তারুন্দিয়া জগৎ মেমোরিয়াল উচ্চ বিদ্যালয়

উইকিপিডিয়া, মুক্ত বিশ্বকোষ থেকে
(Tarundia Jagat Memorial High School থেকে পুনর্নির্দেশিত)

সোয়াইন নদীর অববাহিকায়, বিখ্যাত কৈলা/কালিয়া বিলের তীরে অবস্থিত, ময়মনসিংহ বিভাগ এর ময়মনসিংহ জেলার অন্তর্গত ঈশ্বরগঞ্জ উপজেলার একটি ঐতিহ্যবাহী অঞ্চল হলো তারুন্দিয়া। এই তারুন্দিয়াতেই বিখ্যাত এই বিদ্যালয়ের অবস্থান। আচার্য্য জগৎ ঠাকুরের স্মৃতিতে এই স্কুলের নামকরণ করা হয় তারুন্দিয়া জগৎ মেমোরিয়াল উচ্চ বিদ্যালয়। এর পাশেই রয়েছে তারুন্দিয়া সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়। এখানে ৬ষ্ঠ শ্রেণী থেকে ১০ম শ্রেণী পর্যন্ত শিক্ষাদান করা হয়। ১৯৯২ সালের এস এস সি পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করে এই স্কুল থেকে সর্ব প্রথম মাধ্যমিকে উত্তির্ণ হন মোঃ নেজামুল ইসলাম। তৎপরবর্তিতে হাজার হাজার বিদ্যার্থি এই বিদ্যালয় থেকে অত্যন্ত কৃতিত্বের সাথে তাদের শিক্ষা সম্পন্ন করেন। এই বিদ্যালয়ের ই আই আই এন নম্বর হচ্ছে ১১১৭৯০। পূর্বে এই শিক্ষা প্রতিষ্ঠানটি ছিল ঢাকা শিক্ষা বোর্ডের অন্তর্গত। এখন এটি নবগঠিত ময়মনসিংহ শিক্ষা বোর্ডের অন্তর্গত।

তারুন্দিয়া জগৎ মেমোরিয়াল উচ্চ বিদ্যালয়
অবস্থান


তথ্য
বিদ্যালয় বোর্ডমাধ্যমিক ও উচ্চমাধ্যমিক শিক্ষা বোর্ড ময়মনসিংহ
শ্রেণী৬ষ্ঠ-১০ম
ভাষাবাংলা

অবস্থান[সম্পাদনা]

এই বিদ্যালয়টি ঈশ্বরগঞ্জ উপজেলা শহর থেকে ১০ কি.মি. পশ্চিমে উচাখিলা ইউনিয়ন থেকে ৩ কি.মি. উত্তরে এবং গৌরিপুর উপজেলা থেকে ১৩ কি.মি. দক্ষিণে অবস্থিত। ময়মনসিংহ জেলা শহর থেকে ২২ কি.মি. দক্ষিণ-পূর্বে এবং ফাতেমা নগর রেল স্টেশন থেকে ৮ কি.মি. পুর্বে এর অবস্থান। এই বিদ্যালয়ের সুনাম আজ সমগ্র বাংলায় বিদিত।

সংক্ষিপ্ত বিবরণ[সম্পাদনা]

প্রতিষ্ঠানটিতে ৬ষ্ঠ শ্রেণি থেকে ১০ম শ্রেণি পর্যন্ত শিক্ষা প্রদান করে থাকে। এখানকার শিক্ষকগণ শিক্ষা মন্ত্রণালয় কর্তৃক নিয়োজিত হন এবং প্রত্যেক ছাত্রছাত্রীকেই ভর্তি পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করে ভর্তি হতে হয়।

ইতিহাস[সম্পাদনা]

শিক্ষার প্রয়োজনীয়তা অনুভব করে এই এলাকার বাসিন্দাদের আবেদনে এবং বিদ্যালয় বাস্তবায়ন কমিটির আন্তরিক প্রচেষ্টায় আলোচনার মাধ্যমে এই প্রতিষ্ঠান স্থাপনের উদ্যোগ নিলে তারুন্দিয়া সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়ের তৎকালিন প্রধান শিক্ষক শ্রী হীরালাল চক্রবর্তি এই বিদ্যালয়ের জন্য জমি প্রধান করেন এবং তাঁর বাবা আচার্য্য জগৎ ঠাকুরের স্মৃতিতে এই স্কুলের নামকরণ করে জনাব আব্দুল জব্বার খান ও আপামর সাধারন জনগণ স্কুল প্রতিষ্ঠায় ব্যাপক ভূমিকা রাখেন। হাজী মোঃ আব্দুল মোতালেব, শেখ সালেহ উদ্দিন এবং মৌলভি মোঃ ইউসুফ এই বিদ্যালয়ের এমপিও ভুক্তিতে ব্যাপক অবদান রাখেন। শেখ সালাহ উদ্দিন তৎকালীন প্রধান শিক্ষক হিসাবে কর্মরত ছিলেন। আর মৌলভি মোঃ ইউসুফ এই বিদ্যালয়ের একজন ধর্মীয় শিক্ষক ছিলেন।

পরিবেশ[সম্পাদনা]

প্রতিষ্ঠানটির চারপাশে বাংলার চিরচেনা প্রাকৃতিক পরিবেশ, তারুন্দিয়া ইউনিয়নের প্রধান ডাকঘর, তারুন্দিয়া বাজার, তারুন্দিয়া বাজার জামে মসজিদ, আচার্য্য জগৎ ঠাকুর মন্দির এর উপস্থিতি। শিক্ষার মনোরম পরিবেশের জন্য সবার কাছে সমানভাবে সমাদৃত। প্রতিষ্ঠানটির মূল ভবন একতলা। অত্যাধুনিক কম্পিউটার ল্যাব, জীববিজ্ঞান গবেষণাগার, রসায়ন গবেষণাগার, পদার্থ গবেষণাগার রয়েছে। মূল ভবনে রয়েছে শিক্ষক সেমিনার হল, অভিভাবক বিশ্রামাগার, অধ্যক্ষ কক্ষ, জিমনেশিয়াম এবং ছাত্র-ছাত্রীদের জন্য যথেষ্ট পরিমাণ শ্রেণী কক্ষ।

ভর্তি[সম্পাদনা]

এই প্রতিষ্ঠানটিতে ৬ষ্ঠ শ্রেণি থেকে ১০ম শ্রেণি পর্যন্ত ছাত্র-ছাত্রী ভর্তি করা হয়। ৩ টি বিভাগ তথা ব্যবসায় শিক্ষা, বিজ্ঞান ও মানবিক রয়েছে। সাধারনত ৬ষ্ঠ শ্রেণিতে প্রথম ভর্তি নেয়া হয়।

অন্যান্য[সম্পাদনা]

এই বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থিদের জন্য রয়েছে নির্দিষ্ট পোশাক, যা ছাত্র ছাত্রীদের বাধ্যতামুলকভাবে অনুসরন করতে হয়। শিক্ষা, সংস্কৃতি, বিনোদন সর্বক্ষেত্রেই এই বিদ্যালয়ের ছাত্রছাত্রীদের রয়েছে সমান সুযোগ। বছরে একবার বাৎসরিক খেলাধুলা ও সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয় যা স্থানীয় মানুষদেরও বিনোদনের অন্যতম উৎস। বন্যা কিংবা প্রাকৃতিক দুর্যোগ মোকাবেলায় এই স্কুলের শিক্ষক শিক্ষার্থীদের থাকে অগ্রণী ভূমিকা।