কুয়ালালামপুর টাওয়ার
কুয়ালালামপুর টাওয়ার | |
---|---|
Menara Kuala Lumpur منارا کوالا لومڤور | |
সাধারণ তথ্যাবলী | |
অবস্থা | সম্পন্ন |
ধরন | টেলিযোগাযোগ, ইসলামের নানা উদযাপনের চাঁদ দেখা, এডভেঞ্চার (বেজ জাম্প), পর্যটন, সংস্কৃতি |
অবস্থান | কুয়ালালামপুর, মালয়েশিয়া |
স্থানাঙ্ক | ৩°৯′১০″ উত্তর ১০১°৪২′১২″ পূর্ব / ৩.১৫২৭৮° উত্তর ১০১.৭০৩৩৩° পূর্ব |
নির্মাণকাজের উদ্বোধন | ১ অক্টোবর ১৯৯১ |
নির্মাণ শুরু | ৪ অক্টোবর ১৯৯১ |
সম্পূর্ণ | ১৩ সেপ্টেম্বর ১৯৯৪ |
কার্যারম্ভ | ২৩ জুলাই ১৯৯৬ ১ অক্টোবর ১৯৯৬ (আনুষ্ঠানিক) |
উদ্বোধন | ১ অক্টোবর ১৯৯৬ |
সংস্কার | ১ জানুয়ারি ২০১২ - ৩১ ডিসেম্বর ২০১৫ |
Height | |
শুঙ্গ শিখর পর্যন্ত | ৪২১ মি (১,৩৮১ ফু) |
ছাদ পর্যন্ত | ৩৩৫ মি (১,০৯৯ ফু) |
কারিগরী বিবরণ | |
তলার সংখ্যা | ৬ |
তলার আয়তন | ৭,৭০০ মি২ (৮২,৮৮২ ফু২) |
লিফট/এলিভেটর | ৪ |
নকশা ও নির্মাণ | |
স্থপতি | কুমুলান সেনিরেকা Sdn. Bhd. |
তথ্যসূত্র | |
[১][২] |
কুয়ালালামপুর টাওয়ার (কে এল টাওয়ার; মালয়: Menara Kuala Lumpur; চীনা: 吉隆坡塔) মালয়শিয়ার কুয়ালালামপুরে অবস্থিত একটি টেলিযোগাযোগের টাওয়ার। ১৯৯৫ সালের ১ মার্চে এটির নির্মাণ সম্পূর্ণ হয়। এটির মাথায় একটি অ্যান্টেনা রয়েছে। অ্যান্টেনাসহ টাওয়ারটির মোট উচ্চতা ৪২১ মিটার এবং এটি বিশ্বের ৭ম বৃহত্তম মুক্তভাবে দন্ডায়মান টাওয়ার। এটির ছাদ ৩৩৫ মিটার উঁচুতে অবস্থিত। নিচের বাকি অংশতে রয়েছে সিড়ি এবং লিফট, যার সাহায্যে টাওয়ারটির ওপরে ওঠা যায়। টাওয়ারটির ওপরে রয়েছে একটি ঘূর্ণায়মান রেঁস্তোরা যা দ্বারা শহরের পুরোটা দর্শন করা যায়।
সিড়ি দিয়ে ওঠার প্রতিযোগিতা নিয়মিত আয়োজন করা হয়। এছাড়া ইসলামের নানান পবিত্র মাসের জন্যে চাঁদ দেখার জন্য এই টাওয়ারটি ব্যবহার করা হয়। এই টাওয়ারটি কুয়ালালামপুরের সবচেয়ে উঁচু টাওয়ার এবং জনসাধারণের জন্য উন্মুক্ত।
ইতিহাস
[সম্পাদনা]মালয়শিয়ার চতুর্থ প্রধানমন্ত্রী মাহাথির বিন মোহাম্মদ ১৯৯১ সালের ১ অক্টোবর টাওয়ারটির ভিত্তিপ্রস্থর স্থাপন করেন। তিন ধাপে টাওয়ারটি তৈরি করা হয়।
