অ্যালেক কেনেডি

উইকিপিডিয়া, মুক্ত বিশ্বকোষ থেকে
অ্যালেক কেনেডি
ব্যক্তিগত তথ্য
পূর্ণ নামআলেকজান্ডার স্টুয়ার্ট কেনেডি
জন্ম(১৮৯১-০১-২৪)২৪ জানুয়ারি ১৮৯১
এডিনবরা, মিডলোথিয়ান, স্কটল্যান্ড
মৃত্যু১৫ নভেম্বর ১৯৫৯(1959-11-15) (বয়স ৬৮)
ল্যাংডাউন, হিদ, সাউদাম্পটন, হ্যাম্পশায়ার, ইংল্যান্ড
ব্যাটিংয়ের ধরনডানহাতি
বোলিংয়ের ধরনডানহাতি মিডিয়াম
আন্তর্জাতিক তথ্য
জাতীয় দল
টেস্ট অভিষেক
(ক্যাপ ২০৮)
২৩ ডিসেম্বর ১৯২২ বনাম দক্ষিণ আফ্রিকা
শেষ টেস্ট১৬ ফেব্রুয়ারি ১৯২৩ বনাম দক্ষিণ আফ্রিকা
ঘরোয়া দলের তথ্য
বছরদল
১৯০৭ - ১৯৩৬হ্যাম্পশায়ার
খেলোয়াড়ী জীবনের পরিসংখ্যান
প্রতিযোগিতা টেস্ট এফসি
ম্যাচ সংখ্যা ৬৭৭
রানের সংখ্যা ৯৩ ১৬৫৮৬
ব্যাটিং গড় ১৫.৫০ ১৮.৫৩
১০০/৫০ -/- ১০/৬৪
সর্বোচ্চ রান ৪১* ১৬৩*
বল করেছে ১৬৮৩ ১৫০৮৫১
উইকেট ৩১ ২৮৭৪
বোলিং গড় ১৯.৩২ ২১.২৩
ইনিংসে ৫ উইকেট ২২৫
ম্যাচে ১০ উইকেট ৪৫
সেরা বোলিং ৫/৭৬ ১০/৩৭
ক্যাচ/স্ট্যাম্পিং ৫/- ৫৩১/-
উৎস: ইএসপিএনক্রিকইনফো.কম, ১০ ডিসেম্বর ২০১৮

আলেকজান্ডার স্টুয়ার্ট অ্যালেক কেনেডি (ইংরেজি: Alec Kennedy; জন্ম: ২৪ জানুয়ারি, ১৮৯১ - মৃত্যু: ১৫ নভেম্বর, ১৯৫৯) স্কটল্যান্ডের এডিনবরায় জন্মগ্রহণকারী বিখ্যাত ইংরেজ আন্তর্জাতিক ক্রিকেট তারকা ছিলেন। ইংল্যান্ড ক্রিকেট দলের অন্যতম সদস্য ছিলেন তিনি। ১৯২২ থেকে ১৯২৩ সময়কালে সংক্ষিপ্ত সময়ের জন্যে ইংল্যান্ড দলের পক্ষে আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে অংশগ্রহণ করেছেন।

ঘরোয়া প্রথম-শ্রেণীর ইংরেজ কাউন্টি ক্রিকেটে হ্যাম্পশায়ারের প্রতিনিধিত্ব করেছেন। দলে তিনি মূলতঃ ডানহাতি মিডিয়াম পেস বোলার হিসেবে খেলতেন। এছাড়াও নিচেরসারিতে ব্যাটিং করতেন অ্যালেক্স কেনেডি নামে পরিচিত অ্যালেক কেনেডি

প্রথম-শ্রেণীর ক্রিকেট[সম্পাদনা]

