পার্থসারথি গুপ্ত
অধ্যাপক পার্থসারথি গুপ্ত | |
---|---|
জন্ম | ৫ আগস্ট ১৯৩৪ |
মৃত্যু | ১০ আগস্ট ১৯৯৯ | (বয়স ৬৫)
জাতীয়তা | ভারতীয় |
পেশা | Professor of British and European History, Delhi University |
উপাধি | Ex-President, Indian History Congress |
পুরস্কার | Ishan Uday Smuts Fellow in Commonwealth History at Cambridge University (1980-1981) Fellow of the Royal Historical Society Editorial Advisory Board Member of the Journal of Imperial and Commonwealth History |
উচ্চশিক্ষায়তনিক পটভূমি | |
শিক্ষা | BA , MA, M Phil, PhD |
মাতৃ-শিক্ষায়তন | বালিগঞ্জ রাষ্ট্রীয় উচ্চ বিদ্যালয় প্রেসিডেন্সি কলেজ কলকাতা (BA) অক্সফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয় (MA, PhD) |
অভিসন্দর্ভ | (১৯৫৬) |
ডক্টরাল উপদেষ্টা | হেনরি পেলিং |
অন্য উচ্চশিক্ষায়তনিক উপদেষ্টা | ক্রিস্টোফার হিল কিথ টমাস |
উচ্চশিক্ষায়তনিক কর্ম | |
যুগ | ১৯১৪-১৯৬৪ |
বিষয় | Historian |
উপ-বিষয় | Imperialism And The British Labour Movement, Commonwealth History, English Civil War , Documents For The Movement For Independence In India, |
বিদ্যালয় বা ঐতিহ্য | Liberalism |
উল্লেখযোগ্য কাজ | Imperialism And The British Labour Movement, 1914-1964 Towards Freedom: Documents For The Movement For Independence In India, 1943-44 |
পার্থসারথি গুপ্ত (৫ আগস্ট, ১৯৩৪ – ১০ আগস্ট, ১৯৯৯) দিল্লি বিশ্ববিদ্যালয়ে ব্রিটেন ও ইউরোপের ইতিহাসের অধ্যাপক ও ভারতের ইতিহাস কংগ্রেসের সভাপতি। তিনি সমাজসেবী অশোকা গুপ্ত ও স্বনামধন্য সিভিলিয়ান শৈবাল গুপ্তের প্রথম সন্তান। তিনি শৈশবে ১৯৪৬ খ্রিস্টাব্দে দাঙ্গা-পীড়িত নোয়াখালীতে মহাত্মা গান্ধীর সাথে তার মায়ের অংশগ্রহণ প্রত্যক্ষ করেছেন ও দীর্ঘস্থায়ী প্রভাব ফেলেছিল। কলকাতার প্রেসিডেন্সি কলেজে পশ্চিমবঙ্গে সর্বোচ্চ নম্বর পাওয়ার জন্য ঈশান স্কলারশিপ পান। ১৯৫৩ খ্রিস্টাব্দে তার সহপাঠীদের মধ্যে ছিলেন অর্থনীতিতে নোবেলজয়ী অমর্ত্য সেন ও ভারতের পরিকল্পনা কমিশনের সদস্য সুখময় চক্রবর্তী [১]
