কালিপদ বসু

উইকিপিডিয়া, মুক্ত বিশ্বকোষ থেকে
কালীপদ বসু
(কে. পি. বসু)
জন্ম
কালীপদ বসু

২৪ নভেম্বর ১৮৬০
মৃত্যুনভেম্বর,১৯১৪
জাতীয়তাবাঙালি
মাতৃশিক্ষায়তনকলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়
দাম্পত্য সঙ্গীমেঘমালা বসু

কালীপদ বসু, যিনি কে. পি. বসু নামেও পরিচিত, (২৪ নভেম্বর,১৮৬০ - এপ্রিল,১৯১৫) [১] একজন প্রখ্যাত বাঙালি গণিতশাস্ত্রবিদ ও বিজ্ঞানশিক্ষক।[২] তিনি কে. পি. বসু পাবলিশিং কোম্পানির প্রতিষ্ঠাতা।[৩]

জন্ম ও বাল্যকাল[সম্পাদনা]

কে. পি. বসু বাংলাদেশের ঝিনাইদহ জেলার হরিশংকরপুর গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন।[২] তার পিতার নাম মহিমাচরণ বসু যিনি স্থানীয় হরিশংকরপুর রেজিস্ট্রি অফিসের (তৎকালীন ঝিনাইদহ রেজিস্ট্রি অফিস হরিশংকরপুর গ্রামে অবস্থিত ছিল) একজন ভেন্ডার ছিলেন।[তথ্যসূত্র প্রয়োজন]

জগদ্বিখ্যাত গণিতবিদ অধ্যাপক ‘কালিপদ বসু’ বিশ্বব্যাপী সুপরিচিত কে. পি. বসু নামে। তিঁনি ঝিনেদার সূর্যসন্তান। ‘’ব্রিটিশ রাজ’’ আমলে অথাৎ ২৪ নভেম্বর’ ১৮৬০ খ্রিস্টাব্দে তৎকালীন ‘’বেঙ্গল প্রেসিডেন্সি’’ অঞ্চলের অবিভক্ত ভারতের সুপরিচিত ঐতিহাসিক জেলা ‘’যশোর’’এর উল্লেখযোগ্য মহাকুমা ‘’ঝিনাইদহ’’ সদরের হরিশংকরপুর গ্রামের মহিমাচরণ বসু’র ঘর আলো করে জন্ম গ্রহণ করেন, কালীপদ বসু। যা বর্তমানে ‘’বাংলাদেশের ঝিনাইদহ জেলার’’ সদর থানার হরিশংকরপুর ইউনিয়নের অন্তর্গত, সেই কারণে ধরে নেয়া যেতে পারে হরিশংকরপুর গ্রামটি উক্ত ইউনিয়নের রাজধানী। , কে. পি. বসু’র পিতা মহিমাচরণ বসু, স্থানীয় হরিশংকরপুর রেজিস্ট্রি অফিসের {(*তৎকালীন ঝিনাইদহ রেজিস্ট্রি অফিস হরিশংকরপুর গ্রামে অবস্থিত ছিল) (**এই ইতিহাস থেকে হরিশংকরপুর’এর গুরুত্ব নিশ্চয় বোঝা যায়)} একজন ভেন্ডার ছিলেন। কে. পি. বসু স্বগ্রামের কুমারী মেঘমালা ঘোষের সাথে বিয়ে বন্ধনে আবদ্ধ হন।

শিক্ষাজীবন[সম্পাদনা]

গ্রামের স্কুলে পড়াশোনা সমাপনান্তে তিনি লর্ড রিপন কলেজে ভর্তি হন এবং এখানে থেকে এন্ট্রান্স পাশ করে কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ে হতে গণিত শাস্ত্রে উচ্চতর ডিগ্রি অর্জন করেন।[২][৪] কে.পি বসুর শিক্ষা জীবনের সূচনা হয় নিজ গ্রামের পাঠশালা’য় মেধাবী শিক্ষক নছিম উদ্দিন মন্ডলের কাছে। কে. পি বসু’র গণিত মনস্কতা সৃষ্টিতে তাঁর ভূমিকা অপরিসীম। কে. পি. বসু গ্রামের স্কুলে পাঠ সমাপনান্তে, লর্ড রিপন কলেজে { (বতমান: ‘’সুরেন্দ্রনাথ কলেজ’’)* ভর্তি হন

