হালিশহর বেগমজান উচ্চ বিদ্যালয়
হালিশহর বেগমজান উচ্চ বিদ্যালয় | |
---|---|
ঠিকানা | |
পুরাতন ডাকঘর, দক্ষিণ-মধ্য হালিশহর , , | |
তথ্য | |
ধরন | এমপিওভুক্ত মাধ্যমিক বিদ্যালয় |
প্রতিষ্ঠাকাল | ১৯৪৭ |
প্রতিষ্ঠাতা | মো: আবদুল মাবুদ সওদাগর ,মাওলানা আবু বশর, মাওলানা নুরুল হক, পন্ডিত হাসমত উল্লাহ, মোজাফ্ফর সাহেব (বাচাইয়ার বাপ) ও হাজী দরবেশ আলী |
বিদ্যালয় বোর্ড | মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক শিক্ষা বোর্ড, চট্টগ্রাম |
বিদ্যালয় জেলা | চট্টগ্রাম |
সেশন | জানুয়ারি-ডিসেম্বর |
ইআইআইএন | ১০৪২৪১ |
চেয়ারম্যান | ইব্রাহিম খলিল হিরু |
প্রধান শিক্ষক | মোহাম্মদ নাসির উদ্দিন(বর্তমান) |
অনুষদ | বিজ্ঞান, ব্যবসায়ই শিক্ষা, মানবিক |
শিক্ষকমণ্ডলী | ৩২+জন (সিনিয়র শিক্ষক-৯জন, সহকারী শিক্ষক-২৩জন) |
কর্মচারী | ১৩+জন |
লিঙ্গ | বালক-বালিকা |
বয়সসীমা | ০৯-১৬+ |
শ্রেণী | ৬ষ্ঠ থেকে ১০ম শ্রেণি |
শিক্ষায়তন | ৫+একর |
ক্যাম্পাসের ধরন | অনাবাসিক |
ডাকনাম | বেগমজান স্কুল |
ওয়েবসাইট | প্রাতিষ্ঠানিক ওয়েবসাইট |
হালিশহর বেগমজান উচ্চ বিদ্যালয় বাংলাদেশের চট্টগ্রাম জেলার সিটি কর্পোরেশন এলাকায় অবস্থিত একটি বিদ্যালয়।
ইতিহাস[সম্পাদনা]
১৯৪৭ সালে বিদ্যালয়টি প্রতিষ্ঠিত হয়। চট্টগ্রাম শহরের পুরাতন স্কুলের মধ্যে এই স্কুলটি অন্যতম। প্রায় ১২০০ শিক্ষাথী এই স্কুলটিতে অধ্যয়নের সুযোগ পায়।
বাংলাদেশের প্রধান সমুদ্রবন্দর ও শিল্প এলাকা হিসেবে খ্যাত বৃহত্তর হালিশহর ও বন্দর এলাকায় শিক্ষার জ্যোতি ছড়িয়ে দেওয়ার লক্ষ্যে প্রাচীনতম প্রতিষ্ঠিত শিক্ষা প্রতিষ্ঠান ‘হালিশহর বেগমজান উচ্চ বিদ্যালয়’। সুবিস্তৃত খেলার মাঠ এবং নয়নাভিরাম পরিবেশের জন্য এই স্কুল অতুলনীয়।
এ সুমহান বিদ্যানিকেতনের ইতিহাস বৈচিত্রপূর্ণ ও তথ্যসমৃদ্ধ। হালিশহরের বিশিষ্ট শিক্ষানুরাগী মরহুম আবদুল মাবুদ সওদাগর সাহেবের মায়ের স্মৃতি রক্ষার্থে ও স্থানীয় এলাকাকে শিক্ষার আলোকে আলোকিত করার নিমিত্তে তাঁরই নিজস্ব ৫ (পাঁচ) একর জায়গায়,নিজ অর্থব্যয়ে ১৯৪৭ সালে বেগমজান উচ্চ বিদ্যালয় প্রতিষ্ঠার মাধ্যমে পতেঙ্গা হালিশহরে শিক্ষার দ্বীপ শিখা জ্বালিয়ে দেন। এ মহৎ ব্যক্তি সর্বপ্রথম পুরাতন ঈশান মিস্ত্রির হাটের উত্তর দিকে লুপ্ত প্রায় জুনিয়র মাদ্রাসায় বেগমজান