আব্দুল্লাহ আল মাহমুদ

উইকিপিডিয়া, মুক্ত বিশ্বকোষ থেকে
আব্দুল্লাহ আল মাহমুদ
পাকিস্তানের শিল্প ও প্রাকৃতিক সম্পদ মন্ত্রী
কাজের মেয়াদ
১৯৬৩ – ১৯৬৫
ব্যক্তিগত বিবরণ
জন্ম১৯০০
সিরাজগঞ্জ, বেঙ্গল প্রেসিডেন্সি, ব্রিটিশ ভারত
(বর্তমান বাংলাদেশ)
মৃত্যু১৩ জুন ১৯৭৫
জাতীয়তাব্রিটিশ ভারত (১৯৪৭ সাল পর্যন্ত)
পাকিস্তান (১৯৭১ সালের পূর্বে)
বাংলাদেশ
রাজনৈতিক দলসর্বভারতীয় মুসলিম লীগ
সম্পর্কএম এ মতিন (জামাতা)
সন্তানইকবাল হাসান মাহমুদ টুকু (ছেলে)
পিতামাতাদেরাজউদ্দিন তালুকদার (পিতা)
প্রাক্তন শিক্ষার্থীকোলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়
কারমাইকেল কলেজ
কারমাইকেল কলেজ

আব্দুল্লাহ আল মাহমুদ (১৯০০–১৩ জুন ১৯৭৫) বাংলাদেশের সিরাজগঞ্জের রাজনীতিবিদ ও আইনজীবী যিনি তৎকালীন বৃটিশ পার্লামেন্টের সদস্য (এমএসএ) ও তৎকালীন পাকিস্তান কেন্দ্রীয় সরকারের মন্ত্রী হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন।[১][২]

জন্ম ও প্রাথমিক জীবন[সম্পাদনা]

আব্দুল্লাহ আল মাহমুদ ১৯০০ সালে সিরাজগঞ্জের শিয়ালকোল ইউনিয়নের কয়েলগাঁতী গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন। তার পিতা দেরাজউদ্দিন তালুকদার ছিলেন। তিনি ১৯১৫ সালে এন্ট্রান্স পাশ করে রংপুরের কারমাইকেল কলেজ থেকে ১৯১৮ সালে আইএ পাশ করে কোলকাতা ইসলামিয়া কলেজ থেকে ১৯২০ সালে বিএ ডিগ্রী অর্জন করেন। ১৯২২ সালে কোলকাতা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে আরবীতে এমএ এবং আইন বিষয়ে বিএল ডিগ্রী অর্জন করেন।

রাজনৈতিক জীবন[সম্পাদনা]

আব্দুল্লাহ আল মাহমুদ ব্রিটিশ সাম্রাজ্যবাদ অধ্যুষিত ভারতের মুসলিম স্বার্থরক্ষার আন্দোলনে সক্রিয় ভূমিকা পালন করেন। ১৯২৪ সালে তিনি সিরাজগঞ্জে আইন পেশা শুরু করেন।

১৯৩৭ সালে বেঙ্গল লেজিসলেটিভ এসেম্বলীর মেম্বার (এমএলএ) নির্বাচিত হয়ে পার্লামেন্টের সেক্রেটারী নিযুক্ত হন তিনি। অসহযোগ আন্দোলনের ডাকে সাড়া দিয়ে তিনি বৃটিশ প্রদত্ত ‘খান বাহাদুর’ উপাধি প্রত্যাখান করেন। তিনি লখ্নৌতে মুসলিমলীগ কার্যনির্বাহী কমিটির সভায় বাংলা প্রদেশ থেকে নির্বাচিত একমাত্র সদস্য ছিলেন।

