সুনন্দা পট্টনায়ক

উইকিপিডিয়া, মুক্ত বিশ্বকোষ থেকে
সুনন্দা পট্টনায়ক
সুনন্দা পট্টনায়ক যখন অটোগ্রাফে স্বাক্ষর করছেন
সুনন্দা পট্টনায়ক যখন অটোগ্রাফে স্বাক্ষর করছেন
প্রাথমিক তথ্য
জন্ম(১৯৩৪-১১-০৭)৭ নভেম্বর ১৯৩৪
উদ্ভবপুরী / কটক, ওডিশা, ভারত[১]
মৃত্যু১৯ জানুয়ারি ২০২০(2020-01-19) (বয়স ৮৫)
ধরনহিন্দুস্থানি উচ্চাঙ্গ সংগীত
পেশাসংগীতশিল্পী, সংগীতকার
২০১২ খ্রিস্টাব্দের মে মাসে নয়াদিল্লিতে সুনন্দা পট্টনায়ক সংগীত পরিবেশন করছেন

সুনন্দা পট্টনায়ক (পণ্ডিত সুনন্দা পট্টনায়ক) (৭ নভেম্বর ১৯৩৪ – ১৯ জানুয়ারি ২০২০) ওডিশা থেকে গোয়ালিয়র ঘরানার একজন ভারতীয় উচ্চাঙ্গ সংগীত শিল্পী[২] সংগীতের জগতে তিনি জনপ্রিয়ভাবে 'গুরুমা' নামে পরিচিত,[৩] তাকে হিন্দুস্তানী উচ্চাঙ্গ সংগীতের মহান দেবী হিসেবে বিবেচনা করা হয়।[৪][৫] তিনি কিংবদন্তি ওডিয়া কবি বৈকুণ্ঠনাথ পট্টনায়কের কন্যা। ১৯৪৮ খ্রিষ্টাব্দে মাত্র ১৪ বছর বয়সে তিনি কটকের অল ইন্ডিয়া রেডিয়োতে গান গাওয়া শুরু করেন। সেই সময় ওডিশার রাজ্যপাল আসফ আলি রেডিয়োতে একবার তার গান শুনেছিলেন এবং তার গান গাওয়ার সঙ্গে খুব বেশি প্রভাবিত হয়েছিলেন এবং তিনি রাজভবনে নিয়মিত অতিথিদের আপ্যায়নে তার সংগীত পরিবেশনের আয়োজন করতেন। একবার ভারতের প্রথম রাষ্ট্রপতি রাজেন্দ্র প্রসাদ তার পুরী সফরের সময় পণ্ডিত সুনন্দা পট্টনায়কের গান শুনেছিলেন। তার সেই গান শুনে রাষ্ট্রপতি এতটাই মুগ্ধ হন যে, পণ্ডিত বিনায়ক রাও পট্টবর্ধনের তত্ত্বাবধানে পুনে শহরে তার প্রশিক্ষণ দানের আয়োজন করার জন্যে স্কলারশিপের ব্যবস্থা করেছিলেন। ১৯৫৬ খ্রিষ্টাব্দে পুনে স্কুল থেকে তিনি সংগীতে স্নাতকোত্তর ডিগ্রি অর্জন করেন। তিনি ১৯৫৭ খ্রিষ্টাব্দের সেপ্টেম্বরে কলকাতায় অনুষ্ঠিত অল ইন্ডিয়া সদরং সংগীত সম্মলনে উচ্চাঙ্গ সংগীত পরিবেশন করেন, যেখানে তিনি ১৩টা স্বর্ণ মুদ্রা লাভ করেছিলেন। তারপর থেকে সারা ভারতের অনেক জায়গায় তার উচচাঙ্গ সংগীতের আসর বসিয়েছিলেন এবং যেগুলো আন্তর্জাতিকভাবে পরিচিতি লাভ করেছিল। তিনি তার তারানার জন্য সুপরিচিত, যা তিনি উচ্চ গতিতে গেয়ে থাকেন এবং তিনি ওডিশি সংগীতের সেরা সমসাময়িক ব্যাখ্যাকারী হিসাবে বিবেচিত হয়েছেন। তিনি ১৯৮৩ খ্রিষ্টাব্দ থেকে ভারতের 'সাংস্কৃতিক রাজধানী' কলকাতায় বসবাস করছেন।[৬]

পুরস্কারসমূহ[সম্পাদনা]

