বিষয়বস্তুতে চলুন

আন্তর্জাতিক পারমাণবিক ঘটনা পরিমাপক

উইকিপিডিয়া, মুক্ত বিশ্বকোষ থেকে
আইএনইএস স্তরগুলির একটি উপস্থাপনা

আন্তর্জাতিক পারমাণবিক ও তেজস্ক্রিয় ঘটনা পরিমাপক (আইএনআরএস) (ইংরেজিতে ইন্টারন্যাশনাল নিউক্লিয়ার অ্যান্ড রেডিওলজিক্যাল ইভেন্ট স্কেল) ১৯৯০ সালে [] আন্তর্জাতিক আণবিক শক্তি সংস্থা (আইএইএ) কর্তৃক প্রবর্তন করা হয়েছিল যাতে পারমাণবিক দুর্ঘটনার সময় গুরুত্বপূর্ণ নিরাপত্তা সংশ্লিষ্ট তথ্যের তাৎক্ষণিক যোগাযোগ সম্ভবপর হয়।

পরিমাপকটিকে সংবর্গমান হিসেবে তৈরি করা হয়েছে, অনেকটা মূহুর্ত মাত্রা পরিমাপকের মত যেটি ভূমিকম্পের মাত্রা পরিমাপ করতে ব্যবহৃত হয়। এই পরিমাপকের প্রতিটি পর্যায়ক্রমিক স্তর পূর্ববর্তী স্তরের তুলনায় প্রায় দশগুণ গুরুতর দুর্ঘটনার প্রতিনিধিত্ব করে। ভূমিকম্প পরিমাপের ক্ষেত্রে যেখানে ঘটনার তীব্রতা পরিমাণগতভাবে মূল্যায়ন করা যায়, সেখানে একটি মানবসৃষ্ট বিপর্যয়ের তীব্রতার মাত্রার (যেমন, একটি পারমাণবিক দুর্ঘটনা) ক্ষেত্রে বিষদ ব্যাখ্যার প্রয়োজন পড়ে। এই সাবজেক্টিভিটির কারণে একটি ঘটনার আইএনইএস স্তর, ঘটনা ঘটার অনেক পরে নির্ধারণ করা হয়ে থাকে। তাই পরিমাপকটি দুর্যোগ-সহায়তা ব্যবস্থাপনায় সহায়তা করার উদ্দেশ্যে তৈরি করা হয়েছে।

বিস্তারিত

[সম্পাদনা]

বিভিন্ন দপ্তর কর্তৃপক্ষ দ্বারা পারমাণবিক ঘটনাগুলির সুসংগত বিবরণ নিশ্চিত করার জন্য বেশ কয়েকটি মানদণ্ড এবং সূচক সংজ্ঞায়িত করা হয়েছে। আইএনএস পরিমাপকে সাতটি অশূন্য স্তর রয়েছে, যার মধ্যে তিনটি ঘটনা- স্তর এবং চারটি দুর্ঘটনা-স্তর আছে। এগুলির পাশাপাশি একটি শূন্য স্তরও আছে।

পরিমাপক মাত্রা তিনটি শ্রেনির সর্বোচ্চ মানের বিচারে নির্ধারিত হয়। এগুলো হলো বহিঃ স্থানীয় প্রভাব, অন্তঃ স্থানীয় প্রভাব এবং প্রতিরক্ষা গভীরতার অধঃপতন।

