আনিসুল হক চৌধুরী
আনিসুল হক চৌধুরী | |
---|---|
জন্ম | ৩১ মে ১৯১৯ বিক্রমপুর, তৎকালীন পূর্ব বাংলা |
মৃত্যু | ৮ সেপ্টেম্বর ২০০৯ যুক্তরাষ্ট্র | (বয়স ৯০)
পেশা | গীতিকার, কবি, প্রাবন্ধিক ও গবেষক |
জাতীয়তা | বাংলাদেশী |
নাগরিকত্ব | বাংলাদেশী |
আনিসুল হক চৌধুরী (৩১ মে ১৯১৯ - ৮ সেপ্টেম্বর ২০০৯) বাংলাদেশী গীতিকার, কবি, প্রাবন্ধিক ও গবেষক ছিলেন। পঞ্চাশ ও ষাটের দশকে ঢাকা বেতারে যে সকল গীতিকারের গান প্রচারিত হতো, আনিসুল হক চৌধুরী ছিলেন তাদের অন্যতম। শিল্পী আব্বাসউদ্দীন আহমদ, আবদুল আলীম, আব্দুল লতিফসহ তৎকালীন প্রতিষ্ঠিত প্রায় সব শিল্পীই তার লেখা গান গেয়েছেন।[১]
ব্যক্তিগত জীবন
[সম্পাদনা]আনিসুল হক চৌধুরী ১৯১৯ সালের ৩১ মে তৎকালী পূর্ব বাংলার বিক্রমপুরে জন্মগ্রহণ করেন। তার পিতা বজলুল হক চৌধুরী ও মাতা জোবেদা খাতুন। তিনি ১৯৪৮ সালে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে বাংলায় অনার্সসহ এমএ পাস করেন। তিনি মুন্সীগঞ্জ জেলার সিরাজদিঘা থানার ইছাপুর কলেজ ও ফরিদপুর জেলার রাজৈর কলেজে অধ্যাপনা করেছেন। জীবনের শেষ ২০ বছর তিনি স্ত্রী, তিন পুত্র, তিন পুত্রবধু এবং পাঁচ নাতী-নাতনীদের সাথে যুক্তরাষ্ট্রে বসবাস করেছেন। ৮ই সেপ্টেম্বর ২০০৯ তারিখে বাংলাদেশ সময় রাত ৩টায় যুক্তরাষ্ট্রের সেন্ট পিটার্সবার্গ জেনারেল হাসপাতালে বার্ধক্যজনিত কারণে মৃত্যুবরণ করেন। তিনি নৃত্যশিল্পি ফারজানা রিয়া চৌধুরীর চাচা ও হানিফ সংকেতের চাচা শ্বশুর।[২]
গীতিকার হিসেবে উল্লেখযোগ্য কর্মকাণ্ড
[সম্পাদনা]তার লেখা কালজয়ী গান গুলোর মধ্যে অন্যতম হল মরমী শিল্পী আবদুল আলীমের গাওয়া রূপালী নদী রে, রূপ দেইখা তোর হইয়াছি পাগল। গানটি সুরারোপ করেছিলেন প্রখ্যাত সুরকার সত্য সাহা। ষাটের দশকে এই গানটি তুমুল জনপ্রিয় ছিল। বায়ান্নর ভাষা আন্দোলনের প্রেক্ষাপট নিয়ে প্রথম দিকে যে কয়েকটি গান রচিত হয়েছিল তার অন্যতম একটি হলো ভাই রে ভাই, বাংলাদেশে বাঙালি আর নাই যার রচয়িতা অনিসুল হক চৌধুরী। তার লেখা গণসঙ্গীত শুধু ঘুম পাড়ানী গান আজি নয়, দেশাত্মকবোধক গান সাগড় পাড়ের দেশ, আমাদের হাজার নদীর দেশ এখনও অনেকের মন ছুঁয়ে আছে। তার লেখা গান "ময়নামতির শাড়ি দেব, গয়না দিব গায়" প্রায় সকল নৃত্যশিল্পীই তাদের নৃত্যশৈলীতে আবহসঙ্গীত হিসেবে ব্যবহার করেন।
তিনি বেশ কয়েকটি চলচ্চিত্রের জন্যেও গান লিখেছেন। এর মধ্যে উল্লেখযোগ্য হল নদী ও নারী, ১৩ নম্বর ফেকু ওস্তাগার লেন, সুখী পরিবার ইত্যাদি। এছাড়াও তিনি ঢাকা বেতারের জন্মলগ্ন থেকে প্রতিষ্ঠানটির সাথে জড়িত ছিলেন।
লেখালেখি এবং গবেষণা
[সম্পাদনা]আনিসুল হক চৌধুরীর লেখা গবেষণাধর্মী বই হল বাংলার মূল, গানের বই হল গানে ভরে মন ও রুপালী নদীর গান। কবিতার বই হল নিশি ভোরের ফুল ও বাংলা গ্রামার বই রচনা মনজুশা (নবম ও দশম শ্রেনীর জন্য) উল্লেখযোগ্য। শেষ জীবনে প্রবাসে বসে ও তিনি আমেরিকায় বিভিন্ন বাংলা পত্র পত্রিকার জন্য নিয়মিত কবিতা ও প্রবন্ধ লিখেছিলেন।