মো. জহুরুল হক

উইকিপিডিয়া, মুক্ত বিশ্বকোষ থেকে
মো. জহুরুল হক
কমিশনার (তদন্ত)
দুর্নীতি দমন কমিশন
দায়িত্বাধীন
অধিকৃত কার্যালয়
১০ মার্চ ২০২১
নিয়োগদাতাবাংলাদেশের রাষ্ট্রপতি
রাষ্ট্রপতিমোঃ সাহাবুদ্দিন
পূর্বসূরীএ এফ এম আমিনুল ইসলাম
চেয়ারম্যান
বাংলাদেশ টেলিযোগাযোগ নিয়ন্ত্রণ কমিশন
কাজের মেয়াদ
৩১ জানুয়ারি ২০১৯ – ৪ ডিসেম্বর ২০২০
রাষ্ট্রপতিআব্দুল হামিদ
প্রধানমন্ত্রীশেখ হাসিনা
পূর্বসূরীড. শাহজাহান মাহমুদ
উত্তরসূরীশ্যাম সুন্দর সিকদার
ব্যক্তিগত বিবরণ
জন্ম (1955-12-05) ৫ ডিসেম্বর ১৯৫৫ (বয়স ৬৮)
জামালপুর জেলা, পূর্ব পাকিস্তান (বর্তমানে বাংলাদেশ)
জাতীয়তাবাংলাদেশী
দাম্পত্য সঙ্গীমাছুদা বেগম
সন্তান
প্রাক্তন শিক্ষার্থীরাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়
পেশাবিচারক

জহুরুল হক একজন অবসরপ্রাপ্ত বিচারক যিনি বর্তমানে দুর্নীতি দমন কমিশনের কমিশনার হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন। তিনি ইতিপূর্বে বাংলাদেশ টেলিযোগাযোগ নিয়ন্ত্রণ কমিশনের সাবেক চেয়ারম্যান হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন।[১][২] এছাড়া তিনি ঢাকা মহানগরের দায়রা জজ হিসাবেও দায়িত্ব পালন করেছেন।

প্রাথমিক জীবন[সম্পাদনা]

হক ১৯৫৫ সালের ৫ ডিসেম্বর পূর্ব পাকিস্তানের জামালপুর জেলায় জন্মগ্রহণ করেন।[৩] তিনি ১৯৭১ সালে মাদারগঞ্জ উপজেলার পলিশা উচ্চ বিদ্যালয় থেকে এসএসসি এবং ১৯৭৩ সালে সরকারি আশেক মাহমুদ কলেজ থেকে এইচএসসি পাশ করেন। জহুরুল হক রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের আইন বিভাগ থেকে স্নাতক (সম্মান) ডিগ্রী এবং মাস্টার্স ডিগ্রী লাভ করেন।[৪]

কর্মজীবন[সম্পাদনা]

জহুরুল হক ১৯৮৩ সালে বাংলাদেশ সিভিল সার্ভিসের ১৯৮২ ব্যাচের বিচার ক্যাডারে মুন্সেফ হিসেবে যোগদান করেন।[৩] বিচারিক জীবনে তিনি সিরাজগঞ্জ, মৌলভীবাজার, নেত্রকোণানারায়ণগঞ্জ জেলাসহ বিভিন্ন জেলায় জেলা ও দায়রা জজ হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন। তিনি ২০১০ থেকে ২০১৪ সাল পর্যন্ত ঢাকা মহানগর দায়রা জজ হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন।[৪]

২০১২ সালে, হক একুশে টেলিভিশনের চেয়ারম্যান আবদুস সালাম ও এর ব্যবস্থাপনা পরিচালক আশরাফুল আলমের বিরুদ্ধে কর ফাঁকির অভিযোগে অভিযুক্ত করেন।[৫]

