হুসনা বানু খানম

উইকিপিডিয়া, মুক্ত বিশ্বকোষ থেকে
হুসনা বানু খানম
জন্ম(১৯২২-০২-১৮)১৮ ফেব্রুয়ারি ১৯২২
মৃত্যু৩০ মে ২০০৬(2006-05-30) (বয়স ৮৪)
জাতীয়তাবাংলাদেশী
শিক্ষাস্নাতকোত্তর (দর্শন)
মাতৃশিক্ষায়তনঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়
পেশাশিক্ষাবিদ, সঙ্গীতজ্ঞ
পিতা-মাতাআবু ইউসুফ মোহাম্মদ সিদ্দিক হোসেন খান লোহানী (পিতা)
ফাতেমা লোহানী (মাতা)
আত্মীয়ফজলে লোহানী (ভাই)
ফতেহ লোহানী (ভাই)
পুরস্কারএকুশে পদক

হুসনা বানু খানম (ফেব্রুয়ারি ১৮, ১৯২২ - মে ৩০, ২০০৬) ছিলেন একজন বাংলাদেশী শিক্ষাবিদ, লেখিকা ও নজরুল সঙ্গীত শিল্পী। তিনি ছিলেন বাঙালি মুসলিম নারী সাংবাদিকতার একজন অগ্রপথিক।[১] ১৯৯৯ সালে বাংলাদেশ সরকার তাকে সঙ্গীতে অবদানের জন্য একুশে পদক-এ ভূষিত করে[২] এবং ২০০৪ সালে নারীদের আর্থসামাজিক উন্নতিতে অবদানের জন্য তিনি বেগম রোকেয়া পদক লাভ করেন।[৩]

প্রাথমিক জীবন[সম্পাদনা]

হুসনা বানু খানম তৎকালীন ব্রিটিশ ভারতের (বর্তমান বাংলাদেশ) পাবনা জেলার এক মুসলিম পরিবারে জন্মগ্রহণ করেন। তার পিতা আবু ইউসুফ মোহাম্মদ সিদ্দিক হোসেন খান লোহানী ছিলেন সাংবাদিক ও সাহিত্যিক। মাতা ফাতেমা লোহানী ছিলেন একজন শিক্ষিকা। দুই ভাই ফজলে লোহানীফতেহ লোহানী ছিলেন সাংস্কৃতিক ব্যক্তিত্ব।[৪] ছেলেবেলা থেকে তিনি সঙ্গীতে আগ্রহী ছিলেন ও নিয়মিত সঙ্গীত চর্চা করতেন। কবি গোলাম মোস্তফা তাকে একটি হারমোনিয়াম উপহার দিয়েছিলেন। কবি কাজী নজরুল ইসলাম যখন বাকরুদ্ধ ছিলেন তিনি তার বাসায় গিয়ে তাকে গান শুনিয়ে আসতেন।[৫]

শিক্ষাজীবন[সম্পাদনা]

হুসনা বানু বেগম রোকেয়া সাখাওয়াত মেমরিয়াল স্কুলে পড়াশুনা করেন।[৬] সপ্তম শ্রেণীতে পড়াকালীন তার বিয়ে হয়ে গেলেও তিনি পড়াশুনা চালিয়ে যান। ১৯৫৯ সালে তিনি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে দর্শন বিষয়ে স্নাতকোত্তর সম্পন্ন করেন এবং বৃত্তি নিয়ে যুক্তরাষ্ট্রে চলে যান। সেখানে তিনি আর্ট এ্যান্ড ক্রাফটস বিষয়ে এমএস সম্পন্ন করেন।[৫]

কর্মজীবন[সম্পাদনা]

যুক্তরাষ্ট্র থেকে ফিরে এসে তিনি ঢাকার গার্হস্থ অর্থনীতি কলেজে অধ্যাপিকা হিসেবে যোগ দেন।[৬] পাশাপাশি তিনি সাংবাদিকতা করতেন। তিনি ছিলেন প্রথম মুসলমান চলচ্চিত্র নারী সাংবাদিক এবং ১৯৬৭ সালে গঠিত পাকিস্তান সাংবাদিক সমিতির প্রতিষ্ঠাতা সদস্য।[৫] বেগমসহ বিভিন্ন পত্রিকায় তার লেখা ছাপা হত। তিনি বেগম পত্রিকার চলচ্চিত্র পাতার দায়িত্বে ছিলেন।[৭]

