স্টিকনি (অভিঘাত খাদ)

স্থানাঙ্ক: ১° উত্তর ৪৯° পশ্চিম / ১° উত্তর ৪৯° পশ্চিম / 1; -49[১]
উইকিপিডিয়া, মুক্ত বিশ্বকোষ থেকে
স্টিকনি
ফোবোসের বুকে স্টিকনি (বাঁদিকে)
(ভাইকিং অরবিটার, ১০ জুন, ১৯৭৭)।
বৈশিষ্ট্যের ধরনঅভিঘাত খাদ
অবস্থান১° উত্তর ৪৯° পশ্চিম / ১° উত্তর ৪৯° পশ্চিম / 1; -49[১]
মাত্রা৯ কিমি (৫.৬ মা) (ব্যাস)
আবিষ্কর্তাআসাফ হল
নামকরণক্লো অ্যাঞ্জেলিন স্টিকনি হল
স্টিকনি ও তার ভিতর লিমটক নামে একটি ক্ষুদ্রতর অভিঘাত খাদ; মার্স রিকনেসঁস অরবিটার থেকে গৃহীত আলোকচিত্র, ২৩ মার্চ, ২০০৮।

স্টিকনি হল মঙ্গলের উপগ্রহ ফোবোসের বৃহত্তম অভিঘাত খাদ। এই খাদটির ব্যাস ৯ কিমি (৫.৬ মা), যার ফলে খাদটি ফোবোসের পৃষ্ঠভাগের একটি বড়ো অংশ জুড়ে অবস্থান করছে।

খাদটির নামকরণ করা হয়েছে ফোবোসের আবিষ্কর্তা আসাফ হলের স্ত্রী ক্লো অ্যাঞ্জেলিন স্টিকনি হলের নামানুসারে।[২] ১৯৭৮ সালে হল লিখেছিলেন যে, তিনি "[তাঁর] স্ত্রীর থেকে উৎসাহ না পেলে তিনি হয়তো [মঙ্গল গ্রহের প্রাকৃতিক উপগ্রহগুলির] অনুসন্ধান করা ছেড়েই দিতেন।"[৩] ১৯৭৩ সালে মেরিয়ান ৯ কর্তৃক গৃহীত আলোকচিত্রগুলির ভিত্তিতে কার্ল সেগানের সভাপতিত্বে ইন্টারন্যাশানাল অ্যাস্ট্রোনমিক্যাল ইউনিয়নের (আইএইউ) নামকরণ সমিতি এই অভিঘাত খাদটির নামকরণ করে।[২]

স্টিকনির ভিতর পরবর্তীকালীন একটি সংঘাতের ফলে সৃষ্ট ২ কিমি (১.২ মা) ব্যাসবিশিষ্ট আরেকটি ক্ষুদ্রতর অভিঘাত খাদ রয়েছে। ২০০৬ সালে গ্যালিভার’স ট্রাভেলস উপন্যাসের একটি চরিত্রের নামানুসারে এই খাদটির নামকরণ করা হয় লিমটক।[৪]

খাঁজ ও অভিঘাত খাদমালা স্টিকনি থেকে বিচ্ছুরিত হয়েছে বলে মনে হয়। এই বৈশিষ্ট্যটি থেকে যে অভিঘাতটির মাধ্যমে উপগ্রহটিকে প্রায় ধ্বংস করে স্টিকনির উৎপত্তি সেটির সম্পর্কে একাধিক তত্ত্বের জন্ম হয়েছে। যদিও মার্স এক্সপ্রেস অরবিটার থেকে প্রাপ্ত প্রমাণগুলি নির্দেশ করে যে, সেগুলির সঙ্গে স্টিকনির সম্পর্ক নেই এবং সম্ভবত মঙ্গল গ্রহের সঙ্গে অন্যান্য মহাজাগতিক বস্তুর সংঘাতের ফলে উৎক্ষিপ্ত বস্তুর দ্বারা এটির সৃষ্টি হয়েছে।[৫] অধিকতর সাম্প্রতিক মডেলিং কর্তৃক সমর্থিত তত্ত্বটি হল খাঁজগুলি হল জোয়ার-সংক্রান্ত শক্তির ফলে সৃষ্ট বিকৃতি।[৬] এই অভিঘাত খাদটির আভ্যন্তরীণ প্রাচীরে রেখাবিশিষ্ট গঠনবিন্যাসটি দর্শনীয়। খাদের ভিতর বস্তু পতনের কারণে যে ভূমিধ্বসগুলি ঘটে, সেগুলিই এই গঠনবিন্যাস সৃষ্টির কারণ।[৭] তবুও ২০১৮ সালের নভেম্ভরে জ্যোতির্বিদগণ এই সিদ্ধান্তে উপনীত হয়েছেন যে, ফোবোসের গায়ে অনেকগুলি খাঁজ এই উপগ্রহটির পৃষ্ঠতলের উপর গড়িয়ে চলা একাধিক পাথরের চাঁইয়ের আঘাতে সৃষ্ট। যে গ্রহাণু সংঘাতের ফলে স্টিকনির উৎপত্তি সেই সংঘাত থেকেই এই পাথরগুলি উৎক্ষিপ্ত হয়েছিল।[৮][৯]

