রাজনগর পোর্টিয়াস মডেল উচ্চ বিদ্যালয়
রাজনগর পোর্টিয়াস মডেল উচ্চ বিদ্যালয় | |
---|---|
অবস্থান | |
স্থানাঙ্ক | ২৪°৩১′৪৩″ উত্তর ৯১°৫১′১৯″ পূর্ব / ২৪.৫২৮৫৭৮° উত্তর ৯১.৮৫৫৩৮৭° পূর্ব |
তথ্য | |
ধরন | এমপিওভুক্ত |
প্রতিষ্ঠাকাল | ১৮৯৩ |
বিদ্যালয় বোর্ড | সিলেট শিক্ষা বোর্ড |
বিদ্যালয় জেলা | মৌলভীজার জেলা |
বিদ্যালয় কোড | ১২৯৭৩৪ |
প্রধান শিক্ষক | জিল্লুর রহমান |
শিক্ষকমণ্ডলী | ৯ জন |
শ্রেণী | ৬ষ্ঠ–১০ম |
ভর্তি | ০১/০১/১৯২৯ |
শিক্ষায়তন | প্রায় ০৫.৪৫ একর (২.২১ হেক্টর) |
রং | সাদা ও নেভি ব্লু |
বিদ্যালয়ের ধরণ | বালক-বালিকা |
রাজনগর পোর্টিয়াস মডেল উচ্চ বিদ্যালয় মৌলভীবাজার জেলায় অবস্থিত একটি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান।
নামকরণ ও প্রতিষ্ঠা[সম্পাদনা]
বিদ্যালয়টি যদিও ১৮৭৫ সালে ব্রিটিশ শাসনামলে পাঠদান শুরু করেছে।তবুও এটি অানুষ্ঠানিকভাবে প্রতিষ্ঠিত হয়েছে ১৯৯৩ সালে। ব্রিটিশ শাসনামলে এই স্কুল প্রতিষ্ঠা করার জন্য কিছু লোক অর্থ সংগ্রহ করে একটি ফান্ড গঠন করছিল।এতে বিভিন্ন লোক ৫০ থেকে ১০০ টাকা পর্যন্ত চাঁদা দেয়।সর্বোচ্চ ১৫০ টাকা দিয়েছিল।কিন্তু পোর্টিয়াস নামের এক ব্রিটিশ ব্যক্তি ৩০০টাকা দেন।তাই তাঁর নামেই এই স্কুলের নামকরণ করা হয়।
অবস্থান[সম্পাদনা]
এই বিদ্যালয়টি সিলেট বিভাগের অন্তর্গত মৌলভীজার জেলার রাজনগর উপজেলার ইউনিয়ন রোডের চৌমুহনার উত্তর দিকে অবস্থিত।
স্কুলের বর্ণনা[সম্পাদনা]
স্কুলটি একটি সুদীর্ঘ জমিতে নির্মিত।এর প্রবেশদ্বার টাইলস্ দ্বারা নির্মিত এবং উপরে স্কুলের নাম লিখিত অাছে।প্রবেশের পর কিছু পুরনো ক্লাসরুম দেখা যাবে।যেখানে শতবছর অাগে ক্লাস করানো হতো।এরপর একটি মাঝারি অাকারের মাঠ পাওয়া যাবে।এই মাঠেই সকল গুরুত্বপূর্ণ ভবন নির্মিত হয়েছে।এর বামদিকে রয়েছে তিন তলা ভবন।যেখানে প্রথম তলায় মূল অফিস কক্ষ, শিক্ষক মিলনায়তন এবং প্রধান শিক্ষকের কার্যালয় অাছে।অার দ্বিতীয় তলা ব্যবহৃত হয় সকল গুরুত্বপূর্ণ মিটিং, শিক্ষার্থীদের অরিয়েন্টেশন ও মাল্টিমিডিয়া ক্লাসের জন্য।অার তৃতীয় তলায় রয়েছে কম্পিউটার ল্যাব। এরপর ডানদিকে রয়েছে অারেকটি দোতলা ভবন।