সোমা চৌধুরী

উইকিপিডিয়া, মুক্ত বিশ্বকোষ থেকে
সোমা চৌধুরী
জন্ম
সুপর্ণা চৌধুরী[১]

(1971-03-08) ৮ মার্চ ১৯৭১ (বয়স ৫৩)[১]
পেশাসাংবাদিক
দাম্পত্য সঙ্গীসঞ্জয় রায়না (বি. বিচ্ছেদ ১৯৯৮)
সুজিত মেনন[১]
সন্তান
ওয়েবসাইটhttps://shomachaudhury.com/

সোমা চৌধুরী একজন ভারতীয় সাংবাদিক, সম্পাদক এবং রাজনৈতিক ভাষ্যকার। একটি অনুসন্ধানমূলক জনস্বার্থ সংবাদ পত্রিকা ''তহলকা''-র ব্যবস্থাপনা সম্পাদক হিসেবে তিনি কাজ করেছেন।[২] তিনি এর অন্যতম প্রতিষ্ঠাতাও ছিলেন। তিনি কিছু প্রতিষ্ঠানের সহ-প্রতিষ্ঠাতা ও পরিচালক ছিলেন। তার মধ্যে আছে ধারণার একটি আন্তর্জাতিক সম্মেলন থিঙ্ক (ইংরেজি: THiNK) এবং বিশিষ্ট ভারতীয়দের সাথে সরাসরি কথোপকথনের একটি মঞ্চ অ্যালজেব্রা - দ্য আর্টস অ্যাণ্ড আইডিয়াস ক্লাব।[৩] তিনি একটি মেধা সম্পদ কোম্পানি- লুসিড লাইনস প্রোডাকশনের প্রতিষ্ঠাতা।[৪][৫]

জীবনী[সম্পাদনা]

সোমা চৌধুরীর জন্ম দার্জিলিংয়ে। তিনি ডুয়ার্সের চা বাগানে বড় হয়ে ওঠেন। সেখানে তাঁর বাবা-মা দুজনেই ছিলেন ডাক্তার।[৬] তিনি কার্শিয়াংয়ের এর সেন্ট হেলেনস কনভেন্ট, কলকাতার লা মার্টিনিয়ার স্কুল; এবংনতুন দিল্লির লেডি শ্রী রাম কলেজে পড়াশোনা করেছেন।[১] তিনি ইংরেজিতে বিএ এবং এমএ করার সময় দুবারই দিল্লি বিশ্ববিদ্যালয়ে শীর্ষস্থান অর্জন করেন।[৭]

পুরস্কার[সম্পাদনা]

২০১১ সালে, নিউজউইক (মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র) সোমা চৌধুরীকে "বিশ্ব কাঁপানো ১৫০ জন শক্তিধর নারী" হিসেবে বেছে নিয়েছিল।[৩] সে বছর তালিকায় থাকা অন্য ভারতীয় নারীরা ছিলেন সোনিয়া গান্ধী এবং অরুন্ধতী রায়। তিনি রাজনৈতিক সাংবাদিকতার জন্য সাব্বিয়াদোরো আর্নেস্ট হেমিংওয়ে পুরস্কার (২০১৩), রাজনৈতিক সাংবাদিকতার জন্য মুম্বাই প্রেস ক্লাব পুরস্কার (২০১২), রামনাথ গোয়েঙ্কা পুরস্কার[৪] এবং "যেখানে দেবদূত পা ফেলতে ভয় পান" এই সাহসিকতার জন্য অসামান্য মহিলা মিডিয়াপারসন (২০০৯) চামেলি দেবী জৈন পুরস্কারে ভূষিত হয়েছেন।[৩] ২০১৩ সালে তিনি তাঁর মাতৃ শিক্ষায়তন, দিল্লির লেডি শ্রী রাম কলেজে প্রাক্তন ছাত্রদের পুরস্কার দিয়ে সম্মানিত করেছিলেন। ২০১৮ সালে, প্রথম ভারতীয় হিসেবে তাঁকে সিডনিতে আমন্ত্রণ জানানো হয়েছিল, গান্ধী স্মারক বক্তৃতা দেওয়ার জন্য।[৮]

