ত্রিমাত্রিক ক্ষেত্র
ত্রিমাত্রিক ক্ষেত্র (ইংরজি: Three-dimensional space) হল ব্রহ্মাণ্ডের একটি তিন মাত্রিক (সময় মাত্রাটি বাদ দিয়ে) বর্ণনা প্রণালী। এই তিনটি মাত্রাকে সাধারণত দৈর্ঘ্য, প্রস্থ, উচ্চতা(বা গভীরতা) বলা হয়, এই তিনটি মাত্রা কখনোই একই সমতলে (জ্যামিতিক) থাকতে পারে না।
পদার্থ বিজ্ঞান এবং গণিতএ "n"টা স্বাভাবিক সংখ্যার একটি ইউক্লীডীয় ভেক্টরকে একটি "n" মাত্রার ক্ষেত্রের কোনো একটি স্থান বোঝায়। যদি "n"=৩ হয়, তবে সকল স্থানের সংহতিকে "ত্রিমাত্রিক ইউক্লীডীয় ক্ষেত্র" বলা হয়। সাধারণভাবে কে, এভাবে চিহ্নিত করা হয়, অবশ্য এই ক্ষেত্রটি বহু ত্রিমাত্রিক ক্ষেত্রের একটি উদাহরণ।
ব্যাখ্যা
[সম্পাদনা]গণিতএ, বিশ্লেষণাত্মক জ্যামিতি বা অ্যানালিটিক্যাল জ্যামিতিতে (কার্টেসিয়ান জ্যামিতিও বলা হয়) ত্রিমাত্রিক ক্ষেত্র দ্বারা তিনটি স্থানাংক প্রকাশ করা হয়। এই প্রণালীতে তিনটি অক্ষ নির্ধারণ করা হয়, এই তিনটি অক্ষের প্রত্যেকটি অন্য দুটির ওপর লম্ব, এবং তিনটির পরষ্পরকে ছেদ করা স্থানে এই প্রণালীর কেন্দ্র অবস্থিত। অক্ষ তিনটি সাধারণত "x","y","z" দ্বারা বোঝানো হয়। এই তিনটি অক্ষ সাপেক্ষে কোনো বিন্দুর অবস্থান তিনটি স্বাভাবিক সংখ্যায় প্রকাশ করা হয়। প্রতিটি সংখ্যাই কেন্দ্রের উপর নির্দিষ্ট অক্ষের দিকে বিন্দুটির দূরত্ব বোঝায়, সেই দূরত্ব অন্য দুটি অক্ষের গঠন করা তলের উপর বিন্দুটির দূরত্বের সমান।
ত্রিমাত্রিক ক্ষেত্রে একটি বিন্দুর বর্ণনা করার জন্য ব্যবহার করা অন্য অন্য প্রণালীগুলি হল চোঙাকৃতির স্থানাংক এবং গোলকীয় স্থানাংক, অবশ্য এভাবে অসীম সংখ্যক প্রণালী পাওয়া যায়।
রৈখিক বীজগণিতের ত্রিমাত্রিক ক্ষেত্র এভাবে বোঝাতে অন্য একটি গাণিতীক উপায় আছে, যেখানে মাত্রার একটি স্বনির্ভরশীলতার ধারণা নেওয়া প্রয়োজনীয়। কোনো স্থানের তিনটি মাত্রা থাকে কখনো ঘনক আকৃতির বাক্স এটির দৈর্ঘ এর প্রস্থ বা উচ্চতার ওপর নির্ভরশীল নয় এবং এটি একটি স্বাধীন মাত্রা। রৈখিক বীজগণিতের ভাষায় কোনো এক স্থানে ত্রিমাত্রীক যেহেতু কোনো স্থানে(স্পেচ)র একটা বিন্দুকে আমরা তিনটি স্বাধীন স্থানাংক ভেক্টরএর রৈখিক মিলন বলে দেখতে পাই। এই দৃষ্টিকে আমরা "স্থান-কাল"এর চতুর্মাত্রীয় বুলিব পারি, যেহেতু কোনো সময় অন্য তিনটি মাত্রার ওপর অনির্ভরশীল স্বাধীন মাত্রা।
পদার্থ বিজ্ঞানে ত্রিমাত্রিক ক্ষেত্রে চতুর্মাত্রীক ক্ষেত্রটির ওপর সম্পর্কের ক্ষেত্র (আসলে চতুর্মাত্রীক় ক্ষেত্রের এক উপ সংহতি) বলে ধরা হয়। চতুর্মাত্রীক ক্ষেত্রটিকে মিনকোয়স্কি ক্ষেত্র বলা হয় (বিশেষ আপেক্ষিকতাবাদ স্থলে)।
ত্রিমাত্রিক ক্ষেত্রের অন্য কিছু ধর্ম আছে যা একে অন্য মাত্রার ক্ষেত্রের থেকে পৃথক বলে প্রমাণ করে, উদাহরণ স্বরূপ, একটি সুতোকে বাঁধতে আমাদের কমপক্ষে তিনটি মাত্রা প্রয়োজন,[১] পদার্থ বিজ্ঞানের বহু সূত্র যেমন প্রতিলোম বর্গের সূত্র (Inverse Square Law)ইত্যাদি তিনটি মাত্রার ওপর নির্ভরর্শীল।[২]
জ্যামিতি
[সম্পাদনা]বহুফলক
[সম্পাদনা]ত্রিমাত্রাতে আমরা নটা সাধারণ বহুভুজ পেতে পারি, এতে পাচঁটি উত্তল ও বাকি চারটি উত্তল নয়।
অধিগোলক
[সম্পাদনা]ত্রিমাত্রিক ক্ষেত্রের অধিগোলক ("২-গোলক"ও বলা হয়, কারণ এর উপরিভাগ দ্বি-মাত্রিক) হল তিনটি ক্ষেত্রে(৩-স্পেসে) মূল বিন্দু Pএর থেকে স্থির দূরত্ব "r" এ থাকা সব বিন্দুর সংহতি। এর পৃষ্ঠ ঘনফল হল:;
আরেকটি অধিগোলক হল, "৩-গোলক" ই ত্রিমাত্রিক: ইউক্লীডীয় স্পেস এর কেন্দ্রের থেকে সমদূরবর্তী বিন্দুর একক দূরত্বে থাকে। যদি কোনো স্থানাংক সূচিত করে, তবে ৩-গোলকের একটি বিন্দু বোঝায়।