১৪ জুলাই ২০১৪-এ, হক ডেসটিনি গ্রুপের শীর্ষ ব্যবস্থাপনাকে গ্রেপ্তারের নির্দেশ দেন।[৬] হক ২০১৪ সালে ঢাকা মহানগর দায়রা জজ আদালতে সভাপতিত্ব[৭] । মুহাম্মদ জসীমউদ্দিন রহমানির বিরুদ্ধে মামলার শুনানি করেন তিনি।[৭] এছাড়াও তিনি সাবেক রাষ্ট্রপতি হুসেইন মুহম্মদ এরশাদের বিরুদ্ধে ১৯৯২ সালের একটি মামলায় রাডার ক্রয় সংক্রান্ত দুর্নীতির মামলায় শুনানি করেন।[৮] তিনি ঐশী রহমানের বিরুদ্ধে তার বাবা-মা হত্যার অভিযোগ এনেছিলেন; তার বাবা একজন পুলিশ অফিসার ছিলেন এবং ঘটনাটি ১৪ আগস্ট শিরোনামের ওয়েব ভিত্তিক টিভি শোতে রূপান্তরিত হয়েছিল।[৯][১০] সড়ক ও জনপথ বিভাগের প্রকৌশলী আবদুল মালেককেও সাত বছরের কারাদণ্ড দিয়েছেন তিনি।[১১] তিনি গুলশানে জমি দখলের অভিযোগে বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দলের রাজনীতিবিদ মওদুদ আহমেদ এবং তার ভাই মনজুর আহমেদের বিরুদ্ধে অভিযোগ স্বীকার করেন।[১২]

জহুরুল হক ২০১৪ সালের ৪ ডিসেম্বর দায়রা জজ হিসেবে অবসর গ্রহণ করেন।[৩]

হক বাংলাদেশ টেলিকমিউনিকেশন রেগুলেটরি কমিশনের আইনি ও লাইসেন্সিং কমিশনার হিসেবে দায়িত্ব পালন করেছেন।[১৩] তিনি ২০১৯ সালে টেলিকম অপারেটরদের কাছ থেকে প্রায় ৮৫ বিলিয়ন টাকা ব্যাক ট্যাক্স সংগ্রহের চেষ্টা করেছিলেন।[১৪][১৫][১৬]

ডক্টর শাহজাহান মাহমুদের স্থলাভিষিক্ত হয়ে ৩১ জানুয়ারি ২০১৯ তারিখে হককে বাংলাদেশ টেলিযোগাযোগ নিয়ন্ত্রণ কমিশনের চেয়ারম্যান নিযুক্ত করা হয়।[১৭][১৮] তার মেয়াদে, বাংলাদেশ টেলিযোগাযোগ নিয়ন্ত্রণ কমিশন ২০১৮ সালে জাতীয় নির্বাচনের সময় বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দলের অফিসিয়াল ওয়েবসাইট ব্লক করে।[১৯] তার মেয়াদকালে, সেলফোন অপারেটরদের টাওয়ারের মালিকানা না দেওয়ার সিদ্ধান্তের অধীনে সেলফোন কোম্পানি থেকে স্বতন্ত্র ঠিকাদারদের কাছে সেলফোন টাওয়ারের মালিকানা স্থানান্তরিত হয়।[২০][২১]

জহুরুল হককে ৩ মার্চ ২০২১ তারিখে দুর্নীতি দমন কমিশনের কমিশনার নিযুক্ত করা হয়।[২২] প্রথম আলোর সাংবাদিক রোজিনা ইসলামকে লাঞ্ছিত করার পর তিনি স্বাস্থ্যসেবা বিভাগের অতিরিক্ত সচিব কাজী জেবুন্নেসা বেগমকে তদন্তের কথা বিবেচনা করেন এবং তার বিরুদ্ধে সরকারি গোপনীয়তা আইনে মামলা করেন।[২৩]

ব্যক্তিগত জীবন[সম্পাদনা]

জহুরুল হক ব্যক্তিগত জীবনে বিবাহিত এবং এক পুত্র ও এক কন্যা সন্তানের জনক।[৪]

তথ্যসূত্র[সম্পাদনা]