নির্মাণের প্রথম ধাপটি ছিল জালান বুকিত নানাস পাহাড়টিকে কেটে একটি প্রশস্ত জায়গার সৃষ্টি করা এবং ঐ খনন কাজের স্থান থেকে মাটি সরিয়ে ফেলা। ১৯৯২ সালের ১ আগস্টে এই ধাপটি সম্পূর্ণ হয়।
১৯৯২ সালের ১ জুলাই, নির্মাণের দ্বিতীয় ধাপ শুরু হয়। প্রায় ৫০,০০০ হাজার ঘনমিটার কংক্রিট টানা ৩১ ঘণ্টা ধরে টাওয়ারটির ভিত্তিতে ফেলা হয়। এটি মালয়শিয়ার অবকাঠামোগত উন্নয়নের ক্ষেত্রে একটি অনন্য দৃষ্টান্ত। ভিত্তিসম্পর্কিত সব কাজ ১৯৯৩ সালের ১ এপ্রিল শেষ হয়।
নির্মাণের ৩য় ধাপটি ছিল টাওয়ারটির উপরের অংশ তৈরি করা। ১৯৯৩ সালের মে মাসে এটির কাজ শুরু হয়।
১৯৯৬ সালের ১ অক্টোবর মাহাথির বিন মোহাম্মদ টাওয়ারটি উদ্বোধন করেন। উদ্বোধন অনুষ্ঠানে বিশিষ্ট ব্যক্তিবর্গ উপস্থিত ছিলেন।[৩] বিশিষ্ট অতিথিদের মধ্যে ছিলেন ইয়াং দি-পেরতুয়ান আগাং, তুয়াংকু জাফর ইবনি আলমরহুম তুয়াংকু আবদুল রহমান, রাজা পারমাইসুরি আগোং তুয়াংকু নাজিহা, ব্রুনাইয়ের সুলতানের স্ত্রী সুলতানা হাজাহ সালেহা এবং রাজকুমারী হাজা মরিয়ম বিনতি আবদুল আজিজ।
সম্প্রচার
[সম্পাদনা]কুয়ালালামপুর টাওয়ার ওয়ার্ল্ড ফেডারেশন অব গ্রেট টাওয়ারসের একটি সদস্য। বিভিন্ন সংস্থার সম্প্রচারের কাজে টাওয়ারটি ব্যবহার করা হয়। এটি মূলত টেলিভিশন সম্প্রচারের জন্য তৈরি করা হয়েছিল। তবে এটির নির্মানকাজের সময় রেডিও সম্প্রচারের এন্টেনাও সংযোজন করা হয়।
- টেলিভিশন :
- রেডিও টেলিভিশন মালয়েশিয়া
- টিভি১ (ভিএইচএফ চ্যানেল ৫)
- টিভি২ (ভিএইচএফ চ্যানেল ৮)
- মিডিয়া প্রিমা বেরহাদ
- এনটিভি৭ (ইউএইচএফ চ্যানেল ৩৫)
- আলহিজরাহ মিডিয়া কর্পোরেশন
- টিভি আলহিজরাহ (ইউএইচএফ চ্যানেল ৫৫)
- রেডিও টেলিভিশন মালয়েশিয়া
- রেডিও :
- রেডিও টেলিভিশন মালয়েশিয়া
- রেডিও ক্লাসিক এফএম (৮৭.৭ মেগাহার্টজ)
- জাতীয় এফএম (৮৮.৫ মেগাহার্টজ)
- এআই এফএম (৮৯.৩ মেগাহার্টজ )
- TraXX FM (৯০.৩ মেগাহার্টজ)
- Asyik FM (৯১.১ মেগাহার্টজ)
- মিনাল এফএম (৯২.৩ মেগাহার্টজ)
- কেএল এফএম (৯৭.৬ মেগাহার্টজ)