স্তর শ্রেণিবিভাগ বর্ণনা উদাহরণ
বৃহত্তর দুর্ঘটনা মানুষ এবং পরিবেশের উপর প্রভাব:
  • ব্যাপক স্বাস্থ্য ও পরিবেশগত প্রভাবের সঙ্গে তেজস্ক্রিয় পদার্থসমূহের মুক্তি, যা মোকাবেলায় লম্বা সময়ের পরিকল্পিত প্রতিরোধ ব্যবস্থা প্রয়োজন।
আজ পর্যন্ত দুটি ৭ স্তরের দুর্ঘটনা ঘটেছে:
  • চেরনোবিল দুর্ঘটনা, ২৬ এপ্রিল ১৯৮৬। অনিরাপদ পরিবেশে একটি পরীক্ষণ করতে গিয়ে ক্রিটিকালিটি দুর্ঘটনা ঘটে, যার ফলস্রুতিতে ব্যাপক বিস্ফোরণ ও অগ্নি সংযোগ ঘটে। এই ঘটনায় পারমাণবিক কোরের একটি বড় অংশ পরিবেশে অবমুক্ত হয়ে পড়ে ও ৪০০০ থেকে ২৭০০০ মানুষের মৃত্যুর কারণ হয়।[][][][][] এ ঘটনায় পারমাণবিক বিদ্যুৎ কেন্দ্রটিকে ঘিরে ৩০ কিলোমিটারের একটি সংরক্ষিত এলাকা গড়ে তোলা হয়।
  • ফুকুশিমা দাইইচি পারমাণবিক দুর্ঘটনা হলো ১১ মার্চ ২০১১তে পর্যায়ক্রমিকভাবে ঘটে যাওয়া কিছু বিস্ফোরণ। ২০১১ সালের জাপান ভূমিকম্প ও সুনামির কারণে পারমাণবিক চুল্লির বিকল্প শক্তির উৎস ও নিয়ন্ত্রণ ব্যবস্থা ক্ষতিগ্রস্ত হয়। ফলে চুল্লি অতিরিক্ত গরম হয়ে ফুটো হয়ে যায়। [] পারমাণবিক বিদ্যুৎ কেন্দ্রটিকে ঘিরে ২০ কিলোমিটারের একটি অস্থায়ী সংরক্ষিত এলাকা গড়ে তোলা হয়।[][]
মারাত্মক দুর্ঘটনা মানুষ এবং পরিবেশের উপর প্রভাব:
  • Significant release of radioactive material likely to require implementation of planned countermeasures.
আজ পর্যন্ত একটি ৬ স্তরের দুর্ঘটনা ঘটেছে:
  • Kyshtym disaster at Mayak Chemical Combine (MCC) Soviet Union, 29 September 1957. A failed cooling system at a military nuclear waste reprocessing facility caused an explosion with a force equivalent to 70–100 tons of TNT.[১০] About 70 to 80 metric tons of highly radioactive material were carried into the surrounding environment. At least 22 villages were evacuated.[১১]
বৃহত্তর পরিণতি সম্পন্ন দুর্ঘটনা মানুষ এবং পরিবেশের উপর প্রভাব:
  • Limited release of radioactive material likely to require implementation of some planned countermeasures.
  • Several deaths from radiation.
রেডিওলজিক্যাল বাধা এবং নিয়ন্ত্রণের উপর প্রভাব:
  • Severe damage to reactor core.
  • Release of large quantities of radioactive material within an installation with a high probability of significant public exposure. This could arise from a major criticality accident or fire.
স্থানীয় প্রভাব সংশ্লিষ্ট দুর্ঘটনা মানুষ এবং পরিবেশের উপর প্রভাব:
  • Minor release of radioactive material unlikely to result in implementation of planned countermeasures other than local food controls.
  • At least one death from radiation.
রেডিওলজিক্যাল বাধা এবং নিয়ন্ত্রণের উপর প্রভাব:
  • Fuel melt or damage to fuel resulting in more than 0.1% release of core inventory.
  • Release of significant quantities of radioactive material within an installation with a high probability of significant public exposure.
গুরুতর ঘটনা মানুষ এবং পরিবেশের উপর প্রভাব:
  • Exposure in excess of ten times the statutory annual limit for workers.
  • Non-lethal deterministic health effect (e.g., burns) from radiation.
রেডিওলজিক্যাল বাধা এবং নিয়ন্ত্রণের উপর প্রভাব:
  • Exposure rates of more than 1 Sv/h in an operating area.
  • Severe contamination in an area not expected by design, with a low probability of significant public exposure.
গভীরভাবে প্রতিরক্ষার উপর প্রভাব:
  • Near-accident at a nuclear power plant with no safety provisions remaining.
  • Lost or stolen highly radioactive sealed source.
  • Misdelivered highly radioactive sealed source without adequate procedures in place to handle it.