অ্যালেক কেনেডি যখন হ্যাম্পশায়ারের পক্ষে প্রথম-শ্রেণীর ক্রিকেটে খেলতে নামেন তখন তার বয়েস মোটে ষোলো ছিল। শতাব্দীর শুরুতে টম সোর ও হেনরি বল্ডউইনের ন্যায় পেশাদার বোলারের খেলার মান নিম্নমুখী হলে কাউন্টি দলটির শীর্ষ বোলারের ঘাটতি ছিল। ১৯১০ সাল পর্যন্ত ঐ দলে অনিয়মিতভাবে খেলতে থাকেন। তবে, ১৯১২ সালে কাউন্টি ক্রিকেটে তৃতীয় সর্বোচ্চ উইকেট শিকারীতে পরিণত হন। ১৭ গড়ে ১১২ উইকেট পান তিনি। ১৯১৩ সালে আঘাতের কারণে মাঠে অনিয়মিত ছিলেন। কিন্তু, ১৯১৪ সালে ২০ গড়ে ১৬৪ উইকেট দখল করেন। ১৯১৯ সালে ওভালে সারের বিপক্ষে ৭/৪৭ পান। প্রথম বিশ্বযুদ্ধ ও ১৯২৭ সালের মধ্যবর্তী সময়কালে মাত্র তিনটে পরাজয়ের এটি অন্যতম ছিল।

নিচেরসারির ব্যাটসম্যান হিসেবে খেলতে শুরু করলেও অ্যালেক কেনেডি প্রতিরক্ষা ব্যূহ গড়ে তুলে নিজেকে মেলে ধরেন। ১৯২১ সালে প্রায়শঃই ব্যাটিং উদ্বোধনে নামতেন। পাশাপাশি এক মৌসুমে সহস্রাধিক ওভার বোলিং করেছিলেন তিনি। এক সময়ে তিনি সর্বোৎকৃষ্ট ক্রীড়াশৈলী প্রদর্শন করেছেন। ১৯২৩ সালে কেন্ট দলের মারাত্মক বোলিং উপেক্ষা করে ১০১ রান তুলেন। ইনিংসটিতে বারোটি চারের মার ছিল। তবে, খেলোয়াড়ী জীবনের শেষদিকে তার ব্যাটিংয়ের ছন্দ ছিল না ও ধারাবাহিকতাহীন ছিল।

১৯২১ থেকে ১৯২৩ সালের মধ্যে ব্যাটিংয়ের উত্তরণকালে খেলায় তিনি অন্যতম সেরা অল-রাউন্ডার হিসেবে নিজেকে উপস্থাপিত করেছিলেন। প্রথম-শ্রেণীর ক্রিকেটে এক ইনিংসে দশ উইকেট লাভকারী বোলারদের অন্যতম তিনি। এ তালিকায় উইলফ্রেড রোডস, টিচ ফ্রিম্যান, চার্লি পার্কার, জে. টি. হার্ন, টম গডার্ডডব্লিউ. জি. গ্রেসের পর সপ্তম স্থানে রয়েছেন তিনি।

অ্যালেক কেনেডি ১৯০৭ থেকে ১৯৩৬ সময়কাল পর্যন্ত হ্যাম্পশায়ার কাউন্টি ক্রিকেট ক্লাবে খেলেন। ক্লাবের প্রথম খেলোয়াড় হিসেবে ১০,০০০ রানের মাইলফলক স্পর্শসহ ১,০০০ উইকেট পান।

টেস্ট ক্রিকেট[সম্পাদনা]

১৯২১ সালে অন্যান্য ইংরেজ স্পিনারের ন্যায় তাকেও শক্ত, সমান অস্ট্রেলীয় পিচে উইকেট লাভে ব্যর্থ হতে হয়। ইংরেজ বোলারের ঘাটতি থাকা সত্ত্বেও আর তাকে অ্যাশেজ সফরের জন্য মনোনীত করা হয়নি। সমগ্র খেলোয়াড়ী জীবনে পাঁচ টেস্টে অংশগ্রহণের সুযোগ পেয়েছেন তিনি। ২৩ ডিসেম্বর, ১৯২২ তারিখে দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষে টেস্ট ক্রিকেটে অভিষেক ঘটে অ্যালেক কেনেডির।

১৯২২-২৩ মৌসুমে দক্ষিণ আফ্রিকা গমন করেন। সেখানে ম্যাটিং পিচে তিনি তার স্পিনে সবিশেষ দক্ষতা প্রদর্শনে সক্ষমতা দেখান। নিজের একমাত্র টেস্ট সিরিজে একত্রিশ উইকেট দখল করেছিলেন। এরপর থেকেই মরিস টেটরয় কিলনার শীর্ষস্থানীয় অল-রাউন্ডার হিসেবে কেনেডি’র অগ্রযাত্রাকে অতিক্রম করতে থাকেন। কেনেডি’র ব্যাটিংও ক্রমশঃ নিম্নগামী হতে শুরু করে। ১৯২৩ সালের শেষদিক থেকে শুরু করে ১৯২৬ সালের মাঝামাঝি সময় পর্যন্ত কোন অর্ধ-শতকের ইনিংস খেলতে পারেননি তিনি। তাসত্ত্বেও ১৯২৮ ও ১৯৩০ সালে চার অঙ্কের কোঠা স্পর্শ করলেও ১৯২৭ ও ১৯৩৪ সালে তাকে কখনো শীর্ষস্থানীয় অল-রাউন্ডার হিসেবে বিবেচনায় আনা হয়নি।

অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে সুন্দর ক্রীড়াশৈলী প্রদর্শন সত্ত্বেও ১৯২৬ সালে আশানুরূপ বোলিং করতে পারেননি। ঐ মৌসুমে তিনি মাত্র ৮৭ উইকেট পেয়েছিলেন। এরপর ১৯৩২ সালের পূর্ব-পর্যন্ত প্রত্যেক মৌসুমেই শতাধিক উইকেট পেয়েছেন। ফলশ্রুতিতে উইজডেন কর্তৃক অন্যতম বর্ষসেরা ক্রিকেটারের সম্মাননায় ভূষিত হন তিনি।[১]

১৯৩৩ ও ১৯৩৪ সালের শুষ্ক গ্রীষ্মে কেনেডি’র বোলিংয়ের কার্যকারিতা অনেকাংশেই হ্রাস পায়। তাসত্ত্বেও তখনো তিনি হ্যাম্পশায়ারের সংরক্ষিত বোলার হিসেবে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করতেন।

খেলার ধরন[সম্পাদনা]

অ্যালেক কেনেডি ডানহাতি মিডিয়াম পেস বোলার ছিলেন। তিনি তার সময়কালে অপ্রত্যাশিত দীর্ঘ দূরত্ব নিয়ে বোলিং করতেন। কিন্তু, সহজ অথচ ক্রিয়াশীল শারীরিক ভঙ্গীমা তরুণ ক্রিকেটারদের অনুকরণীয় ছিল। তার বোলিং ভঙ্গীমা কিছু ক্রীড়ামোদীর কাছ সন্দেহজনক ছিল। তবে, আর্থার মোল্ডের কাছে তেমনটি মনে হয়নি। পোতানো উইকেটে উভয় দিক দিয়েই বলকে তীক্ষ্ণভাবে স্পিন করাতে পারতেন। তন্মধ্যে, ১৯২৭ সালে পোর্টসমাউথে ওয়ারউইকশায়ারের বিপক্ষে খেলা অনুপযোগী পিচে ৭/৮ লাভ করেছিলেন। প্রতিপক্ষের ভালোমানের পিচে পর্যাপ্ত পেস বোলিং করতে পারেননি তিনি ও বেশ সমস্যায় পড়তেন।

অবসর[সম্পাদনা]

ক্রিকেট খেলা থেকে অবসর গ্রহণের পর ১৯৩৪ সালের শেষদিকে চেল্টেনহাম কলেজে কোচের দায়িত্ব পালন করেন। তবে, বিদ্যালয়ের ছুটির দিনগুলোয় হ্যাম্পশায়ার দলে যোগ দিয়ে কার্যকরী বোলিংয়ে অগ্রসর হতেন। নতুন প্রবর্তিত লেগ বিফোর উইকেট আইনের সহায়তা নিয়ে দূর্বলতম নর্দাম্পটনশায়ার দলের বিপক্ষে ৭/৪৬ পান। এসেক্সের বিপক্ষে পান ৬/৯৪। ১৯৩৬ সালে আরও কয়েকটি খেলায় অংশ নিয়ে স্বার্থকভাবে খেলোয়াড়ী জীবনের সমাপ্তি ঘটান তিনি।

১৫ নভেম্বর, ১৯৫৯ তারিখে ৬৮ বছর বয়সে হ্যাম্পশায়ারেরর ল্যাংডাউন এলাকায় অ্যালেক কেনেডি’র দেহাবসান ঘটে।

তথ্যসূত্র[সম্পাদনা]

  1. "Wisden's Five Cricketers of the Year"ESPNcricinfoESPN। ২৩ মার্চ ২০১৫ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ১৫ এপ্রিল ২০১৫ 

আরও দেখুন[সম্পাদনা]

বহিঃসংযোগ[সম্পাদনা]