  1. "Moinuddin Abdullah joins ACC as new chairman"bdnews24.com। সংগ্রহের তারিখ ২০২২-০৩-১৬ 
  2. "Robi, BL, Teletalk want additional spectrum allocation during shutdown period"The Daily Star (ইংরেজি ভাষায়)। ২০২০-০৪-১৩। সংগ্রহের তারিখ ২০২২-০৩-১৬ 
  3. "Moinuddin Abdullah new ACC chairman, Jahurul Haque commissioner"The Business Standard (ইংরেজি ভাষায়)। ২০২১-০৩-০৩। সংগ্রহের তারিখ ২০২২-০৩-১৬ 
  4. "মোঃ জহুরুল হক | মাননীয় কমিশনার" (পিডিএফ)দুর্নীতি দমন কমিশন। ২০২১-০৩-১৩। সংগ্রহের তারিখ ২০২৩-০৮-২৯ 
  5. "ETV chairman, MD indicted"The Daily Star (ইংরেজি ভাষায়)। ২০১২-০৬-০৮। সংগ্রহের তারিখ ২০২২-০৩-১৬ 
  6. "Court asks cops to make arrests"The Daily Star (ইংরেজি ভাষায়)। ২০১৪-০৭-১৪। সংগ্রহের তারিখ ২০২২-০৩-১৬ 
  7. "Charges against Mufti Jasim accepted"The Daily Star (ইংরেজি ভাষায়)। ২০১৪-১০-১৫। সংগ্রহের তারিখ ২০২২-০৩-১৬ 
  8. "Senior special judge's court to now hold trial"The Daily Star (ইংরেজি ভাষায়)। ২০১৪-০৭-০৯। সংগ্রহের তারিখ ২০২২-০৩-১৬ 
  9. "Oishee, 2 of her friends indicted"The Daily Star (ইংরেজি ভাষায়)। ২০১৪-০৫-০৭। সংগ্রহের তারিখ ২০২২-০৩-১৬ 
  10. "Police officer, wife murdered in bedroom"Risingbd (ইংরেজি ভাষায়)। সংগ্রহের তারিখ ২০২২-০৩-১৬ 
  11. "7yr jail for former RHD engineer"The Daily Star (ইংরেজি ভাষায়)। ২০১৪-০৪-০২। সংগ্রহের তারিখ ২০২২-০৩-১৬ 
  12. "Court accepts land grabbing charges against Moudud, brother"The Daily Star (ইংরেজি ভাষায়)। ২০১৪-০৯-১৪। সংগ্রহের তারিখ ২০২২-০৩-১৬ 
  13. "BTRC to declare all operators eligible for 4G licences"The Daily Star (ইংরেজি ভাষায়)। ২০১৮-০১-২৪। সংগ্রহের তারিখ ২০২২-০৩-১৬ 
  14. "Govt asks GP to pay Tk 12579.95 cr"The Daily Star (ইংরেজি ভাষায়)। ২০১৯-০৪-০২। সংগ্রহের তারিখ ২০২২-০৩-১৬ 
  15. "Grameenphone to pay BTRC Tk 1,000cr today"The Daily Star (ইংরেজি ভাষায়)। ২০২০-০৫-১৯। সংগ্রহের তারিখ ২০২২-০৩-১৬ 
  16. "BTRC audit claim unfounded: GP"The Daily Star (ইংরেজি ভাষায়)। ২০১৯-০৪-১৭। সংগ্রহের তারিখ ২০২২-০৩-১৬ 
  17. "BTRC gets new chairman"The Daily Star (ইংরেজি ভাষায়)। ২০১৯-০১-৩১। সংগ্রহের তারিখ ২০২২-০৩-১৬ 
  18. "Shutting down mobile internet or social media?"The Daily Star (ইংরেজি ভাষায়)। ২০১৮-১২-২৪। সংগ্রহের তারিখ ২০২২-০৩-১৬ 
  19. "BNP website blocked over 'distasteful' content"The Daily Star (ইংরেজি ভাষায়)। ২০১৮-১২-২১। সংগ্রহের তারিখ ২০২২-০৩-১৬ 
  20. "Four firms deposit Tk 100cr as fees for tower licences"The Daily Star (ইংরেজি ভাষায়)। ২০১৮-০৯-২১। সংগ্রহের তারিখ ২০২২-০৩-১৬ 
  21. Islam, Muhammad Zahidul (২০১৮-০৩-২৯)। "BTRC to offer 4 tower company licences"The Daily Star (ইংরেজি ভাষায়)। সংগ্রহের তারিখ ২০২২-০৩-১৬ 
  22. "Moinuddin Abdullah joins ACC as new chairman"The Financial Express (ইংরেজি ভাষায়)। সংগ্রহের তারিখ ২০২২-০৩-১৬ 
  23. "ACC to dig out wealth of addl secy Jebunnesa"businesspostbd.com (ইংরেজি ভাষায়)। সংগ্রহের তারিখ ২০২২-০৩-১৬