  • Vandellòs I nuclear accident in Vandellòs (Spain), 1989; fire destroyed many control systems; the reactor was shut down.
  • Davis-Besse Nuclear Power Station (United States), 2002; negligent inspections resulted in corrosion through ৬ ইঞ্চি (১৫০ মিমি) of the carbon steel reactor head leaving only 3⁄8-inch (9.5 mm) of stainless steel cladding holding back the high-pressure reactor coolant.
  • Paks Nuclear Power Plant (Hungary), 2003; fuel rod damage in a cleaning tank.
  • THORP plant, Sellafield (United Kingdom), 2005; very large leak of a highly radioactive solution held within containment.
ঘটনা মানুষ এবং পরিবেশের উপর প্রভাব:
  • Exposure of a member of the public in excess of 10 mSv.
  • Exposure of a worker in excess of the statutory annual limits.
রেডিওলজিক্যাল বাধা এবং নিয়ন্ত্রণের উপর প্রভাব:
  • Radiation levels in an operating area of more than 50 mSv/h.
  • Significant contamination within the facility into an area not expected by design.
প্রতিরক্ষা-গভীরতার উপর প্রভাব:
  • Significant failures in safety provisions but with no actual consequences.
  • Found highly radioactive sealed orphan source, device or transport package with safety provisions intact.
  • Inadequate packaging of a highly radioactive sealed source.
অস্বাভাবিক ঘটনা প্রতিরক্ষা-গভীরতার উপর প্রভাব:
  • Overexposure of a member of the public in excess of statutory annual limits.
  • Minor problems with safety components with significant defence-in-depth remaining.
  • Low activity lost or stolen radioactive source, device, or transport package.
(জনসাধারণের কাছে ছোটখাট ঘটনা রিপোর্ট করার ব্যবস্থা দেশ ভেদে ভিন্ন। )
  • Tricastin (Drôme, France), July 2008; leak of ১৮,০০০ লি (৪,০০০ ইম্পেরিয়াল গ্যালন; ৪,৮০০ ইউএস গ্যালন) of water containing ৭৫ কেজি (১৬৫ পা) of unenriched uranium into the environment.[১৬]
  • Gravelines (Nord, France), 8 August 2009; during the annual fuel bundle exchange in reactor 1, a fuel bundle snagged on to the internal structure. Operations were stopped, the reactor building was evacuated and isolated in accordance with operating procedures.[১৭]
  • Penly (Seine-Maritime, France) 5 April 2012; an abnormal leak on the primary circuit of the reactor 2 was found in the evening of 5 April 2012 after a fire in reactor 2 around noon was extinguished.[১৮]
  • Sellafield (Cumbria, United Kingdom) 1 March 2018; Due to cold weather, a pipe failed causing water from the contaminated basement to flow into a concrete compound, which was subsequently discharged into the Irish Sea.[১৯]
  • Hunterston B nuclear power station (Ayrshire, United Kingdom) 2 May 2018; Cracks of the graphite bricks in Advanced Gas-cooled Reactor 3 were found during an inspection. About 370 fractures were discovered, above the operational limit of 350.[২০]
  • Sellafield Legacy Ponds sump tank (United Kingdom) 2019; detected liquid levels in a concrete sump tank have fallen.[২১]
  • Sellafield 15 May 2016; Loss of active ventilation within the Magnox Swarf Storage Silo. Extract fans were switched off for 16 hours in order to undertake some improvements to the ventilation system, but when it was restarted the system indicated zero flow. [২২]
বিচ্যুতি নিরাপত্তার কোনো গুরুত্ব নেই।

