করিমনগরের সূক্ষ্ম রুপোর কাজ

উইকিপিডিয়া, মুক্ত বিশ্বকোষ থেকে

করিমনগরের সূক্ষ্ম রুপোর কাজ হল ভারতের তেলেঙ্গানা রাজ্যের করিমনগর শহরের কারিগরদের তৈরি রুপোর সুক্ষ্ম কারুকার্যময় শিল্পকর্ম (ফিলিগ্রি)।[১] এটি করিমনগরের একটি প্রাচীন শিল্প।[২][৩]

ইতিহাস[সম্পাদনা]

করিমনগরের সূক্ষ্ম রুপোর কাজ নামটি এসেছে তেলেঙ্গানা রাজ্যের করিমনগর শহরের নাম থেকে। স্থানীয় ভাষায়,-রূপালী তারের কাজ বা ফিলিগ্রিকে বলা হয় ভেন্ডি তীগা পানি। খাঁটি রুপো গলিয়ে প্রয়োজনীয় আকারে ঢালাই করা হয়। খ্রিস্টাব্দ ১৯ শতক থেকে, করিমনগরের কারিগররা রুপোলী তারের মোচড় দিয়ে তৈরি সূক্ষ্ম জালিকা তৈরি করেছিলেন, যেটি জালি নামে পরিচিত। এটা বিশ্বাস করা হয় যে প্রায় ২০০ বছর আগে করিমনগর শহরে যাওয়ার আগে করিমনগরের কাছে এলগ্যান্ডাল শহর থেকে সূক্ষ্ম রুপোর কাজের কারুশিল্পটি গ্রহণ করা হয়েছিল। করিমনগর শহরের বর্তমান সমাজ, সম্প্রদায়ের সাথে কথা বলে ও অনুসন্ধান করে জানা গেছে যে এই কারুশিল্পটি একজন বিশেষজ্ঞ স্বর্ণকার কাদারলা রামাইয়া প্রবর্তন করেছিলেন, তিনি ব্যাপকভাবে ভ্রমণ করতেন। তিনি ইয়ালাগান্ডালার (এলগ্যান্ডাল) বাসিন্দা ছিলেন এবং এই নতুন ফিলিগ্রি রুপোর কাজ ও শৈলী শিখে এসেছিলেন।[৪] হায়দ্রাবাদের নিজামের শাসনকালে এই শিল্পকলার পৃষ্ঠপোষকতা করা হয়েছিল। শাসকরা রৌপ্যশিল্পীদের উৎসাহিত করতেন উৎকৃষ্ট রূপার থালা, 'পানদান' এবং অন্যান্য প্রত্নবস্তু তৈরি করতে। রৌপ্যশিল্পীদের তৈরি এই নিদর্শনগুলি হায়দ্রাবাদের সালার জঙ্গ মিউজিয়ামে প্রদর্শিত আছে।[৫][৬]

শিল্প কুশলতা[সম্পাদনা]

করিমনগরের সূক্ষ্ম রুপোর নিপুণ কারুকার্য একটি অনন্য শিল্প কর্ম। রুপো দিয়ে বিভিন্ন ধরনের পণ্যের নকশা করা হয়েছে, যেগুলির কাজ অত্যন্ত সূক্ষ্ম এবং অসাধারণ। কানের দুল, গলার হার, চুড়ি, আংটি এবং দুল এখানকার ঐতিহ্যবাহী পণ্যের অন্তর্ভুক্ত। ভগবান গণেশ, ভগবান ভেঙ্কটেশ্বরের মূর্তি সহ বিভিন্ন দেব দেবীর মূর্তি উপাসনার জন্য তৈরি করা হয়। পুজোর সামগ্রী ছাড়াও উদ্ভিদ এবং প্রাণীজগত, পাখি, ময়ূর, রথ ইত্যাদি দ্বারা অনুপ্রাণিত হয়ে বহু আলংকারিক শিল্পকর্ম তৈরি করা হয়েছে। এমনকি বিভিন্ন প্রয়োজনের সামগ্রী যেমন থালা, ট্রে, আতরদান, পীকদান, কর্পূরদান (উধদান), চামচ, ছাইদান, ছবির ফ্রেম এবং বিভিন্ন আকার এবং গড়নের বাক্স ও খাপ ইত্যাদিও তৈরি হয়। মশলা, সুপারি, পানের মতো বিভিন্ন সামগ্রী একসঙ্গে রাখার জন্য বা রাখার জন্য বহু খোপের বাক্স (পানদান) তৈরি করা হয়। পাত্র, বাতিদান, ফুলের ঝুড়ি, গোলাপ জলের ঝারি এবং অন্যান্য অভিনব জিনিসগুলি স্বতন্ত্র পণ্যের মধ্যে অন্তর্ভুক্ত।[৪]

ভৌগোলিক নির্দেশক[সম্পাদনা]

২০০৭ সালে করিমনগরের সূক্ষ্ম রুপোর কাজ মেধা সম্পত্তি অধিকার সুরক্ষা বা ভৌগোলিক নিদর্শকের (জি আই) মর্যাদা পেয়েছে।[৭]

আরও দেখুন[সম্পাদনা]

তথ্যসূত্র[সম্পাদনা]

  1. "Arts & Crafts : Wisps of silver"The Hindu। ২০০৪-১১-১১। ২০০৭-০৮-২৪ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২০১৩-০২-০৭ 
  2. "Andhra Pradesh News : 'Silver filigree' set to cross shores"The Hindu। ২০০৫-০১-১৪। ২০০৫-০২-০৮ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২০১৩-০২-০৭ 
  3. "Arts & Crafts : Awaken the artisan"The Hindu। ২০০৮-১১-০৯। ২০১৩-১০-২৫ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২০১৩-০২-০৭ 
  4. "Silver Filigree - Karimnagar"। সংগ্রহের তারিখ ৯ ফেব্রুয়ারি ২০২২ 
  5. K.m.dayashankar (২০১৫-০৬-০৫)। "Silver filigree art cries for promotion"The Hindu (ইংরেজি ভাষায়)। আইএসএসএন 0971-751X। সংগ্রহের তারিখ ২০২১-০৭-০১ 
  6. "Karimnagar Silver Filigree"। সংগ্রহের তারিখ ৯ ফেব্রুয়ারি ২০২২ 
  7. "Filigree – Jewellery with a twist - Times of India"The Times of India (ইংরেজি ভাষায়)। সংগ্রহের তারিখ ২০২১-০৭-০১