                                                                                                                                                                                      এবং লর্ড রিপন কলেজ থেকে এন্ট্রান্স পাশ করে ‘’কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ে’’ গণিত শাস্ত্রে উচ্চতর ডিগ্রি অর্জন করেন। পড়াশোনা শেষ করে তিঁনি, ১৮৯২ সালে ‘’ঢাকা কলেজে’র গণিত শিক্ষক হিসেবে যোগদান করেন এবং  আমৃত্যু কর্মরত ছিলেন। 

কে. পি বসু ১৯০২ খ্রিস্টাব্দে ‘’কলকাতায়’’ অনুষ্ঠিত সর্বভারতীয় ম্যাথামেটিক্স কনফারেন্সে 'হাউ টু টিচ ম্যাথামেটিক্স' প্রবন্ধটি উপস্থাপন করেন। তিনি তখনকার প্রচলিত 'কড়াকিয়া' ও 'গণ্ডাকিয়া' পদ্ধতি বর্জন করে দশমিক পদ্ধতি চালুর সুপারিশ করেন। অ্যালজ়েব্রা মেড ইজ়ি (১৮৯০), সহজ বীজগণিত (অ্যালজ়েব্রা মেড ইজ়ির বাংলা সংস্করণ, প্রকাশকাল ১৯৩৭)’সহ বেশ কিছু গণিতশাস্ত্রের পাঠ্যপুস্তক রচনা করেন।

কর্মজীবন[সম্পাদনা]

কালিপদ বসুর বাড়ি।

পড়াশোনা শেষ করে তিনি ১৮৯২ সালে ঢাকা কলেজে গণিত শিক্ষক হিসাবে যোগদান করেন এবং এখানেই আমৃত্যু কর্মরত ছিলেন।[২][৫] ‘কে. পি বসু পাবলিশিং’ কোম্পানী‘’কলকাতায়’’প্রতিষ্ঠা করেন। অধ্যবসায় ও পরিশ্রম এবং মেধা ও প্রজ্ঞায় তিঁনি প্রতিষ্ঠা অর্জন ও প্রভূত অর্থের মালিক হয়েছিলেন। তাই ১৯০৭ সালে, জন্ম ভূমি হরিশংকরপুরের নবগঙ্গা নদীর তীরে, এক একর জমির উপর ১৭ কক্ষ বিশিষ্ট প্রাসাদোপম দ্বিতল ভবন নির্মাণ করেন। কর্মরত অবস্থায় প্রবাসে থেকেও তিনি নিজ গ্রামের উন্নতি ও সংস্কারসাধনে উদ্যোগী ছিলেন। ব্যক্তিগত জীবনে এ মহান গণিতবিদ অত্যন্ত সদালাপী, অমায়িক ও অনাড়ম্বর ছিলেন।

অবদান[সম্পাদনা]

১৯০২ খ্রিস্টাব্দে কলকাতায় অনুষ্ঠিত সর্বভারতীয় ম্যাথামেটিক্স কনফারেন্সে তার পঠিত'হাউ টু টিচ ম্যাথামেটিক্স' প্রবন্ধে তিনি তখনকার প্রচলিত 'কড়াকিয়া' ও 'গণ্ডাকিয়া' পদ্ধতি বর্জন করে দশমিক পদ্ধতি চালুর সুপারিশ করেন। কর্মরত অবস্থায় প্রবাসে থেকেও তিনি নিজের গ্রামের উন্নতি ও সংস্কারসাধনে উদ্যোগী ছিলেন। [১]

