সুব্রত বাইন

উইকিপিডিয়া, মুক্ত বিশ্বকোষ থেকে
সুব্রত বাইন
জাতীয়তাবাংলাদেশী
নাগরিকত্ব বাংলাদেশ
পরিচিতির কারণশীর্ষ সন্ত্রাসী

সুব্রত বাইন বাংলাদেশের একজন কুখ্যাত অপরাধচক্র নেতা। তাকে সচরাচর 'শীর্ষ সন্ত্রাসী' হিসাবে আখ্যায়িত করা হয়। তার বিরুদ্ধে ঢাকায় কমপক্ষে ৩০টি খুনের মামলা রয়েছে।[১] ২০০৩ পর্যন্ত সুব্রত বাইন ছিল ঢাকার অপরাধ জগতের প্রভাবশালী চক্র সেভেন স্টার গ্রুপের প্রধান। ১৯৯১ খ্রিষ্টাব্দে ঢাকার আগারগাঁও এলাকায় জাসদ ছাত্রলীগ নেতা মুরাদকে হত্যার মধ্য দিয়ে নামকরা সন্ত্রাসী হিসাবে সুব্রত বাইনের অভিষেক হয়।[২] সে যাবজ্জীবন কারাদণ্ডপ্রাপ্ত আসামী। [৩]

পলাতক জীবন[সম্পাদনা]

২০০১ খ্রিষ্টাব্দে বাংলাদেশের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রণালয় যে ২৩ জন শীর্ষ সন্ত্রাসীকে ধরিয়ে দেয়ার জন্য পুরস্কার ঘোষণা করেছিল সুব্রত বাইন তাদের অন্যতম। পুলিশের হাতে আটক হওয়া এড়াতে সে ২০০৩ -এ বাংলাদেশ ছেড়ে ভারতে পালিয়ে যায়। [৪] ভারতে সে স্থায়ীভাবে বসবাস শুরু করে। সে পশিচমবঙ্গে ব্যবসা গড়ে তোলে। জমি কেনে এবং বাড়ী তৈরী করে।

পুলিশ তাকে ২০০৮ খ্রীস্টাব্দের ১১ অক্টোবর তারিখে আটক করলেও সে আদালতে জামিন নিয়ে মুক্ত হয়। আবার ফিরে যায় পলাতক গোপন জীবনে। ২০০৯ খ্রিষ্টাব্দের ২২ সেপ্টেম্বর কলকাতা পুলিশের স্পেশাল টাস্কফোর্সে কর্মকর্তারা পিছু ধাওয়া করলে সুব্রত বাইন নেপাল সীমান্তের কাকরভিটা শহরে ঢুকে পড়ে ও নেপালী পুলিশের হাতে গ্রেপ্তার হয়। তাকে প্রকাশ্যে অশোভন আচরণের দায়ে পূর্ব নেপালের ভাদ্রপুর জেলে রাখা হয়। পরে ঝুমকা কারাগারে নেয়া হয়। ৮ই নভেম্বর ২০১২ তারিখে ঐ কারাগার থেকে ৭৭ ফুট লম্বা সুড়ঙ্গ দিয়ে অন্যান্য ১০ জন কারাবন্দীর সঙ্গে সুব্রত বাইন পালিয়ে যায়। জেল ভেঙ্গে পালানো এই সব অপরাধীরা কারাগারের ভেতর টুপি তৈরির কাজ করতো এবং রাতের অন্ধকারে মাটি কেটে এই সুড়ঙ্গ তৈরি করেছিল। বাঁশ কাটার চাকু দিয়ে মাটি কেটে ২০ ইঞ্চি চওড়া ও ২২ ইঞ্চি উচ্চতার এ সুড়ঙ্গটি তৈরি করা হয়েছিল। [৫] [৬]

গ্রেপ্তার[সম্পাদনা]

সুব্রত বাইন কলকাতা পুলিশের হাতে প্রথম গ্রেপ্তার হয় ২০০৮ খ্রীস্টাব্দের ১১ অক্টোবর তারিখে। পরে আদালত থেকে জামিনে মুক্ত হয়ে সে আবার গোপন জীবনে ফিরে যায়। নেপালের কারাগার থেকে পালিয়ে সে পুনরায় কলকাতায় ফিরে আসে। ২৭ নভেম্বর ২০১২ তারিখ সন্ধ্যায় বাংলাদেশের শীর্ষ সন্ত্রাসী সুব্রত বাইন ভারতের কলকাতায় আইন প্রয়োগকারী সংস্থার হাতে ধরা পড়ে। পশ্চিম বঙ্গ পুলিশ গোয়েন্দা পুলিশ ও পুলিশের স্পেশাল টাস্কফোর্স (এসটিএফ) যৌথ অভিযান চালিয়ে তাকে কলকাতার বহুবাজার এলাকা থেকে গ্রেপ্তার করতে সক্ষম হয়। গ্রেপ্তারের পর তার কাছ থেকে একটি নাইন মিলিমিটার পিস্তল উদ্ধার করা হয়। ভারতে সুব্রত বাইনের বিরূদ্ধে অনুপ্রবেশ ও অস্ত্র রাখার অভিযোগে মামলা রয়েছে। [১]

তথ্যসূত্র[সম্পাদনা]

  1. "শীর্ষ সন্ত্রাসী সুব্রত বাইন কলকাতায় গ্রেপ্তার"। ২০১৫-১১-২৮ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২০১৪-০১-০৩ 
  2. "সুব্রত বাইন প্রেপ্তার"। ২৮ নভেম্বর ২০১২ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২৭ নভেম্বর ২০১২ 
  3. ভারতের কলকাতা পুলিশ জানিয়েছে যে বাংলাদেশের কুখ্যাত সন্ত্রাসী সুব্রত বাইনকে মঙ্গলবার গ্রেপ্তার করা হয়েছে।
  4. "সুব্রত বাইন গ্রেপ্তার"। ২৮ নভেম্বর ২০১২ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২৭ নভেম্বর ২০১২ 
  5. "শীর্ষ সন্ত্রাসী সুব্রত বাইন কলকাতায় গ্রেফতার"। ২৯ নভেম্বর ২০১২ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২৭ নভেম্বর ২০১২ 
  6. "শীর্ষ সন্ত্রাসী সুব্রত বাইন নেপালের জেল ভেঙে ভারতে"। ১১ মে ২০১৩ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২৭ নভেম্বর ২০১২