কলহন
কলহন ( সংস্কৃত: कल्हण) কাশ্মীরের ইতিহাস বিবরণী গ্রন্থ রাজতরঙ্গিনী -এর রচয়িতা। তিনি ১১৪৮ থেকে ১১৪৯ সালের মধ্যে সংস্কৃত ভাষার এই গ্রন্থটি রচনাটি লিখেছিলেন [১] তাঁর জীবন সম্পর্কিত সমস্ত তথ্য তাঁর নিজস্ব লেখা থেকে অনুমেয়। পণ্ডিত হলেন মার্ক অরেল স্টেইন কলহনের জীবনী সংক্রান্ত তথ্য সংকলনের একজন মুখ্য প্রণেতা। রবিন ডনকিন যুক্তি দিয়েছেন যে কলহনের রচনাকে বাদ দিলে ত্রয়োদশ শতাব্দীর আগে এমন কোনো সাহিত্য গ্রন্থের খোঁজ পাওয়া যায়না যাতে স্থান, কাল ও পাত্রের এত বিশদ বিবরণ রয়েছে। [২]
জীবন
[সম্পাদনা]কলহন কাশ্মীরের হিন্দু ব্রাহ্মণ মন্ত্রী চানপাকার পরিবারে জন্মগ্রহণ করেছিলেন। চানপাকা সম্ভবত লোহারা রাজবংশের রাজা হর্ষের সেবায় নিযুক্ত ছিলেন। [৩] সম্ভবত তার জন্মস্থান ছিল পারিহাসপুর এবং দ্বাদশ শতাব্দীর প্রথম দিকে তার জন্ম হয়। তাঁর রাজতরঙ্গিণী গ্রন্থের আটটি বিভাগের প্রতিটির সূচনায় তিনি শ্লোকের মাধ্যমে হিন্দু দেবতা শিবের কাছে প্রার্থনা জানিয়েছেন। সেই সময়ে কাশ্মীরের অনেক হিন্দুর ন্যায় তিনি বৌদ্ধধর্মের প্রতিও সহানুভূতিশীল ছিলেন এবং বৌদ্ধরাও হিন্দুদের এই অনুভূতির প্রতিদান দেওয়ার প্রবণতা দেখাতেন। [৪] আধুনিক সময়েও, বুদ্ধের জন্মদিন কাশ্মীরি ব্রাহ্মণদের জন্য একটি উল্লেখযোগ্য ঘটনা এবং কলহনের সময় বুদ্ধকে হিন্দুরা বিষ্ণুর অবতার হিসাবে মান্য করতেন। [৫]
কলহন তৎকালীন মহাকাব্য যেমন বিলহানের বিক্রমাঙ্কদেবচরিত, রামায়ণ এবং মহাভারতের সাথে পরিচিত ছিলেন এবং সেই সকল গ্রন্থের কথা তিনি তাঁর নিজের লেখায় উল্লেখ করেছেন। [৬] স্টেইনের মতে সেই বর্ণনা ছিল "অত্যন্ত অপ্রয়োজনীয় প্রশংসা এবং তোষামোদ, যা ভারতীয় লেখকরা তাঁদের পৃষ্ঠপোষকদের প্রদান করতে বাধ্য"। কিন্তু তার এই মতবাদ সকলের কাছে গ্রহণযোগ্য নয়। স্টেইনের ব্যাখ্যা থেকে অনুমান করা যায় যে কলহন তৎকালীন সম্রাট জয়সিংহের পৃষ্ঠপোষকদের অংশ ছিলেন না। যে সময়ে তিনি রাজতরঙ্গিনী লিখছিলেন সেই সময়ে শাসক রাজা ছিলেন এই জয়সিংহ। [৭]