ছবি বিশ্বাস

উইকিপিডিয়া, মুক্ত বিশ্বকোষ থেকে
ছবি বিশ্বাস
ছবি বিশ্বাস জলসাঘর চলচ্চিত্রে
জন্ম(১৯০০-০৭-১৩)১৩ জুলাই ১৯০০
আহিরিটোলা, কলকাতা
মৃত্যু১১ জুন ১৯৬২(1962-06-11) (বয়স ৬১)
পেশাঅভিনেতা
কর্মজীবন১৯৩১-১৯৬২

ছবি বিশ্বাস (জন্ম: ১৩ জুলাই ১৯০০ - ১১ জুন ১৯৬২) তিনি মঞ্চ এবং চলচ্চিত্রের একজন বিখ্যাত বাঙালি অভিনেতা।[তথ্যসূত্র প্রয়োজন]

জন্ম ও পরিবার[সম্পাদনা]

ছবি বিশ্বাস কলকাতার নিবাসী ছিলেন। তার পিতার নাম ভূপতিনাথ। ছবি বিশ্বাসের আসল নাম ছিল শচীন্দ্রনাথ। বারাসতের ছোট জাগুলিয়ায় জমিদারি ছিল দে বিশ্বাস পরিবারের। ‘দে’ পদবি, ‘বিশ্বাস’টা নাকি তাঁর পূর্বপুরুষ পেয়েছিলেন আকবর বাদশাহর কাছ থেকে। ছবি বিশ্বাসের বাবা ভূপতিনাথ দে বিশ্বাসের চার ছেলের মধ্যে সবচেয়ে ছোট শচীন্দ্রনাথ। তাঁর যখন এক বছর বয়স তখন তাঁর মায়ের মৃত্যু হয়। মা আদর করে ডাকতেন ‘ছবি’ নামে। সেই নামটাই রয়ে গেল আজীবন।[১]

কর্মজীবন[সম্পাদনা]

১৯৩৬ খ্রিষ্টাব্দে অন্নপূর্ণার মন্দির চলচ্চিত্রে প্রথম চিত্রাভিনয় করেন। তার অভিনীত চলচ্চিত্রের মধ্যে সত্যজিৎ রায়ের পরিচালনায় জলসাঘর, দেবী, কাঞ্চনজঙ্ঘা, তপন সিংহের পরিচালনায় কাবুলিওয়ালা (চলচ্চিত্র) এছাড়া প্রতিশ্রুতি, শুভদা, হেড মাস্টার উল্লেখযোগ্য। এছাড়াও তিনি বহু বাণিজ্য সফল চলচ্চিত্রে পার্শ্বচরিত্রে অভিনয় করেছিলেন। তিনি মূলত সাহেবী এবং রাশভারি ব্যক্তিত্বপূর্ণ চরিত্রে অভিনয়ের জন্য খ্যাতিলাভ করেন।

তিনি মঞ্চঅভিনয়েও বিখ্যাত ছিলেন। সমাজ, ধাত্রীপান্না, মীরকাশিম, দুইপুরুষ, বিজয়া প্রভৃতি নাটকে তার অভিনয় উল্লেখযোগ্য। ছবি বিশ্বাস প্রতিকার (১৯৪৪) এবং যার যেথা ঘর (১৯৪৯) ছবি দুটির পরিচালক ছিলেন।

অভিনীত ছবির তালিকা[সম্পাদনা]

