সিনক্লেয়ার লুইস
সিনক্লেয়ার লুইস | |
---|---|
জন্ম | হ্যারি সিনক্লেয়ার লুইস ৭ ফেব্রুয়ারি ১৮৮৫ সাউক সেন্টার, মিনেসোটা |
মৃত্যু | জানুয়ারি ১০, ১৯৫১ রোম, ইতালি, ইতালি | (বয়স ৬৫)
পেশা | ঔপন্যাসিক, নাট্যকার, ছোট গল্পলেখক |
জাতীয়তা | আমেরিকান |
উল্লেখযোগ্য পুরস্কার | সাহিত্যে নোবেল পুরস্কার ১৯৩০ |
হ্যারি সিনক্লেয়ার লুইস (ইংরেজি: Harry Sinclair Lewis; জন্ম: ৭ ফেব্রুয়ারি, ১৮৮৫ - মৃত্যু: ১০ জানুয়ারি, ১৯৫১) মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে জন্মগ্রহণকারী বিখ্যাত ঔপন্যাসিক, ছোট গল্পকার এবং নাট্য রচয়িতা। তার প্রাকৃতিক লিখনশৈলী ও বিষয় নির্বাচনে স্বচ্ছতা পরবর্তীকালের লেখকদেরকে ব্যাপকভাবে প্রভাবান্বিত করেছিল। ১৯৩০ সালে তিনি সাহিত্যে নোবেল পুরস্কার লাভ করেন। তিনিই ছিলেন প্রথম মার্কিন লেখক যিনি এ পুরস্কারের লাভের সৌভাগ্য অর্জন করেন। তিনি সনাতনী ধাঁচের রোমান্টিকতায় ছেদ ঘটিয়েছেন। তার রচনায় আমেরিকার মধ্যবিত্ত সমাজের উদ্দেশ্যহীনতা ও একঘেয়েমির কথা বিবৃত হয়েছে। লেখাগুলোর অন্তঃর্দৃষ্টিতে আমেরিকান সমাজের সমালোচনা ও বুর্জোয়ানীতির কথা প্রবলভাবে তুলে ধরা হয়েছে।[১] এরফলে আধুনিককালের মার্কিনী কর্মজীবি নারীদের শক্ত মানসিকতা ও চারিত্রিক বৈশিষ্ট্য ব্যাপকভাবে ফুটে উঠেছে।
প্রারম্ভিক জীবন
[সম্পাদনা]মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের মিনেসোটা অঙ্গরাজ্যের সাউক সেন্টার নামীয় গ্রামে জন্ম গ্রহণ করেন লুইস। শৈশবেই তিনি বই-পুস্তক পাঠ করতে ভালবাসতেন ও ব্যক্তিগত দিনপঞ্জিকা ব্যবহার করতেন। ফ্রেদ ও ক্লদ নামীয় তার দুই ভাই ছিল। বাবা এডউইন জে. লুইস পেশায় ছিলেন চিকিৎসক। ফলে তিনি তার তৃতীয় সন্তান লুইসের দিকে তেমন নজর দেবার মতো সময় পেতেন না। মা এমা কারমন লুইস ১৮৯১ সালে মৃত্যুবরণ করেন। ফলে পরের বছর বাবা পুনরায় ইসাবেল ওয়ার্নার নামীয় এক রমণীর পাণিগ্রহণ করেন। ইসাবেল ওয়ার্নারের সহযোগিতায় লুইস বড় হতে থাকেন। একাকী শৈশবকাল অতিক্রমণের সময়কালে লুইসের গড়ন ছিল বেশ লম্বা ও হালকা-পাতলা যা বন্ধু-বান্ধব এবং স্থানীয় মেয়েদের তেমন নজর আকর্ষণ করতে পারেনি। ১৩ বছর বয়সে বাড়ী থেকে বের হয়ে গেলেও ফিরে আসতে বাধ্য হন। স্পেন-আমেরিকার যুদ্ধে তিনি ড্রামার বয়ের দায়িত্ব পালন করতে চেয়েছিলেন।[২]
