দেশি ভেটকি
দেশি ভেটকি Barramundi | |
---|---|
![]() | |
Barramundi (in foreground) | |
মূল্যায়িত নয় (আইইউসিএন ৩.১)
| |
বৈজ্ঞানিক শ্রেণীবিন্যাস | |
জগৎ: | Animalia |
পর্ব: | Chordata |
শ্রেণী: | Actinopterygii |
বর্গ: | Perciformes |
পরিবার: | Latidae |
গণ: | Lates |
প্রজাতি: | L. calcarifer |
দ্বিপদী নাম | |
Lates calcarifer (Bloch, 1790) | |
প্রতিশব্দ | |
|
দেশি ভেটকি বা কোরাল (বৈজ্ঞানিক নাম: Lates calcarifer) হচ্ছে Latidae পরিবারের Lates গণের একটি স্বাদুপানির মাছ।
বর্ণনা
[সম্পাদনা]ভেটকি মাছ এশিয়া অঞ্চলে Sea bass এবং অস্ট্রেলিয়ায় বারামুণ্ডি (ইংরেজি: Barramundi) নামে পরিচিত। বাংলাদেশে এ মাছ কোরাল ও ভেটকি এই দুই নামে পরিচিত। খুলনা অঞ্চলে একে পাতাড়ি মাছ বলে। ভেটকি লম্বাটে ও চাপা ধরনের। এদের নিচের চোয়াল উপরের চোয়ালের চেয়ে কিছুটা বড়, পিঠের দিক সবুজমতো এবং পেটের দিক রুপালি রঙের। [১]
বিস্তৃতি
[সম্পাদনা]এই মাছ ইন্দো-ইন্দো-প্রশান্ত মহাসাগরীয়, বাংলাদেশ, চীন, তাইওয়ান, জাপান, অস্ট্রেলিয়া এবং পাপুয়া নিউগিনি অঞ্চলে পাওয়া যায়। তাছাড়া এশিয়ার উত্তরাঞ্চল, কুইন্সল্যান্ডের দক্ষিণাঞ্চল এবং পূর্ব আফ্রিকার পশ্চিমাঞ্চলেও এদের দেখা যায়।
পুষ্টি গুণাগুণ
[সম্পাদনা]![](http://upload.wikimedia.org/wikipedia/commons/thumb/3/3a/Lates_calcarifer_%28Barramundi%29_selling.jpg/250px-Lates_calcarifer_%28Barramundi%29_selling.jpg)
এ মাছে উন্নতমানের আমিষ, ওমেগা-৩ এবং ওমেগা-৬ ফ্যাটি এসিড থাকে। যা আমাদের শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ায়, হৃদরোগের ঝুঁকি কমায় এবং রক্তের চাপ নিয়ন্ত্রণে রাখতে সাহায্য করে। ভেটকিতে ভিটামিন এ, বি এবং ডি, খনিজ পদার্থ, ক্যালসিয়াম, জিংক, লৌহ, পটাশিয়াম, ম্যাগনিসিয়াম এবং সিলেনিয়াম যথেষ্ট পরিমাণে থাকে। এগুলো শরীর গঠন ও বৃদ্ধির কাজে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে।
চাষ পদ্ধতি
[সম্পাদনা]লবণাক্ততা সহিষ্ণু হওয়ায় নদী, নদীর মোহনা এবং উপকূলীয় এলাকার জলাভূমিতে সহজে চাষ করা যায়। সহজে খাপ খাইয়ে নিতে পারে এবং এদের বেশি ঘনত্বে চাষ করা যায়। ভেটকির বৃদ্ধির হার বেশি এবং প্রতি ৬ মাস থেকে ২ বছরের মধ্যে এদের প্রতিটির ওজন ৩৫০ গ্রাম থেকে ৩ কেজি পর্যন্ত হয়। তাছাড়া দেশীয় ও আন্তর্জাতিক বাজারে এ মাছের চাহিদা বেশি।
প্রজনন
