেশের জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে ১৯৭৫ খ্রীস্টাব্দের ১৫ আগস্ট সপিরবারে হত্যা করা হয়। তবে বিদেশে অবস্থানরত তার দুই কন্যা শেখ হাসিনাশেখ রেহানা বেঁচে গিয়েছিলেন। পরবর্তীতে জাতির পিতার পরিবারের জীবিত সদস্যদের একাধিকবার হত্যার চেষ্টা করা হয়েছে। এ জন্য ওই সদস্যদের নিরাপত্তা রক্ষায় রাষ্ট্র কর্তৃক ব্যবস্থা গ্রহণ করার লক্ষ্যে এ আইনটি করা হয়। সংশ্লিষ্ট বিলের সঙ্গে উপস্থাপিত সরকারি বক্তব্যেও এই উদ্দেশ্য বিশদ ব্যাখ্যা করা হয়েছে।[৬]

সঙ্গার্থ[সম্পাদনা]

শেখ মুজিবুর রহমান বাংলাদেশের জাতির পিতা হিসাবে রাষ্ট্রীয়ভাবে স্বীকৃত। আইনের ২ ধারায় বলা হয়েছে, "জাতির পিতা" অর্থ স্বাধীনতার ঘোষণাপত্রে উল্লিখিত বাংলাদেশের অবিসংবাদিত নেতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান যিনি বাঙালি জাতির স্বাধীনতার রূপকার, বাংলাদেশের স্খপতি এবং সংবিধান (চতুর্থ সংশোধনী) আইন, ১৯৭৫-এর ধারা ৩৪-এর দফা(খ) দ্বারা সাংবিধানিকভাবে জাতির পিতা হিসেবে স্বীকৃত। "পরিবারের সদস্য" অর্থ জাতির পিতার জীবিত দুই কন্যা এবং তাদের সন্তানাদি। ৩ নম্বর ধারায় বলা হয়েছে, আপাতত বলবৎ অন্য কোনো আইনে যা কিছুই থাকুক না কেন, এই আইনের বিধানাবলি কার্যকর হবে।

আইনের বিধান[সম্পাদনা]

এই আইনে শেখ হাসিনা ও শেখ রেহানা এবং তদীয় বংশধর ভিআইপি নিরাপত্তা ও সরকারিভাবে নিরাপদ ও সুরক্ষিত আবাসন এবং প্রয়োজনীয় অন্য সুবিধাদি পাওয়ার কথা বলা হয়েছে। স্পেশাল সিকিউরিটি ফোর্সেস অর্ডিন্যান্স-১৯৮৬ এর আওতায় জাতীয় অতি গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তিবর্গের (ভিআইপি) জন্য যে নিরাপত্তা ব্যবস্থা করা হয়। আইনের ৪ নম্বর ধারায় সরকার জাতির পিতার পরিবার-সদস্যদের আজীবন যেকোন স্থানে সেরকম নিরাপত্তা প্রদান করার কথা বলা হয়েছে। এ নিরাপত্তা প্রদানের ক্ষেত্রে সরকার পরিবার-সদস্যদের মতামতকে প্রাধান্য দেওয়ার কথাও উল্লেখি হয়েছে। একই ধারার উপধারা ৩-এ, সরকার জাতির পিতার পরিবার-সদস্যদের প্রত্যেকের জন্য নিরাপদ ও সুরক্ষিত আবাসনের ব্যবস্থা গ্রহণ এবং সেই বিবেচনায় প্রয়োজনীয় অন্য সুবিধাদি প্রদান করার বিধান রাখা হয়েছে।

তথ্যসূত্র[সম্পাদনা]

  1. "দৈনিক ভোরের কাগজ:জাতির পিতার পরিবারের নিরাপত্তা বিল পাস"। ১৭ অক্টোবর ২০০৯ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ১৪ অক্টোবর ২০০৯ 
  2. http://www.bdlaws.gov.bd/bangla_pdf_part.php?act_name=&vol=??&id=881[স্থায়ীভাবে অকার্যকর সংযোগ]
  3. ইউকে বিডি নিউজ: জাতির পিতার পরিবার নিরাপত্তা বিল-২০০৯ সংসদে সর্বসম্মতভাবে পাস[স্থায়ীভাবে অকার্যকর সংযোগ]
  4. "দৈনিক প্রথম আলো: বঙ্গবন্ধুর পরিবারের সদস্যদের নিরাপত্তায় সংসদে বিল পাস"। ২০১৭-০৩-০৮ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২০১৪-০১-১২ 
  5. http://bdnews24.com/bangla/details.php?cid=2&id=111405&hb=3[স্থায়ীভাবে অকার্যকর সংযোগ] বিডি নিউজ ২৪:সংসদে বঙ্গবন্ধু পরিবারের নিরাপত্তা বিল পেশ
  6. http://www.newagebd.com/2009/oct/14/front.html#2[স্থায়ীভাবে অকার্যকর সংযোগ]