কুরআনের সংখ্যাগত বিশ্লেষণ
এই নিবন্ধ বা অনুচ্ছেদটিতে মৌলিক গবেষণাযুক্ত উপাদান রয়েছে অথবা যাচাইবিহীনভাবে দাবি করা হয়েছে। দয়া করে উপযুক্ত তথ্যসূত্র এবং উৎস প্রদান করে নিবন্ধটির মানোন্নয়নে সাহায্য করুন। আরও বিস্তারিত জানতে নিবন্ধের আলাপ পাতায় দেখুন। (আগস্ট ২০২০) |
এই নিবন্ধে একাধিক সমস্যা রয়েছে। অনুগ্রহ করে নিবন্ধটির মান উন্নয়ন করুন অথবা আলাপ পাতায় বিষয়গুলো নিয়ে আলোচনা করুন।
|
এই নিবন্ধ এমনভাবে লেখা হয়েছে যে মনে হচ্ছে এটি একটি ব্যক্তিগত ভাবনা বা মতামত সম্বলিত রচনা এবং হয়তো নিবন্ধটির পরিচ্ছন্নকরণ প্রয়োজন। |
কুরআনের সংখ্যাগত বিশ্লেষণ বলতে কুরআনের বিভিন্ন সংখ্যার পুনঃপৌণিক ও তাৎপর্যময় উপস্থিতি ও বিভিন্ন আয়াতের শব্দবিন্যাসের ব্যকরণগত ও গাণিতিক বিশ্লেষণ ।[১] সর্বসমক্ষে কুরআনের সাংখ্যিক তাৎপর্যের এই দাবীটি সর্বপ্রথম করেন রাশাদ খালিফা নামে পরিচিত একজন মিশরীয় ধর্মসংস্কারক ।[২] তিনি প্রধানত: ১৯ সংখ্যাটির কৌতূহলোদ্দীপক পুন:পৌণিক উপস্থিতির বিষয়ে দৃষ্টি আকর্ষণ করেন।[তথ্যসূত্র প্রয়োজন] পরবর্তীতে ১৯ ছাড়াও অন্যান্য কয়েকটি সংখ্যার প্রধান্যের বিষয়েও দৃষ্টি আকর্ষণ করা হয়েছে। যেমনঃ ১,২,৩,৭,৯,১২,১৮,১৯,২৯,৩১,৬৩ সহ আরও বেশ কিছু সংখ্যা।
১৯ সংখ্যা
[সম্পাদনা]কুরআনের আদি তাফসীরকারকগণ এই উনিশ সংখ্যা সম্পর্কে অনেক সুন্দর সুন্দর ধারণা করেছিলেন। কেউ বলেছিলেন এই উনিশ হচ্ছে দোযখ নিয়ন্ত্রণকারী উনিশ জন ফেরেশতা। এটাও সত্য। [৩] এবং অনেকে ইসলামের উনিশটি প্রধান স্তম্ভ বলে চিহ্নিত করতে চেয়েছেন।[৪] কিন্তু তাফসির কারক গণ এই বলে তাদের কথা শেষ করেছেন যে এই সম্পর্কে আল্লাহ্ তায়ালাই ভাল জানেন। অর্থাৎ তারা ১৯ সংখ্যা দ্বারা কি বোঝানো হয়েছে তা নিশ্চিতভাবে ব্যাখ্যা করতে পারেননি। কারণ নবী সঃ এই উনিশ সংখ্যা সম্পর্কে আসল অবস্থা বর্ণনা করেননি।আর তখন ৪৫ ডিজিটের দানবীয় ক্যালকুলাস কেই বা বুঝবে। এজন্য নবী সঃ বলার প্রয়োজন বোধ করেন নি। কারণ নবী সঃ ১৯ এর মাহাত্ব ফাতিহা এ দেখে বলেছেন, ফাতিহার মত কোন সুরা তাওরাত, যাবুর, ইঞ্জিল এমন কী কুরানে আরেক টিও নেই। যেমনঃ টেমপ্লেট:৩১ টি বর্ণ
- সুরা ফাতিহার ৭ আয়াতের প্রথম শব্দের অক্ষর গুলি যোগ করলে মোট ৩১টি অক্ষর বা হরফ হবে।
- প্রতি আয়াতের ২য় শব্দের হরফ গুলি যোগ করলেও ৩১টি হরফ হবে।
- ৩য় শব্দ গুলি যোগ করলে ৩১টি হরফ হবে;যদিও দুই নং আয়াতে তৃতীয় শব্দ নেই। তবুও ৬টি শব্দে ৩১টি হরফই রয়েছে।
- ৪র্থ শব্দ গুলি যোগ করলেও ৩১টি হরফ পাওয়া যাবে।
- ৫ম শব্দ রয়েছে শুধু ৭ম আয়াতে। আয়াতের বাকি শব্দ গুলির মাঝে বিরতি রয়েছে, যদি খাড়া যবরকে হরফ ধরে গুনি, তাহলে ঠিক ২৫ টি করে হরফ আছে বাকি শব্দ গুলিতে। এটা অলৌকিকও বটে।
- কুরান নাজিল হয়েছে ২৩ বছরে। ফাতিহায় ব্যবহৃত অক্ষর মোট ২৩টি।
