আমর ইবনে হিশাম
ʿআমর ইবনে হিশাম | |
---|---|
عمرو إبن هشام | |
জন্ম | ৫৫৬ |
মৃত্যু | ১৩ মার্চ ৬২৪ |
মৃত্যুর কারণ | বদর যুদ্ধে শিরশ্ছেদ |
পরিচিতির কারণ | ইসলামের নবী মুহাম্মাদের বিরোধিতা, কুরাইশদের নেতা |
দাম্পত্য সঙ্গী | মুজালিদা বিনতে আমর আরওয়া বিনতে আবি আল-আস |
সন্তান | ইকরামাহ জাহারা তামিমি শাখরা আসমা জামিলা উম্মে হাকিম উম্মে সাঈদ জুয়াইরিয়া হুনফা উম্মে হাবিব |
ʿআমর ইবনে হিশাম (আরবি: عمرو إبن هشام, প্রতিবর্ণীকৃত: ʿAmr ibn Hishām; ৫৫৬ – ১৩ মার্চ ৬২৪), ধ্রুপদী আরবিতে ʿউমর ইবনে হিশাম, এছাড়াও উপাধিগত দিক থেকে আবু আল-হাকাম (আরবি: أبو الحكم) অথবা আবু জাহল (আরবি: أبو جهل) হিসাবেও ডাকা হয়, ছিলেন মক্কার একজন বহুঈশ্বরবাদী পৌত্তলিক বা মূর্তিপূজারী কুরাইশ নেতা, ইসলামের নবী মুহাম্মাদ সাল্লালাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম ও মক্কার প্রাথমিক মুসলমানদের ব্যপক বিরোধিতার জন্য তিনি পরিচিত। নবী মুহাম্মদ নবুয়াত ও ইসলাম প্রকাশিত হওয়ার পর থেকেই তিনি ইসলামের ঘোর বিরোধিতা ও ইসলামী অনুসারীদের অকথ্য নির্যাতন শুরু করেন।
তিনি উমর ইবনে আবু রাবিয়াহর ভাই [১] এবং উমর ইবনুল খাত্তাব এর মামা। তিনি মুহাম্মাদ এর অন্যতম ঘোরবিরোধী এবং ইসলাম ও মক্কার প্রাথমিক মুসলমান বিরোধীদের প্রথম সারির পতাকাবাহী। ইসলাম তাকে এতো দূর্ভাব ও শত্রু হিসাবে দেখে যে মুহাম্মাদ তাকে "এই উম্মতের ফেরাউন" উপাধি দিয়েছিলেন,। মুহাম্মাদ বলেন, “যে আবু জাহলকে 'আবু হাকাম' বলে ডাকে সে মারাত্মক ভুল করেছে। এজন্য তার উচিত আল্লাহর কাছে ক্ষমা প্রার্থনা করা।”[২]
সাধারণ ভ্রান্ত ধারণার বিপরীতে ইবনে হিশাম মুহাম্মাদ এর চাচা ছিলেন না (যেমন আবু লাহাব ছিলেন) বা অন্যকোনো রক্তের আত্মীয়। মুহাম্মাদ (সঃ) কুরাইশ বংশের বনু হাশিম গোত্রের এবং ইবনে হিশাম কুরাইশের বানু মাখজম গোত্রের। আমর ইবনে হিশাম আসাদ আল-আহলাফ নামেও পরিচিত ছিলেন, কারণ তিনি বিরোধী দলগুলোর সিংহ ছিলেন, যারা ইসলাম ও মুহাম্মাদের বিরুদ্ধে যুদ্ধ করার শপথ করেছিলেন।[৩]
আবু জাহল মুয়াউয়াজ ইবনে আফ্রি এবং মুয়াদ ইবনে আমর ইবনে আল জামুহ কর্তৃক গুরুতরভাবে আহত হন এবং অবশেষে ৬২৪ সালের ১৩ ই মার্চ বদরে মুসলমানদের বিরুদ্ধে যুদ্ধাবস্থায় আবদুল্লাহ ইবনে মাসউদ কর্তৃক নিহত হন।
নাম ও উপাধি সমূহ
[সম্পাদনা]তার উপাধিটি ছিল "আবু আল-হাকাম" (أبو الحكم; আক্ষরিক অর্থে "জ্ঞানী বিচারের জনক") কারণ তিনি গভীর জ্ঞানের মানুষ হিসাবে বিবেচিত ছিলেন, কুরাইশের প্রবীণ নেতাদের মধ্যে দক্ষতা ও উপলব্ধির জন্য তারা তার মতামতকে বিশ্বাস করেতেন এবং তাদের সভার একজন অভিজাত সদস্য হিসাবে তারা তার উপর নির্ভর করতেন। এমনকি ত্রিশ বছর বয়সেই তিনি দার-আন-নাদ্বায় অনুষ্ঠিত একটি বিশেষ সম্মেলনে যোগ দিয়েছিলেন, যে বাড়ি হাকিম ইবনে হিজামের মালিকানাধীন, যদিও এই গোপন সম্মেলনে প্রবেশের বয়স ছিল কমপক্ষে চল্লিশ বছর।[তথ্যসূত্র প্রয়োজন]