পরিমাপক সীমার বাইরে

[সম্পাদনা]

এছাড়াও পরিমাপক সীমার বাইরে এমন কিছু ঘটনা আছে যেসব ঘটনার সঙ্গে কোনো পরিমাপক মাত্রার নিরাপত্তা প্রাসঙ্গিকতা নেই। এইসব ঘটনা সমূহকে পরিমাপক সীমা বহির্ভূত ঘটনা হিসেবে চিহ্নিত করা হয়েছে।[২৭]

উদাহরণ:
  • ৫ মার্চ ১৯৯৯: সান ওনোফ্রে, যুক্তরাষ্ট্র: এখানকার একটি পারমাণবিক বিদ্যুৎ কেন্দ্রে একটি সন্দেহজনক উপাদানের খোঁজ পাওয়া যায়। উপাদানটিকে একটি বোমা হিসেবে সন্দেহ করা হয়েছিল।[২৮]
  • ২৯ সেপ্টেম্বর ১৯৯৯: এইচবি রবিনসন , মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র: পারমাণবিক বিদ্যুৎ কেন্দ্রের সুরক্ষিত এলাকার মধ্যে একটি টর্নেডো দেখা দেয়। [২৯] [৩০] [৩১]
  • ১৭ নভেম্বর ২০০২: হায়দ্রাবাদ, ভারত: পারমাণবিক জ্বালানী কমপ্লেক্সের প্রাকৃতিক ইউরেনিয়াম অক্সাইড জ্বালানী প্রস্তুতকারী কারখানায় একটি রাসায়নিক বিস্ফোরণ। [৩২]