উচ্চ বিদ্যালয়ের গোড়া পত্তন করেন। সেই ঈশান মিস্ত্রির হাট এখন কিছু অংশ খালের ভেতরে বাকীটা বন্দরের জেটি এলাকার মধ্যে বিলীন হয়ে গেছে। বর্তমানে সেখানে সল্টগোলা গণি মালুমের মসজিদ অবস্থিত ঠিক তার সামনে ছিল বিরাট এক পুকুর। সে পুকুরের উত্তর-পশ্চিম কোনায় উত্তর-দক্ষিণ পাশে লম্বমান ছিল বেগমজান উচ্চ বিদ্যালয়। সে পুকুরটি আজ আর নেই, সে স্কুলের চিহ্নও নেই, আছে শুধু জেটির বড় বড় গুদাম শেড। ঐ সময় হালিশহর পতেঙ্গা এলাকা শিক্ষার আলো থেকে অনেক দূরে ছিল।
এমন দুঃসময়ে মরহুম মাওলানা আবু বশর ও মাওলানা নুরুল হক (হক সাহেব) ও পন্ডিত হাসমত উল্লাহকে নিয়ে হাইস্কুল প্রতিষ্ঠায় এগিয়ে আসেন। তাঁদের এ কাজে প্রাণপনে সহায়তা করেন মকবুল সওদাগরের বাড়ীর মোজাফ্ফর সাহেব (বাচাইয়ার বাপ) ও হাজী দরবেশ আলীসহ প্রমুখ ব্যক্তিগণ। মাওলানা নুরুল হক ও পন্ডিত হাসমত উল্লাহ প্রাণপনে স্কুলকে গড়তে মনোযোগ দিলেন। এ দুই মহৎ ব্যক্তি দরিদ্র শিক্ষক হয়েও দিনে দিনে হাইস্কুলে রূপান্তরিত করার জন্য আপ্রাণ চেষ্টা করেন। ধীরে ধীরে স্কুলে ষষ্ট থেকে দশম শ্রেণী পর্যন্ত শিক্ষা কার্যক্রম চালু করা হলো। তারপর শুরু হলো সরকারী মঞ্জুরীর জন্য তদবীর। একের পর এক শিক্ষা বিভাগের কর্মকর্তা আসেন। মাওলানা আবুল বশর, হক সাহেব, পন্ডিত হাসমত উল্লাহ ও হাছান মাষ্টার অনেক চেষ্টা করে সরকারী মঞ্জুরী আদায় করেন। পন্ডিত হাসমত উল্লাহ ও হাছান মাষ্টারের অনুপ্রেরণায় স্কুলে ফুটবল, ভলিবল ও নাটকের অনুশীলন শুরু হলো।
স্কুল থেকে পরীক্ষার্থী সর্বপ্রথম প্রবেশিকা পরীক্ষা দেন ১৯৫০ সনে। তখন স্থানীয় কোন পরীক্ষার্থী ছিল না। প্রথম বছর মাত্র একজন ছাত্র প্রবেশিকা পরীক্ষায় পাশ করেন। তাঁর নাম আসাদ আলী। দ্বিতীয় বছর বেশ কয়েকজন ছাত্র সুনামের সাথে পাশ করেন। তন্মধ্যে বিশিষ্ট সাংবাদিক মরহুম শরীফ রাজা অন্যতম। পরে উক্ত স্কুলের প্রধান শিক্ষকের পদ অলংকৃত করেন প্রখ্যাত সাংবাদিক জয়নুল আবেদীন। এ সময় স্কুলটি ঈশান মিস্ত্রির হাট থেকে বর্তমান স্থানে স্থান্তরিত করা হয়। প্রথমে বর্তমান প্রাইমারী স্কুলের সামনে টিনশেডে জীর্ণশীর্ণ গৃহে স্কুল চলতো। পরে বর্তমানে অবস্থিত স্থানে কাঁচা ইটের পূর্ব পশ্চিমে লম্বা বিরাট ক্লাসরুম করা হয়। ১৯৬০ সালে ভয়াবহ তুফান ও জ্বলোচ্ছাসে স্কুলের ক্লাসরুমগুলো সম্পূর্ণ বিধ্বস্ত হয়ে পড়ে।
