এম ওসমান আলী

উইকিপিডিয়া, মুক্ত বিশ্বকোষ থেকে
এম ওসমান আলী
পূর্ব বঙ্গ আইন পরিষদ-এর সদস্য
কাজের মেয়াদ
১৯৪৬ – ১৯৫৪
ব্যক্তিগত বিবরণ
জন্ম(১৯০০-০১-০১)১ জানুয়ারি ১৯০০
জামালকান্দি, দাউদকান্দি, কুমিল্লা, বেঙ্গল প্রেসিডেন্সি, ব্রিটিশ ভারত
মৃত্যু১৯ মার্চ ১৯৭১(1971-03-19) (বয়স ৭১)
রাজনৈতিক দলবাংলাদেশ আওয়ামী লীগ
সন্তানএ. কে. এম. শামসুজ্জোহা
পিতামাতাহাজী ডেঙ্গু প্রধান (পিতা)
আত্মীয়স্বজন

মোহাম্মদ ওসমান আলী (জন্ম:১৯ জানুয়ারী ১৯০০ - মৃত্যু:১৯ মার্চ ১৯৭১) বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ দলের প্রতিষ্ঠাতা সদস্য এবং পূর্ব পাকিস্তান প্রাদেশিক পরিষদের সদস্য ছিলেন। ২০১১ সালে তিনি মরণোত্তর স্বাধীনতা পুরস্কারে ভূষিত হন । [১]

প্রাথমিক জীবন এবং শিক্ষা[সম্পাদনা]

ওসমান ১৯০০ সালের ১ জানুয়ারি জামালকান্দি, দাউদকান্দি, কুমিল্লায় জন্মগ্রহণ করেন। তার পিতা হাজী ডেঙ্গু প্রধান। আলীর প্রাথমিক শিক্ষা তার গ্রামের স্কুলে এবং ১৯২০ সালে ম্যাট্রিকুলেশন পাস করেন। তারপরে তিনি কলকাতা ইসলামিয়া কলেজে ভর্তি হন[১]

কর্মজীবন[সম্পাদনা]

ওসমান ১৯২০ সালে খিলাফত আন্দোলনে এবং পরে অসহযোগ আন্দোলনে জড়িত ছিলেন। অসহযোগ আন্দোলন চলাকালীন তিনি পূর্ববাংলানারায়ণগঞ্জে পাটের ব্যবসা শুরু করেন। তিনি নারায়ণগঞ্জে পাকিস্তান আন্দোলন সংগঠিত করতে সহায়তা করেছিলেন। ১৯৩০-এর দশকে তিনি সবুজ বাংলা নামে একটি সাহিত্য পত্রিকা প্রকাশ করেন।

১৯৪০ সালের লাহোর রেজোলিউশনের ভিত্তিতে পাকিস্তান আন্দোলনের সূচনার সাথে সাথে আলি নারায়ণগঞ্জে এই আন্দোলনের আয়োজন করেছিলেন। ১৯৪৬ সালে তিনি বঙ্গীয় আইনসভার সদস্য নির্বাচিত হন। তিনি ঢাকার পঞ্চম ও শেষ নবাব খাজা হাবিবুল্লাহকে পরাজিত করেছিলেন। তিনি ব্রিটিশ সরকারের দ্বারা খান সাহেব উপাধিতে ভূষিত হন, যা তিনি ১৯৪৪ সালে ব্রিটিশ রাজ নীতিমালার জন্য বাতিল করেছিলেন। [১]

ওসমান আলী ১৯৪২ থেকে ১৯৪৪ সাল পর্যন্ত নারায়ণগঞ্জ সিটি মুসলিম লীগের সভাপতি এবং ঢাকা জেলা মুসলিম লীগের সহসভাপতি হিসাবে দায়িত্ব পালন করেন। ১৯৪৯ সালের ২৩ জুন, তিনি আওয়ামী মুসলিম লীগ নামকরণে সহায়তা করেছিলেন। তিনি পূর্ব পাকিস্তানের অধিকাংশ বড় আন্দোলন, ১৯৫২ সালের ভাষা আন্দোলন, ছয় দফা আন্দোলন এবং ১৯৬৯ সালের পূর্ব পাকিস্তানের অভ্যুত্থানে জড়িত ছিলেন। [১]