সঙ্গীতজীবন[সম্পাদনা]

হুসনা বানু অল ইন্ডিয়া রেডিওতে কোন অডিশন ছাড়াই গান গাওয়ার সুযোগ পান। কলকাতায় থাকাকালীন তিনি রবীন্দ্র সঙ্গীত চর্চা করতেন এবং সেখানে সুনাম অর্জন করেন। তিনি নিজেকে কলকাতা বেতারের একজন অন্যতম অগ্রণী মুসলমান শিল্পী হিসেবে প্রতিষ্ঠিত করেন। ১৯৫০ সালে তিনি কলকাতা থেকে ঢাকায় ফিরে আসেন এবং স্থায়ীভাবে বসবাস শুরু করেন। ঢাকায় এসেও তিনি সঙ্গীত চর্চা চালিয়ে যান এবং বেতারে সঙ্গীত পরিবেশন করতেন। বেতারের পাশাপাশি তার ভাই ফতেহ লোহানী পরিচালিত আকাশ আর মাটি এবং আসিয়া চলচ্চিত্রে তিনি প্লেব্যাকও করেন।[৫]

গ্রন্থাবলী[সম্পাদনা]

  • গার্হস্থ্য অর্থনীতি পরিভাষা[৮]

পুরস্কার[সম্পাদনা]

মৃত্যু[সম্পাদনা]

হুসনা বানু ২০০৬ সালের ৩০ মে মৃত্যুবরণ করেন। ২০০৭ সালের আগস্ট মাসে তার জীবনী নিয়ে একটি স্মারক গ্রন্থ পথিকৃৎ সাংস্কৃতিক ব্যক্তিত্ব হুসনা বানু বেগম প্রকাশিত হয়।[৯]

তথ্যসূত্র[সম্পাদনা]

  1. অনুপম হায়াৎ (১৮ ডিসেম্বর ২০১২)। "সাংবাদিকতায় বাঙালি মুসলিম নারী"দৈনিক সংগ্রাম। সংগ্রহের তারিখ ৮ ডিসেম্বর ২০১৬ [স্থায়ীভাবে অকার্যকর সংযোগ]
  2. একুশে পদকপ্রাপ্ত সুধীবৃন্দ ও প্রতিষ্ঠান (পিডিএফ)সংস্কৃতি বিষয়ক মন্ত্রণালয়। পৃষ্ঠা ১০। ১২ সেপ্টেম্বর ২০১৪ তারিখে মূল (পিডিএফ) থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ৮ ডিসেম্বর ২০১৬ 
  3. Muhammad Rahim। Memoirs of A Life Insurance Icon: Khuda Buksh। সংগ্রহের তারিখ জুন ৭, ২০১৬ 
  4. শাকিব লোহানী (জুলাই ২১, ২০১৫)। "Cellist Razef Khan: Basks in the greatness of Bach"দ্য ডেইলি স্টার (ইংরেজি ভাষায়)। সংগ্রহের তারিখ ৮ ডিসেম্বর ২০১৬ 
  5. শামীম ফেরদৌস (১৮ ফেব্রুয়ারি ২০১১)। "জন্মদিনে শ্রদ্ধাঞ্জলি - হুসনা বানু খানম"দৈনিক জনকণ্ঠ। সংগ্রহের তারিখ ৮ ডিসেম্বর ২০১৬ [স্থায়ীভাবে অকার্যকর সংযোগ]
  6. "Ensure social security of women: PM"দ্য ডেইলি স্টার। ডিসেম্বর ১০, ২০০৪। ১২ জানুয়ারি ২০১৭ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ৮ ডিসেম্বর ২০১৬ 
  7. উদিসা ইসলাম (মে ২৩, ২০১৬)। "সেই চেনা অচেনা 'বেগম'"বাংলা ট্রিবিউন। ২৭ মে ২০১৬ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ৮ ডিসেম্বর ২০১৬ 
  8. "গার্হস্থ্য অর্থনীতি পরিভাষা - হুসনা বানু খানম"রকমারি.কম। সংগ্রহের তারিখ ৮ ডিসেম্বর ২০১৬ 
  9. "A commemorative book on Husna Banu Khanam launched"দ্য ডেইলি স্টার। আগস্ট ১৬, ২০০৭। সংগ্রহের তারিখ ৮ ডিসেম্বর ২০১৬ 

বহিঃসংযোগ[সম্পাদনা]