এই দোতলা ভবনের নিচ তলায় ৬ষ্ঠ, ৭ম ও ৮ম শ্রেণির শ্রেণিকক্ষ এবং একটি স্কাউটদের জন্য কক্ষ অাছে।অার উপর তলায় রয়েছে অস্থায়ী শ্রেণিকক্ষ এবং নতুন বিজ্ঞানাগার(সাইন্স ল্যাব)। অবশ্য প্রবেশদ্বারের সামনের একটি পুরাতন কক্ষকে পূর্বে বিজ্ঞানাগার হিসেবে ব্যবহার করা হতো। এরপর দোতলার একটু সামনে রয়েছে অারেকটি দোতলা ভবন।যাকে "কলা ভবন" বলা হয়।এর নিচ তলায় ৯ম ও দশম শ্রেণির শ্রেণিকক্ষ অাছে।অার উপরতলায় হিন্দুধর্ম ও নৈতিক শিক্ষার ক্লাসরুম অাছে।এই ভবনটির ডানপাশে একটি স্যানিটারি ল্যাট্রিন ও একটি উঁচু পাঁকা নিরাপদ পানির টিউবওয়েল অাছে। টিউবওয়েলের একটু দূরে পুরনো জীর্ণ-শীর্ণ দুটি টয়লেট অাছে। কলা ভবনের পেছনে অাছে বিশাল ময়দান।যা পোর্টিয়াস মাঠ নামে পরিচিত।এই মাঠে উপজেলার সকল গুরুত্বপূর্ণ ইভেন্ট ঘটে থাকে।সকল জাতীয় দিবসের অনুষ্ঠান ও প্রতিযোগিতা এখানে করা হয়।অার স্কাউটদের ডিসপ্লে এই মাঠেই সম্পন্ন হয়।এই মাঠের বাম পাশে অাছে কচুরিপানা ভর্তি মাঠের সমদৈর্ঘ্যের বিল।এখানে প্রায়ই শঙ্খচিলকে মাছ শিকার করতে দেখা যায়।অার মাঠের উপরে এক বিশেষ ঈগল উড়ে এবং মাঠের একটি গাছে শঙ্খচিলের বাসা অাছে।
প্রাত্যহিক সমাবেশ[সম্পাদনা]
অন্য স্কুলের মতো এ স্কুলেও প্রতিদিন সকালে সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়।এতে অাশাব্যঞ্জক সংখ্যক শিক্ষার্থীর সমাবেশ ঘটে।এই সমাবেশ মূলত তিন তলা ভবনের সম্মুখে ঘটে।কমান্ডার থাকে সবার সামনে এবং তার সাথে থাকে সহকারী কমান্ডার।অার ৭টি সারিতে সকল শিক্ষার্থী দাড়ায়।মেয়েদের অার ছেলেদের সারি অালাদা। গত ২০১৯ সালে কমান্ডার ছিল ৭ম শ্রেণির প্রান্ত দেব এবং বছরের মাঝের দিকে কমান্ডার হয় ৬ষ্ঠ শ্রেণির ছাত্র প্রান্তিক সরদার স্নিগ্ধ।সে ২০২১ সাল পর্যন্ত কমান্ডারের দায়িত্বপালন করে।সেসময় সহকারি কমান্ডার ছিল তাসীন অাহমেদ। সমাবেশে সর্বোচ্চ ৮টি ব্যায়াম করানো হয়।এছাড়াও এতে কোরঅান তেলাওয়াত ও গীতাপাঠসহ শপথ বাক্য পাঠ করানো হয়।এখানে উচ্চস্বরে ও সুরেলা কণ্ঠে দৈনিক জাতীয় সঙ্গীতের ১০ চরণ গাওয়া হয়।তাছাড়া জরুরি ঘোষণা এখানেই ঘোষিত হয়।এসময় উপস্থিত থাকেন স্কুলের সকল শিক্ষক-শিক্ষিকা ও কর্মচারিগণ।