পরিবার ও উত্তরাধিকার[সম্পাদনা]

ওসমান আলী প্রথমে জামিলা ওসমান এবং পরে আওয়ামী মুসলিম লীগের সভাপতি আমিরুন নেছা বেগমের সাথে বিবাহবন্ধনে আবদ্ধ হন। [২] ১৯৭১ সালের ১৯ মার্চ তিনি মারা যান। [১] তার বড় ছেলে একেএম সামসুজ্জোহা (মৃত্যু: ১৯৮৭) রাজনীতিতে যোগ দিয়ে পূর্ব পাকিস্তান প্রাদেশিক পরিষদে নির্বাচিত হয়েছিলেন। [৩][৪] ১৯৭৩ সালে তিনি বাংলাদেশের প্রথম সংসদ নির্বাচনে সদস্য নির্বাচিত হন। ২০১১ সালে তিনি মরণোত্তর স্বাধীনতা পুরষ্কারে ভূষিত হন। [৫] শামসুজ্জোহার জ্যেষ্ঠ পুত্র নাসিম ওসমান (মৃত্যু: ২০১৪) বাংলাদেশ জাতীয় পার্টিতে যোগ দেন এবং ১৯৮৬, ১৯৮৮, ২০০৮ এবং ২০১৪ সালের নির্বাচনে এমপি হন। দ্বিতীয় পুত্র সেলিম ওসমান ২০১৪ সালে একই আসন থেকে সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন। [৩] তৃতীয় পুত্র শামীম ওসমান ১৯৯২-২০০১ এবং ২০১৪ সালে নারায়ণগঞ্জের অন্য একটি আসনের সংসদ সদস্য ছিলেন। [৩]

অবদান ও পদক[সম্পাদনা]

এম ওসমান আলী ১৯৩৮ সালে নিজ গ্রামে প্রতিষ্ঠা করেন ওসমানিয়া হাইস্কুল, প্রাথমিক বিদ্যালয় ও মসজিদ। এ ছাড়া নারায়ণগঞ্জের তানজিম মুসাফিরখানা, রহমতুল্লাহ অডিটোরিয়াম ও গণপাঠাগার নির্মাণে তার অবদান ছিল। এসব জনহিতকর কাজের স্বীকৃতিস্বরূপ ব্রিটিশ সরকার তাকে ১৯৪০ সালে ‘খান সাহেব’ উপাধিতে ভূষিত করে। কিন্তু ব্রিটিশ সরকারের দমননীতির প্রতিবাদে তিনি ১৯৪৪ সালে এ উপাধি বর্জন করেন।[১]

তথ্যসূত্র[সম্পাদনা]

  1. Islam, Sirajul (২০১২)। "আলী, এম ওসমান"বাংলাপিডিয়া: বাংলাদেশের জাতীয় তথ্যকোষ (২য় সংস্করণ)। বাংলাদেশ এশিয়াটিক সোসাইটি 
  2. "Cabinet Division - Bangladesh - Information and Services - Awards Detail"old.cabinet.gov.bd। ২০১৮-০১-২০ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২০১৮-০১-১৯ 
  3. "Rise and fall of the Osman family"The Daily Star (ইংরেজি ভাষায়)। ২০১৮-০১-২০। সংগ্রহের তারিখ ২০১৮-০১-১৯ 
  4. "29th death anniversary of AKM Shamsuzzoha observed in N'ganj" (ইংরেজি ভাষায়)। ২০১৬-০২-২০। ২০১৮-০১-২০ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২০১৮-০১-১৯ 
  5. "PM for economic emancipation"The Daily Star (ইংরেজি ভাষায়)। ২০১১-০৩-২৫। সংগ্রহের তারিখ ২০১৮-০১-১৯