হোয়াসং বন্দী শিবির

উইকিপিডিয়া, মুক্ত বিশ্বকোষ থেকে
হোয়াসং বন্দী শিবির
চোসেঙ্গুল화성 제16호 관리소
হাঞ্ছা
সংশোধিত রোমানীকরণHwaseong Je16ho Gwalliso
ম্যাক্কিউন-রাইশাওয়াHwasŏng Che16ho Kwalliso
{{{othername1}}}
চোসেঙ্গুল화성 정치범수용소
হাঞ্ছা
সংশোধিত রোমানীকরণHwaseong Jeongchibeom Suyongso
ম্যাক্কিউন-রাইশাওয়াHwasŏng Chŏngch'ibŏm Suyongso

হোয়াসং বন্দী শিবির (Chosŏn'gŭl: 화성 제16호 관리소화성 제16호 관리소) উত্তর কোরিয়ার রাজনৈতিক বন্দীদের জন্য নির্মিত একটি বন্দী শিবির। সরকারিভাবে এর নাম গোয়ান-লি-সো (পেনাল- লেবার কলোনী) নং ১৬

অবস্থান[সম্পাদনা]

বন্দী শিবিরটি উত্তর কোরিয়ার উত্তর হামগিয়ং প্রদেশের হোয়াসং অঞ্চলে অবস্থিত। হোয়াসং নদীর তীর ঘেঁষে গড়ে ওঠা এই শিবির পর্বতাবেষ্টিত। বন্দী শিবিরটির পশ্চিমে আছে সুউচ্চ মানতাপসান বা মানতাপ পর্বত, যার উচ্চতা ২,২০৫-মিটার-উচু (৭,২৩৪ ফু)। উত্তর ও পশ্চিম কিনারা ঘেঁষে ওরাংছন নদীর মালভূমি। হোয়াসং প্রধান সড়ক থেকে ৮ কিলোমিটার দূরত্বে বন্দি শিবিরটির প্রধান গেট হোয়াসং নদীর ডান দিকে অবস্থিত।[১] এই বন্দী শিবিরটি দেশটির মানচিত্রে উপলব্ধ্য নয়।[২] কিন্তু কৃত্রিম উপগ্রহ থেকে সংগ্রহীত ছবিতে এই বন্দি শিবিরের প্রবেশদ্বার এবং ওয়াচটাওয়ার সনাক্ত করা যায়।[৩]

বর্ণনা[সম্পাদনা]

হোয়াসং বন্দী শিবিরের যেসকল আজীবন কারাভোগের দণ্ডপ্রাপ্ত বন্দীদের মুক্তি পাওয়ার কোনো আশা নেই, তাদেরকেই রাখা হয়।[৪] এর আয়তন প্রায় ৫৪৯ কিমি (২১২ মা)[৫] এবং এটি উত্তর কোরিয়ার সর্ববৃহত জেল বন্দী শিবির। ভুহোয়া-রি (Chosŏn'gŭl: 부화리부화리), প্রধান প্রবেশদ্বার থেকে ৪ কিমি (২.৫ মা) উত্তরে হোয়াসং বন্দী শিবিরের প্রধান কার্যালয়।[৬] ধারণা করা হয় প্রায় ২০ হাজার বন্দী এই বন্দী শিবিরে আটক আছে।[৭] তাদেরকে "বিপ্লব বিরোধী এবং দল বিরোধী" এই দুই ভাগে ভাগ করা হয়েছে। বিভিন্ন রাষ্ট্রবিরোধী অপরাধের দায়ে এই আসামীরা সাজাপ্রাপ্ত। অপরাধের মাঝে রয়েছে কিম জং ইলের বিরোধীতা।[৮] অনেক বন্দীই শুধুমাত্র সন্দেহজনক অপরাধীর আত্মীয় হওয়ার দরুণ "সহযোগিতামূলক কর্মকাণ্ড"-এর সাথে সম্পৃক্ত থাকার সন্দেহে শাস্তিপ্রাপ্ত।[৯] ধারণা করা হয়, এই বন্দী শিবিরটি ১৯৯০সালে প্রতিষ্ঠিত।[১০]

কৃত্রিম উপগ্রহের ছবি পরীক্ষা করে ২০১৩ সালের অক্টোবরে অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনাল এই বন্দী শিবিরের কলোবর বাড়ানো হয়েছে বলে রিপোর্ট করে।[১১] ২০০৮ সালের পর বন্দী শিবিরটিতে বেশ কিছু নতুন বন্দীদের জন্য তৈরি গ্রাম ও ঘরবাড়ির ছবিই দেখা গিয়েছে। এছাড়াও নতুন প্রশাসনিক কার্যালয় ভববনও নতুন ছবিতে লক্ষ করা গেছে।[১২] ধারণা করা হয়, কিছু নতুন বন্দীকে হোরিয়ং বন্দী শিবির থেকে হোয়াসং-এ স্থানান্তরিত হয়েছে।[১৩]

মানবাধিকার অবস্থাত[সম্পাদনা]