পার্থসারথি গুপ্ত ইন্ডিয়ান কাউন্সিল অব হিস্টোরিক্যাল রিসার্চের সদস্য ছিলেন। ১৯৮০ - ৮১ খ্রিস্টাব্দে কেমব্রিজে কমনওয়েলথ স্টাডিজ স্মুটস (Smuts) ভিজিটিং ফেলো ছিলেন। ১৯৮৯ খ্রিস্টাব্দে তিনি গ্রেট ব্রিটেনের রয়াল হিস্টেরিক্যাল সোসাইটির ফেলো হন।ভারতে ইউরোপীয় ইতিহাস চর্চায় তাঁকে পথিকৃৎ বলা হয়। দেশে আশির দশকের গোড়ায় ইতিহাসের পাঠক্রম পুনর্বিন্যাসে তিনি দৃঢ পদক্ষেপ নিয়েছিলেন। ইতিহাস বিকৃতির যেকোনো চেষ্টার প্রতিবাদ জানিয়েছেন তীব্রভাবে। ১৯৯০ খ্রিস্টাব্দে কলকাতায় ইতিহাস কংগ্রেসে হিন্দুত্ববাদী অপপ্রচারের বিরুদ্ধে তার দৃপ্ত ও তথ্যঋদ্ধ প্রতিবাদ বিশেষ উল্লেখযোগ্য। [২]
জীবনী[সম্পাদনা]
পার্থসারথি বৃটিশ ভারতের অধুনা পশ্চিমবঙ্গের হুগলি জেলার গুপ্তিপাডায় ১৯৩৪ খ্রিস্টাব্দের ৫ ই আগস্ট জন্ম গ্রহণ করেন। তার পিতা ছিলেন স্বনামধন্য সিভিলিয়ান শৈবাল গুপ্ত এবং মাতা সুপরিচিত সমাজসেবী অশোকা গুপ্ত দাঙ্গাপীড়িত নোয়াখালীতে গান্ধীজির সঙ্গে ছিলেন। বিংশ শতকের প্রখ্যাত লেখক জ্যোতিময়ী দেবী ছিলেন তার মাতামহী।
প্রারম্ভিক জীবন[সম্পাদনা]
তিনি অত্যন্ত মেধাবী ছাত্র ছিলেন। ১৯৪৯ খ্রিস্টাব্দে বালিগঞ্জ রাষ্ট্রীয় উচ্চ বিদ্যালয় হতে ম্যাট্রিক পরীক্ষায় প্রথম হন। [৩] তারপর তিনি কলকাতার প্রেসিডেন্সি কলেজে ভর্তি হন। ১৯৫৩ খ্রিস্টাব্দে ইতিহাসে অনার্স নিয়ে বি.এ পরীক্ষায় প্রথম শ্রেণীতে প্রথম ও পশ্চিমবঙ্গে সর্বোচ্চ নম্বর পাওয়ায় ঈশান স্কলার হন। সে বৎসরে তার সহপাঠীরা ছিলেন অমর্ত্য সেন ও সুখময় চক্রবর্তী।[১][৪] উচ্চ শিক্ষার্থে ওই বছরেই অক্সফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের কুইনস কলেজে ভর্তি হন। ব্রিটেনের গৃহযুদ্ধের বিষয় নিয়ে আধুনিক ইতিহাসের স্নাতক হন। এই সময়ে তিনি বিখ্যাত ইতিহাসবিদ ক্রিস্টোফার হিল, কিথ টমাস প্রমুখকে অধ্যাপক শিক্ষক হিসাবে পান। সহপাঠী বন্ধুরা ছিলেন রাফায়েল স্যামুয়েল, পিটার সেডগুইক।ব্রিটেনের ঊনিশ শতকের শেষভাগের প্রেক্ষাপট নিয়ে হেনরি পেলিংয়ের তত্ত্বাবধানে "ইউনিয়ানিজম ইন দি রেলওয়েজ ইন ব্রিটেন ইন দি লেট নাইটিন্থ অ্যান্ড আর্লি টুয়েন্টিয়েথ সেঞ্চুরি' শীর্ষক গবেষণা পত্রের জন্য ডক্টরেট ডিগ্রি লাভ করেন।
শিক্ষক জীবন[সম্পাদনা]