সিনক্লেয়ার লু্ইস দুইবার বিয়ে করেন। কিন্তু উভয় বিয়েই বিচ্ছেদের আকার ধারণ করে। দ্বিতীয় বিয়েটি ছিল রাজনৈতিক লেখক ডরোথি থম্পসনের সাথে। তখন তিনি মাত্রারিক্ত মদ্যপানে অভ্যস্ত হয়ে পড়েন।
কর্মজীবন
[সম্পাদনা]লুইস ১৯০৭ সালে ইয়েল বিশ্ববিদ্যালয় থেকে স্নাতক ডিগ্রী অর্জন করেন। এরপর তিনি ১৯০৭ থেকে ১৯১৬ সাল পর্যন্ত অনেকগুলো সংবাদপত্রের প্রতিবেদক ছিলেন ও দ্য স্যাটারডে ইভনিং পোস্ট এবং কসমোপলিটন সাময়িকীর সাহিত্য বিষয়ক সম্পাদকের দায়িত্ব পালন করেন। তার প্রথম উপন্যাস আওয়ার মিস্টার রেন ১৯১৪ সালে প্রকাশিত হয়। এ রচনার মাধ্যমে তিনি ব্যাপকভাবে পাঠকের মনোযোগ আকর্ষণ ও নজর কাড়তে সক্ষম হন। পাশাপাশি বেশ সমালোচনার মুখোমুখি পড়েন তিনি। ১৯২০ সালে প্রকাশিত মেইন স্ট্রিট গ্রন্থে মধ্যবিত্ত সমাজের জীবনধারায় উদ্দেশ্যহীনতা, আবেগিক হতাশা, আধ্যাত্মিক ও বুদ্ধিবৃত্তি চর্চার অভাবের কথা তুলে ধরেন। এটি শুধুমাত্র উপন্যাসই ছিল না; পরবর্তীতে আমেরিকার বিভিন্ন অঙ্গরাজ্যের পাঠ্য-পুস্তকেও অন্তর্ভুক্ত হয়েছিল। এছাড়াও, ব্যাবিট (১৯২২), অ্যারোজস্মিথ (১৯২৫), এলমার গ্যান্ট্রি (১৯২৭), ডডসওর্থ (১৯২৯) তার অমূল্য রচনা হিসেবে স্বীকৃত।
সম্মাননা
[সম্পাদনা]১৯২৬ সালে অ্যারোজস্মিথ নামীয় গ্রন্থের জন্য পুলিৎজার পুরস্কারে ভূষিত হলেও তিনি তা প্রত্যাখ্যান করেন। ১৯৩০ সালে লুইস সিনক্লেয়ার সাহিত্যে নোবেল পুরস্কার লাভ করেন। সুইডিশ একাডেমীতে স্মারক বক্তৃতায় তিনি ব্যাবিট উপন্যাসের কথা বিশেষভাবে তুলে ধরেন। তিনি থিওডোর ড্রেইজার, উইলা ক্যাথার, আর্নেস্ট হেমিংওয়েসহ অন্যান্য লেখকদেরকে স্মরণ করেন। পাশাপাশি বলেন, 'আমেরিকায় শুধুমাত্র পাঠক নয়, আমরাও সাহিত্যচর্চা করতে ভয় পাই যা প্রত্যেক আমেরিকানের জন্যে গৌরব বয়ে আনে না। আমাদের ভাগ্যের পার্শ্বে গৌরবেরও ত্রুটি রয়েছে। আজ আমেরিকা বিশ্বের সর্বাপেক্ষা বিতর্কিত, সর্বাপেক্ষা হতাশাগ্রস্ত জাতি হিসেবে চিহ্নিত হয়ে আছে।' এছাড়াও তিনি আমেরিকার সাহিত্য প্রতিষ্ঠারও সমালোচনা করার জন্যে জন্যে আমন্ত্রণ জানান। তিনি আরও বলেন, 'আমাদের আমেরিকার অধ্যাপকগণ এ ধরনের সাহিত্যকে পছন্দ করেন, নিষ্কলুষ, শীতল, বিশুদ্ধ ও অত্যন্ত নির্জীব রাখতে ভালবাসেন।'[৩]
১৯৩০ সালের পর তার সাহিত্যিক অবদান বৈশ্বিকভাবে স্বীকৃতি পেতে থাকে। তারপরও তিনি পুরস্কারের লোভ থেকে দূরে সরে থাকতেন। সাহিত্য চর্চায় অসামান্য অবদান রাখায় মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের ডাকবিভাগ থেকে প্রকাশিত সেরা আমেরিকান ধারাবাহিক শিরোনামে ডাকটিকেটে অন্তর্ভুক্ত হয়ে তিনি সম্মানিত হন।
