আবদুর রউফ (বিচারপতি)
মোহাম্মদ আবদুর রউফ | |
|---|---|
![]() ২০১৯ সালে রউফ | |
| বাংলাদেশের ৫ম প্রধান নির্বাচন কমিশনার | |
| কাজের মেয়াদ ২৫ ডিসেম্বর ১৯৯০ – ১৮ এপ্রিল ১৯৯৫ | |
| পূর্বসূরী | সুলতান হোসেন খান |
| উত্তরসূরী | এ কে এম সাদেক |
| ব্যক্তিগত বিবরণ | |
| জন্ম | ১ ফেব্রুয়ারি ১৯৩৪ ময়মনসিংহ, বেঙ্গল প্রেসিডেন্সি, ব্রিটিশ ভারত (বর্তমান বাংলাদেশ) |
| মৃত্যু | ৯ ফেব্রুয়ারি ২০২৫ (বয়স ৯১) |
| জাতীয়তা | বাংলাদেশী |
| পেশা | সরকারি কর্মচারী |
বিচারপতি মোহাম্মদ আবদুর রউফ (১ ফেব্রুয়ারি ১৯৩৪ – ৯ ফেব্রুয়ারি ২০২৫)[১] ছিলেন একজন বাংলাদেশী আইনজীবী ও বিচারপতি। তিনি অ্যাডভোকেট হিসাবে কর্মজীবন শুরু করেন এবং তারপরে হাইকোর্ট বিভাগের অতিরিক্ত বিচারপতি হন। তারপরে তিনি আদালতের আপিল বিভাগের বিচারপতি হন। পরবর্তীকালে বাংলাদেশের তৎকালীন রাষ্ট্রপতি তাকে প্রধান নির্বাচন কমিশনার হিসাবে নিযুক্ত করেছিলেন।[২] তিনি ফারইষ্ট ইসলামী লাইফ ইন্স্যুরেন্স কোম্পানী লিমিটেড এবং প্রাইম ইসলামী লাইফ ইন্স্যুরেন্সের শরিয়াহ উপদেষ্টা হিসেবে কাজ করেছেন। তিনি জাতীয় শিশু সংগঠন ফুলকুঁড়ি আসরের সভাপতির দায়িত্বও পালন করেছেন।[৩]
জন্ম ও প্রাথমিক জীবন
[সম্পাদনা]বিচারপতি মোহাম্মদ আবদুর রউফ ১ ফেব্রুয়ারি ১৯৩৪ সালে ময়মনসিংহে জন্মগ্রহণ করেন।[৪] পৈত্রিক নিবাস একই সদর উপজেলার দাপুনিয়া গ্রামে। প্রাইমারী ও মাধ্যমিক পর্যায়ে বৃত্তি পেয়ে ময়মনসিংহ জিলা স্কুল থেকে ১৯৫১ সালে কৃতিত্বের সাথে ম্যাট্রিকুলেশন, আনন্দ মোহন কলেজ থেকে আই, এস, সি ও বি, এস, সি ডিগ্রী; সরকারি বৃত্তি নিয়ে ময়মনসিংহ টিচার্স ট্রেনিং কলেজ থেকে বি,এড ও এম এ, ইন এডুকেশন ডিগ্রী, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিষয়ে এম,এ ও এল,এল,বি ডিগ্রী লাভ করেন।[৫]
কর্মজীবন
[সম্পাদনা]আবদুর রউফ জানুয়ারি ১৯৬২ সালে তদানীন্তন ঢাকা হাইকোর্টে আইন-ব্যবসায় নিয়োজিত হন। ১৯৭০ সালে তৎকালীন পাকিস্তান সুপ্রীম কোর্টের আইনজীবী হিসেবে তালিকাভুক্ত হন। ২৯ জানুয়ারি ১৯৮২ সালে তিনি হাইকোর্ট বিভাগের অতিরিক্ত বিচারক নিযুক্ত হন। হাইকোর্ট বিভাগে বিচারপতি পদে থাকাকালে বাংলাদেশের রাষ্ট্রপতি বিচারপতি শাহাবুদ্দিন আহমেদ তাকে ১৯৯০ সালের ২৫ ডিসেম্বর প্রধান নির্বাচন কমিশনার হিসেবে নিযুক্ত করেন, তিনি বিচারপতি সুলতান হোসেন খানের স্থলে স্থলাভিষিক্ত হন। ১৯৯৫ সালের ১৮ এপ্রিল তিনি প্রধান নির্বাচন কমিশনের পদ ত্যাগ করেন ও বিচারপতি এ কে এম সাদেক তার স্থলে স্থলাভিষিক্ত হন।