প্রিন্ট এবং ডিজিটাল সাংবাদিকতায় কর্মজীবন ছাড়াও, সোমা টেলিভিশন এবং মঞ্চ উভয় ক্ষেত্রেই একজন শিল্পবিশারদ পণ্ডিত (ইংরেজি: virtuoso এমন একজন ব্যক্তি যিনি একটি নির্দিষ্ট শিল্প বা ক্ষেত্রে অসামান্য প্রতিভা এবং প্রযুক্তিগত দক্ষতার অধিকারী) বক্তা হিসেবে স্বীকৃত হয়েছেন এবং আমেরিকা, ব্রিটেন, এডিনবার্গ, ইতালি, ফ্রান্স, স্পেন, অস্ট্রেলিয়া, মরক্কো, সিঙ্গাপুর এবং ইন্দোনেশিয়া সহ ভারত এবং বিদেশের অনেক সম্মেলনস্থানে বক্তব্য দেওয়ার জন্য আমন্ত্রিত হয়েছেন।। তিনি বিশ্বব্যাপী অত্যন্ত উন্নত এবং আধুনিক মনের ব্যক্তিত্বদের (ইংরেজি: cutting edge mind) রাজনীতি, কর্মপন্থা, অর্থনীতি, ব্যবসা, বিজ্ঞান, সুশীল সমাজ, সিনেমা, সাহিত্য, খেলাধুলা এবং মিডিয়া বিষয়ে সাক্ষাৎকার নিয়েছেন।[৩]

সোমা লণ্ডনের রয়্যাল সোসাইটি অফ আর্টস এবং এশিয়া সোসাইটিতে বেশ কয়েকটি বড় সম্মেলনের পাশাপাশি ওয়াইপিও (আমেরিকা ভিত্তিক বিশ্বব্যাপী প্রধান নির্বাহীদের নেতৃত্বের সম্প্রদায়), ইও (উদ্যোক্তাদের সংগঠন) এবং মর্যাদাপূর্ণ ইন্ডিয়া টুডে গ্রুপের অতিথি কিউরেটেড (সংগঠিত এবং উপস্থাপিত) সম্মেলনগুলিও সংগঠন এবং উপস্থাপন করেছেন।

কাজ[সম্পাদনা]

সোমা চৌধুরী ন্যায়বিচার, সামাজিক ন্যায্যতা, মানবাধিকার, পরিবেশ, গণমাধ্যম, আইন এবং সম্পদ নিয়ে লড়াইয়ের বিষয়ে ব্যাপকভাবে প্রতিবেদন করেছেন। বিস্তারপূর্বক অকুস্থল প্রতিবেদন, তীক্ষ্ণ ভাষ্য, বিভিন্ন স্তরের মানুষের ছবি এবং সাক্ষাৎকারের জন্য তিনি খ্যাতি অর্জন করেছিলেন।[৭] মানবাধিকার কর্মীদের সুরক্ষায় এবং রাষ্ট্র কর্তৃক মিথ্যাভাবে অভিযুক্ত অন্যান্য মানুষকে জেল থেকে বের করে আনতে তাঁর বেশ কয়েকটি প্রতিবেদন সহায়ক হয়েছিল। ডাঃ বিনায়ক সেন, আরুষি তলওয়ার-হেমরাজ হত্যা, উপজাতীয় শিক্ষক সোনি সোরির কারাবাস এবং অন্যান্যদের উপর তাঁর পাল্টা-প্রতিবেদনগুলি প্রশংসা পেয়েছিল।[৯]

বীজগণিত কথোপকথন[সম্পাদনা]

অ্যালজেব্রা – আর্টস অ্যাণ্ড আইডিয়াস ক্লাবটি২০১৬ সালের সেপ্টেম্বরে শুরু হয়েছিল, সোমা এর প্রতিষ্ঠাতা ছিলেন। তারপর থেকে, এটি মূলধারার গণ-ব্যক্তিত্বকে নতুন আলোয় উপস্থাপন করেছে বা পাল্টা-প্রতিবেদনগুলি সবার দৃষ্টিগোচর করে অগণিত কথোপকথনের আয়োজন করেছে। ব্যক্তিত্বদের মধ্যে রয়েছেন তৃণমূলস্তরের সামাজিক রূপান্তরকারী এবং প্রায়শই মূলধারার গণমাধ্যম দ্বারা উপেক্ষিত অধিকারচ্যুত কণ্ঠস্বর,- যাঁদের মধ্যে রয়েছেন পয়ঃনিষ্কাশন কর্মী, কৃষক, আদিবাসী, পরিবেশকর্মী এবং সন্ত্রাসের মিথ্যা অভিযোগে অভিযুক্ত মুসলিমরা।[১০]

