অমিয় বাগচী

উইকিপিডিয়া, মুক্ত বিশ্বকোষ থেকে
অমিয় বাগচী
জন্ম(১৯১৫-০৫-০৭)৭ মে ১৯১৫
বিষ্ণুপুর, বাঁকুড়া বেঙ্গল প্রেসিডেন্সি, ব্রিটিশ ভারত (অধুনা পশ্চিমবঙ্গ, ভারত)
মৃত্যু২৮ আগস্ট ১৯৭৩(1973-08-28) (বয়স ৫৮)
কলকাতা, পশ্চিমবঙ্গ, ভারত
পেশাকবি, গীতিকার
জাতীয়তাভারতীয়
ধরনকবিতা, আধুনিক গান

অমিয় বাগচী বা অমিয়কুমার বাগচী (ইংরেজি: Amiya Bagchi or Amiyakumar Bagchi) (৭ মে,১৯১৫ - ২৮ আগস্ট, ১৯৭৩) ছিলেন কমিউনিস্ট আদর্শে বিশ্বাসী ও আজীবন রবীন্দ্র অনুরাগী বাঙালি কবি ও গীতিকার। ১৯৪০-এর দশকে তার লেখা আধুনিক বাংলা গান জনপ্রিয়তা লাভ করেছিল। [১][২]

জীবনী[সম্পাদনা]

কবি অমিয় বাগচীর জন্ম ১৯১৫ খ্রিস্টাব্দের ৭ই মে বৃটিশ ভারতের অধুনা পশ্চিমবঙ্গের বিষ্ণুপুরে তার মামার বাড়িতে। পিতা বিনয়কৃষ্ণ বাগচী ও মাতা প্রতিভা দেবীর জ্যেষ্ঠ সন্তান ছিলেন তিনি। পৈতৃক বাড়ি উত্তর কলকাতার ৪৭ নম্বর কেশবচন্দ্র সেন স্ট্রিটে। তার বিদ্যালয়ের পাঠ কলকাতার রামদুলাল স্ট্রিটের কেশব অ্যাকাডেমিতে। তিনি স্নাতক হন বিদ্যাসাগর কলেজ থেকে। অমিয় বাগচী কর্মজীবনে ব্যবসায় কাটিয়েছেন সাঁওতাল পরগণায়। সাহিত্যের জগতে তিনি রবীন্দ্র অনুরাগী ছিলেন। 'সচিত্র শিশির' পত্রিকায় তিনি নিয়মিত লেখালেখি করতেন। ১৯৪৩ খ্রিস্টাব্দে তার রচিত "কথা কোয়ো নাকো শুধু শোনো" গানটি হেমন্ত মুখোপাধ্যায় নিজের সুরেই গাইলেন এবং এতেই হেমন্ত মুখোপাধ্যায় প্রথম জনপ্রিয়তা পান। পরে গাইলেন "এসো কুঞ্জে গো মধু জ্যোছনায়"। গানের সূত্রে তাদের দুজনের পরিচয় শেষে অন্তরঙ্গতার পর্যায়ে পৌঁছে যায়। [৩] অমিয় বাগচীর রচিত গানে সুধীরলাল চক্রবর্তীহেমন্ত মুখোপাধ্যায় প্রমুখের সুরারোপে গেয়েছেন হেমন্ত মুখোপাধ্যায়সহ তরুণ বন্দ্যোপাধ্যায়, দ্বিজেন মুখোপাধ্যায়, তালাত মাহমুদ শচীন গুপ্ত, বেলা মুখোপাধ্যায়, সমরেশ রায় প্রমুখ প্রখ্যাত শিল্পীরা। বন্ধুবর হেমন্ত মুখোপাধ্যায়ের সহযোগে তিনি একটি গানের বই "কলহংস" প্রকাশ করেন। ছায়াছবির জন্যও গান লিখেছিলেন তিনি। "পূর্বরাগ" ও "দুঃখে যাদের জীবন গড়া" ছবি দুটিতে তার রচিত গানে সুরারোপ করেন হেমন্ত মুখোপাধ্যায়আবদুল আহাদ। শুধু গীত রচনাই নয়, তিনি আকাশবাণী কলকাতা র জন্য একাধিক নাটকও রচনা করেছেন। তার রচনাসম্ভারের উল্লেখযোগ্য গ্রন্থগুলি হল -

  • 'পতিতা'
  • 'যৌনজীবন'
  • 'বাসনা বাসর'
  • 'মন মুকুর'

জনপ্রিয় গানগুলি হল -

  • 'মাধবীর স্বপনে এসেছে ফাগুন'
  • 'তোমার বিরহ চোখে আনে জল'
  • 'আমার বিরহ আকাশে'
  • 'কেন চম্পক জাগছিল না'
  • 'সে কোন ভাদরে ভরা ঘট ছলছলি'
  • 'মাধবী জাগো'
  • 'হারিয়ে গেলেম'
  • 'জীবন নদীর দুই তীরে'
  • 'কথা ছিল তোমার মালা করবে আমায় দান'
  • 'তোমার দুয়ারখানি খোলা'

কবি অমিয় বাগচীর স্ত্রী মলিনা দেবী, কন্যা মধুশ্রী ও পুত্র অমিত। তার মামাতো বোন ছিলেন আকাশবাণীর প্রখ্যাত সংবাদ পাঠিকা নীলিমা সান্যাল ।

মৃত্যু[সম্পাদনা]

কবি অমিয় বাগচী ১৯৭৩ খ্রিস্টাব্দের ২৮ শে আগস্ট কলকাতায় প্রয়াত হন।

তথ্যসূত্র[সম্পাদনা]

  1. সুবোধচন্দ্র সেনগুপ্ত ও অঞ্জলি বসু সম্পাদিত, সংসদ বাঙালি চরিতাভিধান, প্রথম খণ্ড, সাহিত্য সংসদ, কলকাতা, আগস্ট ২০১৬, পৃষ্ঠা ৩৮, আইএসবিএন ৯৭৮-৮১-৭৯৫৫-১৩৫-৬
  2. অরিজিৎ মৈত্র (৩১ মে ২০১৪)। ""জন্ম শতবর্ষে গীতিকার অমিয় বাগচী""। গণশক্তি কলকাতা 
  3. আনন্দধারা" হেমন্ত মুখোপাধ্যায় সম্পাদনা - অভীক চট্টোপাধ্যায়, সপ্তর্ষি প্রকাশন কলকাতা পৃষ্ঠা ৩৬,৯৪ আইএসবিএন ৯৭৮-৯৩-৮২৭০-৬৫৪-০