সেন্ট থমাস চার্চ, ঢাকা
সেন্ট থমাস ক্যাথেড্রাল চার্চ, ঢাকা | |
---|---|
চার্চ অব বাংলাদেশের ঢাকা মহাধর্মপ্রদেশ | |
২৩°৪২′৩৭″ উত্তর ৯০°২৪′৪৪″ পূর্ব / ২৩.৭১০২° উত্তর ৯০.৪১২২° পূর্ব | |
অবস্থান | জনসন রোড,পুরান ঢাকা, ঢাকা |
দেশ | বাংলাদেশ |
মণ্ডলী | Anglican |
পাদ্রির ঘরানা | চার্চ অব বাংলাদেশ |
ইতিহাস | |
প্রাক্তন ধর্মপাল(গণ) | বার্নাবাস দ্বিজেন মন্ডল (প্রথম জাতীয় আর্চবিশপ) |
স্থাপত্য | |
মর্যাদা | Cathedral |
সক্রিয়তা | সক্রিয় |
স্থাপত্যশৈলী | গথিক স্থাপত্য |
নির্মাণকাজ সমাপ্তির তারিখ | ১৮১৯ খ্রিস্টাব্দ |
যাজকমণ্ডলী | |
মহাধর্মপাল | মহামান্য আর্চবিশপ স্যামুয়েল সুনীল মানখিন |
সেন্ট থমাস ক্যাথেড্রাল (Cathedral) চার্চ অথবা চার্চ অব বাংলাদেশের ঢাকা মহাধর্মপ্রদেশ এংলিকান সম্প্রদায় কর্তৃক নির্মিত একটি উপাসনালয়। এটি ঢাকার লক্ষ্মীবাজারে বাহাদুর শাহ পার্কের কাছে অবস্থিত। ঢাকার অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ সড়ক জনসন রোড, গির্জাটিকে আদালত-কোর্টকাচারি ও জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় থেকে পৃথক করেছে। এটি ‘চার্চ অব বাংলাদেশ’ নামেও পরিচিত।
ইতিহাস
[সম্পাদনা]১৮১৯ খ্রিষ্টাব্দে এর নির্মাণ কাজ শেষ হয়। কলকাতার বিশপ রেজিনাল্ড হেবার, ১৮২৪ সালের ১০ জুলাই ঢাকা এসে এর উদ্বোধন করেন। ১৯৫১ সাল পর্যন্ত এটি ক্যাথেড্রাল চার্চ হিসেবে সক্রিয় ছিল। জানা যায় ঢাকা জেলের কয়েদীরা চার্চ নির্মাণে শ্রম দিয়েছিল। উনিশ শতকের প্রথমভাগে চার্চটি বাংলায় প্রোটেস্ট্যান্ট মতবাদ প্রসারে ভূমিকা রাখে। বর্তমানে বাংলাদেশে প্রোটেস্ট্যান্টদের চেয়ে ব্যাপ্টিস্টদের প্রাধান্য প্রতিষ্ঠিত হলেও চার্চ অফ ইংল্যান্ড ও প্রেসবাইটেরিয়ানরাও সক্রিয়। ১৯৪৭ সালে বাংলাদেশ পাকিস্তান এর পূর্বাঞ্চলীয় প্রদেশ হিসেবে ভুক্ত হয় এবং ১৯৭১ সালে এটি স্বাধীন রাষ্ট্র হিসেবে আত্মপ্রকাশ করে। ১৯৭০ সালে প্রেসবাইটেরিয়ান ও এংলিকানরা সম্মিলিত হয়ে চার্চ অফ পাকিস্তান এর স্থানীয় প্রশাসন গঠন করে। বাংলাদেশ রাষ্ট্রের অভ্যুত্থানে একটি ভয়াবহ যুদ্ধ হয় (১৯৭১) যার কারণে দুই দেশের মধ্যে তিক্ত সম্পর্ক দেখা দেয়। ১৯৭১ সালের পরে কয়েক বছর দাপ্তরিকভাবে চার্চ অফ পাকিস্তানের প্রশাসন দ্বারা চার্চটি পরিচালিত হলেও এটি ধীরে ধীরে চার্চ অফ বাংলাদেশ নামের একটি স্বায়ত্তশাসিত প্রতিষ্ঠানে পরিণত হয়।