স্কুলের কয়েজন প্রধান শিক্ষকের নাম হল মরহুম ইব্রাহীম মিয়া, মরহুম সৈয়দ উল হক, মরহুম জয়নাল আবেদীন (এম.এ.বি.টি), আবদুল মালেক (বি.এ. বি.এড), ওবায়দুল হক, মরহুম সৈয়দ ফজলুল উল্লাহ ও জনাব নুরুল ইসলাম খান। বর্তমানে বিদ্যালয়ে ষষ্ঠ থেকে দশম শ্রেনীতে প্রায় ১৩ শতাধিক শিক্ষার্থী অধ্যয়ন করছে। তম্মধ্যে প্রায় ৬০০ জন ছাত্রী। বিদ্যালয়ের মাধ্যমিক পরীক্ষার ফলাফল সন্তোষজনক। ১৯৭৯ সাল থেকে ১৯৮৭ সাল পর্যন্ত মাধ্যমিক পরীক্ষা কেন্দ্র সফল ভাবে এ বিদ্যালয়ে চালু ছিল। বর্তমানে প্রাইমারী পিএসসি ও জেএসসি পরীক্ষা কেন্দ্র চালু রয়েছে। বন্দর থানার সরকারী অনুষ্ঠানাদী যেমন মৌসুমী ক্রীড়া প্রতিযোগিতা, মৌসুমী শিশু পুরস্কার প্রতিযোগিতা, আন্তঃস্কুল ক্রীড়া ও সাঁতার প্রতিযোগিতা ইত্যাদি এ বিদ্যালয়ে অনুষ্ঠিত হয়ে থাকে। বিদ্যালয়টি ঘনবসতিপূর্ণ এবং বন্দর থানার কেন্দ্রস্থলে অবস্থিত বলে বেশ মর্যাদা পেয়েছে। ১৯৪৯ সাল থেকে অদ্যাবধি নিরবচ্ছিন্ন ভাবে বিদ্যালয়টির স্বীকৃতি নবায়ন আছে। উল্লেখ্য যে, দেশ স্বাধীন হবার পর এ বিদ্যালয়টিকে বন্দর থানা হেড কোয়াটার স্কুল হিসেবে স্বীকৃতি দিয়ে বিদ্যালয় প্রধানকে বন্দর থানা উন্নয়ন কমিটির সদস্য মনোনীত করা হয়েছিল। বিদ্যালয়ে বয়স্কাউট, গার্লস গাইড ও উন্মুক্ত বিশ্ববিদ্যালয়ের মাধ্যমিক শিক্ষা কার্যক্রম চালু রয়েছে। এছাড়া স্কুল শিক্ষার্থীগণ সরকারী বিভিন্ন অনুষ্ঠানে সফল ভাবে অংশগ্রহণ করে আসছে। স্কুল পরিচালনা কমিটির নেতৃবৃন্দ, প্রধান শিক্ষক, সুযোগ্য শিক্ষক-শিক্ষিকামন্ডলী ও কর্মচারীবৃন্দ বিদ্যালয়ের মর্যাদা সংরক্ষন ও গুণগত মান বৃদ্ধির লক্ষ্যে নিরলসভাবে কাজ করে যাচ্ছেন। বর্তমানে বিদ্যালয়ের পরিবেশ ও শিক্ষার মান প্রশংসনীয়। সর্বদিক দিয়ে বিবেচনায় আনলে বন্দর থানার উচ্চ বিদ্যালয়গুলোর মধ্যে হালিশহর বেগমজান উচ্চ বিদ্যালয়টি শ্রেষ্ঠত্বের দাবী রাখে।
বর্ণনা[সম্পাদনা]
হালিশহর বেগমজান উচ্চ বিদ্যালয় চট্টগ্রাম জেলার ৩৮ নং ওয়ার্ড, বন্দর থানার পুরাতন ডাকঘর এলাকায় অবস্থিত।[১]
কৃতি শিক্ষার্থী[সম্পাদনা]
তথ্যসূত্র[সম্পাদনা]
- ↑ "স্কুল লিস্ট"। মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক শিক্ষা বোর্ড। ৫ নভেম্বর ২০১৪ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ৭ জানুয়ারি ২০১৫।