বীরেন্দ্রনাথ শাসমল

উইকিপিডিয়া, মুক্ত বিশ্বকোষ থেকে
বীরেন্দ্রনাথ শাসমল
কাঁথি চন্ডিভেটি গ্ৰামে বীরেন্দ্রনাথ শাসমলের আবক্ষ মূর্তি
জন্ম২৬ অক্টোবর ১৮৮১
মৃত্যু২৪ নভেম্বর ১৯৩৪
জাতীয়তাভারতীয়
অন্যান্য নামদেশপ্রাণ
পরিচিতির কারণরাজনৈতিক নেতা

বীরেন্দ্রনাথ শাসমল (২৬ অক্টোবর ১৮৮১ ― ২৪ নভেম্বর ১৯৩৪) জাতীয়তাবাদী আইনজীবী ও রাজনৈতিক নেতা।

জন্ম,শৈশব ও শিক্ষা[সম্পাদনা]

তার জন্ম কাঁথি মহকুমার চাঁদিভেটিতে। বীরেন্দ্রনাথ শাসমল ১৯০০ সালে এনট্রান্স পাস করে রিপন কলেজে ভর্তি হন (অধুনা সুরেন্দ্রনাথ আইন কলেজ)। পাশ করে উচ্চতর আইন শিক্ষার জন্যে ইংল্যান্ডে যান। মিডল টেম্পল থেকে ১৯০৪ সালে ব্যারিস্টারি পাশ করে কলকাতা হাইকোর্টে যোগ দেন।

জাতীয়তাবাদী আইনজীবী[সম্পাদনা]

মাঝখানে কিছুদিন মেদিনীপুর জেলা কোর্টে আইন ব্যবসা করলেও ১৯১৩ সালে আবার কলকাতা হাইকোর্টে আসেন ও আইনজ্ঞ হিসেবে খ্যাতি লাভ করেন। সশস্ত্র বিপ্লববাদীদের প্রতি সহানুভূতি পোষন করতেন। চট্টগ্রাম অস্ত্রাগার দখলর মামলায় বিপ্লবীদের হয়ে বিনা পারিশ্রমিকে একাধিক মামলা লড়েছেন। ১৯৩২ সালে ডগলাস হত্যা মামলাতেও তিনি আসামি পক্ষ সমর্থন করেন।

রাজনীতি[সম্পাদনা]

সম্রাট পঞ্চম জর্জের ভারত আগমনের বিরুদ্ধে ধর্মঘটে যোগ দিয়ে কারাবাস হয়। প্রেসিডেন্সি জেলে থাকাকালীন আত্মজীবনী লেখেন 'স্রোতের তৃণ'। বীরেন্দ্রনাথ শাসমল রাজনীতিকে সমাজকল্যাণের সমার্থক মনে করতেন[১]। বিদেশী দ্রব্য বর্জনের আহবানে লাভজনক আইন ব্যবসা ছেড়ে আন্দোলনে যোগ দিয়েছিলেন[২]। জেল হতে মুক্তিলাভের পর দেশবন্ধু চিত্তরঞ্জনের স্বরাজ্য দলে যোগ। মেদিনীপুর ইউনিয়ন বোর্ডের কর-বন্ধ আন্দোলনে তিনি নেতৃত্ব দেন। মেদিনীপুর জেলা বোর্ডের চেয়ারম্যান ও বঙ্গীয় ব্যবস্থাপক সভার সভ্য হয়েছিলেন। ১৯২৫ এবং ১৯২৬ প্রদেশ কংগ্রেসের সভাপতি নির্বাচিত। কংগ্রেস বিরোধী প্রার্থী রূপে কলকাতা কর্পোরেশনের ভোটে দাঁড়ান ও কাউন্সিলর নির্বাচিত হন ১৯৩৩ সালে। পণ্ডিত মদনমোহন মালব্যের অনুরোধে ভারতীয় আইনসভা সদস্য নির্বাচনে অংশগ্রহণ করেন ও জয়লাভ করেন ১৯৩৪ সালে।

লবণ সত্যাগ্রহে[সম্পাদনা]

বীরেন্দ্রনাথ ১৯৩০ সালে লবণ সত্যাগ্রহ আন্দোলনেও প্রচুর অনুগামী নিয়ে যোগ দিয়েছিলেন। নরঘাট ও পিছাবনী এলাকায় শান্তিপূর্ন পথে লবণ আইন অমান্যে বিরাট জনসমাগম হয়।

অবমাননা[সম্পাদনা]

1924 সালে, যখন বীরেন্দ্রনাথ শাসমল কলকাতা কর্পোরেশনের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তার পদ দাবি করেন তখন একটি অপ্রীতিকর পরিস্থিতি দেখা দেয়। একটি সংবাদপত্র রিপোর্ট করেছিল যে উড়ে বংশোদ্ভূত হওয়ার কারণে তাকে অবমাননাকর স্লোগান দিয়ে ভর্ৎসনা করা হয়েছিল এবং এই পদের জন্য তার দাবি বাতিল করা হয়েছিল।[৩]

মৃত্যু[সম্পাদনা]

২৪ নভেম্বর, ১৯৩৪ সালে বীরেন্দ্রনাথ শাসমলের মৃত্যু হয়। দেশের রাজনীতিতে অবদান ও সংস্কারমূলক কাজের জন্যে তাকে দেশপ্রান উপাধি দ্বারা সম্মানিত করা হয়।[৪]

তথ্যসূত্র[সম্পাদনা]

  1. রঞ্জিত রায়। "শাসমল, বীরেন্দ্রনাথ"বাংলাপিডিয়া। বাংলাদেশ জাতীয় জ্ঞানকোষ। সংগ্রহের তারিখ ২৩.১২.১৬  এখানে তারিখের মান পরীক্ষা করুন: |সংগ্রহের-তারিখ= (সাহায্য)
  2. সুব্রত গুহ (২৪ আগস্ট, ২০১৫)। "প্রথম জাতীয় সরকার"। আনন্দবাজার পত্রিকা। সংগ্রহের তারিখ ১৯.০১.১৭  এখানে তারিখের মান পরীক্ষা করুন: |তারিখ=, |সংগ্রহের-তারিখ= (সাহায্য)
  3. Mohanty, Nivedita (২০০৫)। Oriya Nationalism: Quest for a United Orissa, 1866-1956 (ইংরেজি ভাষায়)। Prafulla। পৃষ্ঠা 263। আইএসবিএন 978-81-901589-6-1 
  4. প্রথম খন্ড, সুবোধচন্দ্র সেনগুপ্ত ও অঞ্জলি বসু (২০০২)। সংসদ বাঙালি চরিতাভিধান। কলকাতা: সাহিত্য সংসদ। পৃষ্ঠা ৩৬২। আইএসবিএন 81-85626-65-0