বিতর্ক[সম্পাদনা]

২০১৩ সালে, তহলকা সম্পাদক এবং প্রতিষ্ঠাতা তরুণ তেজপালের বিরুদ্ধে একজন সহকর্মী যৌন নিপীড়নের অভিযোগ এনেছিলেন। এই বিষয়ের পরিচালনাকে ঘিরে একটি বিতর্কের পর সোমা তহলকা থেকে পদত্যাগ করেছিলেন।[১][১১] সোমা চৌধুরী যেহেতু নারী সমস্যা নিয়ে একজন বিশিষ্ট প্রতিবাদী ছিলেন, সম্ভবত গণমাধ্যম এবং কিছু সহকর্মী তাঁর নিজের পত্রিকায় এই ঘটনাটিকে ছোট করে দেখানোর জন্য তাঁর সমালোচনা করেছিলেন।[১২]

তথ্যসূত্র[সম্পাদনা]

  1. "Shoma Chaudhury (Journalist) Age, Biography, Husband ..."StarsUnfolded। সংগ্রহের তারিখ ৪ ফেব্রুয়ারি ২০২৪ 
  2. "Indian Reporter, TV Journalist Shoma Chaudhury Biography, Salary, Controversy, Marriage, Husband, Divorce, Kids"youthdevelopers.com। সংগ্রহের তারিখ ৪ ফেব্রুয়ারি ২০২৪ 
  3. "Shoma Chaudhury"One Globe Forum। সংগ্রহের তারিখ ৪ ফেব্রুয়ারি ২০২৪ 
  4. "About Me - Shoma Chaudhury"shomachaudhury.com। সংগ্রহের তারিখ ৪ ফেব্রুয়ারি ২০২৪ 
  5. "Shoma Chaudhury"ifp.world। সংগ্রহের তারিখ ৪ ফেব্রুয়ারি ২০২৪ 
  6. "Shoma Chaudhury"The CEO Magazine India। সংগ্রহের তারিখ ৪ ফেব্রুয়ারি ২০২৪ 
  7. "A virtual masterclass on Homo Deus: How To Be Human In A Super Tech World"The NorthCap University। সংগ্রহের তারিখ ৪ ফেব্রুয়ারি ২০২৪ 
  8. [In 2018, she was invited to deliver the Gandhi Oration in Sydney, the first Indian to do so. "Shoma Chaudhury - Delhi, India"] |ইউআরএল= এর মান পরীক্ষা করুন (সাহায্য)LinkedIn India। সংগ্রহের তারিখ ৪ ফেব্রুয়ারি ২০২৪  অজানা প্যারামিটার |1= উপেক্ষা করা হয়েছে (সাহায্য)
  9. "Who is Shoma Choudhury Age, Biography, Family"Medium · Shomachaudhury। সংগ্রহের তারিখ ৪ ফেব্রুয়ারি ২০২৪ 
  10. "About us and our team"www.algebratheclub.com। Algebra - official website। ২৮ ফেব্রুয়ারি ২০১৯ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ৪ জুলাই ২০১৮ 
  11. "Tehelka's Shoma Chaudhury quits over sex assault controversy"BBC। সংগ্রহের তারিখ ৪ ফেব্রুয়ারি ২০২৪ 
  12. "Tarun Tejpal case: I did not intimidate the woman journalist, says Tehelka Managing Editor Shoma Chaudhury"India Today (ইংরেজি ভাষায়)। PTI New। ২৮ নভেম্বর ২০১৩। সংগ্রহের তারিখ ২০১৯-০৩-১৮ 

বহিঃসংযোগ[সম্পাদনা]