ইকুয়েডরে ইসলাম

উইকিপিডিয়া, মুক্ত বিশ্বকোষ থেকে

ইকুয়েডরে ইসলাম একটি সংখ্যালঘু ধর্ম। খ্রিস্টধর্ম প্রধান দেশটিতে প্রায় ১,০০০ এর অধিক মুসলিম বাস করেন।[১][২][৩] ১৯৯১ সালে ইকুয়েডরের রাজধানী কিতোতে খালিদ বিন ওয়ালিদ নামে একটি মসজিদ নির্মিত হয়। ১৯৯৪ সালে প্রথম ইকুয়েডরে ইকুয়েডর ইসলামিক সেন্টার নামে একটি ধর্মীয় সেন্টার প্রতিষ্ঠিত হয়। নওমুসলিম শায়খ ইয়াহিয়া জুয়ান এটি প্রতিষ্ঠা করেন এবং তাঁর প্রচেষ্টায় ১৯৯৪ সালে দেশটির সরকার কর্তৃক স্বীকৃতি লাভ করে।[৪]

ইকুয়েডরে ইসলাম
মোট জনসংখ্যা
১০০০+
উল্লেখযোগ্য জনসংখ্যার অঞ্চল
কিতো, আম্বাতো, গুয়াইয়াকুইল, মানাবি, লস রিওস
ধর্ম
সুন্নি ইসলাম
ভাষা
স্পেনীয় ভাষা, ইংরেজি, আরবি

ইতিহাস[সম্পাদনা]

ইকুয়েডরে ইসলামের আগমন সম্পর্কে বলা হয় যে, ঔপনিবেশিক আমলে আফ্রিকীয় দাসদের মাধ্যমে লাতিন আমেরিকায় ইসলামের আগমন ঘটে। বর্তমান ইকুয়েডর অঞ্চলে ঠিক কখন ইসলামের আগমন হয়েছিল সে বিষয়ে স্পষ্ট ইতিহাস পাওয়া যায় না। তবে প্রথম বিশ্বযুদ্ধের সময় আরব ভূখণ্ড থেকে অগণিত অভিবাসী ইকুয়েডর আগমন করে এবং এর মাধ্যমে দেশটিতে উল্লেখযোগ্য মুসলিম জনসংখ্যা সৃষ্টি হয়। তারা রাজধানী কিতো, আম্বাতো ও গুয়াইয়াকুইল শহরে বসবাস আরম্ভ করে। তবে বর্তমান মানাবি, লস রিওস, এসমেরালাদায়স প্রদেশেও মুসলমানদের দেখা যায়। ২০ শতাব্দীর চল্লিশের দশকে লেভান্তাইন খ্রিষ্টানআরব মুসলমানরা 'লেকলা' নামের একটি ধর্মনিরপেক্ষ সংগঠন গঠন করেছিল।[২]

ইকুয়েডর এসে মুসলমানরা দিনে দিনে দেশটির স্থানীয় জাতিগোষ্ঠীগুলোর সাথে একীভূত হতে থাকে। ১৯৯১ সালে দেশটির রাজধানী কিতোতে প্রথম মসজিদ নির্মাণ করা হয়। এরপর ১৯৯৪ সালে 'ইকুয়েডর ইসলামিক সেন্টার' নামে একটি ধর্মীয় সেন্টার প্রতিষ্ঠা করা হয়। এরপর ২০০৪ সালে গুয়াইয়াকুইল শহরে ভারতীয় বংশোদ্ভূত মাজহার ফারুক ও পাকিস্তানি বংশোদ্ভূত আলী সাইদ কর্তৃক 'সেন্ট্রো ইসলামিকো আল হিজরা' নামে আরেকটি সেন্টার প্রতিষ্ঠিত হয়।[২]

শায়খ ইয়াহিয়া জুয়ান ও ইসলাম[সম্পাদনা]

ইকুয়েডরসহ লাতিন আমেরিকার দেশগুলিতে ইসলাম প্রচার ও প্রসারের ক্ষেত্রে শায়খ ইয়াহিয়ার ব্যাপক রয়েছে। তিনি ইকুয়েডরের রাজধানী কুতোতে জন্ম গ্রহণ করেন। তিনি ১২ বছর বয়সে একটি সামরিক একাডেমিতে ভর্তি হন এবং সামরিক বিজ্ঞানে স্নাতক ডিগ্রী অর্জন করেন। তিনি ইংরেজি, স্পেনীয়আরবি ভাষায় কথা বলতে পারেন। মিশিগান বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়াকালীন এক আরব সহপাঠীর মাধ্যমে প্রথমবারের মতো তিনি ইসলামের সংস্পর্শে আসেন। এরপর তিনি ইসলাম ধর্ম গ্রহণ করেন এবং মদিনা বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি হয়ে স্নাতকোত্তর ডিগ্রি অর্জন করেন। তিনিই প্রথম ইকুয়েডরীয় নাগরিক, যিনি প্রকাশ্যে ইসলাম গ্রহণের ঘোষণা দেন।[৪]

লাতিন আমেরিকায় ইসলামের প্রচার ও প্রসারের লক্ষ্যে তিনি স্পেনীয় ভাষায় অসংখ্য বই, পুস্তিকা ও অডিও লেকচারে কাজ করেছেন। তার অনূদিত কিছু বইয়ের মধ্যে "আন্ডারস্ট্যান্ডিং ইসলাম অ্যান্ড মুসলিম", "মুহাম্মদ ইন দ্য বাইবেল", "মুসলিম ক্রিশ্চান ডায়ালগ" ও হিউম্যানিটি ইন ইসলাম। ১৯৯৪ সালে তিনি প্রথম ইকুয়েডর ইসলামিক সেন্টার প্রতিষ্ঠা করেন। বর্তমান তিনি এটির ইমাম ও পরিচালক। তার ছেলেদের মধ্যে একজন আল আজহার বিশ্ববিদ্যালয়ে এবং একজন মদিনা বিশ্ববিদ্যালয়ে শরিয়া বিষয়ে উচ্চতর লেখাপড়া করছে।[৪]

তথ্যসূত্র[সম্পাদনা]

  1. "South America :: Ecuador — The World Factbook – Central Intelligence Agency"www.cia.gov। ৮ ডিসেম্বর ২০১৫ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ১৪ ডিসেম্বর ২০১৮ 
  2. "Islam in Ecuador [wiki]"www.muslimpopulation.com। সংগ্রহের তারিখ ১৪ ডিসেম্বর ২০১৮ [স্থায়ীভাবে অকার্যকর সংযোগ]
  3. "Islam in Latin America"। সংগ্রহের তারিখ 20/11/2022  এখানে তারিখের মান পরীক্ষা করুন: |সংগ্রহের-তারিখ= (সাহায্য)[স্থায়ীভাবে অকার্যকর সংযোগ]
  4. Group, The LADO (২০০৭-০৭-০৮)। "Interview with Shaykh Yahya Juan Suquillo"The LADO Group (ইংরেজি ভাষায়)। সংগ্রহের তারিখ ২০২২-১১-২০