আজিজ মোহাম্মদ ভাই

উইকিপিডিয়া, মুক্ত বিশ্বকোষ থেকে
আজিজ মোহাম্মদ ভাই
জাতীয়তাবাংলাদেশী
পেশাব্যবসায়ী
পিতা-মাতা
  • মোহাম্মদ ভাই (পিতা)
  • খাদিজা মোহাম্মদ ভাই (মাতা)

আজিজ মোহাম্মদ ভাই একজন বাংলাদেশী ব্যবসায়ী। [১] তিনি হত্যা ও মাদক পাচারসহ বেশ কয়েকটি গুরুতর অপরাধে জড়িত ছিলেন বলে অভিযোগ রয়েছে। ৫০টির মত চলচ্চিত্র প্রযোজনা করেছেন তিনি।[২][৩][৪]

জীবনী[সম্পাদনা]

১৯৪৭ এ দেশভাগের পর তাদের পরিবার ভারতের গুজরাত থেকে বাংলাদেশে আসে। তাদের পরিবার মূলত পারস্য বংশোদ্ভুত। তারা ‘বাহাইয়ান’ সম্প্রদায়ের লোক। ‘বাহাইয়ান’ কে সংক্ষেপে ‘বাহাই’ বলা হয়। উপমহাদেশের উচ্চারণে এই ‘বাহাই’ পরবর্তীতে ‘ভাই’ হয়ে যায়। ধনাঢ্য এই পরিবার পুরান ঢাকায় বসবাস শুরু করে। ১৯৬২ সালে আজিজ মোহম্মদ ভাইয়ের জন্ম হয় আরমানিটোলায়। আজিজ মোহাম্মদ ভাই তিন দশকেরও বেশি সময় ধরে ইস্পাত প্রযোজকের পরিচালনায় সক্রিয়ভাবে নিযুক্ত ছিলেন। [১] তিনি সার্ক চেম্বার অফ কমার্সের আজীবন সদস্য। [১] অলিম্পিক ব্যাটারী, অলিম্পিক বলপেন, অলিম্পিক ব্রেড ও বিস্কুট, এমবি ফার্মাসিটিউক্যাল, এমবি ফিল্ম ইত্যাদি প্রতিষ্ঠানের মালিক আজিজ মোহাম্মদ ভাই। এছাড়াও মালয়েশিয়া, থাইল্যান্ড, হংকং, সিঙ্গাপুরে রয়েছে তার হোটেল ও রিসোর্ট ব্যবসা। মাদক ব্যাবসার সাথে তার জড়িত থাকার প্রমাণও পাওয়া গেছে। তিনি সার্ক চেম্বারের আজীবন সদস্য। মুম্বাই এর ডন দাউদ ইব্রাহিমের সাথে রয়েছে তার ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক।

বিতর্ক[সম্পাদনা]

আজিজ মোহাম্মদ ভাইকে রাষ্ট্রপতি হুসেন মুহাম্মদ এরশাদের আমলে প্রথম গ্রেপ্তার করা হয়েছিল। তাকে মুক্ত করতে আগা খান, প্রিন্স করিম আগা খান নিজেই বাংলাদেশে এসেছিলেন।[৫]

খুনের অভিযোগ[সম্পাদনা]

১৯৯৭ সালে জনপ্রিয় চিত্রনায়ক সালমান শাহকে  হত্যা করার অভিযোগ ওঠে তার বিরুদ্ধে। যদিও হত্যাকাণ্ডের সময় থাইল্যান্ডে ছিলেন আজিজ। কিন্তু সেটাকে আত্নহত্যা বলেই প্রচার করা হয়। যদিও সালমান শাহ এর পরিবার ও তার ভক্তদের ধারণা এটা হত্যাকাণ্ড। বর্তমানে আজিজ মোহাম্মদ ভাই সপরিবারে থাইল্যান্ডে থাকেন। সেখান থেকেই ব্যবসা পরিচালনা করেন। তার স্ত্রী নওরিন মোহাম্মদ ভাই দেশে এসে ব্যবসা দেখেন। আরো আছে ২ ছেলে ও ২ মেয়ে। থাইল্যাণ্ডে গেলে বাংলাদেশের মিডিয়া জগতের অনেকেই  আজিজ মোহাম্মদ ভাই এর অতিথেয়তা পান। তার মতো সালমানের স্ত্রী সামিরারও থাইল্যান্ড এ বসবাস সন্দেহকে বাড়িয়েই দেয়। সেই ঘটনা আবার তুমুল আলোচনার ঝড় তুলে সালমানের বিউটিশিয়ান যুক্তরাষ্ট্রে বসবাসকারী রাবেয়া সুলতানা রুবির ফেসবুকে তুলে ধরা এক ভিডিওবার্তায়। [২][৬]

