আজহার শাহ কায়সার

উইকিপিডিয়া, মুক্ত বিশ্বকোষ থেকে

আজহার শাহ কায়সার
ব্যক্তিগত তথ্য
জন্মডিসেম্বর ১৯২০
মৃত্যু২৭ নভেম্বর ১৯৮৫(1985-11-27) (বয়স ৬৪)
সমাধিস্থলমাজার-ই-আনওয়ারি, দেওবন্দ
ধর্মইসলাম
সন্তাননাসিম আক্তার শাহ কায়সার
পিতামাতা
অঞ্চলভারত
আখ্যাসুন্নি
ব্যবহারশাস্ত্রহানাফি
আন্দোলনদেওবন্দি
প্রধান আগ্রহউর্দু সাহিত্য
উল্লেখযোগ্য কাজ
  • সিরাতে আবু বকর সিদ্দিক (রাঃ)
  • আযানে বিলাল
যেখানের শিক্ষার্থী
আত্মীয়আনজার শাহ কাশ্মীরি (ভাই)

আজহার শাহ কায়সার (১৯০৫ — ১৯৮৫) ছিলেন একজন ভারতীয় ইসলামি পণ্ডিত, সাংবাদিক এবং লেখক । তিনি ভারতীয় হাদীস পণ্ডিত আনোয়ার শাহ কাশ্মীরির বড় ছেলে।[১][২][৩]

জন্ম ও শিক্ষা[সম্পাদনা]

আজহার শাহ কায়সার ১৯২০ সালের ডিসেম্বরে দেওবন্দে জন্মগ্রহণ করেন।[৪] তার পিতা আনোয়ার শাহ কাশ্মীরি ছিলেন হাদিসের পণ্ডিত।

কায়সার দারুল উলুম দেওবন্দে ভর্তি হয়েছিলেন। কিন্তু ১৯২৭ সালে তার পিতা দারুল উলুম দেওবন্দ থেকে পদত্যাগ করে ডাভেলে চলে গেল তিনি জামিয়া ইসলামিয়া তালিমুদ্দিন ডাভেলে তার পড়াশুনা শুরু করেন। ১৯৩৩ সালে ১২ বছর বয়সে তার বাবা মারা যান। কায়সার আর পড়াশোনা শেষ করতে পারেন নি।[১]

পেশা[সম্পাদনা]

তার বাবা মারা যাওয়ায় উর্দু লেখক ও সাংবাদিক জাফর আলী খান সহ সারাদেশের মানুষ সমবেদনা জানায়।[১] দেওবন্দের জামে মসজিদে একটি শোক অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়েছিল এবং স্বাগত বক্তব্যটি ১২ বছর বয়সি কায়সার প্রস্তুত করেছিলেন। কায়সার জাফর আলী খানের কাছে এই সম্ভাষণের একটি অনুলিপি উপস্থাপন করেন এবং এটি জামাতেও উচ্চস্বরে পাঠ করা হয়েছিল। জাফর আলী খান এই সম্ভাষণটি এত পছন্দ করে যে তিনি এটি তার সম্পাদিত জমিদারের প্রথম পৃষ্ঠায় প্রকাশ করেন। এভাবেই কায়সারের সাহিত্য জীবন শুরু হয়।

বিজনোর মাসিক পত্রিকা গুনছা এবং জামিয়া মিলিয়া ইসলামিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের মাসিক পত্রিকা “পায়াম-ই-তালিমে ” কায়সারের প্রথম প্রবন্ধ প্রকাশিত হয়। ১৯৩৬ সালে প্রকাশিত সাপ্তাহিক সাদাকাত সাহারানপুর পত্রিকায় কায়সার স্থায়ী লেখক এবং সম্পাদকীয় বোর্ডের সদস্য হন।

কায়সার সুলতানুল হক কাসেমি বিজনোরির সাথে ইস্তেকলাল নামে একটি সাপ্তাহিক পত্রিকা সম্পাদনা করেন। এটির প্রথম প্রকাশ করা কঠিন ছিল যদিও এর বিখ্যাত ঈদ নম্বর সংস্করণটি ১৯৩৭ সালের ডিসেম্বরে প্রকাশিত হয়েছিল। ১৯৩৯ সালে কায়সার ১৯ বছর বয়সে তার ১৬ টি নিবন্ধের সংকলন সাদাকাত পত্রিকায় প্রকাশ করেন।[৫]

১৯৪০ সালের নভেম্বরে কায়সার দেওবন্দ থেকে দ্বি-মাসিক আল আনোয়ার প্রকাশ করেন। জার্নালটি আনোয়ার শাহ কাশ্মীরীর জীবন ও কর্মের উপর ফোকাস করে লেখা। ১৯৪০ এর আগে, ১৯৩৯ সালে কায়সার জমিদারে কাজ করেছিলেন। সাদাকাত সাহারানপুর এবং আল আনোয়ার, দেওবন্দ ছাড়াও কায়সার হাদী, দেওবন্দের সম্পাদকীয় দায়িত্ব গ্রহণ করে। হাদির প্রথম সংস্করণ ১৯৪৬ সালের মে মাসে প্রকাশিত হয়। সৈয়দ আজাহার শাহ কায়সার, মুহাম্মদ সালিম কাসমি এবং সৈয়দ মেহবুব রিজভীর নাম ১৯৫০ সালের এপ্রিলের সংস্করণ পর্যন্ত পাওয়া যায়।