রেভারেন্ড পল এস. সরকার ২০০৩ সালের জানুয়ারিতে চার্চ অফ বাংলাদেশ এর তৃতীয় বিশপ হন যিনি চার্চটি পরিচালনা করে থাকেন। ২০০৫ সালে চার্চের প্রায় ১৫৬০০ সদস্য ছিল। ১৯৭৫ সাল থেকে এটি ওয়ার্ল্ড কাউন্সিল অফ চার্চেস এর অন্তর্ভুক্ত।
স্থাপত্যশৈলী
[সম্পাদনা]সেন্ট থমাস চার্চে পূর্বাঞ্চলীয় চার্চের ন্যায় একটি বর্গাকার ঘড়ি টাওয়ার আর দেওয়ালে তোরণসদৃশ জানালা রয়েছে। মূল প্রবেশদ্বারের সামনে চারটি স্তম্ভের উপর স্থাপিত একটি ছোট ছাউনি রয়েছে যা গথিক স্থাপত্যে নির্মিত। এর ছাদে ছোট বর্গাকার বেষ্টনী বা প্যারাপেট রয়েছে। আয়তাকার কেন্দ্রীয় কক্ষের পিছনে দুটি স্তম্ভ আছে যেগুলো একটি তোরণের আকারে পুলপিট অংশে মিলেছে। পুলপিট আয়তাকার, এর পিছনের দেওয়ালে ব্রাসনির্মিত ক্রসচিহ্ন আছে। বেদী কাঠের তৈরি আর এর উপরেও একটি ব্রাসের ক্রসচিহ্ন রয়েছে। বেদীটি পূর্বপ্রান্তে অবস্থিত। ধর্মীয় আলোচনাসভার জন্য কয়েকটি অভিজাত কারুকার্যময় কেদারা আছে। মূল কক্ষের পিছে আছে একটি শিলালিপি। চার্চের দেয়ালে কয়েকজন স্মরণীয় সদস্যের স্মৃতিরক্ষার্থে প্রস্তরফলক রয়েছে। বারান্দার ছাদগুলো ঢালু কড়িকাঠ দিয়ে বানানো। আয়তাকার প্রার্থনাগৃহটি খুবই পরিপাটি এবং এতে ভারবাহী নয় এমন দুটি স্তম্ভ আছে। ছাদে কাঠের ফালি আর মেঝেয় টাইলস লাগানো। ২০০ বছরের পুরনো হলেও সাদা প্লাস্টার করা ভবনটির সুদৃশ্য পাথর আর ইটের কাঠামো এতটুকু বিকারগ্রস্ত হয়নি। এমনকি অধিকাংশ সেগুন কাঠের আসবাব, কাঠের বেদী, অভিষেকপাত্র প্রভৃতি এখনও অক্ষত ও ব্যবহারযোগ্য অবস্থায় আছে।
২০০৫ সালে কর্তৃপক্ষ চার্চের ব্যাপক সংস্কার সাধন করেন। খুব বৃহদায়তন না হলেও চার্চটি ঢাকার একটি বিশেষ পর্যটক আকর্ষণ।
তথ্যসূত্র
[সম্পাদনা]- Sufi Mostafizur Rahman,December 2007, Archaeological Heritage, Asiatic society of Bangladesh.
- Enamul Haque, 2009, Dhaka alias Jahangirnagar, 400 years, International Centre for Study of Bengal Art
- J. Gordon Melton, Martin Baumann, 2010, Religions of the world: A comprehensive encyclopedia of beliefs and practices, ABC-CLIO.LLC,