সালমান শাহের মৃত্যুর দুই বছর পর ১৯৯৮ সালে ঢাকা ক্লাবে খুন করা হয় আরেক চিত্র নায়ক সোহেল চৌধুরী কে। এ হত্যাকাণ্ডেও আজিজ মোহাম্মদ ভাই ও তার পরিবারের জড়িত থাকার অভিযোগ ওঠে।[৭][৮]

ড্রাগ চার্জ[সম্পাদনা]

২০০৭ সালে তাকে ইয়াবা ট্যাবলেট তৈরির জন্য অভিযুক্ত করা হয়। এই একই অপরাধে ২০১৩ সালে তার ভাতিজা আমিন হুদার ৭৯ বছরের জেল হয়েছে। । [৪]

২০১৯ সালের অক্টোবরে ঢাকার গুলশান এলাকায় ব্যবসায়ী আজিজ মোহাম্মদ ভাইয়ের বাড়িতে মাদকবিরোধী অভিযান চালিয়ে মাদ্রকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তর মদের বোতল, সীসা ও ক্যাসিনো সামগ্রী উদ্ধার করে। যদিও সেসময় তিনি দেশে ছিলেন না।[৯]

তথ্যসূত্র[সম্পাদনা]

  1. "Board of Directors"Olympic Industries Ltd.। সংগ্রহের তারিখ ৩১ মে ২০১৯ 
  2. Biswas, Prakash (১২ জুলাই ২০১৬)। "Police Bureau of Investigation to open fresh enquiry into movie star Salman Shah's death"bdnews24.com। সংগ্রহের তারিখ ১ জানুয়ারি ২০১৭ 
  3. "Actor Salman Shah's death case revived"The Daily Observer। ১১ ফেব্রুয়ারি ২০১৫। ১ জানুয়ারি ২০১৭ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ১ জানুয়ারি ২০১৭ 
  4. Tipu, Sanaul Islam (৩ জুন ২০১৩)। "Bail rejected, 'Yaba king' Amyn Huda in jail"Dhaka Tribune। ২৮ জুন ২০১৫ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২৫ জানুয়ারি ২০১৫ 
  5. "International News"। South China Morning Post। ৮ জানুয়ারি ১৯৯৮। 
  6. "Aziz Mohammad Bhai surprised"The Daily Star। ২৬ জুলাই ১৯৯৭। সংগ্রহের তারিখ ১ জানুয়ারি ২০১৭ 
  7. "World: South Asia Bangladeshi businessman arrested"BBC News। ৭ জানুয়ারি ১৯৯৯। সংগ্রহের তারিখ ২৫ জানুয়ারি ২০১৫ 
  8. Biswas, Prokash (১৮ ডিসেম্বর ২০১৫)। "No trial even 17 years after actor Sohel Chowdhury's murder"bdnews24.com। সংগ্রহের তারিখ ১ মে ২০১৬ 
  9. "আজিজ মোহাম্মদ ভাইয়ের বাসায় অভিযান, মাদক উদ্ধার"। ২০১৯-১০-২৭। ২০১৯-১০-২৮ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২০১৯-১০-২৮ "আজিজ মোহাম্মদ ভাইয়ের বাসায় অভিযান, মাদক উদ্ধার"। ২০১৯-১০-২৭। ২০১৯-১০-২৮ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২০১৯-১০-২৮ 

বহিঃসংযোগ[সম্পাদনা]