আব্দুর রহিম (সংসদ সদস্য)
অ্যাডভোকেট আব্দুর রহিম | |
---|---|
সিলেট-১১ আসনের সংসদ সদস্য | |
কাজের মেয়াদ ৭ মার্চ ১৯৭৩ – ৬ নভেম্বর ১৯৭৬ | |
পূর্বসূরী | আসন শুরু |
উত্তরসূরী | লুৎফুর রহমান |
ব্যক্তিগত বিবরণ | |
জন্ম | ১৯৩৩ সিলেট |
মৃত্যু | ১৯ মার্চ ১৯৯০ |
আব্দুর রহিম (জন্ম: ১৯৩৩ - মৃত্যু: ১৯ মার্চ, ১৯৯০) ছিলেন বাংলাদেশের রাজনীতিবিদ, আইনজীবী ও মুক্তিযুদ্ধের সংগঠক। তিনি ১৯৭০ সালে পাকিস্তানের স্থানীয় গণপরিষদের সদস্য (এমএনএ) ও ১৯৭৩ সালে তৎকালীন সিলেট-১১ আসন (বর্তমান সিলেট-৬) থেকে সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন।[১][২]
জন্ম ও প্রাথমিক জীবন
[সম্পাদনা]আব্দুর রহিম ১৯৩৩ সালে সিলেট জেলার বিয়ানীবাজার উপজেলার রাউতগ্রামে জন্মগ্রহণ করেন। পরবর্তীতে তারা গোলাপগঞ্জ উপজেলার কালিদাসপাড়া গ্রামে বসতি স্থাপন করেন। তার পিতার নাম মাসিম আলী।
শিক্ষাজীবন
[সম্পাদনা]আব্দুর রহিম বিয়ানীবাজার উপজেলার মাথিউরা এস ই স্কুলে কিছুদিন লেখাপড়া করে সিলেট দি এইডেড হাই স্কুলে ভর্তি হয়ে মাধ্যমিক সমাপ্ত করেন। করাচি ইসলামী কলেজ থেকে উচ্চ মাধ্যমিক সমাপ্ত করেন। পরবর্তীতে সিলেট ল কলেজ থেকে এম এ ও এল এলবি ডিগ্রী লাভ করে সিএসপি পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করেন।
রাজনৈতিক ও কর্মজীবন
[সম্পাদনা]আব্দুর রহিমসরকারী চাকুরীতে যোগদান করতে চাইলে হোসেন শহীদ সোহরাওয়ার্দীর অনুরোধে সরকারী চাকুরীতে যোগদান না করে রাজনীতিতে অংশ গ্রহণ করেন। ল কলেজে অধ্যয়নকালে তিনি কলেজ ছাত্র সংসদের ভিপি হিসেবে নির্বাচিত হোন। তিনি শহীদ সোহরাওয়ার্দীর ব্যক্তিগত সহকারী হিসেবে রাজনীতি ও আইন পেশায় নিজের কর্মজীবন শুরু করেন। ১৯৬০ সালে পিতার মৃত্যুর পর সিলেটে ফিরে আসেন এবং পেশাজীবী আইনজীবী হিসেবে কর্ম জীবন শুরু করেন।
তিনি ১৯৬২ সালে ন্যাপে যোগদান করেন। এসময় ১৯৬৭ থেকে ১৯৬৯ সাল পর্যন্ত তিনি সিলেট জেলা ন্যাপের ( মুজাফ্ফর) আহবায়কের দায়িত্ব পালন করেন। ন্যাপ বিভক্তির পর তিনি আওয়ামীলীগের যোগদান করেন।
১৯৬০ ও ১৯৬৫ সালে পাকিস্তান জাতীয় পরিষদ নির্বাচনে অংশগ্রহণ করে নির্বাচিত না হলেও তিনি ১৯৭০ সালে আওয়ামী লীগের প্রার্থী হিসেবে আসন ১২৬, সিলেট-৭ (বিয়ানীবাজার-জকিগঞ্জ-কানাইঘাট) নির্বাচনী এলাকা থেকে পাকিস্তানের স্থানীয় গণ পরিষদের সদস্য (এমএনএ) নির্বাচিত হন। তিনি দায়িত্ব পালন করেছেন বাংলাদেশের প্রথম প্রধানমন্ত্রী তাজ উদ্দিন আহমদের বৈদেশিক সাহায্য ও সমর্থন বিষয়ক পরামর্শদাতা হিসেবে।
তিনি ১৯৭৩ সালের প্রথম জাতীয় সংসদ নির্বাচনে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের প্রার্থী হসেবে তৎকালীন সিলেট-১১ আসন (বর্তমান সিলেট-৬) থেকে সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন।[২] বাংলাদেশের সংবিধান প্রণয়নে কামাল হোসেনের সাথেও তিনি কাজ করেছেন। তিনি দীর্ঘদিন সিলেট বারের সাধারণ সম্পাদক ও সভাপতি হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন। ১৯৭৬ সালে সিলেট জেলা আওয়ামীলীগের সভাপতি (১৯৭৬-১৯৯০) নির্বাচিত হয়ে আমৃত্যু এ পদে বহাল ছিলেন। এছাড়াও তিনি কেন্দ্রীয় নির্বাহী কমিটির সদস্য ছিলেন।[৩]
মুক্তিযুদ্ধ
[সম্পাদনা]১৯৭১ সালে সংঘটিত মহান মুক্তিযুদ্ধে তিনি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেন। মুক্তিযুদ্ধ চলাকালে প্রবাসী বাংলাদেশ সরকার তার উপর তথ্য মন্ত্রণালয়ের বিভিন্ন দায়িত্ব প্রদান করে। এসময় তিনি প্রধানমন্ত্রী তাজ উদ্দিন আহমদের বৈদেশিক সাহায্য ও সমর্থন বিষয়ক পরামর্শদাতা হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন।[১]
মৃত্যু
[সম্পাদনা]আব্দুর রহিম ১৯ মার্চ ১৯৯০ সালে মৃত্যুবরণ করেন। তার স্মৃতি রক্ষার্থে তার পরিবারের পক্ষ থেকে আব্দুর রহিম স্মৃতি পরিষদ প্রতিষ্ঠা করা হয়। [১]
তথ্যসূত্র
[সম্পাদনা]- ↑ ক খ গ "আজ মরহুম জননেতা এডভোকেট আব্দুর রহিম এমপির মৃত্যু বার্ষিকি"। banglavashi.com। ২০১৯-০৮-২১ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২০১৮-০৩-২৭।
- ↑ ক খ "১ম জাতীয় সংসদে নির্বাচিত মাননীয় সংসদ-সদস্যদের নামের তালিকা" (পিডিএফ)। জাতীয় সংসদ। বাংলাদেশ সরকার। ৯ সেপ্টেম্বর ২০১৮ তারিখে মূল (পিডিএফ) থেকে আর্কাইভ করা।
- ↑ "সিলেট-৬ আসনে : দুই দলের মর্যাদার লড়াই"। বিয়ানীবাজার কন্ঠ। ১০ ডিসেম্বর ২০১৮। ২১ আগস্ট ২০১৯ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২১ আগস্ট ২০১৯।