মাস সুব্রাহ্মণিয়ান
মাস সুব্রাহ্মণিয়ান | |
---|---|
জন্ম | মুনিরপাল্লাম আপ্পাদোরাই সুব্রাহ্মণিয়ান |
অন্যান্য নাম | এম.এ. সুব্রাহ্মণিয়ান, মাস সুব্রাহ্মণিয়ান |
মাতৃশিক্ষায়তন |
|
বৈজ্ঞানিক কর্মজীবন | |
কর্মক্ষেত্র | রসায়ন, বস্তু বিজ্ঞান |
প্রতিষ্ঠানসমূহ |
|
মুনিরপাল্লাম আপ্পাদোরাই "মাস" সুব্রাহ্মণিয়ান, এম এ সুব্রাহ্মণিয়ান বা মুনিরপাল্লাম সুব্রাহ্মণিয়ান নামেও পরিচিত, করভালিসের ওরেগনের ওরেগন রাজ্য বিশ্ববিদ্যালয়ে কঠিন-অবস্থা রসায়নবিদ এবং বর্তমানে রসায়ন বিভাগের বিশিষ্ট অধ্যাপক ছাড়াও [১] রসায়ন বিভাগের বস্তু বিজ্ঞানের মিল্টন হ্যারিস অনুষদ পদ,- এই দুটি উপাধিই তার রয়েছে। অজৈব যৌগগুলির কাঠামো-ধর্মের সম্পর্কের বিষয়ে, কঠিন-অবস্থা রসায়নে তার কাজ, বেশ কয়েকটি অভূতপূর্ব কার্যকরী পদার্থের আবিষ্কারের রাস্তা খুলে দিয়েছে, যার অনেকগুলি বিভিন্ন প্রয়োগে ব্যবহার করা হয়। সুব্রাহ্মণিয়ান ৩৬০ টি গবেষণা পত্র প্রকাশ করেছেন এবং নিজের ৬০ টি কাজের ওপর তার অধিকারপত্র আছে। তার প্রকাশনা থেকে ২৮,০০০ এরও বেশি লেখা উদ্ধৃতি হিসাবে ব্যবহৃত হয়েছে।[তথ্যসূত্র প্রয়োজন]
প্রারম্ভিক জীবন ও শিক্ষা[সম্পাদনা]
সুব্রাহ্মণিয়ান চেন্নাইয়ে জন্মগ্রহণ করেন এবং সেখানেই বড় হয়ে উঠেন। [২] সুব্রাহ্মণিয়ান ১৯৭৫ সালে মাদ্রাজ বিশ্ববিদ্যালয় থেকে রসায়নে তার বি.এস. অর্জন করেন এবং ১৯৭৭ সালে অজৈব রসায়ন নিয়ে একই বিশ্ববিদ্যালয় থেকে তার এম.এস. সমাপ্ত করেন। সুব্রাহ্মণিয়ানের স্নাতকোত্তরের গবেষণা পত্রটি বিভিন্ন খনিজ এবং সংকর ধাতুর মিশ্রণ ও সেগুলির বিশ্লেষণ নিয়ে গঠিত।[৩] ১৯৮২ সালে ভারতের ভারতীয় প্রযুক্তিবিদ্যা প্রতিষ্ঠান মাদ্রাজ থেকে মাস তার পিএইচডি করেন। তার গবেষণার বিষয়বস্তু ছিল কঠিন-অবস্থা রসায়নের পাইরোক্লোর অক্সাইড। প্রয়াত অধ্যাপক জি ভি সুব্বা রাওয়ের নির্দেশনায় তিনি তার কাজ শেষ করেছিলেন। তার গবেষণা পত্রের ভূমিকায় ছিল একটি পাইরোক্লোর পর্যালোচনা, যেটি এখনও অবধি তার সবচেয়ে বেশিবার উদ্ধৃত রচনা।[৪] ১৯৮২ থেকে ১৯৮৪ সাল পর্যন্ত তিনি টেক্সাসের কলেজ স্টেশন টেক্সাস এ অ্যান্ড এম বিশ্ববিদ্যালয়ে আব্রাহাম ক্লিয়ারফিল্ডের পথনির্দেশনায় একটি এনএসএফ পোস্ট ডক্টরাল ফেলো ছিলেন।
বৈজ্ঞানিক কর্মজীবন[সম্পাদনা]
১৯৮৪ সালে, সুব্রাহ্মণিয়ান ডেলাওয়ারের উইলমিংটনের পরীক্ষামূলক কেন্দ্র ডুপন্টের কেন্দ্রীয় গবেষণা ও উন্নয়ন বিভাগে যোগদান করেন।[৫] শেষ পর্যন্ত তিনি ডুপন্ট গবেষণা ফেলো হিসাবে নিযুক্ত হন। তিনি সিরামিক, অতিপিরিবাহী, অস্তরক, অনুঘটন, তাপবিদ্যুৎ, বহু-ফেরোয়িক, আয়নীয় পরিবাহী এবং জৈব সংশ্লেষ বিভাগে অসংখ্য অবদান রেখেছেন। তার উল্লেখযোগ্য আবিষ্কারগুলির মধ্যে আছে: ইলেকট্রনিক সিরামিকের অগ্রদূত হিসাবে জিওলাইট,[৬] নতুন দ্বি এবং টিএলযুক্ত অতিপরিবাহী,[৭] ফিশার-ট্রপশ সংশ্লেষণের অনুঘটক[৮] এবং হাইড্রোফ্লুরোকার্বন (এইচএফসি),[৯] প্রচুর অস্তরক (সিসিটিও),[১০][১১]অতিমাত্রায় চৌম্বক রোধসম্পন্ন (জিএমআর) অক্সাইডসমূহ,[১২][১৩] এবং স্কুটারুডাইট তাপবিদ্যুৎ।[১৪] ফ্লুরোআরোম্যাটিক সংশ্লেষণ নিয়ে তার কাজ[১৫] তার অন্যতম একটি উল্লেখযোগ্য সাফল্যের মধ্যে পড়ে।
