উইকিপিডিয়া:ভালো নিবন্ধ/১৩০

উইকিপিডিয়া, মুক্ত বিশ্বকোষ থেকে

পথের পাঁচালী ১৯৫৫ খ্রিস্টাব্দে মুক্তিপ্রাপ্ত পশ্চিমবঙ্গ সরকার প্রযোজিত ও সত্যজিৎ রায় পরিচালিত বাংলা চলচ্চিত্র। বিভূতিভূষণ বন্দ্যোপাধ্যায়ের উপন্যাস পথের পাঁচালী অবলম্বনে নির্মিত এই ছবিটি সত্যজিৎ রায় পরিচালিত প্রথম চলচ্চিত্র। অপু ত্রয়ী চলচ্চিত্র ধারাবাহিকের প্রথম চলচ্চিত্র পথের পাঁচালীতে এর মুখ্য চরিত্র অপুর (সুবীর বন্দ্যোপাধ্যায়) শৈশবকে কেন্দ্র করে বিংশ শতাব্দীর বিশের দশকের বাংলার একটি প্রত্যন্ত গ্রামের জীবনধারা চিত্রায়িত করা হয়েছে। স্বল্প নির্মাণব্যয়ে অপেশাদার অভিনেতা ও অনভিজ্ঞ শিল্পীদের নিয়ে এই চলচ্চিত্র নির্মিত হয়। সেতার বাদক রবিশঙ্কর ভারতীয় শাস্ত্রীয় সঙ্গীতের রাগ ব্যবহার করে চলচ্চিত্রের সঙ্গীতাবহ সৃষ্টি করেন। এই ছবিতে সুব্রত মিত্র চিত্রগ্রহণ ও দুলাল দত্ত সম্পাদনার দায়িত্বে ছিলেন। ১৯৫৫ খ্রিস্টাব্দের ৩ মে নিউ ইয়র্ক শহরের মিউজিয়াম অব মডার্ন আর্টের একটি প্রদর্শনীতে চলচ্চিত্রটি মুক্তি পায় ও পরে সেই বছরই কলকাতা শহরে মুক্তি লাভ করলে দর্শকদের প্রশংসা লাভ করে। সমালোচকরা চলচ্চিত্রটিতে প্রদর্শিত বাস্তবতাবাদ, মানবতা ও গুণমানকে প্রশংসা করলেও অনেকে এর মন্থর লয়কে চলচ্চিত্রটির খামতি বলে মনে করেন। অপুর জীবন সত্যজিৎ রায়ের অপরাজিত (১৯৫৬) এবং অপুর সংসার (১৯৫৯) নামক অপু ত্রয়ী চলচ্চিত্র ধারাবাহিকের পরবর্তী দুইটি চলচ্চিত্রে দেখানো হয়। পথের পাঁচালী ভারতীয় চলচ্চিত্র জগতে সামাজিক বাস্তবতার উপর ভিত্তি করে সমান্তরাল চলচ্চিত্রের ধারা তৈরি করে। স্বাধীন ভারতে নির্মিত পথের পাঁচালী ছিল প্রথম চলচ্চিত্র যা আন্তর্জাতিক মনোযোগ টানতে সক্ষম হয়। এটি ১৯৫৫ খ্রিস্টাব্দে শ্রেষ্ঠ চলচ্চিত্র বিভাগে জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার, ১৯৫৬ কান চলচ্চিত্র উৎসবে শ্রেষ্ঠ মানবিক দলিল পুরস্কারসহ বহু পুরস্কার লাভ করে, যার ফলে সত্যজিৎ রায়কে ভারতের সর্বশ্রেষ্ঠ চলচ্চিত্র নির্মাতাদের মধ্যে একজন বলে গণ্য করা হয়। এছাড়াও এই চলচ্চিত্রটিকে প্রায়শই সর্বকালের সেরা চলচ্চিত্রের তালিকায় দেখা যায়। (বাকি অংশ পড়ুন...)