আলাপ:দ্বিজেন্দ্রনাথ ঠাকুর

পাতাটির বিষয়বস্তু অন্যান্য ভাষায় নেই।
উইকিপিডিয়া, মুক্ত বিশ্বকোষ থেকে

উইকিপিডিয়ার সংগ্রহে দ্বিজেন্দ্রনাথ ঠাকুরের ছবি আছে কি? থাকলে একটি ছবি এই নিবন্ধের সঙ্গে যুক্ত করে দিলে ভাল হয়। ইন্টারনেটে সার্চ করলে দ্বিজবাবুর কয়েকটি ছবি পাওয়া যায়। কিন্তু সেগুলি উইকিপিডিয়ায় আছে কিনা জানা নেই। ইংরেজি উইকিপিডিয়া, যেখান থেকে আমি এই নিবন্ধটি অনুবাদ করেছি, সেখানেও কোনো ছবি পেলাম না। রবির আলো (আলাপ) ১৫:৩৬, ১৩ ফেব্রুয়ারি ২০১১ (ইউটিসি)[উত্তর দিন]

ধর্মভিত্তিক ভাষা?[সম্পাদনা]

অর্ণব দত্ত তার সাম্প্রতিক সম্পাদনা সারাশে লিখেছেন,

এই কথাটির সাথে দ্বিমত পোষণ করছি। বাবা, মা, ভাই, বোন, ছেলে, মেয়ে, - এগুলো ধর্ম-এলাকা নির্বিশেষে নিয়মিতভাবে ব্যবহৃত পারিবারিক সম্পর্কবাচক শব্দ। পক্ষান্তরে, "দাদা", "ঠাকুরদা" অনেকাংশেই হিন্দু ধর্মাবলম্বীদের ব্যবহৃত শব্দ (অনেকাংশে বলছি, কারণ বাংলাদেশের অনেক জায়গাতে ধর্ম নির্বিশেষে দাদা ব্যবহৃত হয়। যেমন, চট্টগ্রাম)।

এখন কথা হলো, দ্বিজেন্দ্রনাথ ঠাকুরের সাথে রবীন্দ্রনাথের সম্পর্ক বোঝাতে দাদা ব্যবহার নিয়ে। আমার মতে এতে বেশ কিছু সমস্যা আছে।

১) দাদা শব্দটি দ্ব্যর্থতার সৃষ্টি করছে। দাদা মানে পিতামহ, আবার অঞ্চলভেদে ভাই [১]। পক্ষান্তরে "ভাই" শব্দটি ধর্মনির্বিশেষে brother বোঝায়। কাজেই দ্বিজেন্দ্রনাথ এখানে রবীন্দ্রনাথের পিতামহ নাকি ভাই, সেটা বোঝা যাচ্ছে না। (হয়তো পশ্চিমবঙ্গবাসীদের কাছে সেটা সুস্পষ্ট, কিন্তু আমার কাছে এই বাক্যটি বিভ্রান্তিকর মনে হচ্ছে)।

২) পক্ষান্তরে "বড়ো ভাই" এই কথাটি কেনো হিন্দু ধর্মাবলম্বীদের ক্ষেত্রে প্রযোজ্য নয় বা ভালো শোনায় না, সেটা বোঝা গেলো না। পশ্চিমবঙ্গের লেখকদের লেখা বহু বই পড়েছি, সেখানে ভ্রাতৃসম্পর্ক বোঝাতে ভাই ব্যবহার হতে যথেষ্টই দেখেছি।

৩) পরিশেষে, রবীন্দ্রনাথ কী নামে তার এই ভাইকে ডাকতেন, সেটা এই বাক্যে বোঝানো হয়ে থাকতে পারে (অর্থাৎ, রবীন্দ্রনাথ তার এই ভাইকে "বড়োদাদা" বলে সম্বোধন করতেন, তা হতে পারে)। তাহলে কিন্তু রবীন্দ্রনাথের সাথে দ্বিজেন্দ্রনাথের সম্পর্ক এই বাক্যে প্রকাশ পাচ্ছে না (যেমন, অনেকে মাতামহীকে বড়ো মা বলে, তাতে মাতামহীর সম্পর্ক বোঝা যায় না)। সেই ক্ষে্ত্রে বাক্যটিকে দুই ভাগে ভাগ করে এক অংশে রবীন্দ্রনাথ কী নামে ডাকতেন, আর অন্য অংশে রবীন্দ্রনাথের সাথে কী সম্পর্ক, তা লেখা যেতে পারে।

পরিশেষে এটাই বলতে চাই, যেখানে ধর্ম ও এলাকা নিরপেক্ষ সম্পর্কবাচক শব্দ আছে, সেখানে বিভ্রান্তি হতে পারে, এমন শব্দ ব্যবহার না করাই ভালো। --রাগিব (আলাপ | অবদান) ২১:৩০, ১৩ ফেব্রুয়ারি ২০১১ (ইউটিসি)[উত্তর দিন]

