থিন সিন

উইকিপিডিয়া, মুক্ত বিশ্বকোষ থেকে
জেনারেল
থিন সিন
သိန်စိန်
মিয়ানমারের ৮ম রাষ্ট্রপতি
কাজের মেয়াদ
৩০ মার্চ, ২০১১ – ২০১৬
উপরাষ্ট্রপতিতিন অং মিন্ট ও
সাই মক খাম
নিয়ান তুন
পূর্বসূরীথান শি (স্টেট পিস এন্ড ডেভেলপম্যান্ট কাউন্সিলের সভাপতি)
উত্তরসূরীউইন মিন্ত
মিয়ানমারের প্রধানমন্ত্রী
কাজের মেয়াদ
২৪ অক্টোবর, ২০০৭ – ৩০ মার্চ, ২০১১
ভারপ্রাপ্ত:এপ্রিল, ২০০৭ - ২৪ অক্টোবর, ২০০৭
নেতাথান শি
পূর্বসূরীসো উইন
উত্তরসূরীঅং সান সু চি (মিয়ানমারের রাষ্ট্রীয় উপদেষ্টা হিসাবে)
স্টেট পিস এন্ড ডেভেলপম্যান্ট কাউন্সিলের প্রথম সচিব
কাজের মেয়াদ
২০০৪ – ২৪ অক্টোবর, ২০০৭
পূর্বসূরীখিন নিয়ান্ট
উত্তরসূরীতিন অং মিন্ট ও
জাবুথিরি’র সংসদ সদস্য
কাজের মেয়াদ
৭ নভেম্বর, ২০১০ – ৩০ মার্চ, ২০১১
পূর্বসূরীসাংবিধানিক প্রতিষ্ঠা
উত্তরসূরীসান্দা মিন
সংখ্যাগরিষ্ঠ৬৫,৬২০ (৯১.২%)
ব্যক্তিগত বিবরণ
জন্ম (1945-04-20) ২০ এপ্রিল ১৯৪৫ (বয়স ৭৮)
কিওনকু, বার্মা
জাতীয়তামিয়ানমার
রাজনৈতিক দলস্টেট পিস এন্ড ডেভেলপম্যান্ট কাউন্সিল (২০১০-এর পূর্বে)
ইউনিয়ন সলিডারিটি অ্যান্ড ডেভেলপম্যান্ট পার্টি (২০১০-বর্তমান)
দাম্পত্য সঙ্গীখিন খিন উইন
সন্তান৩ কন্যা (ইন থুযা থেইন)
বাসস্থানরাষ্ট্রপতি ভবন
প্রাক্তন শিক্ষার্থীডিফেন্স সার্ভিসেস একাডেমি
ধর্মথেরবাদ <--Military Service--!>
ওয়েবসাইটঅফিসিয়াল ওয়েবসাইট
সামরিক পরিষেবা
শাখামিয়ানমার সেনাবাহিনী
কাজের মেয়াদ১৯৬৮–২০১০
পদজেনারেল

থিন সিন (বর্মী: သိန်းစိန်; উচ্চারিত: [θéɪɴ sèɪɴ] থেইঁ সেইঁ; জন্ম: ২০ এপ্রিল, ১৯৪৫) কিওনকু এলাকায় জন্মগ্রহণকারী বার্মার (বর্তমান: মিয়ানমার) বিশিষ্ট রাজনীতিবিদ ও সাবেক সামরিক কমান্ডার। মার্চ, ২০১১ থেকে মিয়ানমারের বর্তমান রাষ্ট্রপতির দায়িত্ব পালন করছেন তিনি। এরপূর্বে দেশের প্রধানমন্ত্রীর দায়িত্বে ছিলেন। সামরিক সরকার পরবর্তী সময়ে কেউ কেউ তাকে আধুনিকপন্থী ও পুণঃগঠনবাদী রাষ্ট্রপ্রধান হিসেবে বিবেচনা করে থাকেন।[১]

