আল জব্বার বড় মসজিদ

স্থানাঙ্ক: ৬°৫৬′৫৩″ দক্ষিণ ১০৭°৪২′১৩″ পূর্ব / ৬.৯৪৮১° দক্ষিণ ১০৭.৭০৩৬° পূর্ব / -6.9481; 107.7036
উইকিপিডিয়া, মুক্ত বিশ্বকোষ থেকে
আল জব্বার বড় মসজিদ
আল জব্বার রিয়া মসজিদ
ধর্ম
অন্তর্ভুক্তিইসলাম
শাখা/ঐতিহ্যসুন্নি
অবস্থান
অবস্থানবানদুং, ইন্দোনেশিয়া
স্থানাঙ্ক৬°৫৬′৫৩″ দক্ষিণ ১০৭°৪২′১৩″ পূর্ব / ৬.৯৪৮১° দক্ষিণ ১০৭.৭০৩৬° পূর্ব / -6.9481; 107.7036
স্থাপত্য
স্থপতিরিদওয়ান কামিল
ধরনমসজিদ
স্থাপত্য শৈলীনব্য-ভবিষ্যতবাদ, অটোমান, সুদানীজ
ভূমি খনন২৯ ডিসেম্বর, ২০১৭
সম্পূর্ণ হয়৩০ ডিসেম্বর, ২০২২
নির্মাণ ব্যয়রুপিয়া ১ ট্রিলিয়ন (মার্কিন ডলার ৬৪ মিলিয়ন)
বিনির্দেশ
ধারণক্ষমতা৩৩,০০০
গম্বুজসমূহ
মিনার
মিনারের উচ্চতা৯৯ মি (৩২৫ ফু)

আল জব্বার বড় মসজিদ (ইন্দোনেশীয়: আল জব্বার রিয়া মসজিদ) বানদুং, পূর্ব জাভা, ইন্দোনেশিয়ায় অবস্থিত দৃষ্টিনন্দন একটি মসজিদ। এটি একটি সুন্দর জলাধারের পাশে অবস্থিত। যার কারণে, মসজিদটিকে কখনও কখনও আল জব্বার ভাসমান মসজিদ হিসাবে উল্লেখ করা হযইয়ে থাকে। মসজিদটি সামারেকন বানদুং এর ধার ঘেঁষে দাঁড়িয়ে আছে। যা পূর্ব বানদুং এর গেদেবেজ জেলায় অবস্থিত।

আরবিতে মহান যার অর্থ আল্লাহর ৯৯টি গুণবাচক নাম রয়েছে। যার মধ্যে 'আল জব্বার' অন্যতম। আলজেব্রা হল বীজগণিতের ইন্দোনেশিয়ান শব্দ। একজন মুসলিম ব্যক্তি আলজেব্রা বা বীজগণিত এর ধারণা প্রতিষ্ঠা করেছিলেন। কাকতালীয়ভাবে, জাবার পশ্চিম জাভা প্রদেশের সংক্ষিপ্ত নাম এবং একই সাথে ডাকনামও।[১]


ইতিহাস[সম্পাদনা]

পটভূমি[সম্পাদনা]

অতীতে, গেদেবেজ এর পুরো এলাকাটিই মুরাস গেগার হানজুয়াং নামে একটি জলাভূমি ছিল। এই জলাভূমি গুলো প্রাচীন বান্দুং হ্রদের অবশিষ্টাংশ। ১৯ শতকের শেষের দিকে, এই জলাভূমি গুলো শুকিয়ে চাষাবাদের উপযোগী হয়ে ওঠে। অনেক জনাভূমিতে ধান চাষ করাও শুরু করে স্থানীয় জনগণ। স্টেট রেলওয়ে কোম্পানি, স্টাটসপোরওয়েগন (এসএস), এই জলাভূমি গুলোর মাঝখানে বান্দুং এবং সিকালেঙ্গকা এলাকাকে সংযুক্ত করে একটি রেলপথ নির্মাণ করে। ২০০৬ সালে বানদুং শহর বিভক্ত হওয়ার পর গেদেবেজ একটি উপজেলা হয়ে ওঠে। উক্ত সম্প্রসারণ গেদেবেজ এলাকাটিকে জীবন্ত করে তোলে। কারণ, সেখানে ধীরে ধীরে জনবসতি গড়ে উঠতে থাকে। জনগণ সেখানে নতুন নতুন আবাসন তৈরি করতে শুরু করে।[২]