খুব সম্ভবত স্টিকনি এতটাই বড়ো একটি অভিঘাত খাদ যে, মঙ্গল গ্রহের পৃষ্ঠতল থেকে এটিকে খালি চোখেই দেখা যায়।[১০] এটি ফোবোসের মঙ্গল-মুখী দিকটির পশ্চিম প্রান্তের মধ্যভাবে অবস্থিত।

আরও দেখুন[সম্পাদনা]

তথ্যসূত্র[সম্পাদনা]

  1. "Planetary Names: Crater, craters: Stickney on Phobos"। Gazetteer of Planetary Nomenclature। নভে ২৯, ২০০৬। 
  2. Veverka, Joseph; Noland, Michael; Sagan, Carl; Pollack, James; Quam, Lynn; Tucker, Robert; Eross, Botand; Duxbury, Thomas; Green, William (১৯৭৪)। "A Mariner 9 atlas of the moons of Mars"। Icarus23 (2): 206–289। ডিওআই:10.1016/0019-1035(74)90006-2 .
  3. Hall, Asaph, Observations and orbits of the satellites of Mars, Washington: Government Printing Office, 1878 (quoted in Hall, Angelo, An astronomer's wife, Baltimore: Nunn and Company, 1908, p. 112). Quote: he "might have abandoned the search [for Martian satellites] had it not been for the encouragement of [his] wife."
  4. "Planetary Names: Crater, craters: Limtoc on Phobos"। Gazetteer of Planetary Nomenclature। মার্চ ১, ২০০৭। 
  5. Murray, John B. et al. "New evidence on the origin of Phobos' parallel grooves from HRSC Mars Express," Lunar and Planetary Science XXXVII (2006).
  6. Zubritsky, Elizabeth। "Mars' Moon Phobos is Slowly Falling Apart"NASA's Goddard Space Flight Center। সংগ্রহের তারিখ ১১ নভেম্বর ২০১৫ 
  7. "Phobos from 6,800 Kilometers (Color)"। NASA/JPL-Caltech/University of Arizona। ৯ এপ্রিল ২০০৮। ১২ এপ্রিল ২০০৮ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ৯ এপ্রিল ২০০৮ 
  8. Gough, Evan (২০ নভেম্বর ২০১৮)। "Strange Grooves on Phobos Were Caused by Boulders Rolling Around on its Surface"Universe Today। সংগ্রহের তারিখ ২১ নভেম্বর ২০১৮ 
  9. Ramsley, Kenneth R.; Head, James W. (১৬ নভেম্বর ২০১৮)। "Origin of Phobos grooves: Testing the Stickney Crater ejecta model"Planetary and Space Science165: 137–147। ডিওআই:10.1016/j.pss.2018.11.004। সংগ্রহের তারিখ ২১ নভেম্বর ২০১৮ 
  10. Calculating the angular size of an object with a diameter of ৯ কিলোমিটার (৫.৬ মা) at a distance of ৯,২৫০ কিলোমিটার (৫,৭৫০ মা), yields 9/9250 * 206265 = 200 arcseconds. An object needs a size of 60 arcseconds to be resolved by the naked eye.

বহিঃসংযোগ[সম্পাদনা]