- রেডিও টেলিভিশন মালয়েশিয়া
টাওয়ার থেকে সম্প্রচারিত টেলিভিশন স্টেশনগুলির মধ্যে বেসরকারি (বাণিজ্যিক) স্টেশন এনটিভি৭ রয়েছে। এনটিভি৭ মিডিয়া প্রিমা বারহাদের একটি সহ সংস্থা যারা ২০০ মিটার অ্যান্টেনা থেকে প্রাপ্ত ইউএইচএফের মাধ্যমে সম্প্রচার করে।
মালয়েশিয়ায় বর্তমানে অ্যানালগ সম্প্রচার প্রচলিত এবং সমস্ত টেলিভিশনের সম্প্রচার অ্যানালগ হতে হয়। কুয়ালালামপুর টাওয়ার সম্পূর্ণ ডিজিটাল সম্প্রচারের জন্য একটি নির্ভরযোগ্য সম্প্রচার অ্যান্টেনা নয় কারণ টাওয়ারটি বন বা উঁচু ভবন দ্বারা বেষ্টিত ও উচ্চতর ফ্রিকোয়েন্সি তরঙ্গ প্রেরণ করার মতো লম্বা নয়।
ফ্রিকোয়েন্সি অনুযায়ী চ্যানেলের তালিকা
[সম্পাদনা]- এফএম ৮৭.৭ মেগাহার্টজ – রেডিও ক্লাসিক এফএম (১ কিলোওয়াট )
- এফএম ৮৮.৫ মেগাহার্টজ – জাতীয় এফএম (১ কিলোওয়াট )।
- এফএম ৮৯.৩ মেগাহার্টজ – Ai এফএম (১ কিলোওয়াট )
- এফএম ৯০.৩ মেগাহার্টজ – TraXX এফএম (১ কিলোওয়াট )
- এফএম ৯১.১ মেগাহার্টজ - Asyik এফএম (১ কিলোওয়াট )
- এফএম ৯২.৩ মেগাহার্টজ - Minnal এফএম (১ কিলোওয়াট )
- এফএম ৯৭.৬ মেগাহার্টজ – কেএল এফএম এফএম (১ কিলোওয়াট )
সকল রেডিও বৃহত্তর কুয়ালালামপুরের জন্য কুয়ালালামপুর টাওয়ারের ৭ কিলোওয়াট রিলেতে সম্প্রচার করে।
- ভিএইচএফ ৫ - টিভি১ (১০ কিলোওয়াট/১০০ কিলোওয়াট-ইলেকট্রিক)
- ভিএইচএফ ৮ - টিভি২ (১০ কিলোওয়াট/১০০ কিলোওয়াট-ইলেকট্রিক)
- ইউএইচএফ ৩৫ - এনটিভি৭
- ইউএইচএফ ৫৫ - টিভি আলহিজরাহ
সকল টেলিভিশন বৃহত্তর কুয়ালালামপুরের জন্য কুয়ালালামপুর টাওয়ারের ২০ কিলোওয়াট রিলেতে সম্প্রচার করে।
তথ্যসমূহ
[সম্পাদনা]টেলিযোগাযোগের টাওয়ারগুলোর মধ্যে কে এল টাওয়ার বিশ্বের সপ্তম বৃহত্তম টাওয়ার (এর আগে রয়েছে জাপানের টোকিও স্কাই ট্রি, চীনের ক্যান্টন টাওয়ার, কানাডার সিএন টাওয়ার, রাশিয়ার ওস্টানকিনো টাওয়ার, চীনের ওরিয়েন্টাল পার্ল টাওয়ার এবং ইরানের মিলাদ টাওয়ার)। টেলিযোগাযোগ ও সম্প্রচারই ছিল টাওয়ারটি তৈরির প্রধান উদ্দেশ্য। কে এল টাওয়ার কুয়ালালামপুরের একটি প্রতীক।
