অতার সিং পেইন্টাল

উইকিপিডিয়া, মুক্ত বিশ্বকোষ থেকে
অতার সিং পেইন্টাল, এফআরএস
জন্ম(১৯২৫-০৯-২৪)২৪ সেপ্টেম্বর ১৯২৫
মৃত্যু২১ ডিসেম্বর ২০০৪(2004-12-21) (বয়স ৭৯)
মাতৃশিক্ষায়তন
পুরস্কার
বৈজ্ঞানিক কর্মজীবন
কর্মক্ষেত্রশারীরতত্ত্ব
প্রতিষ্ঠানসমূহ
ডক্টরাল উপদেষ্টাডেভিড হুইটরিজ
টীকা
Awards[১]

ড.অতার সিং পেইন্টাল, এফআরএস, (২৪ সেপ্টেম্বর ১৯২৫ - ২১ ডিসেম্বর ২০০৪)[২] ছিলেন চিকিৎসা বিজ্ঞানী যিনি নিউরোসায়েন্স তথা স্নায়ুবিজ্ঞান এবং পালমোনোলজি তথা শ্বাসযন্ত্রের বিজ্ঞানের ক্ষেত্রে অগ্রণী আবিষ্কার করেন। তিনিই প্রথম ভারতীয় ফিজিওলজিস্ট যিনি লন্ডনের রয়্যাল সোসাইটির ফেলো হন। ১৯৮৬ খ্রিস্টাব্দে ভারত সরকার চিকিৎসা বিজ্ঞানে অসামান্য অবদানের জন্য দেশের দ্বিতীয় সর্বোচ্চ বেসামরিক পুরস্কার পদ্মবিভূষণ প্রদান করে। [৩]

জীবনী[সম্পাদনা]

অতার সিং পেইন্টালের জন্ম ১৯২৫ খ্রিস্টাব্দের ২৪ সেপ্টেম্বর ব্রিটিশ বার্মার মগৌকে ব্রিটিশ মেডিকেল সার্ভিসে কর্মরত তার পিতা মান সিং-এর কর্মস্থলে। অতার সিং মেধাবী ছাত্র ছিলেন। চৌদ্দ বৎসর বয়সে লাহোর এসে ম্যাট্রিকুলেশন পরীক্ষা দেন। ইন্টারমিডিয়েট পরীক্ষা দেন সেখানকার ফোরম্যান ক্রিশচিয়ান কলেজ থেকে। এরপর চলে আসেন লখনউ-এ। সেখানকার কিং জর্জ মেডিকেল কলেজ ভর্তি হন ১৯৪৩ খ্রিস্টাব্দে। মেধাবী অতার সিং স্নাতক স্তরের পরীক্ষায় হিউইট স্বর্ণপদকসহ সাম্মানিক ও বহু পুরস্কারসহ স্নাতক হন ১৯৪৮ খ্রিস্টাব্দে তিনি শরীরবিদ্যায় স্নাতকোত্তর করেন। এম ডি করার সময়েই তার গবেষণার বিষয়বস্তু ছিল ইলেকট্রি রেসিস্টান্স অফ দ্য স্কিন ইন নরমাল অ্যান্ড ইন সাইকোটিক্স। বৈদ্যুতিক প্রতিরোধ ক্ষমতা পরিমাপ করতে তিনি সরঞ্জাম তৈরি করেন এবং ১৯৫১ খ্রিস্টাব্দে চার শো মানসিক রোগীর উপর পরীক্ষা নিরীক্ষা করে মানুষের গ্যালভানিক প্রতিক্রিয়ার নতুন ইন্ডেক্স, পেন্টাল সূচক নির্দিষ্ট করেন। এরপর পেইন্টাল রকফেলার ফাউন্ডেশনের ফেলোশিপ লাভ করে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে যান। এডিনবার্গ বিশ্ববিদ্যালয়ে ডেভিড হুইটরিজের তত্ত্বাবধানে গবেষণা করে ১৯৫৩ খ্রিস্টাব্দে পিএইচডি ডিগ্রি লাভ করেন।[৪]

কর্মজীবন[সম্পাদনা]