২০০৭ থেকে ২০১১ সাল পর্যন্ত মিয়ানমারের প্রধানমন্ত্রীর পদ লাভ করেন। এরপর ২০১১ সাল থেকে অদ্যাবধি মিয়ানমারের রাষ্ট্রপতি পদে রয়েছেন। তার নতুন সরকার রাজনৈতিক পুণঃগঠনে অনেকগুলো পদক্ষেপ গ্রহণ করে। তন্মধ্যে দেশের গণমাধ্যম থেকে আরোপিত নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহার, রাজনৈতিক কারাবন্দীদের মুক্তি ও বিতর্কিতভাবে স্থগিত হয়ে পড়া দেশের বৃহত্তম চীনাভিত্তিক জলবিদ্যুৎ প্রকল্প চালু করা অন্যতম। এরফলে ২০১৪ সালে আসিয়ানে মিয়ানমারকে অন্তর্ভূক্তসহ সভাপতির আসনে অধিষ্ঠিত করা হয়। এছাড়াও, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের সাথে দ্বি-পাক্ষিক সম্পর্কের উন্নয়ন ঘটানো, প্রধান বিরোধী দল ন্যাশনাল লীগ ফর ডেমোক্র্যাসি’র (এনএলডি) পুণঃপ্রতিষ্ঠাসহ ১ এপ্রিল, ২০১২ তারিখে উপ-নির্বাচনের ব্যবস্থা করেন।[২]

প্রারম্ভিক জীবন[সম্পাদনা]

মং ফিও ও খিন নান্ট দম্পতির সন্তান তিনি।[৩] ব্রিটিশ বার্মায় জন্মগ্রহণকারী থিন সিনের তিন ভাই-বোনের মধ্যে সর্বকনিষ্ঠ তিনি। তার বাবার কোন জমি ছিল না ও ভূমিহীন কৃষক ছিলেন। ফলে নদী ঘাটে কার্গো জেটিতে বসবাস করতেন ও বাঁশের কঞ্চির বিছানায় ঘুমাতেন।[৩][৪] মায়ের মৃত্যুর পর তার বাবা ১০ বছর বৌদ্ধ সন্ন্যাসী বেশে বেড়িয়ে পড়েন।[৩] ১৯৬৮ সালে ডিফেন্স সার্ভিসেস একাডেমি থেকে স্নাতক ডিগ্রী লাভ করেন। এর পরপরই সেকেন্ড লেফট্যানেন্ট হিসেবে নিযুক্ত হন।[৩][৫] চার দশককাল সামরিক বাহিনীর জীবনে তিনি ব্যুরোক্র্যাট হিসেবে ছিলেন।

কর্মজীবন[সম্পাদনা]

১৯৯৬ সালে নবগঠিত শান প্রদেশের কিয়াংটন এলাকায় ট্রায়াঙ্গেল রিজিওন্যাল মিলিটারী কমান্ডকে নেতৃত্ব দেন।[৫] ১৯৯৭ থেকে ২০০১ সাল পর্যন্ত এ দায়িত্বে ছিলেন। ১৯৯৭ সালে স্টেট পিস এন্ড ডেভেলপম্যান্ট কাউন্সিলের সদস্য হন ও ২০০৩ সালে দ্বিতীয় সচিব হিসেবে নিযুক্ত হন।[৬][৭] ২০০৪ সালে খিন নান্টের পদত্যাগের পর তিনি প্রথম সচিব হন ও ২০০৪ সালের শেষ দিকে জেনারেল হন।

এপ্রিল, ২০০৭ সালে দেশের ক্ষমতাসীন সামরিক একনায়কতান্ত্রিক সরকারের পক্ষে অন্তর্বর্তীকালীন প্রধানমন্ত্রী হন।[৮] তিনি লিউকেমিয়ায় আক্রান্ত সো উইনের স্থলাভিষিক্ত হন।[৯][১০] ১২ অক্টোবর, ২০০৭ তারিখে সো উইনের দেহাবসান ঘটে।[১১] অতঃপর ২৪ অক্টোবর তারিখে তিনি স্থায়ীভাবে তার উত্তরাধিকারী মনোনীত হন।

বাংলাদেশ ও কম্বোডিয়ায় উচ্চ পর্যায়ের প্রতিনিধি দলের পক্ষে আলাপ-আলোচনা করেন।[৯][১০] প্রধানমন্ত্রী হিসেবে মনোনয়নের অল্প কিছুদিন পর লেফট্যানেন্ট জেনারেল হিসেবে দায়িত্বভার গ্রহণ করেন।[১২] তিনি তার প্রথম রাষ্ট্রীয় সফরে লাওস, ভিয়েতনাম ও কম্বোডিয়া গমন করেন।[১৩][১৪][১৫] মে, ২০০৮ সালে ঘূর্ণিঝড় নার্গিসের পর জাতীয় দূর্যোগ কেন্দ্রীয় কমিটির সভাপতি হন।[৫] ত্রাণকার্যে সহায়তায় প্রতিবন্ধকতা ঘটায় সরকারের ত্রুটিপূর্ণ পদ্ধতির জন্য আন্তর্জাতিক পরিমণ্ডলে ব্যাপকভাবে সমালোচিত হন।