কে. পি বসু ১৯০২ খ্রিস্টাব্দে ‘’কলকাতায়’’ অনুষ্ঠিত সর্বভারতীয় ম্যাথামেটিক্স কনফারেন্সে 'হাউ টু টিচ ম্যাথামেটিক্স' প্রবন্ধটি উপস্থাপন করেন। তিনি তখনকার প্রচলিত 'কড়াকিয়া' ও 'গণ্ডাকিয়া' পদ্ধতি বর্জন করে দশমিক পদ্ধতি চালুর সুপারিশ করেন। অ্যালজ়েব্রা মেড ইজ়ি (১৮৯০), সহজ বীজগণিত (অ্যালজ়েব্রা মেড ইজ়ির বাংলা সংস্করণ, প্রকাশকাল ১৯৩৭)’সহ বেশ কিছু গণিতশাস্ত্রের পাঠ্যপুস্তক রচনা করেন।

কে.পি বসু ১৮৮২ সালে হান্টার কমিশনের সুপারিশকৃত ইউরোপীয় সংস্করণ ‘আধুনিক এলজাবরা’ বইটির অধ্যয়ন ও অনুশীলনের পথকে সুগম, প্রাঞ্জল ও সহজ করে তোলেন। কে.পি বসু , অসংখ্য নতুন উদ্ভাবনী, অংক শাস্ত্রের কলেবর বৃদ্ধি ও উৎকর্ষ সাধন করেছেন। অধ্যাপনার সাথে সাথে তিনি এ্যালজেব্রা ও জ্যামিতি শাস্ত্রের উপর গবেষণা চালিয়ে যান। তাঁর ঐকান্তিক সাধনায় ‘এ্যালজেব্রা মেড ইজি’ ‘মর্ডান জিওমেট্রি’ ‘ইন্টারমিডিয়েট সলিড জিওমেট্রি’ প্রভৃতি গ্রন্থপ্রণীত হয়। প্রকাশনা শিল্পের প্রতিও তাঁর মনোযোগ আকৃষ্ট হয়।

সম্মাননা[সম্পাদনা]

ঝিনাইদহ শহরে তার নামে একটি সড়কের নাম 'কে. পি. বসু সড়ক' নামকরণ করা হয়েছে।[২][৩] কে. পি. বসু ১৯১৪ খ্রিস্টাব্দের নভেম্বর ‘কোনো একদিন’ পার্নিসাস ‘ম্যালেরিয়া’ জ্বরে আক্রান্ত হয়ে ‘’বাংলাদেশ’’এর রাজধানী ‘’ঢাকা’’তে জগদ্বিখ্যাত গণিতবিদ পরলোক গমন করেন ‘’বাঙালি’’ সূর্যসন্তান হারায়। তাঁর মৃতদেহ ঝিনাইদহে পৌঁছালে সকল অফিস আদালত বন্ধ হয়ে যায়। শোকাভিভূত হাজার হাজর মানুষ তাকে শেষ শ্রদ্ধায় নবগঙ্গা নদীর তীরে উপস্থিত হয়। ঝিনাইদহ শহরে তাঁর নামে একটি সড়কের নামকরণ করা হয়।

গ্রন্থরাজি[সম্পাদনা]

তিনি বেশ কিছু গণিতশাস্ত্রের পাঠ্যপুস্তক রচনা করেন:[২]

  • অ্যালজ়েব্রা মেড ইজ়ি[৬] (১৮৯০)
  • সহজ বীজগণিত (অ্যালজ়েব্রা মেড ইজ়ির বাংলা সংস্করণ, প্রকাশকাল ১৯৩৭) উদ্ধৃতি ত্রুটি: <ref> ট্যাগ বৈধ নয়; নাম কোন সরল পূর্ণসংখ্যা হতে পারবে না। একটি বিবরণমূলক শিরোনাম ব্যবহার করুন
  • মডার্ন জিওমেট্রি উদ্ধৃতি ত্রুটি: <ref> ট্যাগ বৈধ নয়; নাম কোন সরল পূর্ণসংখ্যা হতে পারবে না। একটি বিবরণমূলক শিরোনাম ব্যবহার করুন
  • ইন্টারমিডিয়েট সলিড জিওমেট্রি উদ্ধৃতি ত্রুটি: <ref> ট্যাগ বৈধ নয়; নাম কোন সরল পূর্ণসংখ্যা হতে পারবে না। একটি বিবরণমূলক শিরোনাম ব্যবহার করুন
  • ম্যাট্রিকুলেশন জিওমেট্রিউদ্ধৃতি ত্রুটি: <ref> ট্যাগ বৈধ নয়; নাম কোন সরল পূর্ণসংখ্যা হতে পারবে না। একটি বিবরণমূলক শিরোনাম ব্যবহার করুন(১৯৩৩)