শিক্ষা পদ্ধতি[সম্পাদনা]
এই স্কুলে শিক্ষার মান খুবই ভালো এবং শিক্ষকরা বন্ধুসুলভ ও ছাত্রবান্ধব।এখানে সবাইকে নিরপেক্ষভাবে বিচার করা হয়।সবাইকে সিলেবাসের বাইরেও এক্সট্রা কারিকুলার এক্টিভিটিতে যুক্ত করা হয়।এছাড়াও এখানে সপ্তাহে একদিন।অর্থাৎ বৃহস্পতিবারে গান, কৌতুক, কবিতা অাবৃত্তি, গল্পবলা ও বিতর্ক প্রতিযোগিতার অায়োজন করা হয়ে থাকে।
পরীক্ষায় অর্জন[সম্পাদনা]
গতবছরের মাধ্যমিক পরীক্ষাতেও বিদ্যালয়টি যথেষ্ট ভালো ফলাফল পেয়েছে।
অন্যান্য অর্জন[সম্পাদনা]
এই স্কুলটি খেলাধুলায় অনেক অ্যাওয়ার্ড ও ট্রফি অর্জন করেছল।যা প্রধান শিক্ষকের অফিসের শো-কেসে দেখা যায়।এছাড়াও বছরের বিভিন্ন প্রতিযোগিতায় স্কুলের শিক্ষার্থীরা রেখেছে অসামান্য অবদান। ২০১৯ সালে স্বাধীনতা দিবসের রচনা প্রতিযোগিতায় প্রান্তিক সরদার স্নিগ্ধ ৩য় স্থান অর্জন, ১৬ই ডিসেম্বরের রচনায় ২য় স্থান অর্জন, ২০২০ সালের মাতৃভাষা দিবসের রচনায় ৩য় স্থান অর্জন এবং ২০২১ সালের রচনা প্রতিযোগিতায় ১ম স্থান অর্জন করে।এছাড়াও মাহিদ খান ২০২১ সালের রচনা প্রতিযোগিতায় ৩য় স্থান অর্জন করে। ২০১৯ সালে শিশুদের মৌসুমি প্রতিযোগিতায় দলীয়ভাবে সাধারণ জ্ঞান বিষয়ে এই স্কুল ১ম স্থান অর্জন করে।অার ২০২১ সালের ২৭শে ডিসেম্বরে অনুষ্ঠিত বিজ্ঞান মেলায় এই স্কুল তার ৬ সদস্যের দল নিয়ে ১ম স্থান জয় করে।এই টিমের সদস্য ছিল- রিক্ত চন্দ, মাহিদ খান, অংকন দেব, সালমান, শাহরিয়ার সরকার স্নেহ ও প্রান্তিক সরদার স্নিগ্ধ(অস্থায়ী)।
সকল স্টাফ[সম্পাদনা]
এই স্কুলে মোট ১০জন শিক্ষক অাছে, একজন দপ্তরি ও একজন অায়া অাছে।
শিক্ষকবৃন্দের তালিকা:
১.জিল্লুর রহমান- ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক
২.শংকর দুলাল দেব
৩.সুব্রত কুমার সোম
৪.মানিক লাল গোস্বামী
৫.নীরেন্দ্র চন্দ্র দেবনাথ
৬.মো.জমির অালী
৭.বাবলি রাণী দেব
৮.মো.সাখাওয়াত হোসেন
৯.মো.অাব্দুল অাজিজ চৌধুরী
১০.ঝলক দত্ত
সাবেক বিখ্যাত ব্যক্তি[সম্পাদনা]
এই স্কুলে অনেক বিখ্যাত ব্যক্তি পড়াশোনা করেছেন।তার মধ্যে অন্যতম হলেন পল্লী কর্ম-সহায়ক ফাউণ্ডেশন(PKSF) এর চেয়ারম্যান ড.খলীকুজ্জামান।