২৩ মার্চ ১৯৪০ সালে লাহোর অধিবেশনে শেরে বাংলা আবুল কাশেম ফজলুল হক মুসলীম রাষ্ট্র প্রতিষ্টার দাবি উত্থাপন করেন। লাহরের সেই ঐতিহাসিক সম্মেলনে সিরাজগঞ্জ থেকে প্রতিনিধিত্ব করেন তিনি। ১৯৪২ সালে তিনি সর্বভারতীয় মুসলিম লীগ সম্মেলনের আহ্বায়ক নিযুক্ত হন। ১৯৪৫ সালে তিনি প্রথম ভারতীয় নেতা হিসাবে ইমপেরিয়্যাল জুট কমিটির চেয়ারম্যান নিযুক্ত হয়েছিলেন যার সদর দপ্তর ছিলো লন্ডনে।

১৯৪৮ সালে তিনি পাকিস্তান কেন্দ্রীয় আইন পরিষদের সদস্য নির্বাচিত হয়ে জয়েন্ট চিফ হুইপ নিযুক্ত হন এবং কোলকাতায় পাকিস্তানের ডেপুটি হাই কমিশনার হিসেবে দায়িত্ব গ্রহণ করে ১৯৫২ সাল পর্যন্ত দায়িত্ব পালন করেন। ১৯৬২ ও ১৯৬৫ সালে তিনি পাকিস্তান জাতীয় পরিষদের সদস্য নির্বাচিত হন। ১৯৬৩ সালে পাকিস্তান কেন্দ্রীয় সরকারের শিল্প ও প্রাকৃতিক সম্পদমন্ত্রী নিযুক্ত হয়ে ১৯৬৫ সাল পর্যন্ত দায়িত্ব পালন করেন।[১][৩]

তিনি সিরাজগঞ্জ পৌরসভার চেয়ারম্যান ও পাবনা জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান ছিলেন। ১৯৬৯ সাল থেকে তিনি বার্ধক্যজনিত কারণে সক্রিয় রাজনীতি থেকে দূরে চলে যান।

পারিবারিক জীবন[সম্পাদনা]

আব্দুল্লাহ আল মাহমুদের বড় ছেলে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য, সিরাজগঞ্জ জেলা পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান, সাবেক সংসদ সদস্য ও সাবেক বিদ্যুৎ প্রতিমন্ত্রী ইকবাল হাসান মাহমুদ টুকু। তার জামাতা এম এম মতিন উপ-প্রধানমন্ত্রী, মন্ত্রী ও সংসদ সদস্য ছিলেন। ছোট ছেলে সিরাজগঞ্জ পৌরসভার সাবেক চেয়ারম্যান মঞ্জুর হাসান মাহমুদ খুশী। তার মেয়ে তাসমিনা মাহমুদ সেবা চিকিৎসক ছিলেন।[৩][৪]

মৃত্যু[সম্পাদনা]

আব্দুল্লাহ আল মাহমুদ ১৩ জুন ১৯৭৫ সালে মৃত্যুবরণ করেন।[২][৩]

তথ্যসূত্র[সম্পাদনা]

  1. "এক নজরে সিরাজগঞ্জ পৌরসভা"বাংলাদেশ জাতীয় তথ্য বাতায়ন। ২১ সেপ্টেম্বর ২০২০ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২১ সেপ্টেম্বর ২০২০ 
  2. সিরাজগঞ্জ, জেলা প্রতিনিধি (১৩ জুন ২০২০)। "কাকতালীয়ভাবে একই তারিখে সিরাজগঞ্জের তিন মন্ত্রীর মৃত্যু"জাগো নিউজ। ২১ সেপ্টেম্বর ২০২০ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২১ সেপ্টেম্বর ২০২০ 
  3. ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট, স্বপন চন্দ্র দাস (১৩ জুন ২০২০)। "সিরাজগঞ্জের তিন নক্ষত্রের চলে যাওয়ার তারিখ একই"বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম। ২১ সেপ্টেম্বর ২০২০ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২১ সেপ্টেম্বর ২০২০ 
  4. সিরাজগঞ্জ প্রতিনিধি (৯ সেপ্টেম্বর ২০১৭)। "সাবেক উপ-প্রধানমন্ত্রী ডা. এম এ মতিনের সহধর্মিনী আর নেই"দৈনিক কালের কণ্ঠ। ২১ সেপ্টেম্বর ২০২০ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২১ সেপ্টেম্বর ২০২০