গোপাল কৃষ্ণ মুহুরী হত্যাকাণ্ড

উইকিপিডিয়া, মুক্ত বিশ্বকোষ থেকে

গোপাল কৃষ্ণ মুহুরী ছিলেন চট্টগ্রামে নিজ গৃহে খুন হওয়া বাংলাদেশের চট্টগ্রামের নাজিরহাট কলেজের অধ্যক্ষ।[১] জাতীয় ইংরেজি দৈনিক দ্য ডেইলি স্টার এই মামলাটিকে "চাঞ্চল্যকর" বলে অভিহিত করেছিলো।[২]

পটভূমি[সম্পাদনা]

বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল এবং জামায়াতে ইসলামী বাংলাদেশের নেতৃত্বাধীন চারদলীয় জোট এই ঘটনার মাত্র ৫ সপ্তাহ আগেই ক্ষমতায় এসেছিল।[৩] জোট শাসনামলে সংখ্যালঘুদের অধিকারের ব্যাপক লঙ্ঘন এবং সরকার ক্ষমতায় আসার এক মাসের মধ্যেই তাদের উপর বেশকিছু হামলা হয়েছিল।[৪]

ঘটনা[সম্পাদনা]

গোপাল কৃষ্ণ মুহুরী চট্টগ্রাম নগরীর নাজিরহাট কলেজের অধ্যক্ষ ছিলেন। তিনি ছিলেন একজন হিন্দু ধর্মাবলম্বী এবং মুক্তি বাহিনীর প্রাক্তন সদস্য। তিনি তার কলেজে ইসলামী ছাত্রশিবিরকে নিষিদ্ধ করেছিলেন। ২০০১ সালের ১লা নভেম্বর চট্টগ্রামের জামাল খান রোডে তাঁর বাড়ির ভিতরে তাকে হত্যা করা হয়েছিল। সকাল বেলা সংবাদপত্র পড়ার সময় একাধিক বন্দুকধারী মিলে বাড়িতে হামলা চালিয়ে গুলি করে হত্যা করে তাকে। মৃত্যুর সময় তাঁর বয়স ছিল ৬০ বছর। তাঁর মৃত্যুতে বাংলাদেশ ছাত্রলীগ, যুবলীগ এবং বাংলাদেশ হিন্দু, বৌদ্ধ ও খ্রিস্টান ঐক্য পরিষদ বিক্ষোভ করে। [৫][৬]

বিচার[সম্পাদনা]

তার পরিবার ১২ জনের বিরুদ্ধে একটি হত্যা মামলা দায়ের করেছিলো। ২০০৩ সালের ৩ ফেব্রুয়ারি চট্টগ্রামের দ্রুত বিচার ট্রাইব্যুনাল চারজনকে মৃত্যুদণ্ড এবং চারজনকে যাবজ্জীবন কারাদন্ডে দণ্ডিত করে। ২০০৪ সালের ২৯ শে জুন "অপরাধীদের" সাথে বন্দুকযুদ্ধে একজন অভিযুক্ত মারা যান। ২০০৫ সালের ২রা মার্চ অপর একজন আসামি আরেকজন র‌্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়নের সাথে বন্দুকযুদ্ধে নিহত হন। অন্য দুই আসামি প্রফেসর জহিরুল হক ও অধ্যাপক তোফাজ্জল আহমাদও বিচার প্রক্রিয়া চলাকালীন মারা যান। ২০০৬ সালের জুলাইয়ে বাংলাদেশ হাইকোর্ট নাসির ওরফে গিট্টু নাসির, আজম, আলমগীর কবির ওরফে বাইত আলমগীর এবং তসলিম উদ্দিন মন্টুর মৃত্যুদণ্ডের সত্যতা নিশ্চিত করে। কোর্ট মহি উদ্দিন এবং হাবিব খানের যাবজ্জীবন কারাদণ্ডের বিষয়টিও নিশ্চিত করেছে; রায়ের সময় দুজনই পলাতক ছিলেন। রায়টিতে সাইফুল ইসলাম ওরফে ছোট সাইফুল ও শাহজাহান খালাস পেয়েছিলেন।[৩] আসামিদের মধ্যে আটজন ছিলো ইসলামী ছাত্রশিবিরের সদস্য এবং অন্য তিনজন ছিলেন একই কলেজের অধ্যাপক।[৭][৮]

তথ্যসূত্র[সম্পাদনা]

  1. Rakhit, Maanoj। Muslim India Will be Like THIS (ইংরেজি ভাষায়)। Maanoj Rakhit। পৃষ্ঠা 243। আইএসবিএন 9788189746872। সংগ্রহের তারিখ ২৮ মার্চ ২০১৭ 
  2. "Muhuri Murder"The Daily Star। ২৮ মার্চ ২০১৭ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২৮ মার্চ ২০১৭ 
  3. "HC confirms death sentence of 4 in Gopal Krishna Muhuri murder case, 1st Ld"bdnews24.com। সংগ্রহের তারিখ ২৮ মার্চ ২০১৭ 
  4. "House of Commons - Foreign Affairs - Written Evidence"publications.parliament.uk। The Committee Office, House of Commons। সংগ্রহের তারিখ ২৮ মার্চ ২০১৭ 
  5. Chowdhury, Rashed (১৭ নভেম্বর ২০০১)। "Nazirhat College principal shot dead"GulfNews। সংগ্রহের তারিখ ২৮ মার্চ ২০১৭ 
  6. Karlekar, Hiranmay। Bangladesh: The Next Afghanistan? (ইংরেজি ভাষায়)। SAGE। পৃষ্ঠা 163। আইএসবিএন 9780761934011 
  7. "Charges against 12 in Muhuri murder case"The Daily Star (ইংরেজি ভাষায়)। ৫ জানুয়ারি ২০০৩। সংগ্রহের তারিখ ২৮ মার্চ ২০১৭ 
  8. "Hearing of Gopal Krishna Muhuri murder case continues"The Daily Star (ইংরেজি ভাষায়)। ২২ জানুয়ারি ২০০৩। সংগ্রহের তারিখ ২৮ মার্চ ২০১৭