২০০৬ সালে, সুব্রাহ্মণিয়ান ওরেগন রাজ্য বিশ্ববিদ্যালয়ে পদার্থ বিজ্ঞানের মিল্টন হ্যারিস চেয়ার অধ্যাপক হিসাবে যোগদান করেছিলেন, যেখানে তার গবেষণা - শক্তি, পরিবেশ এবং ইলেকট্রনিক্সের উদীয়মান প্রয়োগগুলির ক্ষেত্রে অভূতপূর্ব কার্যকরী উপকরণগুলির নকশা এবং সমন্বয়ের প্রতি উৎসর্গীকৃত। অরেগন রাজ্য বিশ্ববিদ্যালয়ে তিনি এবং তার দল, বিভিন্ন বিষয়ের ওপর কাজ করেন, যেগুলির মধ্যে আছে রঞ্জক পদার্থ, তাপবিদ্যুৎ, উচ্চ-তাপমাত্রায় অতিপরিবাহিতা, চৌম্বক রোধ, কঠিন দ্রুতগতি আয়ন পরিবাহী, উচ্চ-কে অস্তরক, এবং টপোলজিক্যাল অন্তরক। ২০০৯ সালে, তার দল একটি অভিনব স্থায়ী নীল রঞ্জক পদার্থ ইইএমএন নীল আবিষ্কার করেছিলেন,[১৬] ১৮০২ সালে কোবাল্ট আবিষ্কৃত হওয়ার পর থেকে প্রথম একটি নতুন নীল রঞ্জক পদার্থের আবিষ্কার।[২][১৭] সুব্রাহ্মণিয়ান ইইএমএন নীল নিয়ে সারা বিশ্ব জুড়ে বেশ কয়েকটি পাবলিক বক্তৃতা দিয়েছেন, যার মধ্যে আছে টেডএক্সসালেম [১৮] এবং টেডএক্সইউএনসি।[১৯]. এই আবিষ্কারটি বিভিন্ন আন্তর্জাতিক গণমাধ্যমগুলিতে (যেমন দ্য নিউ ইয়র্ক টাইমস, টাইম, ন্যাশনাল জিওগ্রাফিক পত্রিকা, স্মিথসোনিয়ান,[২০], ব্লুমবার্গ বিজনেস উইক[২১], এবং ডাব্লিউবিইউআর) স্থান পেয়েছে[২২]), এবং নাইকি, ক্রায়োলা, ও হার্ভার্ড শিল্প জাদুঘরের মত নিগম এবং জাদুঘরগুলির কাছ থেকে বিশ্বব্যাপী দৃষ্টি আকর্ষণ করেছে।
সুব্রাহ্মণিয়ান সম্পাদকীয় বোর্ডের সদস্য হিসাবে কাজ করেছেন বেশ কিছু পত্রিকায়, সেগুলি হল পদার্থ রসায়নের জার্নাল (১৯৯৫-২০০১), পদার্থের রসায়ন (২০০০-২০০৬), পদার্থ গবেষণা সংবাদ-বিবৃতি (২০০৬-বর্তমান) এবং কঠিন-অবস্থা রসায়ন জার্নাল (২০০৯-বর্তমান)। এবং দুটি আন্তর্জাতিক শিক্ষামূলক জার্নাল - কঠিন-অবস্থার বিজ্ঞান, এবং কঠিন-অবস্থার রসায়নে অগ্রগতি র সম্পাদক হিসাবে কাজ করে চলেছন।
সম্মাননা ও পুরস্কার[সম্পাদনা]
- বিশিষ্ট অধ্যাপক, ওরেগন রাজ্য বিশ্ববিদ্যালয়, ২০১৯[২৩]
- পারকিন মেডেল (বিরল পরিস্থিতিতে পুরস্কৃত) সোসাইটি অফ ডায়ার্স অ্যান্ড কালারিস্টস, ২০১৯
- আমেরিকান অ্যাসোসিয়েশন ফর অ্যাডভান্সমেন্ট অফ সায়েন্সের জন্য নির্বাচিত ফেলো (এএএএস), ২০১৮[২৪]
- বিশিষ্ট প্রাক্তন ছাত্র পুরস্কার, আইআইটি মাদ্রাজ, ২০১৮
- ওরেগন একাডেমি অফ সায়েন্স থেকে অসাধারণ ওরেগন বিজ্ঞানী, ২০১৬
- এফ.এ. গিলফিলান স্মৃতি পুরস্কার বিজ্ঞানের বিশিষ্ট বৃত্তি অর্জনের জন্য (ওএসইউ), ২০১৩
- এনএসএফ সৃজনশীলতা পুরস্কার, ২০১২
- কেমিক্যাল রিসার্চ সোসাইটি অফ ইন্ডিয়া (সিআরএসআই) পদক, ২০১২
- গর্ডন গবেষণা সম্মেলন (জিআরসি) হল অফ ফেম, ২০১১
- সকঠিন-অবস্থা রসায়ন, ২০১০ গর্ডন গবেষণা সম্মেলনের সভাপতি