১৯৭০ এবং ১৯৭১ খ্রিষ্টাব্দে পণ্ডিত সুনন্দা পট্টনায়ক ওডিশা সংগীত নাটক আকাদেমি পুরস্কার লাভ করেছিলেন। তিনি ২০০৯ খ্রিষ্টাব্দে ইন্ডিয়ান লাইফটাইম অ্যাচিভমেন্ট অ্যাওয়ার্ড এবং ২০১২ খ্রিষ্টাব্দে ওডিশা সোসাইটি অফ আমেরিকাজ (ওএসএ) থেকে লাইফটাইম অ্যাচিভমেন্ট অ্যাওয়ার্ড নিয়ে পুরস্কৃত হয়েছিলেন। তিনি ২০১২ খ্রিষ্টাব্দের সংগীত নাটক আকাদেমি পুরস্কার (টেগোর আকাদেমি পুরস্কার) প্রাপক। ১৯৭৫ খ্রিষ্টাব্দে অখিল ভারতীয় গন্ধর্ব মহাবিদ্যালয়া মণ্ডল তাকে সাম্মানিক ডক্টর অফ মিউজিক ডিগ্রিতে ভূষিত করে এবং ১৯৯৯ খ্রিষ্টাব্দে উৎকল বিশ্ববিদ্যালয় তাকে সাম্মানিক ডক্টর অফ লিটারেচার ডিগ্রি প্রদান করেছে।

জনপ্রিয় সংস্কৃতিতে পণ্ডিত সুনন্দা[সম্পাদনা]

নীলমাধবা হল পণ্ডিত সুনন্দার জীবন নিয়ে তৈরি একটা জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার-বিজয়ী তথ্য-চলচ্চিত্র। এই চলচ্চিত্র শ্রী দিলীপ পট্টনায়ক দ্বারা পরিচালিত এবং এটা প্রযোজনা করেছিল চলচ্চিত্র বিভাগ। এটা ২০১০ খ্রিষ্টাব্দে ভারতে ৫৮তম জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার ঘোষণায় "শ্রেষ্ঠ জীবনীমূলক তথ্যচিত্র" জয় করেছিল।[৭]

গ্রন্থপঞ্জী[সম্পাদনা]

  • এ ডিস্কোগ্রাফি অফ হিন্দুস্তানি অ্যান্ড কর্ণাটিক মিউজিক

মৃত্যু[সম্পাদনা]

সুনন্দা পট্টনায়ক ২০২০ সালের ১৯ জানুয়ারি ৮৫ বছর বয়সে প্রয়াত হন।[৮]

তথ্যসূত্র[সম্পাদনা]

  1. Suresh Chandra Dey (১৯৯০)। The Quest for Music Divine। APH Publishing। পৃষ্ঠা 13–। আইএসবিএন 978-81-7024-301-4 
  2. Michael S. Kinnear (১ জানুয়ারি ১৯৮৫)। A Discography of Hindustani and Karnatic Music। Greenwood Press। আইএসবিএন 978-0-313-24479-7 
  3. ভারতীয় সঙ্গীত উৎসব শেষ হয় - একটি বিঘ্নের পরে, 76 বছর বয়সী সুন্না পটনাইক দর্শকদের সাথে অভিনয় করেন। দ্য টেলিগ্রাফ (কলকাতা) , 30 মে ২011।
  4. Nagendra Kr Singh (২০০১)। Encyclopaedia of women biography: India, Pakistan, Bangladesh। A.P.H. Pub. Corp.। আইএসবিএন 978-81-7648-264-6 
  5. এনএমই: হিন্দুস্তানী গানের গ্র্যান্ড ডেমস - সুন্নাত পটনাইক[স্থায়ীভাবে অকার্যকর সংযোগ]
  6. "Married to music"The Telegraph। India। ১৭ আগস্ট ২০১২। সংগ্রহের তারিখ ১৬ মে ২০১৮ 
  7. "The National Convention 2011 Spic Macay: Nilamadhaba – Award winning documentary on life of Sunanda Patnaik to be screened"। ২৫ অক্টোবর ২০১১ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ৩০ মার্চ ২০১৯ 
  8. "চলে গেলেন শাস্ত্রীয় সঙ্গীতশিল্পী সুনন্দা পট্টনায়ক"কলকাতা টিভি। ১৯ জানুয়ারি ২০২০। ২২ মে ২০২০ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ১৯ জানুয়ারি ২০২০