রাজনৈতিক জীবন[সম্পাদনা]

২৯ এপ্রিল, ২০১০ তারিখে সামরিক বাহিনী থেকে অবসর নেন। ২২জন সামরিক কর্মকর্তাকে নিয়ে ইউনিয়ন সলিডারিটি এন্ড ডেভেলপম্যান্ট পার্টির পক্ষে সাধারণ নাগরিক হিসেবে নেতৃত্ব দেন।[১৬] ২০১০ সালের বিতর্কিত নির্বাচনে দলীয় প্রধান হিসেবে অংশ নেন ও পিয়াদাংসু হুত্ত এলাকা থেকে সংখ্যাগরিষ্ঠ আসন পান। কিয় আইয়ের বিপক্ষে অবস্থান নিয়ে ৯১.২% ভোট পান।[১৭]

৪ ফেব্রুয়ারি, ২০১১ তারিখে মিয়ানমারের পরবর্তী রাষ্ট্রপতি হিসেবে নির্বাচিত হন। তিন অং মিন্ট ও এবং সাই মক খামকে নতুন উপ-রাষ্ট্রপতি হিসেবে ঘোষণা করেন।[১৮] ৩০ মার্চ, ২০১১ তারিখে দুই উপ-রাষ্ট্রপতিসহ তিনি শপথ গ্রহণ করেন।[১৯] জুলাই, ২০১১ সালে পররাষ্ট্রবিষয়ক মন্ত্রী ওনা মং লিনকে প্রধান করে পরিকল্পনা কমিটি গঠন করেন।[২০]

১৯ আগস্ট, ২০১১ তারিখে নেপিডোতে স্বেচ্ছায় অং সান সু চি’র সাথে স্বাক্ষাৎ করেন।[২১] ১৭ আগস্ট, ২০১১ তারিখে রাষ্ট্রনিয়ন্ত্রণাধীন দ্য নিউ লাইট অব মিয়ানমারে তিনি বলেন:[২২]

তার এ বক্তব্যকে প্রবাসী বর্মী নাগরিকদেরকে দেশে ফিরিয়ে আনার প্রয়াস হিসেবে ও বার্মার অর্থনীতিকে পুণঃউজ্বীবনের পদক্ষেপরূপে বিভিন্ন সংবাদপত্র তুলে ধরা হয়।[২৩] শতশত বছর ধরে বসবাসকারী সংখ্যালঘু রোহিঙ্গা জনগোষ্ঠীকে অন্যত্র পুণর্বাসনের জন্য জাতিসংঘে প্রস্তাব পাঠান।[২৪] তিনি বলেন, ২০১২ সালের রাখাইন রাজ্যের দাঙ্গাটি গোত্র বা ধর্মের সাথে সংশ্লিষ্ট ছিল না।[২৫]

ব্যক্তিগত জীবন[সম্পাদনা]

খিন খিন উইনের সাথে বৈবাহিক সম্পর্ক স্থাপন করেন। এ দম্পতির তিন কন্যা রয়েছে।[৩] ইন থুজার থিন নাম্নী এক কন্যাকে ক্যাপ্টেন হ্যান উইন অংয়ের কাছে বিয়ে দেন।[২৬] বর্তমানে তিনি হৃদরোগের সমস্যায় ভুগছেন ও পেসমেকার ব্যবহার করছেন।[২৭][২৮]

তথ্যসূত্র[সম্পাদনা]

