স্বাহা

উইকিপিডিয়া, মুক্ত বিশ্বকোষ থেকে
স্বাহা
অগ্নিদেবী
পরকাল, নরক, মাতৃত্ব, জীবন এবং বিবাহের দেবী
স্বহা
স্ত্রী স্বাহার সাথে অগ্নি
অন্তর্ভুক্তিদেবী
সঙ্গীঅগ্নি[১]

হিন্দুধর্মবৌদ্ধধর্ম মতে, সংস্কৃত আভিধানিক শব্দ স্বাহা (দেবনাগরী লিপি: स्वाहा, চাইনিজ: 薩婆訶 sà pó hē, জাপানিজ: sowaka, তিব্বতি: སྭཱཧཱ་ soha, ল্যাটিন: আমেন) হচ্ছে একটি নির্দেশক যা মন্ত্রের শেষ বুঝানোর জন্য ব্যবহৃত হয়। আক্ষরিক অর্থে, এটির অনুবাদ হচ্ছে "ভাল বলেছেন"।তিব্বতি ভাষায়, "স্বহা" অনুবাদ করা হয় "তাই হোক" হিসেবে এবং প্রায়ই "সোহা" হিসাবে উচ্চারিত করা হয় এবং স্বতন্ত্রভাবে উপস্থাপিত করা হয়। যখনই অগ্নি উৎসর্গ করা হয়, স্বাহা মন্ত্রোচ্চারন করা হয়। ব্যুৎপত্তিগতভাবে, এই শব্দটির উৎপত্তি হয়েছে সু মানে ভালো এবং মূল আহ মানে "থেকে" হতে।[তথ্যসূত্র প্রয়োজন]

একটি স্ত্রীবাচক শব্দ হিসেবে, ঋগ্বেদ স্বাহা মানে "অর্ঘ্য" (অগ্নি বা ইন্দ্রের প্রতি) বোঝানও হতে পারে এবং যখন অর্ঘ্যকে ব্যক্তিত্ব হিসাবে মূর্ত করা হয়, তখন স্বাহা হচ্ছে একজন অপ্রধান দেবী এবং অগ্নিদেবের স্ত্রী। তিনি মূলত একজন অপ্সরা ছিলেন [তথ্যসূত্র প্রয়োজন] কিন্তু অগ্নিদেবের সাথে বিবাহের পর চিরজীবী হয়ে উঠেন। কিছু কিছু বর্ণনায়, তিনি কার্তিকের অনেক ঐশ্বরিক গণ্য মায়েদের মধ্যে একজন(কার্তিকের মা দেবী পার্বতী,কার্তিক তার মাতার সঙ্গে থাকেন)। তিনি অগ্নিদেবের কন্যা অগ্নেয়ারও মা। তিনি প্রজাপতি দক্ষের কন্যা বলে ধারণা করা হয়।ধারণা করা হয় তিনি হোমবলি যজ্ঞের প্রধান হচ্ছে তিনি।বলা হয়ে থাকে তার দেহ চার বেদের সমন্বয়ে গঠিত এবং তার ছয় অঙ্গপ্রতঙ্গ বেদের ছয় অঙ্গকে প্রকাশ করে।এটা বলা হয়ে থাকে যে, কোন দেবতাকে উদ্দেশ্য করে যজ্ঞের মাধ্যমে যদি কোন কিছু উৎসর্গ করা হওয়া তাহলে সেই দেবতা তখন পর্যন্ত উৎসর্গ গ্রহণ করেননা যতক্ষন পর্যন্ত না স্বাহা মন্ত্রোচ্চারন করা হয়।[তথ্যসূত্র প্রয়োজন]

কাহিনী[সম্পাদনা]

মহাভারতের বন পর্বে, মার্কণ্ডেয় ঋষি তার গল্প পাণ্ডবদের কাছে বর্ণনা করেন। স্বাহা ছিলেন প্রজাপতি দক্ষের কন্যা। তিনি অগ্নিদেবের প্রেমে পরে যান এবং তাকে কামনা করতে থাকেন। অবশ্য অগ্নিদেব তার প্রতি লক্ষ্য করতেন না। অগ্নিদেব সপ্তর্ষিদের যজ্ঞ আচারের সভাপতিত্ব করতেন। তিনি সপ্তর্ষিদের স্ত্রীদের প্রতি বিমোহিত হয়ে পরেন যারা অনেক সুন্দর ও আকর্ষণীয় ছিলো, এবং তাদের দিকে তাকিয়ে থাকেন।

অবশেষে, অন্যের স্ত্রীদের প্রতি কামনা পোষণ করার অপরাধবোধের কারণে তিনি বনে গমন করেন তপস্যা করার জন্য। স্বাহা তাকে অনুসরন করে এবং তার ইচ্ছাকে উপলব্ধি করতে পারেন। তিনি সপ্তর্ষিদের স্ত্রীদের রূপ ধারণ করেন (যদিও তিনি বৈষিষ্ঠের স্ত্রী অরুন্ধতীর রূপ ধারণ করতে পারেননি), এবং অগ্নি দেবের সাথে মিলিত হোন। অগ্নি এবং স্বাহা বনে অনেক প্রেমময় মুহূর্ত অতিবাহিত করেন এবং অগ্নিদেব তাকে স্ত্রী হিসেবে গ্রহণ করেন।

তথ্যসূত্র[সম্পাদনা]