আমি অপ্রযোজ্য বোঝাতে চাইনি, অপ্রচলিতও বলছি না। হিন্দুদের মধ্যে সাধারণত ছোটোভাইকে "ভাই" আর বড়োভাইকে "দাদা" বলার রেওয়াজ। এই কারণে "বড়োভাই" কথাটা একটু কৃত্রিম শোনায়। এই কৃত্রিমতাটুকু পরিহার করেছি। ভাষার সাম্প্রদায়িকীকরণ আমার উদ্দেশ্য ছিল না। আপনি যখন পশ্চিমবঙ্গের লেখকদের বহু বই পড়েছেন, তখন নিশ্চয়ই জানেন যে, হিন্দুসমাজে জ্যেষ্ঠ ভ্রাতা অর্থে "দাদা" শব্দটা নিছক সম্বোধন-বাচক শব্দ নয়। নিছক সম্বোধন-বাচক শব্দ হল মাতামহ (পিতামহ নয়) অর্থে "দাদা" (দাদামশাই)। আপনি লিখেছেন, "সেই ক্ষেত্রে বাক্যটিকে দুই ভাগে ভাগ করে এক অংশে রবীন্দ্রনাথ কী নামে ডাকতেন, আর অন্য অংশে রবীন্দ্রনাথের সাথে কী সম্পর্ক, তা লেখা যেতে পারে।" বাক্যটি দুভাগ না করা হলেও, প্রথমে সম্বোধনটা রেখে বন্ধনীতে "জ্যেষ্ঠ ভ্রাতা" কথাটা ব্যবহৃত হয়েছে। --অর্ণব দত্ত (আলাপ) ০২:৫১, ১৪ ফেব্রুয়ারি ২০১১ (ইউটিসি)[উত্তর দিন]
এখানে দুইটা জিনিষ গুলিয়ে যাচ্ছে। একটা হলো সম্পর্ক, যার আসলে এলাকাভেদ নাই। আরেকটা হলো সম্বোধন করার শব্দ, যার এলাকাভেদ রয়েছে। হিন্দুরা দাদা বলুক কিংবা মুসলিমরা মিঞাভাই বলে সম্বোধন করুক না কেনো, সম্পর্কসূচক শব্দটি একই। (জ্যেষ্ঠ ভ্রাতা বা চলিত ভাষায় বড়ো ভাই)। হিন্দুদের মধ্যে জ্যেষ্ঠ ভ্রাতাকে দাদা বলা স্বাভাবিক, সেটা মেনে নিচ্ছি। কিন্তু এখানে প্রশ্নটা রবীন্দ্রনাথ কী নামে সম্বোধন করতেন, তা নয়, বরং দ্বিজেন্দ্রনাথের সাথে রবীন্দ্রনাথের সম্পর্কটা কী, সেটা। সেক্ষেত্রে বড়োদাদা লেখাটআ আঞ্চলিকতার কিংবা সম্প্রদায়ভিত্তিক বিশেষণের দোষেই দুষ্ট হয়ে পড়ে। বড়ো ভাই লিখলে বেখাপ্পা লাগলে জ্যেষ্ঠ ভ্রাতাই লিখুন, যদিও সেটা গুরুচণ্ডালি হয়ে যাচ্ছে বলে মনে হয়। আর রবীন্দ্রনাথ দ্বিজেন্দ্রনাথকে বড়োদাদা বলে ডেকে থাকলে সেটা আলাদা করে লেখাই ভালো। (রেফারেন্সও লাগবে)। আমি আপাতত দুই ক্লসে ভাগ করে দিলাম। --রাগিব (আলাপ | অবদান) ০৬:৪৩, ১৪ ফেব্রুয়ারি ২০১১ (ইউটিসি)[উত্তর দিন]
ছোট ভাই রবীন্দ্রনাথ বড়ো ভাইকে কি বলে ডাকতেন তা নিবন্ধের লিড সেকশন বা ভূমিকাতে বেশ অপ্রাসঙ্গিক। লাইনটি প্রারম্ভিক জীবন অনুচ্ছেদে যেখানে দ্বিজেন্দ্রনাথ এবং তার আরেক ভাইয়ের মধ্যে সম্পর্কের কথা বলা হয়েছে, সেখানে রাখা যেতে পারে।--বেলায়েত (আলাপ | অবদান) ০৬:৫৯, ১৪ ফেব্রুয়ারি ২০১১ (ইউটিসি)[উত্তর দিন]

