অচিন রাগিণী

উইকিপিডিয়া, মুক্ত বিশ্বকোষ থেকে
অচিন রাগিণী
লেখকসতীনাথ ভাদুড়ী
দেশভারত
ভাষাবাংলা
ধরনউপন্যাস
প্রকাশকবেঙ্গল পাবলিশার্স, কলকাতা
প্রকাশনার তারিখ
নভেম্বর, ১৯৫৪
মিডিয়া ধরনছাপা (শক্তমলাট)

অচিন রাগিণী হল বিশিষ্ট কথাসাহিত্যিক সতীনাথ ভাদুড়ীর চতুর্থ উপন্যাস। ১৯৫৪ সালের নভেম্বর মাসে কলকাতার বেঙ্গল পাবলিশার্স থেকে প্রকাশিত[১] এই উপন্যাসটির বিষয়বস্তু পাতানো নতুন-দিদিমার সঙ্গে দুই কিশোর পিলে ও তুলসীর "টানভালোবাসার গল্প"।[২] এই উপন্যাসে কাহিনী মূল্যহীন; এর মূল্য উক্ত তিন চরিত্রের পারস্পরিক সম্পর্কের বিশ্লেষণে।[২]

অধ্যাপক অরুণকুমার মুখোপাধ্যায় অচিন রাগিণী, সংকট (১৯৫৭) ও দিগভ্রান্ত (১৯৬৬) উপন্যাস তিনটিকে সতীনাথ ভাদুড়ীর "শেষ পর্যায়ের উপন্যাসত্রয়ী" আখ্যা দিয়েছেন। ঢোঁড়াই চরিত মানস রচনার পর আত্মতুষ্ট হতে না পেরে সতীনাথ এই তিনটি উপন্যাস রচনা করেছিলেন। এই উপন্যাসগুলিকে বিশ্লেষণ করতে গিয়ে অরুণকুমার লিখেছেন, "চেতনলোক থেকে অবচেতনলোকে চরিত্রের নিঃসঙ্গ যাত্রা, বিচ্ছিন্নতাবোধ ও বিষাদে আক্রান্ত চরিত্রের কন্ফেস্যন্, অন্তঃসংলাপ, চিন্তার আপাত খাপছাড়া অনুষঙ্গ ও স্বেচ্ছাবিহারের আড়ালে সংলগ্ন আত্মকথন, আপাত শিথিল-গ্রথিত মুহুর্তের সমাহারে এক অখণ্ড জীবনবোধ, ব্যক্তির বিচ্ছিন্নতাবোধ ও নিঃসঙ্গতার সঙ্গে অপর ব্যক্তি ও সমাজের অদৃশ্য সংগ্রাম, জীবনের অসামঞ্জস্য ও অসঙ্গতির মধ্যে নতুন অর্থান্বেষণ, বাইরের সমাজ ও ঘটনার গুরুত্ব অস্বীকার, আধুনিক জীবনের ভিতরের রোগ নির্ণয় ও বিশ্লেষণ, মনোগহনের জটিল আঁধারে সন্ধানী আলো-নিক্ষেপ, সময় ও স্মৃতি সমবায়ে গঠিত এক নতুন শিল্প জগৎ সতীনাথের শেষ উপন্যাসত্রয়ীতে রূপ পেয়েছে।"[২] সেই সঙ্গে অরুণকুমার এই তিন উপন্যাসে শিল্পকৌশল প্রচ্ছন্ন রাখা প্রসঙ্গে লেখেন, "তিনি শিল্পকৌশলকে এমনভাবে প্রচ্ছন্ন রেখেছেন যে তা ধরাই যায় না। কতো অনায়াসভঙ্গিতে তিনি পাঠককে এক জটিল মনোজগতে নিয়ে যান, তা পাঠক টের পান না। যখন তা টের পাওয়া যায়, তখন পাঠক সেই জগতের চিন্তার অংশীদার হয়ে যান।"[২]

তথ্যসূত্র[সম্পাদনা]

  1. "গ্রন্থপঞ্জি", ভারতীয় সাহিত্যকার পুস্তকমালা: সতীনাথ ভাদুড়ী, স্বস্তি মণ্ডল, সাহিত্য অকাদেমি, নতুন দিল্লি, ২০০২ সংস্করণ, পৃ. ৭৭-৮০
  2. কালের প্রতিমা: বাংলা উপন্যাসের পঁচাত্তর বছর (১৯২৩-১৯৯৭), অরুণকুমার মুখোপাধ্যায়, দে’জ পাবলিশিং, কলকাতা, ২০১৯ সংস্করণ, পৃ. ১৩৬