  1. Ba Kaung (১৫ আগস্ট ২০১১)। "Will Naypyidaw's Olive Branch Bear Fruit?"The Irrawaddy। সংগ্রহের তারিখ ২১ আগস্ট ২০১১ 
  2. "One Year of Myanmar's Thein Sein Government: Background and Outlook of Reforms"KUDO Toshihiro। সংগ্রহের তারিখ May 2012  এখানে তারিখের মান পরীক্ষা করুন: |সংগ্রহের-তারিখ= (সাহায্য)
  3. Keller, Bill (৩০ সেপ্টেম্বর ২০১২)। "A Conversation with President U Thein Sein of Myanmar"New York Times। সংগ্রহের তারিখ ১ অক্টোবর ২০১২ 
  4. Fuller, Thomas (১৪ মার্চ ২০১২)। "A Most Unlikely Liberator in Myanmar"New York Times। সংগ্রহের তারিখ ১৫ মার্চ ২০১২ 
  5. "President Thein Sein"Alternative Asean Network on Burma। সংগ্রহের তারিখ ১৯ আগস্ট ২০১১ 
  6. "THEIN SEIN"Alternative Asean Network on Burma। সংগ্রহের তারিখ ২২ আগস্ট ২০১১ 
  7. "Lt-Gen Thein Sein is new PM"Myanmar Times। ২৯ অক্টোবর ২০০৭। সংগ্রহের তারিখ ২২ আগস্ট ২০১১ 
  8. "Countries Me-My"। Rulers.org। সংগ্রহের তারিখ ৪ ফেব্রুয়ারি ২০১১ 
  9. Burmese junta choose stand-in PM, BBC. Retrieved 20 May 2007.
  10. Burmese Junta Tips New Prime Minister ওয়েব্যাক মেশিনে আর্কাইভকৃত ২০ মে ২০০৭ তারিখে. Retrieved 20 May 2007.
  11. Myanmar appoints new PM, Xinhua. Retrieved 24 October 2007.
  12. Myanmar PM to visit Laos, Vietnam, Xinhua. Retrieved 7 November 2007.
  13. Burma's PM visits Vietnam, Associated Press via The Age. Retrieved 11 November 2007.
  14. Laos, Myanmar set to enhance relations, Xinhua. Retrieved 11 November 2007.
  15. "Myanmar's prime minister visits Cambodia to garner support against sanctions"। ১৪ নভেম্বর ২০১২ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ৭ নভেম্বর ২০১৫ 
  16. Wai Moe (৫ মে ২০১০)। "Tight Censorship on Reporting USDP"The Irrawaddy। সংগ্রহের তারিখ ২২ আগস্ট ২০১১ 
  17. "People's parliament candidates in Zabuthiri constituency (Naypyitaw Union Territory)"। সংগ্রহের তারিখ ২১ আগস্ট ২০১১ 
  18. Burma ex-Prime Minister Thein Sein named new president, BBC, 4 February 2011.
  19. http://www.dvb.no/news/president-sworn-in-spdc-dissolved/15033
  20. Nyi Thit (২৫ জুলাই ২০১১)। "Burma organizes committee to host Asean Summit"। সংগ্রহের তারিখ ২২ আগস্ট ২০১১ 
  21. "Aung San Suu Kyi meets Burma's president Thein Sein"The Guardian। ১৯ আগস্ট ২০১১। সংগ্রহের তারিখ ২১ আগস্ট ২০১১ 
  22. Ko Htwe (১৮ আগস্ট ২০১১)। "'Welcome Home' Greeted with Skepticism"The Irrawaddy। সংগ্রহের তারিখ ২১ আগস্ট ২০১১ 
  23. "Burmese President Invites Return of Citizens Abroad"Voice of America। ১৭ আগস্ট ২০১১। সংগ্রহের তারিখ ২১ আগস্ট ২০১১ 
  24. "UN refugee chief rejects call to resettle Rohingya"। Huffington Post। ১২ জুলাই ২০১২। সংগ্রহের তারিখ ১৫ জুলাই ২০১২ 
  25. Voice of America, Burma: Sectarian Violence Not About Race or Religion, 10 August 2012, http://www.voanews.com/content/burma-sectarian-violence-not-about-race-or-religion/1483768.html ওয়েব্যাক মেশিনে আর্কাইভকৃত ১৭ নভেম্বর ২০১৫ তারিখে
  26. Min Lwin (৫ ফেব্রুয়ারি ২০০৯)। "Burmese PM's Daughter Camera Shy on Her Wedding Day"The Irrawaddy। সংগ্রহের তারিখ ২২ জুন ২০১৪ 
  27. "Profile: Burmese leader Thein Sein"BBC News। ৪ ফেব্রুয়ারি ২০১১। সংগ্রহের তারিখ ২২ আগস্ট ২০১১ 
  28. McCoy, Clifford (৪ মে ২০১১)। "Man in the mirror in Myanmar"Asia Times। ১০ আগস্ট ২০১১ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২২ আগস্ট ২০১১ 

আরও দেখুন[সম্পাদনা]

রাজনৈতিক দপ্তর
পূর্বসূরী
সো উইন
মিয়ানমারের প্রধানমন্ত্রী
২০০৭-২০১১
পদ বিলুপ্ত
পূর্বসূরী
থান শি
স্টেট পিস এন্ড ডেভেলপম্যান্ট কাউন্সিলের সভাপতি
বার্মার রাষ্ট্রপতি
২০১১-বর্তমান
নির্ধারিত হয়নি