সমালোচনা

[সম্পাদনা]

চেরনোবিল দুর্ঘটনাফুকুশিমা দাইইচি পারমাণবিক দুর্ঘটনার পার্থক্য নিরূপণ করতে গিয়ে বিদ্যমান আইএনইএস মাত্রাসমূহের ঘাটতি বেরিয়ে আসে। ১৯৮৬ সালের চেরনোবিল দুর্ঘটনা মানুষ ও পরিবেশের উপর মারাত্নক সুদূরপ্রসারী প্রভাব ফেললেও, ২০১১ সালের ফুকুশিমা দাইইচি পারমাণবিক দুর্ঘটনায় কোনো মানুষ নিহতের ঘটনা ঘটেনি এবং তুলনামূলক কম (১০ শতাংশ) তেজস্ক্রিয় উপাদান ছড়িয়ে পড়ার ঘটনা ঘটেছিল। প্রাথমিকভাবে ফুকুশিমা দাইইচি পারমাণবিক দুর্ঘটনার আইএনইএস মাত্রা, ৫ নির্ধারণ করা হলেও পরবর্তীতে চুল্লি নম্বর ১, ২ এবং ৩ নং এর ঘটনাকে একটি একক ঘটনায় সমন্বিত করায় এর আইএনইএস মাত্রা, ৭ এ উন্নিত করা হয়। তিনটি চুল্লি হতে নির্গত তেজস্ক্রিয় বস্তুর মোট পরিমান আইএনইএসের এই রেটিং নির্ধারণের মূল কারণ হিসেবে দেখা দেয়। [৩৩]

একটি সমীক্ষায় দেখা গেছে, আন্তর্জাতিক আনবিক শক্তি সংস্থার আইএনইএস পরিমাপক অত্যন্ত অসামঞ্জস্যপূর্ণ। এই সংস্থা কর্তৃক প্রদত্ত মানসমূহ অসম্পূর্ণ ও অনেক ঘটনার আইএনইএস মাত্রানির্ধারক অনুপস্থিত। শুধু তাই নয়, আইএনইএস মাত্রানির্ধারক দুর্ঘটনার প্রকৃত ক্ষয়ক্ষতির মাত্রাকে প্রতিফলিত করতে পারে না। একটি পরিমাপযোগ্য, অবিচ্ছিন্ন পরিমাপক আইএনইএস-এর জন্য কার্যকরী হতে পারে, যেভাবে ভূমিকম্পের মাত্রা পরিমাপের জন্য পুরানো মার্কালি পরিমাপককে ক্রমাগত পরিবর্তনশীল ভৌতীয় রিখটার পরিমাপক দ্বারা স্থানান্তর করা হয়েছিল। [৩৪]

নিম্নবর্ণিত যুক্তিসমূহ প্রস্তাব করা হয়েছে: প্রথমত, পরিমাপকটি মূলত একটি পৃথক গুণগত মাত্রানির্ধারক, যেটি ঘটনা স্তর ৭ এর ঊর্ধ্বে সংজ্ঞায়িত নয়। দ্বিতীয়ত, এটি তৈরি করা হয়েছিল জনসংযোগের একটি কার্য সম্পাদন ব্যবস্থা হিসেবে, একটি বস্তুনিষ্ঠ বৈজ্ঞানিক পরিমাপক ব্যবস্থা হিসেবে নয়। তৃতীয়ত, এর সবচেয়ে গুরুতর ত্রুটি হল এটি মাত্রা এবং তীব্রতাকে একত্রিত করে ফেলে। এই সমস্যাগুলি সমাধানের জন্য ব্রিটিশ পারমাণবিক নিরাপত্তা বিশেষজ্ঞ ডেভিড স্মিথ একটি বিকল্প পারমাণবিক দুর্ঘটনা মাত্রা পরিমাপক (এনএএমএস) প্রস্তাব করে ছিলেন। [৩৫]