টাওয়ারটি পাঁচটি প্রধান অংশে বিভক্ত:
- রক্ষনাগার, সুরক্ষা ও তদারকির জন্য ভিত্তিস্তরটি ৫ তলা বিশিষ্ট করা হয়েছে
- পর্যটন ভবনটিতে রয়েছে প্রশাসনিক ভবন এবং শপিং মল
- ২০৫৮ টি সিঁড়ি ও চারটি লিফট রয়েছে
- টাওয়ারটির মাথায় জনসাধারণের জন্য পর্যবেক্ষণের সুযোগ করে দেয়া হয়েছে এবং একটি ঘূর্ণায়মান রেস্তোরাঁ রয়েছে। এছাড়াও আছে টেলিযোগাযোগ এবং সম্প্রচার কেন্দ্র
- টাওয়ারটির একদম মাথায় রয়েছে অ্যান্টেনা
কেএল টাওয়ার নির্মাণের সময়, নির্মাণকারীরা ১০০ বছরের পুরানো জেলুটং গাছের (ডায়ারা কস্টুলাটা) চারপাশে একটি রক্ষণাবেক্ষণ প্রাচীর নির্মাণের করে। এই গাছটির ক্ষতি না করতে আরএম৪৩০,০০০ খরচ করে টাওয়ারটি সরানো হয়েছিল।
কেএল টাওয়ার পরিচালনা করেন মেনারা কুয়ালালামপুর এসডিএন বিএইচডি। এটি টেলিকম মালয়েশিয়া গ্রুপের সম্পূর্ণ মালিকানাধীন একটি সহ সংস্থা।
পরিবহন
[সম্পাদনা]টাওয়ারটি জালান পুঙ্কাকে অবস্থিত। নিকটতম দ্রুত ট্রানজিট স্টেশনগুলির মধ্যে রয়েছে বুকিত নানাস মনোরেল স্টেশন এবং ডাং ওয়াঙ্গি এলআরটি স্টেশন। টাওয়ারটিতে গাড়ি এবং বাসের জন্য বহিঃপার্কিংও রয়েছে (কেএল টাওয়ার পার্কিং রেট)।
পর্যটন
[সম্পাদনা]পর্যটকরা শহরটির চারপাশের দৃশ্য দেখার জন্যই কে এল টাওয়ারটিতে ঘুরতে আসে। টাওয়ারটির লিফট ৫৪ সেকেন্ডে পর্যবেক্ষণ ডেকে উঠতে পারে এবং ৫২ সেকেন্ডে নিচে নেমে আসে।
চিত্রপ্রদর্শনী
[সম্পাদনা]-
পর্যবেক্ষণ ডেকের ভেতরকার দৃশ্য
-
নিচ থেকে কেএল টাওয়ার টাওয়ার
-
মালয়েশিয়ায় কুয়ালালামপুর টাওয়ার
-
কুয়াশার মাঝে কুয়ালালামপুর টাওয়ার
আরও দেখুন
[সম্পাদনা]তথ্যসূত্র
[সম্পাদনা]- ↑ স্কাইস্ক্র্যাপারপেইজ -এ কুয়ালালামপুর টাওয়ার
- ↑ ইম্পরিস এ কুয়ালালামপুর টাওয়ার
- ↑ Kuala Lumpur Tower was opened, 1 October 1996 ওয়েব্যাক মেশিনে আর্কাইভকৃত ২৮ ডিসেম্বর ২০২০ তারিখে New Straits Times
বহিঃসংযোগ
[সম্পাদনা]- দাপ্তরিক ওয়েবসাইট
- স্ট্রাকচারে কুয়ালালামপুর টাওয়ার (ইংরেজি)
- ওপেনস্ট্রিটম্যাপে কুয়ালালামপুর টাওয়ার সম্পর্কিত ভৌগোলিক উপাত্ত