কথাসাহিত্যে অতিনবতারা

উইকিপিডিয়া, মুক্ত বিশ্বকোষ থেকে

কথাসাহিত্যে অতিনবতারার চিত্রণ লক্ষিত হয়। বৈজ্ঞানিক দৃষ্টিকোণ থেকে একটি নবতারা আসলে একটি ভিন্ন ধরনের মহাজাগতিক ঘটনা হলেও, কল্পবিজ্ঞান লেখকেরা প্রায়শই এই জাতীয় শব্দগুলিকে পরস্পরপরিবর্তনীয় রূপে ব্যবহার করেছেন এবং কোনও স্পষ্ট ব্যাখ্যা ছাড়াই উল্লেখ করেছেন যে তারাগুলি "নবতারা হল"। ১৯৩৪ সালে আরেকটি পৃথক শ্রেণির ঘটনা হিসেবে "অতিনবতারা" শব্দটির প্রবর্তনের আগে আদিযুগের কল্পবিজ্ঞান সাহিত্যে এই বিষয়টি আংশিকভাবে ব্যাখ্যাত হয়েছে।[১][২] যেহেতু এই নাক্ষত্রিক বিস্ফোরণগুলি প্রচুর পরিমাণে শক্তির নির্গমন ঘটায়, সেই হেতু কিছু কিছু গল্পে অতিমাত্রায় শক্তি-নিবিড় প্রক্রিয়াগুলির শক্তির উৎস হিসেবে এগুলিকে দেখানো হয়েছে। যেমন ১৯৭২ সাল থেকে ডক্টর হু ধারাবাহিকের দ্য থ্রি ডক্টরস-এ সময়ভ্রমণের উৎসশক্তি হিসেবে অতিনবতারার উল্লেখ পাওয়া যায়।[১] একই কারণে ক্ষেত্রবিশেষে এই মহাজাগতিক ঘটনাগুলিকে শক্তিশালী অস্ত্র হিসেবেও দেখানো হয়েছে। এই প্রসঙ্গে নর্ম্যান স্পিনর‍্যাডের উপন্যাস দ্য সোলারিয়ানস-এর (১৯৬৬) নাম করা যায়।[২][৩]

বহু সংখ্যক বিপর্যয়-কেন্দ্রিক কাহিনিতে এই প্রক্রিয়ায় সূর্যে বিস্ফোরণের কথা বর্ণিত হয়েছে। যদিও আগেই বৈজ্ঞানিকরা জানতে পেরেছিলেন যে, অতিনবতারা বিস্ফোরণে যে পরিমাণ বিধ্বংসী শক্তি নির্গত হয় তার ফলে কোনও কিছুরই রক্ষা পাওয়ার কোনও সম্ভাবনা থাকে না।[২][৩][৪] তা সত্ত্বেও সাইমন নিউকম্বের ছোটোগল্প "দি এন্ড অফ দ্য ওয়ার্ল্ড"-এ (১৯০৩) অতিনবতারা বিস্ফোরণের ঠিক পরেই অল্প কয়েকজন বেঁচে যাওয়া লোকের বিবরণ পাওয়া যায়।[২][৫] ল্যারি নিভেনের ছোটোগল্প "ইনকনস্ট্যান্ট মুন"-এ (১৯৭১) সূর্য যে অনতিকালের মধ্যেই একদিন বিস্ফোরিত হতে পারে এবং তার ফলে পৃথিবীতে মানবজীবনের পরিসমাপ্তি ঘটতে পারে সেই উপলব্ধির প্রতিক্রিয়া ধ্বনিত হয়েছে।[৩][৪][৬] মহাকাশ ভ্রমণের ধারণাটিও একদা কল্পবিজ্ঞানে বহুল প্রচার লাভ করে—এর মাধ্যমে পৃথিবীকে জনশূন্য করার বিষয়টিও প্রদর্শিত হয়—যে সব গল্পে এই ধারণা উঠে আসে সেখানে মানব সভ্যতার টিকে থাকার ধারণাটিও উল্লিখিত হয়। যেমন, জন ডব্লিউ. ক্যাম্পবেলের ছোটোগল্প "দ্য ভয়েস অফ দ্য ভয়েড" (১৯৩০)।[২] চার্লস শেফিল্ডের উপন্যাস আফটারমাথ-এ (১৯৯৮) দেখানো হয়েছে যে, আরও দূরে সংঘটিত একটি অতিনবতারা পৃথিবীর বিপদ ডেকে আনছে।[৪] মানুষ ছাড়াও ক্ষেত্রবিশেষে ভিনগ্রহী সভ্যতাও অতিনবতারার হাতে কীভাবে বিপন্ন হয় তা সাহিত্যে উঠে এসেছে। পল আন্ডারসনের ছোটোগল্প "ডেজ অফ বার্নিং"-এ (১৯৬৭) দেখা যায়, একটি গ্রহে গড়ে ওঠা এক প্রাক্‌-মহাকাশচারী সমাজের জনবসতি অতিনবতারা ঘটনায় বিপন্ন হওয়ার পর মানুষেরা সেই গ্রহটি খালি করার চেষ্টা করছে। আবার আর্থার সি. ক্লার্কের ছোটোগল্প "দ্য স্টার"-এ (১৯৫৫) দেখা যায়, দুই সহস্রাব্দ আগে একটি তারা বিস্ফোরিত হওয়ায় সেখানকার এক ভিনগ্রহী প্রজাতি সম্পূর্ণ বিলুপ্ত হয়ে যাচ্ছে।[৪][৭]

তথ্যসূত্র[সম্পাদনা]

  1. Bloom, Steven D. (২০১৬-০৬-২২)। "Stellar Evolution: Supernovas, Pulsars, and Black Holes"The Physics and Astronomy of Science Fiction: Understanding Interstellar Travel, Teleportation, Time Travel, Alien Life and Other Genre Fixtures (ইংরেজি ভাষায়)। McFarland। পৃষ্ঠা 38–43। আইএসবিএন 978-0-7864-7053-2 
  2. Stableford, Brian M. (২০০৬)। "Nova"Science Fact and Science Fiction: An Encyclopedia (ইংরেজি ভাষায়)। Taylor & Francis। পৃষ্ঠা 334–335। আইএসবিএন 978-0-415-97460-8 
  3. Clute, John; Langford, David; Sleight, Graham (সম্পাদকগণ)। "Sun"The Encyclopedia of Science Fiction। সংগ্রহের তারিখ ২০২১-০৯-০৯ 
  4. McKinney, Richard L. (২০০৫)। Westfahl, Gary, সম্পাদক। StarsThe Greenwood Encyclopedia of Science Fiction and Fantasy: Themes, Works, and Wonders (ইংরেজি ভাষায়)। Greenwood Publishing Group। পৃষ্ঠা 752। আইএসবিএন 978-0-313-32952-4 
  5. Clute, John; Langford, David; Sleight, Graham (সম্পাদকগণ)। "Newcomb, Simon"The Encyclopedia of Science Fiction। সংগ্রহের তারিখ ২০২১-০৯-১১ 
  6. D'Ammassa, Don (২০০৫)। "Inconstant Moon"Encyclopedia of Science Fiction (ইংরেজি ভাষায়)। Facts On File। পৃষ্ঠা 196। আইএসবিএন 978-0-8160-5924-9 
  7. Clute, John; Langford, David; Sleight, Graham (সম্পাদকগণ)। "Clarke, Arthur C"The Encyclopedia of Science Fiction। সংগ্রহের তারিখ ২০২১-০৯-১১ 

বহিঃসংযোগ[সম্পাদনা]

টেমপ্লেট:অতিনবতারা