- র্যাল্ফ বুশ মেটেরিয়ালস সায়েন্স অ্যাওয়ার্ড, ওএসইউ (২০০৭)
- শ্রেষ্ঠত্বের চেয়ার, ক্রিসম্যাট, কান, ফ্রান্স, (২০০৬-২০০৮)
- স্বাক্ষর অনুষদ ফেলো, ওরেগন ন্যানোসায়েন্স অ্যান্ড মাইক্রো টেকনোলজিস ইনস্টিটিউট (ওএনএএমআই), ২০০৬-বর্তমান
- ডুপন্ট চার্লস পেডারসেন বৈজ্ঞানিক ও প্রযুক্তিগত অর্জনে শ্রেষ্ঠত্বের জন্য পদক পুরস্কার, ২০০৪
তথ্যসূত্র[সম্পাদনা]
- ↑ https://today.oregonstate.edu/news/oregon-state-names-three-distinguished-professors-0
- ↑ ক খ Schonbrun, Zach। "The Quest for the Next Billion-Dollar Color"। Bloomberg.com। সংগ্রহের তারিখ ২০১৮-০৪-২০।
- ↑ "Biography - Mas Subramanian Oral History Interview - September 30, 2015 - Special Collections & Archives Research Center, Oregon State University Libraries"। scarc.library.oregonstate.edu। সংগ্রহের তারিখ ২০১৮-০৪-২০।
- ↑ Subramanian, M. A.; Aravamudan, G.; Subba Rao, G. V. (১৯৮৩-০১-০১)। "Oxide pyrochlores — A review"। Progress in Solid State Chemistry। 15 (2): 55–143। ডিওআই:10.1016/0079-6786(83)90001-8।
- ↑ "C&EN: CHEMISTRY HIGHLIGHTS 2002 - ORGANIC CHEMISTRY"। pubs.acs.org। সংগ্রহের তারিখ ২০১৬-০৭-১০।
- ↑ Subramanian, M. A.; Corbin, D. R.; Chowdhry, U. (১৯৯৩-১২-০১)। "Better ceramic substrates through zeolites"। Bulletin of Materials Science (ইংরেজি ভাষায়)। 16 (6): 665–678। আইএসএসএন 0250-4707। ডিওআই:10.1007/BF02757661 ।
- ↑ Subramanian, M. A.; Calabrese, J. C.; Torardi, C. C.; Gopalakrishnan, J.; Askew, T. R.; Flippen, R. B.; Morrissey, K. J.; Chowdhry, U.; Sleight, A. W. (১৯৮৮-০৩-৩১)। "Crystal structure of the high-temperature superconductor TI2Ba2CaCu2O8"। Nature (ইংরেজি ভাষায়)। 332 (6163): 420–422। ডিওআই:10.1038/332420a0।
- ↑ Herron, Norman; Manzer, Leo E.; Subramanian, Munirpallam A. (৯ এপ্রিল ২০০২), Fischer-Tropsch processes and catalysts using fluorided supports, সংগ্রহের তারিখ ২০১৬-০৭-১০
- ↑ Mallikarjuna, Rao V. N.; Subramanian, Munirpallam A. (২৯ ফেব্রুয়ারি ২০০০), Fluoroolefin manufacturing process, সংগ্রহের তারিখ ২০১৬-০৭-১০
- ↑ Subramanian, M. A.; Li, Dong; Duan, N.; Reisner, B. A.; Sleight, A. W. (২০০০-০৫-০১)। "High Dielectric Constant in ACu3Ti4O12 and ACu3Ti3FeO12 Phases"। Journal of Solid State Chemistry। 151 (2): 323–325। ডিওআই:10.1006/jssc.2000.8703।
- ↑ Li, J.; Subramanian, M. A.; Rosenfeld, H. D.; Jones, C. Y.; Toby, B. H.; Sleight, A. W. (২০০৪-১২-০১)। "Clues to the Giant Dielectric Constant of CaCu3Ti4O12 in the Defect Structure of "SrCu3Ti4O12""। Chemistry of Materials। 16 (25): 5223–5225। আইএসএসএন 0897-4756। ডিওআই:10.1021/cm048345u।