নির্মাণ[সম্পাদনা]

২৯ ডিসেম্বর, ২০১৭ আনুষ্ঠানিক ভাবে মসজিদটির নির্মাণ কাজ শুরু হয় । প্রাক্তন গভর্নর আহমেদ হেরিয়াওয়ান এবং প্রাক্তন ভাইস গভর্নর ডেডি মিজওয়ার ভূমি অধিগ্রহণের আনুষ্ঠানিকতা শুরু করেন এবং সেই সাথেই আনুষ্ঠানিকভাবে মসজিদের নির্মাণ শুরু করার জন্য প্রথম পাথর স্থাপন করেন।[৩] কোভিড-১৯ এর বৈশ্বিক মহামারীর কারণে, ২০২০ সালে মসজিদটির নির্মাণকাজ বেশ কিছু দিনের জন্য বন্ধ রাখা হয়েছিল। যা পরবর্তীতে দেড় বছর পরে ২৪ আগস্ট ২০২১ এ পুনরায় নির্মান কাজ চালু করা হয়।[৪] তারপর কাজ বেশ এগিয়ে নেওয়া হয় ও নির্মাণ কাজ শুরু হওয়ার ৫ বছর পর, মসজিদটি আনুষ্ঠানিকভাবে ৩০ ডিসেম্বর ২০২০ গভর্নর রিদওয়ান কামিল উদ্বোধন করেন।[১]

বৈশিষ্ট্য[সম্পাদনা]

মসজিদটি মোট ২১,৭৯৯,২০ বর্গ মিটার এর সুবিশাল এলাকা জুড়ে অবস্থিত। ১১,২৩৮.২০ বর্গ মিটার এলাকা জুড়ে মসজিদটির নিচতলা বিস্তৃত, প্রথম তলা ৮,৩২৯ বর্গ মিটার ক্ষেত্রফল এলাকা জুড়ে বিস্তৃত এবং মেজানাইন ফ্লোরের ক্ষেত্রফল সর্বমোট ২,২৩২ বর্গ মিটার। এখানে, হ্রদ এবং জলাধার গুলোর জন্য ৬,৯৩০ হেক্টর এলাকা ছেড়ে দেওআ হয়েছে। যার ফলে মসজিদটির শোভা অনেক গুন বৃদ্ধি পেয়েছে। এবং পার্কিং লট, প্লাজা এবং গাছপালা জন্য হল ১১,১৬৩ হেক্টর এলাকা রাখা হয়েছে৷[৫]

প্রার্থনা কক্ষে প্রথম তলায় ৯,৮২২ জন, মেজানাইন ফ্লোরে ৩,১৮৮ জন লোক একসাথে নামাজ আদায় করতে পারে। যে হল গুলো রয়েছে সেগুলোতে ৩,৬২৭ জন এবং উঠানে ১৬,৩৬৩ লোক একসাথে নামাজ আদায় করতে পারে। পুরো মসজিদটি প্রায় ৩৩,০০০ লোক ধারণ করতে পারে।[৫]

মসজিদটিতে চারটি ৯৯ মিটার লম্বা মিনার রয়েছে। মসজিদের চারটি কোনে এই চারটি পিলার অবস্থিত। ৬,১৩৬ টি কাচের শীট মাছের আঁশের অনুকরণে জন্য ডিজাইন করা হয়েছে যা মসজিদের সম্মুখভাগ এবং গম্বুজ তৈরীতে ব্যবহার করা হয়েছে।[৫]