উনিশ সংখ্যাটির মাধ্যমে আল্লাহ তায়ালা কুরআন শরীফের আসল রচয়িতা যে তিনি তা প্রকাশ করেছেন। কেননা যদি মুহাম্মদ (স) নিজে কুরআন রচনা করতেন তাহলে তিনি ৩০/৪০ বা ৪৫ ডিজিটের মত বিশাল সব ১৯ দিয়ে বিভাজ্য দানবীয় সংখ্যা সাজিয়ে আরেক টি গ্রন্থ লিখতেন। কোন মানুষ যদি সুপার কম্পিউটার দিয়েও চেষ্টা করে গাণিতিক মান ঠিক রেখে একটি গ্রন্থ রচনা করতে, তবুও তারা পারবে না। এটি এমন যাদুকরি কুরান। আলকুরানের সংখ্যাতত্ত্ব নামক পাতায় ১৯ এর গাণিতিক হিসাব তুলে ধরা হয়েছে।
কুরআন নাযিল হওয়ার ধারাবাহীকতা থেকে আমরা দেখতে পাই সূরা মুদ্দাসসির এর ৩০ নং আয়াতটি চতুর্থ বারের সময় মুহাম্মদ এর নিকট নাযিল হয়।[তথ্যসূত্র প্রয়োজন]
“ | ইহার উপর আছে উনিশ | ” |
সূরা মুদ্দাসসির এর ৩০ নং আয়াত নাযীল করে জিব্রাইল কিছুক্ষণ নীরব থাকেন এবং এই সুরার বাকী ১৪ টি আয়াত নাযিল না করে তিনি চলে যান সেই সুরা আল-আলাকে, যার ১ম ৫টি আয়াত সর্বপ্রথম নাযিল করা হয়েছিল। সুরা আল-আলাকে বাকী ১৪টি আয়াত এই সময় নাযিল করা হয়, তাহলে প্রথমে নাযিল করা সুরাটিতে আয়াত সংখ্যা হল (৫+১৪=১৯) । [তথ্যসূত্র প্রয়োজন]
- মুহাম্মদ (স) এর ওপর প্রথম নাযিল হয় আল-আলাকের ১ম ৫টি আয়াত গণনায় দেখা যাবে যে তার শব্দ সংখ্যা ১৯।[তথ্যসূত্র প্রয়োজন]
- ১৯ টি শব্দের অক্ষর গুলোর যোগফল ৭৬ যা ১৯ দ্বারা বিভাজ্য।[তথ্যসূত্র প্রয়োজন]
- সুরা আল-আলাক কুরআন শরীফের পিছন দিক দিয়ে ১৯ নং সুরা।[তথ্যসূত্র প্রয়োজন]
- মুহাম্মদ (স) এর ওপর সর্বশেষ নাযিল হওয়া সুরা নাসর যার শব্দ সংখ্যা ১৯।
- কুরআন শরীফের মোট সুরা সংখ্যা ১১৪ যা ১৯ দ্বারা বিভাজ্য।[তথ্যসূত্র প্রয়োজন]
- কুরআন শরীফের ১ম বাক্য বিসমিল্লাহির রাহমানির রাহিম যাতে মোট অক্ষর সংখ্যা ১৯।[৫]
- "বিসমি" কুরআনে মোট ১৯ বার উল্লেখ করা আছে।[৬]
- পরবর্তি শব্দ "আল্লাহ" উল্লেখ আছে ২৬৯৮ বার যা ১৯ দ্বারা বিভাজ্য।
।[৭]
- পরের শব্দ "রাহমান" আছে ৫৭ বার যা ১৯ দ্বারা বিভাজ্য।[৮]
- পরের শব্দ "রাহীম" আছে মোট ১১৪ বার যা ১৯ দ্বারা বিভাজ্য। ।[৭]
- সুরা ফাতিহা পড়লে ঠোঁট ১৯ বার এক জায়গায় হয় ।
রাশাদ খলিফার সমালোচনা
[সম্পাদনা]উইকিপিডিয়ার জন্য মানসম্মত অবস্থায় আনতে এই অনুচ্ছেদ উইকিকরণ প্রয়োজন। অনুগ্রহ করে সম্পর্কিত আন্তঃসংযোগ প্রয়োগের মাধ্যমে নিবন্ধের উন্নয়নে সহায়তা করুন। |
১৯৮০ খ্রিস্টাব্দের সেপ্টেম্বর মাসে স্কেপটিকাল এনকুইরার পত্রিকায় রাশাদ খলিফার বিশ্লেষণ যে ত্রুটিপূর্ণ তা উল্লেখ করে "কোরানের কৌশলী পাঠ" বলে প্রথম সমালোচনামূলক মন্তব্য প্রদান করেন আমেরিকার গণিতবিদ-বিজ্ঞানী মার্টিন গার্ডনার। ইংরেজির সাথে আরবি হরফের মেলবন্ধন করতে গিয়েই হয়তো গার্ডনার ভুল করে থাকতে পারেন। [৯]। বাংলাদেশে বিজ্ঞান ও যুক্তিবাদী কাউন্সিল থেকে জানুয়ারি ২০১০ সালে প্রকাশিত যুক্তি পত্রিকায় এই ১৯ তত্ত্বের বিস্তৃত সমালোচনা ছাপা হয়েছে। সৈকত চৌধুরী এবং অনন্ত বিজয় দাশ লিখিত এই প্রবন্ধে রাশাদ খলিফার ১৯ তত্ত্বের বিভিন্ন দুর্বলতা ও বিভ্রান্তি নিয়ে আলোচনা করা হয় এবং একে খলিফার ইচ্ছাকৃত মিথ্যাচার হিসেবে অভিযুক্ত করা হয়। এ ছাড়া ইন্টারনেটে অন্যান্য সমালোচনাকারীরা রাশাদ খলিফার এই সাংখ্যিক তাৎপর্য-এর পুরো ব্যাপারটিকে বিভ্রান্তিকর হিসেবে উল্লেখ করেন।