ব্রতনৃত্য

উইকিপিডিয়া, মুক্ত বিশ্বকোষ থেকে

ব্রতনৃত্য হচ্ছে একধরনের লোকনৃত্য। হিন্দু নারীরা পার্থিব কল্যাণ কামনায় ইষ্টদেবতার নিকট প্রার্থনা জানিয়ে যে আচারানুষ্ঠান পালন করে তাকে বলা হয় ব্রত। এই ব্রতের আনুষঙ্গ হিসেবে যে নৃত্য পরিবেশিত হয় তাকে ব্রতনৃত্য বলে।

রীতিনীতি[সম্পাদনা]

নারীরা ব্রত অনুষ্ঠান সম্মিলিতভাবে পালন করে এবং এর উদ্দেশ্যকে বাস্তবায়িত করার লক্ষ্যেই ব্রতনৃত্য করে থাকে। ব্রতের ছড়া বা গানে দৈহিক, মানসিক ও আধ্যাত্মিক যেসব কামনা-বাসনা প্রকাশ পায়, তার প্রতিফলন দেখতে পাওয়া যায় ব্রতনৃত্যে।

ব্রতনৃত্যে ইহজাগতিক যে কামনা প্রকাশ পায় তাতে জটিল দর্শন বদলে থাকে জীবনের কথা। অধিকাংশ নৃত্যে কিশোরী মেয়েরাই অংশ নেয়। সধবা নারীরা সাধারণত সূর্যব্রত, কার্তিকব্রত ও মেঘরানীর কুলানামানো ব্রতে অংশ নেয়। শেষোক্ত ব্রতে কয়েকজন সধবা নারী মাথায় ঘোমটা দিয়ে ডান হাতে অাঁচল টেনে ধরে এবং মাথায় কুলা নিয়ে ছড়া বলতে বলতে নাচের ভঙ্গিতে ব্রতের স্থান কয়েকবার প্রদক্ষিণ করে। সাধারণত দুটি পা, দুটি হাত ও কব্জির আন্দোলনের ওপরই ব্রতনৃত্য নির্ভর করে। কোমরের ওপরের অংশ, বিশেষত হাত এবং ঊর্ধ্ববাহু দ্বারা তারা নানা ভঙ্গিতে বিচিত্রভাব প্রকাশ করে। এই অতি সাধারণ ভঙ্গিমার মাধ্যমেই নারীমনের আশা-আকাঙ্ক্ষা, কমনীয়তা ও সৌন্দর্য প্রকাশ পায়। ব্রতনৃত্য সর্বদা সমষ্টিগতভাবে এবং ঘড়ির কাঁটার বিপরীতে ধীরে ধীরে অনুষ্ঠিত হয়।

হাতের মাধ্যমে বিভিন্ন মুদ্রার প্রকাশ ব্রতনৃত্যের প্রধান আকর্ষণ। কিশোরীদের ব্রতনৃত্যে যে ভঙ্গিমা প্রকাশ পায় তার সঙ্গে বিবাহিতা মহিলাদের মৌলিক পার্থক্য রয়েছে। বিবাহিতা মহিলারা কোমর ও দেহের সামনের অংশের আন্দোলন বেশি পরিমাণে করে, যার মাধ্যমে উর্বরতা ও মাতৃত্বের আকাঙ্ক্ষা এবং দেহগত কামনার স্থূল প্রকাশ ঘটে; অন্যদিকে কিশোরীদের নৃত্য শুধুই সাধারণ নৃত্যভঙ্গিমা।

তথ্যসূত্র[সম্পাদনা]

আরও দেখুন[সম্পাদনা]