‘আমর ইবনে হিশাম মুহাম্মাদ এর প্রতি কঠোরভাবে শত্রুতা প্রদর্শন করেছিলেন এবং তার বাণী প্রত্যাখ্যান করেছিলেন। অতএব মুহাম্মাদ তাকে "আবু জাহল" (أبو جهل; আক্ষরিক অর্থে "অজ্ঞতার জনক") হিসাবে উল্লেখ করেছেন। আমর ইবনে হিশামকে তার মায়ের দিক থেকে "ইবনে আল-হানাজালিয়া"ও ডাকা হতো।[৪]
পরিবার
[সম্পাদনা]পিতামাতা ও ভাইবোন
[সম্পাদনা]তার বাবা ছিলেন হিশাম ইবনে আল মুগীরাহ এবং মা আসমা বিনতে মাখরাবাহ ইবনে জান্দাল আল-তামিমি, যারা প্রথমদিকে মুসলিম হয়ে যান। তার ৮ জন পূর্ণ ভাইবোন ছিল, তারা হচ্ছে:
১. সালামা ইবনে হিশাম
২. উরওয়াহ ইবনে হিশাম
৩. খালিদ ইবনে হিশাম
৪. হারিস ইবনে হিশাম, ফাতিমা বিনতে আল-ওয়ালিদ ইবনে মুগীরার স্বামী এবং উম্মে হাকিম (জারা), আবু সাদ (সাঈদ), আব্দুর রহমান, মুগীরা এবং আব্দুল্লাহর পিতা।
৫. আল-আস ইবনে হিশাম, সারা বিনতে হুকায়েকে স্বামী এবং খালিদ ও ওয়ালিদের পিতা।
৬. হানতামাহ বিনতে হিশাম, খাত্তাব ইবনে নুফায়েলের স্ত্রী এবং উমর, ফাতিমা, জায়েদ, সাফিয়ার মা।
৭. উম্মে হারমলা বিনতে হিশাম, আল-আস ইবনে ওয়াইলের স্ত্রী ও হিশামের মা।
স্ত্রী ও সন্তান
[সম্পাদনা]তার প্রথম স্ত্রী মুজালিদ্যা বিনতে আমর ইবনে উমায়র ইবনে মাবাদ ইবনে জুরারা এবং তাদের সন্তান ছিল, তারা হচ্ছে:
১. 'ইকরিমাহ, উম্মে হাকিম বিনতে আল-হারিসের স্বামী
২. জুরারা
৩. তামিমি
তার দ্বিতীয় স্ত্রী হচ্ছে আরওয়া বিনতে আবি আল-আস ইবনে উমাইয়া এবং তাদের ৮জন কন্যা ছিলো, তার হচ্ছে:
১. শাখরা
২. আসমা
৩. জামিলা
৪. উম্মে হাকিম (হাকিমা)
৫. উম্মে সাঈদ (সা'ঈদা)
৬. জুয়াইরিয়া
৭. হুনফা'
৮. উম্মে হাবিব (হাবিবা)
মৃত্যু
[সম্পাদনা]আমর ইবনে হিশাম বদরের যুদ্ধে আব্দুল্লাহ ইবনে মাসুদ কর্তৃক নিহত হন।
তথ্যসূত্র
[সম্পাদনা]- ↑ Ibn Khallikan's Biographical Dictionary, trans. by Bn Mac Guckin de Slane, Oriental Translation Fund (Series), 57, 4 vols (Paris: Printed for the Oriental translation fund of Great Britain and Ireland, 1842-71), I 373.
- ↑ The Life of Muhammad: A Translation of ibn Isḥāq’s Sīrat Rasul Allāh with introduction & notes by Alfred Guillaume, Oxford University Press, 1955.
- ↑ Letter No.28, 2nd paragraph, Peak of Eloquence (Page-575), আইএসবিএন ০-৯৪১৭২৪-১৮-২; retrieved 11 January 2015
- ↑ Guillaume, p. 298