যদিও অকাট্য প্রমাণ কেউ দেখাতে পারেনি খলিফা রাশাদের ব্যাপারে [১০][১১][১২]। ।[তথ্যসূত্র প্রয়োজন]
সমালোচনাকারীরা আরো বলেন, রাশাদ খলিফার কোরানে[১] তিনি উনি ১৯ তত্ত্বকে সার্থকতা দিতে গিয়ে ৯:১২৮ এবং ৯:১২৯ - এই আয়াতগুলো বাদ দিয়েছেন বলে অভিযোগ আছে। অথচ যে কোন সাইটের কোরানের অনুবাদে উক্ত আয়াতগুলো পাওয়া যায়।
খলিফা নিজেও বহু জায়গায় নিজেকে 'আল্লাহর ম্যাসেঞ্জার' হিসেবে অভিহিত করেছিলেন এবং দস্তখত দিয়েছিলেন [১৩],[১৪] । খলিফার নিজেকে 'আল্লাহর ম্যাসেঞ্জার' হিসাবে দাবির বিষয়টি ইসলাম অ্যাওয়ারনেস ও নলেজরাশ সহ কয়েকটি ওয়েবসাইটে সমালোচিত হয়েছে [১৫][১৬] ।
সাংখ্যিক তাৎপর্যের সমালোচনা
[সম্পাদনা]"সাংখ্যিক তাৎপর্য" ব্যাপারটি সর্বজনগ্রাহ্য বিষয় বলে বিবেচিত।আবার কিছু সংখ্যকের কাছে বিবেচ্য নয় বলে মনে করা হয়।তবে বেশির ভাগ মানুষ সাংখ্যিক তাৎপর্যের ব্যাপারে একমত ও আগ্রহী। বহুক্ষেত্রেই গবেষকেরা দেখিয়েছেন যে, মূলতঃ এটা হতে পারে অন্য ধর্মগ্রন্থের ক্ষেত্রেও। যেমন, রুশ বংশোদ্ভুত গণিতবিদ এবং খ্রিস্টান ধর্মতাত্ত্বিক ড. ইভান পেনিন (১৮৫৫-১৯৪২) একদা দাবি তুলেছিলেন বাইবেল ‘ধর্মগ্রন্থটি ৭ সংখ্যা দ্বারা চমৎকারভাবে আবদ্ধ’।[১৭] কেউ আবার ১২ এর সাথে বাইবেলের সম্পর্ক খুঁজে পেয়েছেন।[১৮] আরেকটি উদাহরণ হতে পারে ইহুদিদের বিখ্যাত শেমহামেফোরাস (Shemhamphorasch)। এক্সোডাসের ১৪:১৯-২১, এই তিনটি আয়াতের মাধ্যমে তারা স্রষ্টার ৭২টি নাম উদ্ভাবন করেছে। ইহদীরা দাবী করে এই প্রতিটি আয়াতে ৭২টি করে বর্ণ আছে। [১৯] [২০][২১][২২][২৩]
তথ্যসূত্র
[সম্পাদনা]- ↑ "سؤال عن الإعجاز العددي ، وتكرار بعض الكلمات في القرآن بعدد مُتساوٍ . فما مدى صحة ذلك ؟" [সংখ্যাগত আশ্চর্য সম্পর্কে জিজ্ঞাসা]। www.saaid.net। সংগ্রহের তারিখ ২০১৯-০১-২৫।
- ↑ Khalifa, Rashad। Quran The Final Testament। পৃষ্ঠা 375। আইএসবিএন 978-1-890825-00-3।
- ↑ ইসলামিক ফাউন্ডেশন কর্তৃক ১৯৯০ সালে মুদ্রিত কুরআন শরীফে উনিশ সমর্কে ১৯ জন ফেরেশতার কথাই উল্লেখ আছে
- ↑ মাওলানা ইউসুফ আলী ও মাওলানা দরীয়াবাদীর ব্যাখ্যা
- ↑ Khalifa, Rashad। "Quran: The Visual Presentation of the Miracle" (পিডিএফ)। MasjidTucson.org।
- ↑ Khalifa, Rashad। "Quran: Visual Presentation of the Miracle" (পিডিএফ)। Masjidtucson.org।
- ↑ ক খ উদ্ধৃতি ত্রুটি:
<ref>
ট্যাগ বৈধ নয়;The quraans numerical miracle
নামের সূত্রটির জন্য কোন লেখা প্রদান করা হয়নি - ↑ Khalifa, Rashad। "Quran: Visual Presentation of the Miracle" (পিডিএফ)। Masjid Tucson। সংগ্রহের তারিখ ৯ অক্টোবর ২০১৫।