মসজিদে প্রবেশ পথে মোট ২৭ টি প্রবেশপথ রয়েছে, যা পশ্চিম জাভার ২৭ টি শহর বা রাজ্যের প্রতিনিধিত্ব করে। এই প্রবেশপথগুলির প্রতিটিতে অর্থাৎ ২৭ টি প্রবেশপথেই একটি করে বাটিক মোটিফ রয়েছে যা প্রতিটি শহর বা অঞ্চলের স্থানীয় সংস্কৃতির নির্দেশক।[৬] মসজিদের মেঝেতে তুর্কির বোনা কার্পেট ব্যবহার করা হয়েছে।[৫]

মসজিদটি গেদেবেজে জেলায় অবস্থিত ও এই জেলাটি বেশ বন্যাপ্রবণ। মসজিদটির জলাধারটি মোট ৬.৯ হেক্টর এলাকা জুড়ে মসজিদের চারপাশে বেষ্টিত। এই জলাদ্হারটি বন্যার সময় বন্যার পানিগুলো ধারণ করতে পারে। যার ফলে মসজিদটি বন্যার হাত থেকে রক্ষা পায়।[৭] মসজিদটিতে একটি বাগান এবং একটি জাদুঘর রয়েছে যা ইসলামিক সংস্কৃতির জন্য নিবেদিত।[৮]

চিত্রশালা[সম্পাদনা]

তথ্যসূত্র[সম্পাদনা]

  1. Syahrial, Muhamad। "Fakta-fakta Masjid Al Jabbar: Habiskan Dana Rp 1 Triliun, Mampu Tampung 33.000 Jemaah"bandung.kompas.com (ইন্দোনেশীয় ভাষায়)। সংগ্রহের তারিখ ৩ জানুয়ারি ২০২৩ 
  2. Abu Fauzan, Hevi (২০২৩-০১-১৪)। "Masjid Al-Jabbar dan Sejarah Kawasan Gedebage"sejarahbandung.id (ইন্দোনেশীয় ভাষায়)। ২০২৩-০৩-০৭ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২০২৩-০১-১৪ 
  3. "Spesifikasi Masjid Terapung Al Jabbar, Calon Masjid Raya Jawa Barat yang Baru"bappeda.jabarprov.go.id (ইন্দোনেশীয় ভাষায়)। সংগ্রহের তারিখ ৩ জানুয়ারি ২০২৩ 
  4. Nurulliah, Novianti। "Terhenti Selama Pandemi, Pembangunan Masjid Raya Al Jabbar di Bandung Dilanjutkan Jemaah"pikiran-rakyat.com (ইন্দোনেশীয় ভাষায়)। সংগ্রহের তারিখ ৭ জানুয়ারি ২০২৩ 
  5. Lufiana Putri, Diva; Setyo Nugroho, Rizal। "Profil Masjid Raya Al Jabbar, Disebut sebagai Ikon Baru Jawa Barat"kompas.com (ইন্দোনেশীয় ভাষায়)। সংগ্রহের তারিখ ৭ জানুয়ারি ২০২৩ 
  6. "Deretan Keunikan Masjid Al Jabbar, dari 27 Pintu, Kaca Patri, sampai Kubah Seluas 1 Hektar tanpa Penyangga"pojoksatu.id (ইন্দোনেশীয় ভাষায়)। ৭ জানুয়ারি ২০২৩ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ৭ জানুয়ারি ২০২৩ 
  7. Paradilla Rayadi, Mitha। "Tak Hanya Indah, Masjid Al Jabbar Diharapkan Bisa Atasi Banjir di Gedebage Bandung"pikiran-rakyat.com (ইন্দোনেশীয় ভাষায়)। সংগ্রহের তারিখ ৭ জানুয়ারি ২০২৩ 
  8. "Ragam Fasilitas dan Fungsi Masjid Al Jabbar"jabarprov.go.id (ইন্দোনেশীয় ভাষায়)। সংগ্রহের তারিখ ৯ জানুয়ারি ২০২৩