হোয়াসং বন্দী শিবির সম্পর্কিত খুব একটা তথ্য পাওয়া যায় না। বিশেষ করে, এই বন্দী শিবিরটি উচ্চ পর্যায়ের নিরাপত্তা সংরক্ষণ ব্যবস্থা দ্বারা নিয়ন্ত্রিত ও পর্যবেক্ষিত। একজন অজ্ঞাত অল্প বয়সী ছেলে দাবী করেছিল, ১৩ বছর বয়সেই পরিবারের অন্য সবার সাথে তাকে এই বন্দী শিবিরে পাঠানো হয়। এখানে সে তার বাবাকে মারধর এবং নিরাপত্তা রক্ষী অফিসারদের দ্বারা মাকে ধর্ষিত হতে দেখেছে।[১৪][১৫] কাছাকাছি অঞ্চলের গ্রামবাসীরাও বিভিন্ন সময় এই বন্দী শিবির সম্পর্কিত ভয়াবহ কাহিনী শুনেছে যদিঅ তারা কখনোই এই বন্দী শিবিরের প্রবেশের সুযোগ পায়নি।[১৪]

নিরাপত্তা রক্ষী লি অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনালের সাথে এক সাক্ষাতকারে এই বন্দী শিবিরের বন্দীদের উপর করা নির্যাতনের চিত্র বর্ণনা করেন। তিনি স্বচক্ষে কাঠের লাঠি দিয়ে পিটিয়ে বন্দী হত্যার দৃশ্য দেখার কথা বলেন। এছাড়াও, নিরাপত্তা রক্ষীদের উচ্চ পর্যস্ত কর্মকর্তাদের পর নিম্ন পদস্থ কর্মকর্তারা ক্রমানুশারে বন্দী নারীদের ধর্ষণ করে বলে তিনি দাবী করেন।

আরও দেখুন[সম্পাদনা]

তথ্যসূত্র[সম্পাদনা]

  1. "Army barracs and prison camp entrance"Wikimapia। সংগ্রহের তারিখ ফেব্রুয়ারি ৭, ২০১৩ 
  2. "북한지리: 화성군(化成郡) HWASONGGUN"Joongang Ilbo, 1997। সংগ্রহের তারিখ ফেব্রুয়ারি ৭, ২০১৩ 
  3. "Nordkoreas Geheimnisse: Google Earth sieht alles (Satellite image of prison camp 16)"Der Spiegel (জার্মান ভাষায়)। মে ২৫, ২০০৯। সংগ্রহের তারিখ ফেব্রুয়ারি ৭, ২০১৩ 
  4. "The Hidden Gulag – Exposing Crimes against Humanity in North Korea's Vast Prison System (pp. 78-79)" (পিডিএফ)The Committee for Human Rights in North Korea। সংগ্রহের তারিখ ফেব্রুয়ারি ৭, ২০১৩ 
  5. Harden, Blaine (জুলাই ২০, ২০০৯)। "North Korea's Hard Labor Camps with interactive map"Washington Post, July 20, 2009। সংগ্রহের তারিখ ফেব্রুয়ারি ৭, ২০১৩ 
  6. "Hwasong concentration camp headquarters"Wikimapia। সংগ্রহের তারিখ ফেব্রুয়ারি ৮, ২০১৩ 
  7. "North Korea: Political Prison Camps"Amnesty International। মে ৪, ২০১১। সংগ্রহের তারিখ নভেম্বর ২৪, ২০১১ 
  8. "The Hidden Gulag – Exposing Crimes against Humanity in North Korea's Vast Prison System (pp. 78-79)" (পিডিএফ)The Committee for Human Rights in North Korea। সংগ্রহের তারিখ ফেব্রুয়ারি ৭, ২০১৩ 
  9. "New satellite images show scale of North Korea's repressive prison camps"Amnesty International। ডিসেম্বর ৫, ২০১৩। ডিসেম্বর ৯, ২০১৩ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ডিসেম্বর ১০, ২০১৩ 
  10. "Political Prison Camps in North Korea Today" (পিডিএফ), Database Center for North Korean Human Rights, জুলাই ১৫, ২০১১, অক্টোবর ১৯, ২০১৩ তারিখে মূল (পিডিএফ) থেকে আর্কাইভ করা, সংগ্রহের তারিখ ফেব্রুয়ারি ৭, ২০১৩  |chapter= উপেক্ষা করা হয়েছে (সাহায্য)
  11. "North Korea: New satellite images show continued investment in the infrastructure of repression", Amnesty International, ডিসেম্বর ৫, ২০১৩, সংগ্রহের তারিখ ডিসেম্বর ১০, ২০১৩  |chapter= উপেক্ষা করা হয়েছে (সাহায্য)
  12. "North Korea: New satellite images show continued investment in the infrastructure of repression", Amnesty International, ডিসেম্বর ৫, ২০১৩, সংগ্রহের তারিখ ডিসেম্বর ১০, ২০১৩  |chapter= উপেক্ষা করা হয়েছে (সাহায্য)
  13. "From Prison Camp to Coal Hub"Radio Free Asia। নভেম্বর ৬, ২০১২। সংগ্রহের তারিখ জানুয়ারি ১৪, ২০১৩ 
  14. "Political Prison Camps in North Korea Today, chapter 1.2.3: Research Methodology" (পিডিএফ), Database Center for North Korean Human Rights, পৃষ্ঠা 51, জুলাই ১৫, ২০১১, অক্টোবর ১৯, ২০১৩ তারিখে মূল (পিডিএফ) থেকে আর্কাইভ করা, সংগ্রহের তারিখ ফেব্রুয়ারি ৭, ২০১৩ 
  15. 지난 주 탈북 13세 소년이 남조선에 보내는 편지 전문Korea Unity Press TV, 13.04.2004 (কোরীয় ভাষায়)। এপ্রিল ১৩, ২০০৪। সংগ্রহের তারিখ ফেব্রুয়ারি ৭, ২০১৩ [স্থায়ীভাবে অকার্যকর সংযোগ]