দিল্লি বিশ্ববিদ্যালয়ে রিডার হিসাবে যোগ দেওয়ার আগে ডঃ গুপ্ত ১৯৬০ খ্রিস্টাব্দে অল্প সময়ের জন্য বর্ধমান বিশ্ববিদ্যালয়ের ইতিহাস বিভাগে ছিলেন। ইউরোপীয় ও বৃটিশ ইতিহাসের রিডার হওয়ার আগে তিনি অর্থনৈতিক ইতিহাস পড়াতেন।১৯৬২ খ্রিস্টাব্দে দিল্লি স্কুল অফ ইকনমিক্সে ও ১৯৬৩ খ্রিস্টাব্দে দিল্লি বিশ্ববিদ্যালয়ে অধ্যাপনা শুরু করে আগস্ট ১৯৯৯ খ্রিস্টাব্দে অবসর গ্রহণ করেন। [২]
পারিবারিক জীবন[সম্পাদনা]
ইন্দ্রপ্রস্থ মহিলা কলেজের অধ্যাপিকা নারায়ণী গুপ্তকে বিবাহ করেন। ১৯৮৬ খ্রিস্টাব্দে তিনি জামিয়া মিলিয়া ইসলামিয়া বিশ্ববিদ্যালয়েরও অধ্যাপিকা ছিলেন। তিনি ইন্ডিয়ান ন্যাশনাল ট্রাস্ট ফর আর্ট অ্যান্ড কালচারাল হেরিটেজের পরামর্শদাতা ছিলেন। তার গবেষণার বিষয় ছিল নগর ইতিহাসের উপর, বিশেষত দিল্লির বিষয়ে । তার রচিত অনেক বই আছে। তিনি দিল্লির কনজার্ভেশন সোসাইটির প্রতিষ্ঠাতা সদস্য এবং দিল্লির আরবান আর্ট কমিশনের সদস্য ছিলেন।
তাঁদের দুই সন্তান - এক পুত্র হিমাদ্রি শেখর গুপ্ত ও এক কন্যা নীহারিকা গুপ্ত।
- আই আই টি কানপুর ও জার্মানির ম্যাক্স প্লাঙ্ক ইনস্টিটিউটের প্রাক্তনী পুত্র হিমাদ্রি শেখর গুপ্ত লণ্ডনের কুইনস ম্যারি বিশ্ববিদ্যালয়ের ইনস্টিটিউট অফ বায়োইঞ্জিনিয়ারিং অ্যান্ড স্কুল অফ ইঞ্জিনিয়ারিং অ্যান্ড মেটেরিয়াল সাইন্সের অধ্যাপক। [৫][৬]
- কন্যা নীহারিকা গুপ্ত রোডস স্কলার [৭] দিল্লি বিশ্ববিদ্যালয় ও অক্সফোর্ড বিশ্ববিদ্য়েয়ের বালিয়ল কলেজের প্রাক্তনী সহপেডিয়ার রিসার্চ অধিকর্তা পদে নিযুক্ত আছেন। [৮]
প্রকাশিত গ্রন্থসমূহ[সম্পাদনা]
১৯৭৫ খ্রিস্টাব্দে ম্যাকমিলান কর্তৃক প্রকাশিত তার গ্রন্থ "ইমপিরিয়ালিজম অ্যান্ড বৃটিশ লেবার মুভমেন্ট" (১৯১৪ -১৯৬৪) পার্থসারথি গুপ্তকে বিশেষ পরিচিতি দেয়। [৯]
তার সম্পাদনায় প্রকাশিত হয়েছে জাতীয় আলেখ্যাগারের “টুওয়ার্ডস ফ্রিডম" প্রকল্পের ১৯৪৩ - ৪৪ এর নথিপত্রে সংকলন, তিনটি বিপুলাকার খণ্ডে
অনিরুদ্ধ দেশপাণ্ডে র সাথে সম্পাদিত "পাওয়ার, পলিটিক্স অ্যান্ড দ্য পিপল: স্টাডিজ ইন বৃটিশ ইমপিরিয়ালিজম অ্যান্ড ইন্ডিয়ান ন্যাশনালিজম" [১০]
তার ‘রেডিয়ো অ্যান্ড দি রাজ ১৯২১-৪৭’গ্রন্থটির ১৯৯৫ খ্রিস্টাব্দে প্রকাশিত হয়। ভারতের ইতিহাস নিয়ে একটি প্রবন্ধ সংকলন সম্পাদন করেন উপনিবেশোত্তর ভারতের ইতিহাস গবেষণার সময়।‘বন্দে মাতরম’-এর ইতিহাস নিয়ে প্রবন্ধ লিখেছেন।প্রসঙ্গত তার মৃত্যুর আগের দিন আকাশবাণীর প্রকাশিত কম্প্যাক্ট ডিস্কে তার এই রচনাটি সংকলিত হয়েছে।[২]