পারমাণবিক দুর্ঘটনার মাত্রা পরিমাপক

[সম্পাদনা]

পারমাণবিক দুর্ঘটনার মাত্রা পরিমাপক (এনএএমএস) হলো আইএনইএস-এর একটি বিকল্প, যা ২০১১ সালে ফুকুশিমা দাইইচি পারমাণবিক বিপর্যয়ের ফলস্রুতিতে ডেভিড স্মিথ প্রস্তাব করেছিলেন। সে সময় কিছু উদ্বেগ উপস্থিত হয়েছিল আইএনইএস এর ব্যবহার নিয়ে। সন্দেহ ছিল আইএনইএস পরিমাপক বিভ্রান্তিকর উপায়ে ব্যবহৃত হচ্ছিল। এনএএমএস এইসকল উদ্ভুত বিচ্যুতি ত্রুটিসমূহে উদ্দেশ্য করে তৈরি করা হয়েছিল।

স্মিথ বলেছেন, আএনইএস পরিমাপক, স্তর নম্বর ৭ এ শেষ হয়ে যায়, তাই ২০১১ সালের ফুকুশিমা কিংবা ১৯৮৬ সালের চেরনোবিল দুর্ঘটনার চেয়েও মারাত্নক কোনো ঘটনা ঘটলে আইএনইএস পরিমাপক সে ঘটনাটিকে ৭ মাত্রার ঘটনা হিসেবে চিহ্নিত করবে। উপরন্তু, পরিমাপকটি অবিচ্ছিন্ন নয় এবং পারমাণবিক ঘটনা ও দুর্ঘটনার সূক্ষ্ম তুলনা করতে পারে না। এরপরই স্মিথ আইএনইএস পরিমাপকের সবচেয়ে উদ্বেকজনক সমস্যাটির তুলে ধরেন; এই পরিমাপকটি মাত্রা ও তীব্রতার পার্থক্য করতে পারে না, যে পার্থক্য অনেক আগেই ভূকম্পবিদগণ ভূমিকম্প ব্যাখ্যা করতে বিবৃত করেছিলেন। এক্ষেত্রে ভূমিকম্পের মাত্রা বলতে ভূমিকম্পের মাধ্যমে নির্গত শক্তির পরিমাণ ও ভূমিকম্পের তীব্রতা বলতে ভূমিকম্পের প্রভাবকে বুঝানো হয়। উদাহরণ, একটি উচ্চ মাত্রার পারমাণবিক ঘটনা (যেমন, কেন্দ্রীয় গলন) সব সময় একটি তীব্র তেজস্ক্রিয় দূষণ ঘটায় না। সুইজারল্যান্ডের লুসেন্সের একটি গবেষণা চুল্লিতে এমনটাই ঘটেছিল কিন্তু আইএনএস পরিমাপকে একে ৪ মাত্রার ঘটনা হিসেবে চিহ্নিত করা হয়েছিল। যে মাত্রায় ১৯৫৭ সালের উইন্ডস্কেল দুর্ঘটনাও অবস্থান করে, যদিও উইন্ডস্কেল দুর্ঘটনা ব্যাপক তেজস্ক্রিয় দূষণ ঘটিয়েছিল।

সংজ্ঞা

[সম্পাদনা]

এনএএমএস পরিমাপকের সংজ্ঞা নিম্নরূপ:

NAMS = log10 (20 × R)

এখানে R দ্বারা আয়োডিন-১৩১ এর তুলনায় টেরাবেকেরেলে (তেজস্ক্রিয়তা মাপার মাত্রা) তেজস্ক্রিয়তা ছড়িয়ে পড়ার পরিমাণকে বুঝানো হয়। এনএএমএস শুধুমাত্র পারমাণবিক চুল্লি এলাকার বাইরে বায়ুমণ্ডলীয় তেজস্ক্রিয়তা ছড়িয়ে পড়ার হারকে হিসেব করে এবং যেসব তেজস্ক্রিয়তা বাইরে ছড়িয়ে পড়ে না সেসব তেজস্ক্রিয়তাকে ০ মান দিয়ে চিহ্নিত করে। ২০ সংখ্যার একটি গণনার মাধমে আইএনইএস এবং এনএএমএস পরিমাপক দু'টিকে একই পরিসরে রাখা হয়, যাতে দুর্ঘটনা সমূহের মধ্যে একটি পার্থক্য বের করা যায়। যেকোনো তেজস্ক্রিয় দূষণ আইএনইএস মাত্রার ৪ হতে ৭ নম্বর পর্যন্ত চিহ্নিত হবে কিন্তু এনএএমএসে এ ধরনের সীমাবদ্ধতা নেই।