কায়সার ১৯৩৬ থেকে ১৯৪২ সাল পর্যন্ত ৮৭ টি নিবন্ধ লিখেছিলেন। টুটা হুয়া আইনা (ভাংগা আয়না), ইনকেলাব, শরাবী শায়ার এবং আজাদির মতো ছোট গল্প উল্লেখযোগ্য। কায়সার ১৯৫১ থেকে ১৯৮২ সাল পর্যন্ত দারুল উলুম দেওবন্দের মাসিক জার্নাল দারুল উলুম সম্পাদনা করেন। তিনি দ্বি-মাসিক ইজতেমাহ, সাহারানপুর, মাসিক খালিদ, দেওবন্দ (ইজাজ আলী আমরুহীর তত্ত্বাবধানে), মাসিক তাইয়েব , দেওবন্দ (১৯৮৩-১৯৮৫), দ্বি-মাসিক ইসহাত-ই-হক, দেওবন্দ (১৯৭৫-১৯৮৫) সম্পাদনা করেছেন।[৪]

সাহিত্যকর্ম[সম্পাদনা]

কায়সারের বইগুলির মধ্যে রয়েছে:[১][৪]

  • যাদগার-এ-জামানা হ্যায় ইয়ে লগ [৬]
  • সীরাত আবু বকর সিদ্দিক রহ
  • জারা উমর-ই-রাফতা কো আওয়াজ দিনা
  • সেফেনা-এ-ওাতান কে না খুদা
  • আযান-ই-বিলাল

মৃত্যু এবং উত্তরাধিকার[সম্পাদনা]

কায়সার ১৯৮৫ সালের ২ নভেম্বর (১৩ রবিউল-আউয়াল ১৪০৬ হিজরী) দেওবন্দে মারা যান।[৭] তাঁকে দেওবন্দের মাজার-ই-আনোয়ারিতে তার বাবা আনোয়ার শাহ কাশ্মীরীর সমাধির পাশে সমাধিস্থ করা হয়।[৪]

তার ছেলে নাসিম আক্তার শাহ কায়সার উর্দু রচয়িতা এবং দারুল উলুম ওয়াকফ দেওবন্দের অধ্যাপক।[৮][৯] তিনি দো গোহর আবদার বইয়ে তার বাবা ও তার চাচা আনজার শাহ কাশ্মীরীর একটি সংক্ষিপ্ত জীবনী লিখেছেন। তিনি তার পিতা সম্পর্কে সৈয়দ মুহাম্মদ আজহার শাহ কায়সার এক আদিব, এক সাহাফি ("সৈয়দ মুহাম্মদ আজহার শাহ কায়সার: একজন লেখক ও সাংবাদিক")তেও লিখেছেন।[১০]

আরো দেখুন[সম্পাদনা]

তথ্যসূত্র[সম্পাদনা]

  1. Nayab Hasan Qasmi। Darul Uloom Deoband Ka Sahafati ManzarNama। Idara Tehqeeq-e-Islami, Deoband। পৃষ্ঠা 183–189। 
  2. "al-Balagh" (পিডিএফ) (Urdu ভাষায়)। Darul 'Uloom Karachi: 17। সংগ্রহের তারিখ ১১ জুলাই ২০১৯ 
  3. Aaliya Chishti (২০০৭)। Challenges to religions and Islam: a study of Muslim movements, personalities, issues and trends (English ভাষায়)। Sarup & Sons, New Delhi। পৃষ্ঠা 928। আইএসবিএন 978-81-7625-732-9। সংগ্রহের তারিখ ১১ জুলাই ২০১৯ 
  4. Ubaid Anwar Shah Qaiser। "Aasman-e-Adab-o-Sahafat Ka Aftab-e-JahanTaab Syed Azhar Shah Qaiser"। Qirtas-o-Qalam (Urdu ভাষায়) (October, November 2012 সংস্করণ)। পৃষ্ঠা 45–52। 
  5. "Jareeda Sadaqat" (Urdu ভাষায়)। Sadaqat Newspaper, Saharanpur। ২৪ ফেব্রুয়ারি ১৯৩৯: 28। 
  6. Yaadgaar-e-Zamana Hain Ye Log (Ebook)Rekhta.org (Urdu ভাষায়)। সংগ্রহের তারিখ ১৭ জুলাই ২০১৯ 
  7. Adrawi, Asir। "Mawlāna Syed Azhar Shah Qaiser"। Tazkirah Mashāhīr-e-Hind: Karwān-e-Rafta (Urdu ভাষায়) (2nd, April 2016 সংস্করণ)। Darul Moallifeen। পৃষ্ঠা 29location=Deoband। 
  8. "عالم اسلام کو اکابرین کے علوم و معارف سے متعارف کرایا جائے : علماء حجۃ الاسلام اکیڈمی کے زیر اہتمام حکیم الاسلام قاری طیبؒ صاحب اور مولانا نسیم اختر شاہ قیصر کی کتابوں کا اجرا"Millat Times | A Leading Urdu English, Hindi News Portal and YouTube Channel। ২০১৭-০৪-১৫। সংগ্রহের তারিখ ২০২০-০৮-২৩ [স্থায়ীভাবে অকার্যকর সংযোগ]
  9. Nayab Hasan Qasmi। "Mawlāna Nasim Akhtar Shah Qaiser"। Darul Uloom Deoband Ka Sahafati Manzarnama (Urdu ভাষায়) (2013 সংস্করণ)। Idara Tahqeeq-e-Islami। পৃষ্ঠা 284–286। 
  10. Naseem Akhtar Shah Qaiser। Do Gohar Aabdaar (Urdu ভাষায়)। Jamia Imam Muhammad Anwar Shah, Deoband।