আপনার বক্তব্য বুঝতে পেরেছি। "বড়োভাই" বেখাপ্পা লাগছিল। আমার বক্তব্য ছিল, এর বদলে "জ্যেষ্ঠ ভ্রাতা" বা "দাদা" লিখলে স্বাভাবিক লাগবে। গুরুচণ্ডালি হয়ে যেতে পারে, মনে করে, "বড়োদাদা" শব্দটি ব্যবহারের পক্ষপাতী ছিলাম। কারণ, "দাদা" শব্দটি শুধুমাত্র সম্বোধন-বাচক নয়, এটি সম্পর্ক-বাচক বিশেষ্যও (সম্ভবত আপনি "দাদা" কথাটি কেবল সম্বোধক-বাচক ধরেই আপত্তি জানিয়েছিলেন।)। ইতিমধ্যে আমি রবীন্দ্রনাথের জীবনীগ্রন্থগুলিও দেখে নিলাম। সেখানেও দেখছি, জ্যেষ্ঠ ভ্রাতা অর্থে "দাদা" শব্দটি ব্যবহার করা হয়েছে (সম্বোধন আলোচনায় নয়, সাধারণ আলোচনায়)। যাই হোক, যদি "দাদা" কথাটি একান্ত সাম্প্রদায়িক/আঞ্চলিক মনে হয়, তবে গুরুচণ্ডালি হলেও "জ্যেষ্ঠ ভ্রাতা" রাখার পরামর্শ দেবো। রবীন্দ্রনাথ কী সম্বোধন করতেন, সেটা ভূমিকায় অপ্রাসঙ্গিক। ওটুকু বাদ দিচ্ছি। --অর্ণব দত্ত (আলাপ) ০৭:৪৬, ১৪ ফেব্রুয়ারি ২০১১ (ইউটিসি)[উত্তর দিন]


বর্তমান নিবন্ধে একটি ছোটো শব্দের ব্যবহার নিয়ে বিতর্ক সৃষ্টি হয়েছে। এমতাবস্থায় লেখকের বক্তব্য জানিয়ে রাখা আবশ্যক মনে করছি। উপরিউক্ত আলোচনা থেকে একটি কথা স্পষ্ট "দাদা" শব্দটি সম্প্রদায়ভেদে ভিন্ন অর্থ বহন করে। আবার শুদ্ধ বাংলা শব্দ হিসাবে "বড়োভাই" সার্বিকভাবে ব্যবহৃত নয়। অর্থাৎ, দু'টি শব্দই পরিহারযোগ্য। অর্ণববাবু লিখেছেন, তিনি রবীন্দ্রনাথের জীবনীগ্রন্থগুলি দেখেছেন। সম্ভবত তিনি কলকাতা থেকে প্রকাশিত বইগুলির কথাই বলছেন। তাই যদি হয়, তবে বলতে হবে, শুধুমাত্র এই বইগুলির উল্লেখ যথেষ্ট হবে না। আবার যদি বাংলাদেশ থেকে প্রকাশিত বইগুলি দেখা হয়, তাহলে দেখা যাবে, সেখানে হয়ত "বড়োভাই" লেখা হয়েছে। তাহলে করণীয় কী? একটু ঔদার্য অবলম্বন করে, এমন এক শৈলী গ্রহণ করা যা সার্বিকভাবে গ্রহণযোগ্য। আমার ব্যক্তিগত মত, মান্য চলিত গদ্যে দু-একটি সংস্কৃত শব্দের ব্যবহার গুরুচণ্ডালি দোষের মধ্যে পড়ে না। সংসদ বাঙালি চরিতাভিধানে দ্বিজেন্দ্রনাথ ঠাকুর ভুক্তিতে একটি বাক্য এইরূপ: "রবীন্দ্রনাথ তাঁর এই জ্যেষ্ঠাগ্রজ সম্পর্কে লিখেছেন," ইত্যাদি। যদি, চরিতাভিধানের মতো চলিত গদ্যে লেখা একটি সর্বজনগ্রাহ্য, সর্বজনমান্য ও প্রামাণ্য কোষগ্রন্থে "জ্যেষ্ঠাগ্রজ" শব্দটিকে গুরুচণ্ডালি অভিযোগে অভিযুক্ত না করা হয়, তাহলে আরও সহজ "জ্যেষ্ঠ ভ্রাতা" শব্দের ব্যবহারকেও উক্ত অভিযোগে অভিযুক্ত করা হবে না। অধিকন্তু উইকিপিডিয়া ভাষার আঞ্চলিকতা/সাম্প্রদায়িকতা দোষ থেকে সম্পূর্ণ মুক্ত থাকবে। বোধগম্যতার দিক থেকেও, আমার মনে হয় না, কেউ বিশেষ সমস্যায় পড়বেন। আমরা আশা করতে পারি, একজন ব্যক্তি যিনি জ্ঞানের অন্বেষণে বিশ্বকোষ অবধি পৌঁছেছেন, বাংলা ভাষায় তাঁর সাধারণ জ্ঞান রয়েছে এবং তিনি "জ্যেষ্ঠ ভ্রাতা" শব্দের অর্থের সঙ্গে পরিচিত। যদি তাও না হয়, দেখলাম, একটি "লিঙ্ক"-এর মাধ্যমে "জ্যেষ্ঠ ভ্রাতা" শব্দের অর্থটিকে নিবন্ধের সঙ্গে যুক্ত করে দেওয়া হয়েছে। সুতরাং, এত বিতর্কের কোনো অবকাশই দেখছি না। বরং কেউ যদি নিবন্ধে একটি ছবি যোগ করতে পারেন, সেটা অনেক বেশি কাজের কাজ হবে। সকলকে ধন্যবাদ।রবির আলো (আলাপ) ০৯:৪০, ১৪ ফেব্রুয়ারি ২০১১ (ইউটিসি)[উত্তর দিন]