এনএএমএস পরিমাপক এখন পর্যন্ত কোনো পারমাণবিক বিদ্যুৎ কেন্দ্রের কাছাকাছি কোনো মহাসাগর, সমুদ্র, নদী বা ভূগর্ভস্থ পানির দূষণের মতো তরল পদার্থের তেজস্ক্রিয় দূষণকে মাত্রা পরিমাপের সময় বিবেচনা করে না।এনএএমএস পরিমাপকের মাত্রা সমূহের একটি পরিমাপ বিভিন্ন ধরনের আইসোটোপের তেজস্ক্রিয় সমতুল্যতার সমস্যাযুক্ত সংজ্ঞা এবং তেজস্ক্রিয়তা গ্রহনের বিভিন্ন পথ যার মাধ্যমে তেজস্ক্রিয়তা মানবদেহে প্রবেশ করতে পারে সেসব পথের সাথে সম্পর্কিত বলে ধারণা করা হয় , [৩৬] যেমন মাছ খাওয়া বা খাদ্য শৃঙ্খলের মাধ্যমে।

তথ্যসূত্র ও পাদটিকা

[সম্পাদনা]
  1. "Event scale revised for further clarity"। World-nuclear-news.org। ৬ অক্টোবর ২০০৮। সংগ্রহের তারিখ ১৩ সেপ্টেম্বর ২০১০ 
  2. Parfitt, Tom (২৬ এপ্রিল ২০০৬)। "Opinion remains divided over Chernobyl's true toll"The Lancet। পৃষ্ঠা 1305–1306। সংগ্রহের তারিখ ৮ মে ২০১৯ 
  3. Ahlstrom, Dick (২ এপ্রিল ২০১৬)। "Chernobyl anniversary: The disputed casualty figures"The Irish Times। সংগ্রহের তারিখ ৮ মে ২০১৯ 
  4. Mycio, Mary (২৬ এপ্রিল ২০১৩)। "How Many People Have Really Been Killed by Chernobyl? Why estimates differ by tens of thousands of deaths"Slate। সংগ্রহের তারিখ ৮ মে ২০১৯ 
  5. Ritchie, Hannah (২৪ জুলাই ২০১৭)। "What was the death toll from Chernobyl and Fukushima?"Our World in Data। সংগ্রহের তারিখ ৮ মে ২০১৯ 
  6. Highfield, Roger (২১ এপ্রিল ২০১১)। "How many died because of the Chernobyl disaster? We don't really know (Article updated May 7, 2019)"New Scientist। সংগ্রহের তারিখ ১০ মে ২০১৯ 
  7. "Japan: Nuclear crisis raised to Chernobyl level"BBC News। ১২ এপ্রিল ২০১১। সংগ্রহের তারিখ ১২ এপ্রিল ২০১১ 
  8. "Japan's government downgrades its outlook for growth"BBC News। ১৩ এপ্রিল ২০১১। সংগ্রহের তারিখ ১৩ এপ্রিল ২০১১ 
  9. McCurry, Justin (১২ এপ্রিল ২০১১)। "Japan upgrades nuclear crisis to same level as Chernobyl"The Guardian (ইংরেজি ভাষায়)। সংগ্রহের তারিখ ১৪ ডিসেম্বর ২০২০ 
  10. "Kyshtym disaster | Causes, Concealment, Revelation, & Facts"Encyclopedia Britannica (ইংরেজি ভাষায়)। সংগ্রহের তারিখ ১১ জুলাই ২০১৮ 
  11. "The world's worst nuclear power disasters"Power Technology। ৭ অক্টোবর ২০১৩। 
  12. Brian, Cowell। "Loss of Off Site Power: An Operator's Perspective, EDF Energy, Nuclear Generation" (পিডিএফ)The French Nuclear Energy Company (SFEN)। সংগ্রহের তারিখ ২০১৯-০৫-১৪ 
  13. Information on Japanese criticality accidents,
  14. "Statement of civil incidents meeting the Ministerial Reportable Criteria (MRC) reported to ONR – Q1 2017"www.onr.org.uk। ২০১৯-০৫-০৮ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২০১৯-০৫-০৮ 
  15. "Sellafield Ltd incident reports and notices"www.gov.co.uk। সংগ্রহের তারিখ ২০১৯-১০-১২ 
  16. River use banned after French uranium leak | Environment. The Guardian (10 July 2008).
  17. (AFP) – 10 août 2009। "AFP: Incident "significatif" à la centrale nucléaire de Gravelines, dans le Nord"। সংগ্রহের তারিখ ১৩ সেপ্টেম্বর ২০১০ 
  18. (ASN) – 5 April 2012। "ASN has decided to lift its emergency crisis organisation and has temporarily classified the event at the level 1"। ASN। ১০ মে ২০১২ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ৬ এপ্রিল ২০১২ 
  19. "Statement of civil incidents meeting the Ministerial Reportable Criteria (MRC) reported to ONR – Q1 2018"www.onr.org.uk। ২০১৯-০৫-১৪ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২০১৯-০৫-১৪ 
  20. "Statement of civil incidents meeting the Ministerial Reportable Criteria (MRC) reported to ONR – Q2 2018"www.onr.org.uk। ২০১৯-০৫-১৪ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২০১৯-০৫-১৪ 
  21. "Sellafield Ltd incident reports and notices"www.gov.co.uk। সংগ্রহের তারিখ ২০১৯-১০-১৯ 
  22. Forepoint (http://www.forepoint.co.uk)। "Incident Reports"Sellafield Ltd (ইংরেজি ভাষায়)। ২০১৭-০৭-১২ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২০২১-০৩-০৯ 
  23. http://www.jaea.go.jp/02/press2005/p06021301/index.html (জাপানি ভাষায়)
  24. http://200.0.198.11/comunicados/18_12_2006.pdf[স্থায়ীভাবে অকার্যকর সংযোগ] (স্পেনীয় ভাষায়)
  25. News | Slovenian Nuclear Safety Administration[স্থায়ীভাবে অকার্যকর সংযোগ]
  26. "More information on the plant disturbance at Olkiluoto 2" 
  27. IAEA: "This event is rated as out of scale in accordance with Part I-1.3 of the 1998 Draft INES Users Manual, as it did not involve any possible radiological hazard and did not affect the safety layers.[স্থায়ীভাবে অকার্যকর সংযোগ]"
  28. Discovery of suspicious item in plant | Nuclear power in Europe. Climatesceptics.org. Retrieved on 2013-08-22.
  29. "NRC: SECY-01-0071 – Expanded NRC Participation in the Use of the International Nuclear Event Scale"। US Nuclear Regulatory Commission। ২৫ এপ্রিল ২০০১। পৃষ্ঠা 8। ২৭ অক্টোবর ২০১০ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ১৩ মার্চ ২০১১ 
  30. "SECY-01-0071-Attachment 5 – INES Reports, 1995–2000"। US Nuclear Regulatory Commission। ২৫ এপ্রিল ২০০১। পৃষ্ঠা 1। ২৭ অক্টোবর ২০১০ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ১৩ মার্চ ২০১১ 
  31. Tornado sighting within protected area | Nuclear power in Europe. Climatesceptics.org. Retrieved on 2013-08-22.
  32. [১] ওয়েব্যাক মেশিনে আর্কাইভকৃত ২১ জুলাই ২০১১ তারিখে
  33. Geoff Brumfiel (২৬ এপ্রিল ২০১১)। "Nuclear agency faces reform calls": 397–398। ডিওআই:10.1038/472397aপিএমআইডি 21528501 
  34. Spencer Wheatley, Benjamin Sovacool, and Didier Sornette Of Disasters and Dragon Kings: A Statistical Analysis of Nuclear Power Incidents & Accidents, Physics Society, 7 April 2015.
  35. David Smythe (১২ ডিসেম্বর ২০১১)। "An objective nuclear accident magnitude scale for quantification of severe and catastrophic events"ডিওআই:10.1063/PT.4.0509 
  36. Smythe, David (১২ ডিসেম্বর ২০১১)। "An objective nuclear accident magnitude scale for quantification of severe and catastrophic events" (ইংরেজি ভাষায়): 13। ডিওআই:10.1063/PT.4.0509অবাধে প্রবেশযোগ্য 

বহিঃসংযোগ

[সম্পাদনা]