- ↑ Subramanian, M. A.; Toby, B. H.; Ramirez, A. P.; Marshall, W. J.; Sleight, A. W.; Kwei, G. H. (১৯৯৬-০৭-০৫)। "Colossal Magnetoresistance Without Mn3+/Mn4+ Double Exchange in the Stoichiometric Pyrochlore Tl2Mn2O7"। Science (ইংরেজি ভাষায়)। 273 (5271): 81–84। আইএসএসএন 0036-8075। ডিওআই:10.1126/science.273.5271.81। পিএমআইডি 8688054।
- ↑ Ramirez, A. P.; Subramanian, M. A. (১৯৯৭-০৭-২৫)। "Large Enhancement of Magnetoresistance in Tl2Mn2O7: Pyrochlore Versus Perovskite"। Science (ইংরেজি ভাষায়)। 277 (5325): 546–549। আইএসএসএন 0036-8075। ডিওআই:10.1126/science.277.5325.546।
- ↑ He, Tao; Chen, Jiazhong; Rosenfeld, H. David; Subramanian, M. A. (২০০৬-০২-০১)। "Thermoelectric Properties of Indium-Filled Skutterudites"। Chemistry of Materials। 18 (3): 759–762। আইএসএসএন 0897-4756। ডিওআই:10.1021/cm052055b।
- ↑ Subramanian, M. A.; Manzer, L. E. (২০০২-০৯-০৬)। "A "Greener" Synthetic Route for Fluoroaromatics via Copper (II) Fluoride"। Science (ইংরেজি ভাষায়)। 297 (5587): 1665। আইএসএসএন 0036-8075। ডিওআই:10.1126/science.1076397। পিএমআইডি 12215637।
- ↑ Smith, Andrew E.; Mizoguchi, Hiroshi; Delaney, Kris; Spaldin, Nicola A.; Sleight, Arthur W.; Subramanian, M. A. (২০০৯)। "Mn 3+ in Trigonal Bipyramidal Coordination: A New Blue Chromophore"। Journal of the American Chemical Society। 131 (47): 17084–17086। ডিওআই:10.1021/ja9080666। পিএমআইডি 19899792।
- ↑ "How the Accidental Discovery of YInMn Blue Changed One Chemist's Life | artnet News"। artnet News (ইংরেজি ভাষায়)। ২০১৭-০৬-১৯। সংগ্রহের তারিখ ২০১৮-০৪-২০।
- ↑ TEDx Talks (২০১৮-০৪-০৫), A new color comes from out of the blue | Mas Subramanian | TEDxSalem, সংগ্রহের তারিখ ২০১৮-০৫-২৮
- ↑ TEDx Talks (২০১৮-০৩-২৬), YInMn Blues: The Discovery that Startled the World! | Mas Subramanian | TEDxUNC, সংগ্রহের তারিখ ২০১৮-০৫-২৮
- ↑ Katz, Brigit। "Crayola to Debut Crayon Inspired by New Shade of Blue"। Smithsonian (ইংরেজি ভাষায়)। সংগ্রহের তারিখ ২০১৮-০৫-২৮।
- ↑ Schonbrun, Zach। "The Quest for the Next Billion-Dollar Color"। Bloomberg.com। সংগ্রহের তারিখ ২০১৮-০৫-২৮।
- ↑ "Discovery Of 1st New Blue Pigment In 200 Years Leads To Quest For Elusive Red"। www.wbur.org (ইংরেজি ভাষায়)। সংগ্রহের তারিখ ২০১৮-০৫-২৮।
- ↑ https://leadership.oregonstate.edu/provost/2019-osu-distinguished-professors
- ↑ "AAAS Honors Accomplished Scientists as 2018 Elected Fellows"। American Association for the Advancement of Science (ইংরেজি ভাষায়)। সংগ্রহের তারিখ ২০১৮-১২-০১।