[সম্পাদনা]![](http://upload.wikimedia.org/wikipedia/commons/thumb/2/25/Lates_calcarifer_%28Barramundi%29.jpg/250px-Lates_calcarifer_%28Barramundi%29.jpg)
ভেটকি সারা বছর ডিম দিয়ে থাকে। তবে এপ্রিল থেকে আগস্ট মাস এদের মূল প্রজননকাল হিসেবে বিবেচিত। এ সময় এক সেন্টিমিটার আকারের অনেক পোনা ধরা পড়ে। বর্ষার শুরুতে পুরুষ ভেটকি স্ত্রী ভেটকির সঙ্গে মিলেনের জন্য নদ-নদীর নিন্ম অববাহিকায় আসে। ভরা পূর্ণিমা এবং অসাবস্যার শুরুতে জোয়ারের পানি আসার সময় ৫ থেকে ১০ কেজি ওজনের প্রতিটি স্ত্রী ভেটকি ২১ লাখ থেকে ৭১ লাখ পর্যন্ত ডিম পাড়ে। তারপর জোয়ারের পানিতে ভেসে ডিম এবং রেণু পোনা নদীর মোহনায় চলে আসে। রেণু পোনা মোহনা হতে নদীর উচ্চ অববাহিকার দিকে আসে। পরে পূর্ণবয়স্ক অবস্থায় ডিম পাড়ার জন্য আবার সাগরের দিকে ফিরে যায়। এই মাছের একটা অসাধারণ বৈশিষ্ট্য হলো বেশির ভাগ মাছ প্রুুষ মাছ হিসেবে প্রাপ্ত বয়স্ক হলেও স্ত্রী মাছের প্রাপ্যতা কম হলে একটি প্রজনন ঋতুর পর তারা লিঙ্গ পরিবর্তন করে স্ত্রী মাছ হিসেবে আত্মপ্রকাশ করতে পারে। ভেটকির পোনা প্রাকৃতিক উৎস সমুদ্র উপকূলীয় অঞ্চল এবং নদীর মোহনায় সংগ্রহ করা গেলেও বছরের বিভিন্ন সময় এর একই পরিমাণ পাওয়া যায় না। তাই ভেটকি চাষাবাদ বাধাপ্রাপ্ত হওয়ার সম্ভাবনা থেকে যায়। তা ছাড়া প্রাকৃতিকভাবে পোনা কম পাওয়া গেলে এ মাছের চাষ ঝুঁকির সম্মুখীন হতে পারে। এ প্রেক্ষিতে কৃত্রিমভাবে পোনা উৎপাদন একান্ত জরুরি। থাইল্যান্ডে ১৯৭১ সালে ভেটকি মাছের কৃত্রিম প্রজনন শুরু হয়। তারপর ১৯৭৩ সালে বদ্ধ পরিবেশে হরমোন ব্যবহারের মাধ্যমে এ মাছের কৃত্রিম প্রজননে সাফল্য অর্জিত হয়। ১৯৮১ সালে বিজ্ঞানী Kunguankij কৃত্রিমভাবে পোনা উৎপাদনে সফল হন।
বাংলাদেশে বর্তমান অবস্থা এবং সংরক্ষণ
[সম্পাদনা]আইইউসিএন বাংলাদেশ (২০০০) এর লাল তালিকা অনুযায়ী এই প্রজাতিটি বাংলাদেশে এখনও হুমকির সম্মুখীন নয়।[২]
আরও দেখুন
[সম্পাদনা]তথ্যসূত্র
[সম্পাদনা]- ↑ কৃষি তথ্য সার্ভিস, গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকার
- ↑ এ কে আতাউর রহমান, গাউছিয়া ওয়াহিদুন্নেছা চৌধুরী (অক্টোবর ২০০৯)। "স্বাদুপানির মাছ"। আহমেদ, জিয়া উদ্দিন; আবু তৈয়ব, আবু আহমদ; হুমায়ুন কবির, সৈয়দ মোহাম্মদ; আহমাদ, মোনাওয়ার। বাংলাদেশ উদ্ভিদ ও প্রাণী জ্ঞানকোষ। ২৩ (১ সংস্করণ)। ঢাকা: বাংলাদেশ এশিয়াটিক সোসাইটি। পৃষ্ঠা ২১৭–২১৮। আইএসবিএন 984-30000-0286-0
|আইএসবিএন=
এর মান পরীক্ষা করুন: invalid prefix (সাহায্য)।