দেশে ফিরে পেইন্টাল কানপুরের ডিফেন্স ল্যাবরেটরিতে টেকনিক্যাল অফিসার নিযুক্ত হন। ১৯৫৮ খ্রিস্টাব্দে নয়াদিল্লির অল ইন্ডিয়া ইনস্টিটিউট অফ মেডিক্যাল সায়েন্সেস ও পরে ১৯৬৪ খ্রিস্টাব্দে তিনি বল্লভাই প্যাটেল চেস্ট ইনস্টিটিউটের পরিচালক হন। তিনি দিল্লির ইউনিভার্সিটি কলেজ অফ মেডিক্যাল সায়েন্সেসের প্রথম অধ্যক্ষও ছিলেন।[৫] পেইন্টাল পরবর্তীকালে ইন্ডিয়ান কাউন্সিল অফ মেডিকেল রিসার্চের মহাপরিচালক পদে উন্নীত হন এবং তিনি সোসাইটি অফ সায়েন্টিফিক ভ্যালুসের প্রতিষ্ঠাতা সভাপতিও হন। [৬]


অবদান[সম্পাদনা]

চিকিৎসা বিজ্ঞানের জগতে ড.পেইন্টালের প্রধান অবদান হল পৃথক সংবেদনশীল রিসেপ্টর থেকে অভিন্ন আবেগ রেকর্ড করার জন্য একক-ফাইবার কৌশলের উদ্ভাবন। তার আবিষ্কৃত সরঞ্জাম গুলি হল-

  • টাইপ বি অ্যাট্রিয়াল রিসেপ্টর;
  • গ্যাস্ট্রিক স্ট্রেচ রিসেপ্টর;
  • ভেন্ট্রিকুলার প্রেসার রিসেপ্টর;
  • মিউকোসাল মেকানো রিসেপ্টর অন্ত্রের জন্য;
  • প্রেসার-পেইন রিসেপ্টর পেশীর জন্য
  • জে রিসেপ্টর

এগুলি শারীরবৃত্তীয় বোঝাপড়ায় নতুন যুগের সূচনা করেছে। [৭]

পুরস্কার ও সম্মাননা[সম্পাদনা]

ড.অতার সিং পেইন্টাল চিকিৎসা বিজ্ঞানে অসামান্য অবদানের জন্য বহু পুরস্কার লাভ করেছেন ও সম্মাননায় ভূষিত হয়েছেন। তন্মধ্যে উল্লেখযোগ্য হল-

  • ১৯৭৩ খ্রিস্টাব্দে ড. বি সি রায় ন্যাশনাল অ্যাওয়ার্ড

পেইন্টালের প্রথম স্ত্রী আইরিস পেইন্টালের তিন সন্তান ছিল। তার দ্বিতীয় কন্যা প্রীতি পেইন্টাল যুক্তরাজ্যের একজন সঙ্গীতশিল্পী ও সুরকার। তার দ্বিতীয় স্ত্রী ডাঃ আশিমা আনন্দ-পেন্টালও একজন বিজ্ঞানী।

তথ্যসূত্র[সম্পাদনা]

  1. "Honorary Memberships Granted to Glynn, Hokfelt, Paintal, and Skou" (পিডিএফ)The Physiologist। American Physiological Society। 33 (5): 154। অক্টোবর ২০০৯। ২ এপ্রিল ২০১৫ তারিখে মূল (পিডিএফ) থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২৩ মার্চ ২০১৫ 
  2. Iggo, A. (২০০৬)। "Autar Singh Paintal. 24 September 1925 -- 21 December 2004: Elected FRS 1981"। Biographical Memoirs of Fellows of the Royal Society52: 251–262। ডিওআই:10.1098/rsbm.2006.0018অবাধে প্রবেশযোগ্যপিএমআইডি 18543474 
  3. "Padma Awards - Interactive Dashboard"। সংগ্রহের তারিখ ২০২৩-০৯-০৫ 
  4. "Autar Singh Paintal (1925-2004)" (পিডিএফ)। সংগ্রহের তারিখ ২০২৩-০৯-২০ 
  5. Edited by DP Burma, Maharani Chakravorty (২০১১)। From Physiology and Chemistry to Biochemistry। Pearson Education India। পৃষ্ঠা 163। আইএসবিএন 9788131732205 
  6. "Autar Singh Paintal (1925-2004)."। Indian Journal of Physiology and Pharmacology49 (2): 247–250। ২০০৫। পিএমআইডি 16247944 
  7. "History Today in Medicine - Prof. Dr.Autar Singh Paintal"। সংগ্রহের তারিখ ২০২৩-০৮-২০