- ↑ Martin Gardner, The numerology of Dr. Rashad Khalifa-Scientist, Skeptical Inquirer, Sept-Oct, 1997
- ↑ Amar Khan (Compiler), Miracles of the Quran Exposed
- ↑ The Mysterious 19 in the Quran : A Critical Evaluation
- ↑ Are there Mathematical Miracles in the Qur'an or the Bible?
- ↑ "Rashad Khalifa declares himself "Messenger Of God""। ৪ এপ্রিল ২০১০ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ৯ মার্চ ২০১০। অজানা প্যারামিটার
|যদিও এতে রাশাদের পিছনে কারও অসৎ উদ্দেশ্য থাকার সম্ভাবনাই বেশি। অকার্যকর-ইউআরএল=
উপেক্ষা করা হয়েছে (সাহায্য) - ↑ "Few years before his death, Dr. Khalifa declared that he is the messenger of the covenant . . . prophesied in the Quran in 3:81 He presented a lengthy document with proofs of his messengership from the Quran. He defended the fact that the Prophet Muhammed was the LAST Prophet according to the Quran but not the LAST messenger . . . .", Quoted from Appendix 2 of the Authorized English translation of the Quran of Dr. Rashad Khalifa
- ↑ Rashad Khalifa Purifier or Pretender?,Paigham Mustafa
- ↑ "Rashad Khalifa - 20th Century Hadithist?"। ১৮ ডিসেম্বর ২০০৭ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ৯ মার্চ ২০১০।
- ↑ Keith Newman, Is God A Mathematician?
- ↑ Martin Gardner, The numerology of Dr. Rashad Khalifa-Scientist, পুর্বোক্ত
- ↑ John Allen Paulos, Irreligion: A Mathematician Explains Why the Arguments for God Just Don't Add Up, Hill and Wang, 2008, paperback ed, আইএসবিএন ৯৭৮-০-৮০৯০-৫৯১৮-৮
- ↑ Underwood Dudley, "Numerology: Comes the Revolution," Skeptical Inquirer, September/October 1998.
- ↑ John Allen Paulos, Innumeracy: Mathematical Illiteracy and Its Consequences, Vintage Books, 1990
- ↑ numerology, skeptic's dictionary
- ↑ Underwood Dudley, Numerology: Or, What Pythagoras Wrought (Spectrum), The Mathematical Association of America, 1997, আইএসবিএন ০-৮৮৩৮৫-৫২৪-০
বহিঃসংযোগ
[সম্পাদনা](ইংরেজি)
- Mathematical miracle of the Quran
- Masjid Tucson Website
- Introduction of The Proof
- Appendix 1 from Dr Khalifa's Quran Translation describing Quran Code
- God's Messenger of the Covenant claim
- God's Miracle in Quran
- Answers offered to some of the criticism ওয়েব্যাক মেশিনে আর্কাইভকৃত ২ এপ্রিল ২০১৬ তারিখে
- Detailed description about the cryptographic code of Quran ওয়েব্যাক মেশিনে আর্কাইভকৃত ১৯ ডিসেম্বর ২০১৬ তারিখে