সম্মাননা ও পুরস্কার[সম্পাদনা]
- পশ্চিমবঙ্গে সর্বোচ্চ নম্বর প্রাপ্তির জন্য ঈশান স্কলারশিপ
- ইন্ডিয়ান কাউন্সিল অব হিস্টরিক্যাল রিসার্চের সদস্য
- কেমব্রিজ বিশ্ববিদ্যালয়ের কমনওয়েলথ হিস্ট্রির স্মুটস ফেলো
- প্যারিসের মাইসন ডেস সায়েন্সেস এর ডাইরেক্টর অব স্টাডিজ
- রয়েল হিস্টোরিকাল সোসাইটির ফেলো
তথ্যসূত্র[সম্পাদনা]
- ↑ ক খ https://www.theguardian.com/news/1999/sep/13/guardianobituaries3
- ↑ ক খ গ অঞ্জলি বসু সম্পাদিত, সংসদ বাঙালি চরিতাভিধান, দ্বিতীয় খণ্ড, সাহিত্য সংসদ, কলকাতা,জানুয়ারি ২০১৯, পৃষ্ঠা ২১৭, আইএসবিএন ৯৭৮-৮১-৭৯৫৫-২৯২-৬
- ↑ Gupta, Partha Sarathi (২০০২)। Power, Politics and the People: Studies in British Imperialism and Indian Nationalism By Partha Sarathi Gupta (Edited with an introduction by Sabayasachi Bhattacharya)। আইএসবিএন 9788178240190।
- ↑ "Gupta, Partha Sarathi. "Of shared days with Amartya." India International Centre Quarterly 25 (1998): 70-75."। জেস্টোর 23005530।
- ↑ https://www.sems.qmul.ac.uk/news/4743/the-gupta-group-visits-the-max-planck-institute-in-potsdam
- ↑ "সংরক্ষণাগারভুক্ত অনুলিপি"। ৭ অক্টোবর ২০১৯ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ১৭ ফেব্রুয়ারি ২০২১।
- ↑ https://www.rhodeshouse.ox.ac.uk/alumni/rhodes-scholar-database/
- ↑ https://www.sahapedia.org/sahapedia-team
- ↑ https://g.co/kgs/6MK11G
- ↑ https://www.indiatoday.in/magazine/society-the-arts/books/story/19971020-partha-sarathi-gupta-the-historians-research-took-him-back-to-his-roots-830745-1997-10-20
- ১৯৩৪-এ জন্ম
- ১৯৯৯-এ মৃত্যু
- ব্রিটিশ ইতিহাসবিদ
- ২১শ শতাব্দীর ভারতীয় লেখক
- ২০শ শতাব্দীর ভারতীয় লেখক
- দিল্লির ব্যক্তি
- অক্সফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাক্তন শিক্ষার্থী
- ২০শ শতাব্দীর ভারতীয় ইতিহাসবিদ
- হুগলি জেলার ব্যক্তি
- দিল্লি বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক
- ইউরোপের ইতিহাসবিদ
- ২০শ শতাব্দীর ভারতীয় অ-কল্পকাহিনী লেখক
- ভারতের ইতিহাসবিদ
- ২১শ শতাব্দীর ভারতীয় ইতিহাসবিদ
- পশ্চিমবঙ্গের লেখক