কে. পি বসু ১৯০২ খ্রিস্টাব্দে ‘’কলকাতায়’’ অনুষ্ঠিত সর্বভারতীয় ম্যাথামেটিক্স কনফারেন্সে 'হাউ টু টিচ ম্যাথামেটিক্স' প্রবন্ধটি উপস্থাপন করেন। তিনি তখনকার প্রচলিত 'কড়াকিয়া' ও 'গণ্ডাকিয়া' পদ্ধতি বর্জন করে দশমিক পদ্ধতি চালুর সুপারিশ করেন। অ্যালজ়েব্রা মেড ইজ়ি (১৮৯০), সহজ বীজগণিত (অ্যালজ়েব্রা মেড ইজ়ির বাংলা সংস্করণ, প্রকাশকাল ১৯৩৭)’সহ বেশ কিছু গণিতশাস্ত্রের পাঠ্যপুস্তক রচনা করেন।

কে.পি বসু ১৮৮২ সালে হান্টার কমিশনের সুপারিশকৃত ইউরোপীয় সংস্করণ ‘আধুনিক এলজাবরা’ বইটির অধ্যয়ন ও অনুশীলনের পথকে সুগম, প্রাঞ্জল ও সহজ করে তোলেন। কে.পি বসু , অসংখ্য নতুন উদ্ভাবনী, অংক শাস্ত্রের কলেবর বৃদ্ধি ও উৎকর্ষ সাধন করেছেন। অধ্যাপনার সাথে সাথে তিনি এ্যালজেব্রা ও জ্যামিতি শাস্ত্রের উপর গবেষণা চালিয়ে যান। তাঁর ঐকান্তিক সাধনায় ‘এ্যালজেব্রা মেড ইজি’ ‘মর্ডান জিওমেট্রি’ ‘ইন্টারমিডিয়েট সলিড জিওমেট্রি’ প্রভৃতি গ্রন্থপ্রণীত হয়। প্রকাশনা শিল্পের প্রতিও তাঁর মনোযোগ আকৃষ্ট হয়।

আরও দেখুন[সম্পাদনা]

সহায়ক গ্রন্থপঞ্জি[সম্পাদনা]

তথ্যসূত্র[সম্পাদনা]

  1. সুবোধচন্দ্র সেনগুপ্ত ও অঞ্জলি বসু সম্পাদিত, সংসদ বাঙালি চরিতাভিধান, প্রথম খণ্ড, সাহিত্য সংসদ, কলকাতা, আগস্ট ২০১৬, পৃষ্ঠা ১৩০, আইএসবিএন ৯৭৮-৮১-৭৯৫৫-১৩৫-৬
  2. "ঝিনাইদহের ঐতিহ্য নবগঙ্গা নদীর তীরে জগদ্বিখ্যাত গণিতবিদ কে.পি. বসুর বাড়ী"। ১১ এপ্রিল ২০১৫ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ৪ জুলাই ২০১৫ 
  3. "ঝিনাইদহ জেলা তথ্য বাতায়ন"। ৮ জুলাই ২০১৫ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ৪ জুলাই ২০১৫ 
  4. "অধ্যাপক কালিপদ বসু"। ৪ মার্চ ২০১৬ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ৪ জুলাই ২০১৫ 
  5. "কে. পি. বসুর বাড়ী"। বাংলাদেশ জাতীয় তথ্য বাতায়ন। ৮ সেপ্টেম্বর ২০১৯ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ৩১ জুলাই ২০২০ 
  6. "Algebra Made Easy 1933"ইন্টারনেট আর্কাইভ 

বহিঃসংযোগ[সম্পাদনা]