পরে তিনি হাইকোর্ট বিভাগে বিচারক হিসেবে কাজ শুরু করেন ও জুন ১৯৯৫ সালে আপীল বিভাগের বিচারক হিসেবে নিযুক্ত হন। ১ ফেব্রুয়ারি ১৯৯৯ সালে তিনি অবসর গ্রহণ করেন।
তিনি জাতীয় শিশু-কিশোর সংগঠন ‘ফুলকুঁড়ি আসর’-এর কেন্দ্রীয় সভাপতি হিসেবে আমৃত্যু দায়িত্ব পালন করেন।[৬]
এছাড়াও তিনি হামদর্দ (ওয়াক্ফ) ল্যাবরেটরীজের বোর্ড অব ট্রাস্টিজের চেয়ারম্যান হিসেবে দায়িত্ব পালন করেছেন।[৭] তিনি ইনসাফ বারাকাহ হাসপাতাল প্রতিষ্ঠা করেন এবং বারাকাহ ফাউন্ডেশনের প্রতিষ্ঠাতা চেয়ারম্যান ছিলেন।[৮]
মৃত্যু
[সম্পাদনা]তিনি ২০২৫ সালের ৯ ফেব্রুয়ারি ঢাকার ইনসাফ বারাকাহ হাসপাতালে মৃত্যুবরণ করেন।[১] তার মৃত্যুতে তাকে সম্মান জানিয়ে বাংলাদেশের সুপ্রিম কোর্টের কার্যক্রম আধা বেলা বন্ধ ছিল।[৯] তার প্রথম জানাজা গুলশান গাউসুল আজম মসজিদে অনুষ্ঠিত হয়। ১০ ফেব্রয়ারি বাদ জোহর জাতীয় ঈদগাহ মাঠে দ্বিতীয় জানাজা অনুষ্ঠিত হয়। এরপর বাদ মাগরিব ময়মনসিংহের গ্রামের বাড়িতে সর্বশেষ জানাজা শেষে তাকে পারিবারিক কবরস্থানে সমাহিত করা হয়।[১০]
তথ্যসূত্র
[সম্পাদনা]- 1 2 "সাবেক প্রধান নির্বাচন কমিশনার বিচারপতি মোহাম্মদ আব্দুর রউফ আর নেই"। দৈনিক যায়যায়দিন। ৯ ফেব্রুয়ারি ২০২৫।
- ↑ "সাবেক বিচারপতি আবদুর রউফ আর নেই"। প্রথম আলো। ৯ ফেব্রুয়ারি ২০২৫। সংগ্রহের তারিখ ৫ জুলাই ২০২৫।
- ↑ "সাবেক সিইসি বিচারপতি আব্দুর রউফের ইন্তেকাল"। দৈনিক ইনকিলাব। সংগ্রহের তারিখ ৫ জুলাই ২০২৫।
- ↑ "সাবেক সিইসি আবদুর রউফ আর নেই"। দৈনিক আমাদের সময়। সংগ্রহের তারিখ ৫ জুলাই ২০২৫।
- ↑ "বিচারপতি রউফের শূন্যতা পূরণ হওয়ার নয়"। দৈনিক ইনকিলাব। ১৬ ফেব্রুয়ারি ২০২৫। সংগ্রহের তারিখ ৬ জুলাই ২০২৫।
- ↑ "ফুলকুঁড়ির মাধ্যমেই বাংলাদেশের ভবিষ্যৎ উজ্জ্বল -বিচারপতি আবদুর রউফ"। দৈনিক সংগ্রাম। ২৩ মার্চ ২০১৪। ৫ ডিসেম্বর ২০২২ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভকৃত। সংগ্রহের তারিখ ৫ ডিসেম্বর ২০২২।
- ↑ "হামদর্দ বোর্ড অব ট্রাস্টিজের সভা অনুষ্ঠিত"। dainikamadershomoy.com (ইংরেজি ভাষায়)। সংগ্রহের তারিখ ৯ ফেব্রুয়ারি ২০২৫।
- ↑ "বিচারপতি আবদুর রউফ একটি চেতনার নাম"। দৈনিক জনকণ্ঠ। সংগ্রহের তারিখ ৫ জুলাই ২০২৫।
- ↑ "সাবেক বিচারপতি আবদুর রউফের মৃত্যুতে সুপ্রিম কোর্টের কার্যক্রম আধা বেলা বন্ধ"। প্রথম আলো। ৯ ফেব্রুয়ারি ২০২৫। সংগ্রহের তারিখ ৫ জুলাই ২০২৫।
- ↑ "সাবেক বিচারপতি ও সাবেক সিইসি মোহাম্মদ আব্দুর রউফ এর মৃত্যুতে প্রধান বিচারপতির শোক | জাতীয়"। BSS। সংগ্রহের তারিখ ১২ সেপ্টেম্বর ২০২৫।
