বাণী রায়

উইকিপিডিয়া, মুক্ত বিশ্বকোষ থেকে
বাণী রায়
জন্ম(১৯১৮-১১-০৫)৫ নভেম্বর ১৯১৮
পেঁচাখোলা পাবনা, ব্রিটিশ ভারত (বর্তমানে বাংলাদেশ)
মৃত্যু১৬ অক্টোবর ১৯৯২(1992-10-16) (বয়স ৭৩)
কলকাতা পশ্চিমবঙ্গ
পেশাঅধ্যাপনা, কবি ও সাহিত্যিক
ভাষাবাংলা
জাতীয়তাভারতীয়
শিক্ষা প্রতিষ্ঠানআশুতোষ কলেজ
কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়

বাণী রায় (৫ নভেম্বর ১৯১৮ - ১৬ অক্টোবর ১৯৯২) ছিলেন বিশিষ্ট ভারতীয় বাঙালি কবি ও যশস্বিনী কথাসাহিত্যিক।[১][২]

জন্ম ও প্রারম্ভিক জীবন[সম্পাদনা]

বাণী রায়ের জন্ম ব্রিটিশ ভারতের অধুনা বাংলাদেশের পাবনা জেলার পেঁচাখোলা গ্রামে। পিতা আইনজীবী পূর্ণচন্দ্র রায় এবং মাতা সুলেখিকা গিরিবালা দেবী (১৮৯১-১৯৮৩)। স্বাধীনতার আগেই তিনি কলকাতায় চলে আসেন। ১৯৩২ খ্রিস্টাব্দে ব্রাহ্ম বালিকা বিদ্যালয় থেকে কুড়ি টাকা বৃত্তি নিয়ে ম্যাট্রিক পাশ করেন। পরে আশুতোষ কলেজ থেকে আই.এ এবং ১৯৩৬ খ্রিস্টাব্দে ইংরাজীতে অনার্সসহ বি.এ পাশ করেন। ১৯৩৯ খ্রিস্টাব্দে কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে এম.এ পাশ করেন।

কর্মজীবন ও সাহিত্যকর্ম[সম্পাদনা]

এম.এ পাশের পর তিনি কিছুদিন সরকারি প্রচার বিভাগে কাজ করেন। তারপর তিনি প্রথমে কলকাতার চারুচন্দ্র কলেজ ও পরে মুরলীধর কলেজে ইংরাজী ভাষা ও সাহিত্যে অধ্যাপনা করেন।

কলেজে ছাত্রবস্থাতে তিনি লেখালেখি শুরু করেন এবং সেগুলি বিভিন্ন পত্র-পত্রিকায় প্রকাশিত হয়। একাধারে কবি ও সাহিত্যিক হিসাবে অচিরে পরিচিতি লাভ করেন। তার রচনায় নারীজীবনের কামনা, প্রেম, আশাভঙ্গের মর্মান্তিক বেদনা, পরিতৃপ্তির সাফল্য উপস্থাপিত হয়েছে। সমালোচনার ভ্রূকুটি সহ্য করে নিজস্ব ভাষা শৈলিতে ও রচনা ভঙ্গির স্পষ্টতায় অচেনা নারীজগতের কথা বিবৃত করেছেন। আই.এ পরীক্ষা পাশের পরই তিনি প্রেম উপন্যাস রচনা শুরু করেন তবে শেষ করেন ১৯৪১ খ্রিস্টাব্দে। উপন্যাসটির কিছু অংশ সজনীকান্ত দাসের শনিবারের চিঠিতে প্রকাশিত হলে সমকালের সমালোচনায় পাঠক মহলে যথেষ্ট আলোড়ন সৃষ্টি হয়। শেষে মোহিতলাল মজুমদারের নির্দেশে পরবর্তী অংশের প্রকাশ বন্ধ হয়। কিন্তু পরের বছরেই তার উপন্যাসখানি গ্রন্থাকারে প্রকাশিত হয় অসংশোধিতভাবেই।[৩] তার রচিত প্রথম কবিতা সংকলনের গ্রন্থ জুপিটার প্রকাশিত হয় ১৯৪৩ খ্রিস্টাব্দে। কাব্যগ্রন্থটি বহু বছর ধরে দিল্লি বিশ্ববিদ্যালয়ের কলেজ পাঠ্য তালিকায় ছিল। বিদেশি সাহিত্যের প্রভাব তার রচনার মধ্যে ছিল। কেননা তার রচনায় অনেক পাশ্চাত্য উপমা, রূপকল্প, বাগবৈদগ্ধ সুনিপুণ দক্ষতায় ব্যবহৃত হয়েছে। অজস্র ছোটোগল্পও রচনা করেছেন।[১] চক্রবক্র তার একটি রম্যরচনা। বাণী রায় তার জন্মভূমি বাংলাদেশের পাবনার আঞ্চলিক ভাষার ব্যবহারে রচনা করেছেন নাটক - একটি মেয়ে জন্ম নিল। তার রচিত অপর উল্লেখযোগ্য গ্রন্থগুলি হল-

রচিত গ্রন্থসমূহ[সম্পাদনা]

উপন্যাস-
  • জনারণ্যে একমুখ
  • সপ্তসাগর (১৯৫০)
  • শ্রীলতা ও শম্পা (১৯৫৩)
  • কনে দেখা আলো
  • চক্ষে আমার তৃষ্ণা
  • সকাল সন্ধ্যা রাত্রি
অন্যান্য-
  • পুনরাবৃত্তি
  • প্রেমের যৎকিঞ্চিৎ
  • হাসিকান্নার দিন
  • তণিমাজাতক
  • নিঃসঙ্গ বিহঙ্গ
  • প্রেমের দেবতা
  • আগুনের দিন
  • কবি চতুষ্টয়ী
  • মধুজীবনের নূতন ব্যাখ্যা (১৯৬২)

অধ্যাপিকা বাণী রায়ের কয়েকটি গ্রন্থ ইংরাজি, হিন্দি, কন্নড়, মারাঠি, গুজরাতি, ইন্দোনেশীয় প্রভৃতি ভাষায় অনূদিত হয়েছে।

জীবনাবসান[সম্পাদনা]

অধ্যাপিকা বাণী রায় ১৯৯২ খ্রিস্টাব্দের ১৬ অক্টোবর কলকাতায় প্রয়াত হন।

তথ্যসূত্র[সম্পাদনা]

  1. অঞ্জলি বসু সম্পাদিত, সংসদ বাঙালি চরিতাভিধান, দ্বিতীয় খণ্ড, সাহিত্য সংসদ, কলকাতা, জানুয়ারি ২০১৯ পৃষ্ঠা ২৪৬,২৪৭, আইএসবিএন ৯৭৮-৮১-৭৯৫৫-২৯২-৬
  2. শিশির কুমার দাশ (২০১৯)। সংসদ বাংলা সাহিত্যসঙ্গী। সাহিত্য সংসদ, কলকাতা। পৃষ্ঠা ১৪২। আইএসবিএন 978-81-7955-007-9 
  3. "বাণী রায়ঃ জন্মশতবর্ষে"। ২০২২-১০-১৭ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২০২২-১০-১৭