  • অন্নপূর্ণার মন্দির (১৯৩৬) - বিশু
  • চোখের বালি (১৯৩৮) - বিহারী
  • চাণক্য (১৯৩৯) - সিকান্দর
  • নিমাই সন্ন্যাসী (১৯৪০) - নিমাই
  • নর্তকী (১৯৪০) - স্বামীজী
  • প্রতিশ্রুতি (১৯৪১) - বিলাস
  • কর্ণার্জুন (১৯৪১) - কর্ণ
  • এপার ওপার (১৯৪১) - রমেন
  • সৌগন্ধ(১৯৪২)
  • পাষাণ দেবতা (১৯৪২)
  • মিলন (১৯৪২) - পরেশ
  • গরমিল (১৯৪২) - মুখার্জী
  • জীবন সঙ্গিনী (১৯৪২) - মি: চৌধুরী
  • সমাধান (১৯৪৩)
  • দ্বন্দ্ব (১৯৪৩)
  • দিকশূল (১৯৪৩)
  • দেবর (১৯৪৩) - রবীন
  • প্রতিকার (১৯৪৪)
  • ছদ্মবেশী (১৯৪৪)
  • মাটির ঘর (১৯৪৪) অলোক
  • রাজলক্ষ্মী (১৯৪৫)
  • পথ বেঁধে দিল (১৯৪৫)
  • বন্দিতা (১৯৪৫)
  • দুই পুরুষ (১৯৪৫) - নুটুবিহারী
  • তুমি আর আমি (১৯৪৬)
  • প্রেম কি দুনিয়া (১৯৪৬)
  • মন্দির (১৯৪৬)
  • বিরাজ বৌ (১৯৪৬) - নীলম্বর
  • অভিযোগ (১৯৪৭)
  • চন্দ্রশেখর (১৯৪৭) - চন্দ্রশেখর
  • শেষ নিবেদন (১৯৪৮)
  • সাধারণ মেয়ে (১৯৪৮)
  • দৃষ্টিদান (১৯৪৮)
  • অনির্বান (১৯৪৮)
  • মঞ্জুর (১৯৪৯)
  • বিদ্যাসাগর (১৯৫০)
  • মানদণ্ড (১৯৫০)
  • দুর্গেশ নন্দিনী (১৯৫১) - কাটলু খান
  • কার পাপে (১৯৫২) - ড: বোস
  • শুভদা (১৯৫২) - হারান চন্দ্র
  • লাখ টাকা (১৯৫৩)
  • যোগ বিয়োগ (১৯৫৩)
  • শেষের কবিতা (১৯৫৩)
  • ষোড়শী (১৯৫৪) - জীবানন্দ চৌধুরী
  • সদানন্দের মেলা (১৯৫৪) - মামুভাই
  • ওরা থাকে ওধারে (১৯৫৪)
  • যদুভট্ট(১৯৫৪)
  • ছেলে কার (১৯৫৪)
  • বিধিলিপি (১৯৫৪) - জগদীশ বাবু
  • উপহার (১৯৫৫) - সুনীলের বাবা
  • শ্রীবৎস চিন্তা (১৯৫৫)
  • সবার উপরে(১৯৫৫)
  • রানী রাসমনি (১৯৫৫) - রাজেন্দ্র দাস
  • দস্যু মোহন (১৯৫৫) - মি: সোম
  • ত্রিযামা (১৯৫৬) - কুশলের বাবা
  • শঙ্কর নারায়ন ব্যাঙ্ক (১৯৫৬)
  • সাহেব বিবি গোলাম (১৯৫৬) - মেজোবাবু
  • পুত্রবধূ (১৯৫৬)
  • পরাধীন (১৯৫৬)
  • কাবুলিওয়ালা (১৯৫৬) - রেহমত
  • দানের মর্যাদা (১৯৫৬) - অমরনাথ
  • ভোলা মাস্টার (১৯৫৬) - ভোলা মাস্টার
  • অসবর্ণ (১৯৫৬)
  • রাত ভোরে (১৯৫৬)
  • সুরের পরশে (১৯৫৭)
  • পৃথিবী আমারে চায় (১৯৫৭)
  • পথে হল দেরি (১৯৫৭) - মল্লিকার বাবা
  • হরিশ্চন্দ্র (১৯৫৭)
  • পরশ পাথর (১৯৫৮)
  • জলসাঘর (১৯৫৮)
  • তানসেন (১৯৫৮) - আকবর
  • অগ্নিসম্ভবা (১৯৫৯)
  • গলি থেকে রাজপথ (১৯৫৯)
  • শুন বরনারী (১৯৬০)
  • স্মৃতিটুকু থাক (১৯৬০) - শোভার বাবা
  • মায়া মৃগ (১৯৬০)
  • ক্ষুধিত পাষাণ (১৯৬০)
  • হসপিটাল (১৯৬০)
  • দেবী (১৯৬০) - কালীকিঙ্কর রায়
  • মানিক (১৯৬১)
  • সপ্তপদী (১৯৬১) - কৃষ্ণেন্দুর বাবা
  • মা (১৯৬১)
  • শুভ দৃষ্টি (১৯৬২)
  • কাঞ্চনজঙ্ঘা (১৯৬২) - ইন্দ্রনাথ চৌধুরী
  • ধূপছায়া (১৯৬২)
  • দাদা ঠাকুর (১৯৬২) - দাদা ঠাকুর
  • অতল জলের আহ্বান (১৯৬২) - মি: চৌধুরী
  • সূর্য শিখা (১৯৬৩)

উপাধি[সম্পাদনা]

১৯৫৯ খ্রিষ্টাব্দে 'সঙ্গীত নাটক একাডেমী' তাঁকে শ্রেষ্ঠ অভিনেতার সম্মান জানায়।

মৃত্যু[সম্পাদনা]

মোটরগাড়ি দুর্ঘটনায়, ১১ জুন ১৯৬২ সালে মারা যান ছবি বিশ্বাস।[২] ওইদিন তিনি অ্যাম্বাসাডরে চেপে যাচ্ছিলেন বারাসতের ছোট জাগুলিয়ার বাড়ি। তিনেক সকালে ভানু বন্দ্যোপাধ্যায়ের বাড়ি এসে বলেছিলেন সঙ্গে যেতে। রেডিয়োতে রিহার্সাল আছে বলে ভানুবাবু যান নি। নিজেই চালাচ্ছিলেন গাড়ি। মধ্যমগ্রামের কাছে গঙ্গানগরে ওল্ড যশোর রোডে উলটো দিক থেকে আসা ভ্যানের সঙ্গে মুখোমুখি সংঘর্ষ হয়। আর.জি.কর হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হলে চিকিৎসকরা তাঁকে মৃত বলে ঘোষণা করেন।[১]

তথ্যসূত্র[সম্পাদনা]

  1. "'তুই অন্তত আমাকে একটা এক্সট্রার পার্ট দে'"আনন্দবাজার পত্রিকা, www.anandabazar.com। সংগ্রহের তারিখ ২০২২-০৮-১৩ 
  2. সেলিনা হোসেন ও নুরুল ইসলাম সম্পাদিত; বাংলা একাডেমী চরিতাভিধান; দ্বিতীয় সংস্করণ: ফেব্রুয়ারি, ১৯৯৭; পৃষ্ঠা: ১৬৩, আইএসবিএন ৯৮৪-০৭-৪৩৫৪-৬