ওলি
[১]‘ওলী’ শব্দটি আরবী: (الـوِلايَـة) বিলায়াত/ওয়ালায়াত শব্দ থেকে গৃহীত। আমরা দেখেছি যে, শব্দটির অর্থ নৈকট্য, বন্ধুত্ব বা অভিভাবকত্ব। বিলায়াত অর্জনকারীকে ‘ওলী’/‘ওয়ালী’ (الولي) বলা হয়, অর্থাৎ নিকটবর্তী, বন্ধু, সাহায্যকারী বা অভিভাবক। ইসলামী পরিভাষায় ‘বিলায়াত’ ‘ওলী’ ও ‘মাওলা’ শব্দের বিভিন্ন প্রকারের ব্যবহার রয়েছে। উত্তরাধিকার আইনের পরিভাষায় ও রাজনৈতিক পরিভাষায় এ সকল শব্দ বিশেষ অর্থে ব্যবহৃত। তবে বেলায়াত বা ওলী শব্দদ্বয় সর্বাধিক ব্যবহৃত (ولاية الله) ‘আল্লাহর বন্ধুত্ব’ ও (ولي الله) ‘আল্লাহর বন্ধু’ অর্থে। আল্লাহর বন্ধুদের পরিচয় দিয়ে মহান আল্লাহ বলেন:
জেনে রেখ! আল্লাহর ওলিদের কোন ভয় নেই আর তারা দুঃখিতও হবে না।
[২]এছাড়াও মুসলিম সাধুপুরুষদের ক্ষেত্রেও ওলি শব্দটি ব্যবহৃত হয়। তবে এর সাথে প্রশাসনিক ওলির সম্পর্ক নেই যা শাসন ক্ষেত্রে ব্যবহৃত হয়।[৩] কিছু মুসলিম দেশে এখনও এর ব্যবহার রয়েছে, যেমন সোয়াতের ওয়ালি।
ওলী কারা
[সম্পাদনা]ঈমান অর্থ তাওহীদ ও রিসালাতের প্রতি বিশুদ্ধ, শিরক ও কুফর মুক্ত বিশ্বাস। “তাকওয়া” শব্দের অর্থ আত্মরক্ষা করা। যে কর্ম বা চিন্তা করলে মহান আল্লাহ অসন্তুষ্ট হন সেই কর্ম বা চিন্তা বর্জনের নাম তাকওয়া। মূলত সকল হারাম, নিষিদ্ধ ও পাপ বর্জনকে তাকওয়া বলা হয়।
এখানে আমরা দেখছি যে, দুটি গুণের মধ্যে ওলীর পরিচয় সীমাবদ্ধ। ঈমান ও তাকওয়া। এই দু’টি গুণ যার মধ্যে যত বেশি ও যত পরিপূর্ণ হবে তিনি বেলায়াতের পথে তত বেশি অগ্রসর ও আল্লাহর তত বেশি ওলী বা প্রিয় বলে বিবেচিত হবেন।
এক্ষেত্রে মরা বুঝতে পারি যে, প্রত্যেক মুসলিমই আল্লাহর ওলী। ইমান ও তাকওয়ার গুণ যার মধ্যে যত বেশি থাকবে তিনি তত বেশি ওলী। প্রসিদ্ধ হানাফী ফকীহ ইমাম আবু জা’ফর তাহাবী (৩২১হি) ইমাম আবু হানীফা, মুহাম্মাদ, আবু ইউসূফ (রহঃ) ও আহলুস সুন্নাত ওয়াল জামা‘আতের আকীদা বা বিশ্বাস বর্ণনা করে বলেনঃ[৪]
المؤمنون كلهم أولياء الرحمن وأكرمهم عند الله أطوعهم وأتبعهم للقران
— “সকল মুমিন করুণাময় আল্লাহর ওলী। তাঁদের মধ্য থেকে যে যত বেশি আল্লাহর অনুগত ও কুরআনের অনুসরণকারী সে ততবেশি আল্লাহর নিকট সম্মানিত (ততবেশি বেলায়াতের অধিকারী)।
তথ্যসূত্র
[সম্পাদনা]- ↑ ইমাম তাহাবী, আল আকীদাহ (শারহ সহ), পৃঃ ৩৫৭–৩৬২।
- ↑ "(10:62) Yunus | (১০:৬২) ইউনুস এর অনুবাদ ও তাফসীর"। www.hadithbd.com। সংগ্রহের তারিখ ২০২৪-১০-২১।
- ↑ Hans Wehr, p. 1290
- ↑ ইমাম তাহাবী, আল আকীদাহ (শারহ সহ), পৃঃ ৩৫৭–৩৬২।
== আরও দেখুন= *
বেলায়েত