দেহাবসান
[সম্পাদনা]জীবনের শেষ দিনগুলোয় প্রায়শঃই তিনি দেশের বাইরে কাটাতেন। ১০ জানুয়ারি, ১৯৫১ সালে ইতালির রোম নগরীতে তার মৃত্যু হয়। মৃত্যু পরবর্তীকালে ১৯৫২ সালে ফ্রম মেইন স্ট্রীট টু স্টকহোম শিরোনামে পত্রাবলী আকারে গ্রন্থ প্রকাশিত হয়।
তথ্যসূত্র
[সম্পাদনা]- ↑ "Sinclair Lewis at Biography.com"। ৪ ফেব্রুয়ারি ২০১৩ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ৭ ফেব্রুয়ারি ২০১৩।
- ↑ Schorer, 3-22
- ↑ John Bartlett, Familiar Quotations, 15th edition, (Boston: Little, Brown and Company, 1980), 791
আরও দেখুন
[সম্পাদনা]- আন্দ্রে জিদ
- টি এস এলিয়ট
- অঁরি বর্গসাঁ
- গ্যাব্রিয়েলা মিস্ত্রাল
- নোবেল পুরস্কার
- সাহিত্যে নোবেল পুরস্কার
- নোবেল পুরস্কারপ্রাপ্তদের তালিকা
পাদটীকা
[সম্পাদনা]- Mark Schorer, Sinclair Lewis: An American Life (McGraw-Hill, 1961)
- Richard R. Lingeman, Sinclair Lewis: Rebel From Main Street (Borealis Books, 2002)
আরো পড়ুন
[সম্পাদনা]- Lingeman, Richard ed. Sinclair Lewis: Main Street & Babbitt (Library of America, 1992) আইএসবিএন ৯৭৮-০-৯৪০৪৫০-৬১-৫
- Lingeman, Richard ed. Sinclair Lewis: Arrowsmith, Elmer Gantry, Dodsworth (Library of America, 2002) আইএসবিএন ৯৭৮-১-৯৩১০৮২-০৮-২
- D. J. Dooley, The Art of Sinclair Lewis, 1967.
- Martin Light, The Quixotic Vision of Sinclair Lewis, 1975.
- Modern Fiction Studies, vol. 31.3, Autumn 1985, special issues on Sinclair Lewis.
- Sinclair Lewis at 100: Papers Presented at a Centennial Conference, 1985.
- Martin Bucco, Main Street: The Revolt of Carol Kennicott, 1993.
- James M. Hutchisson, The Rise of Sinclair Lewis, 1920–1930, 1996.
- Glen A. Love, Babbitt: An American Life
- Stephen R. Pastore, Sinclair Lewis: A Descriptive Bibliography, 1997.
- Stephen R. Pastore, Sinclair Lewis: A Descriptive Bibliography, 2d ed. 2009.
বহিঃসংযোগ
[সম্পাদনা]- Online collection of works
- Babbitt ওয়েব্যাক মেশিনে আর্কাইভকৃত ১৭ জানুয়ারি ২০১৩ তারিখে from American Studies at the University of Virginia.
- গুটেনবের্গ প্রকল্পে Sinclair Lewis-এর সাহিত্যকর্ম ও রচনাবলী (ইংরেজি)
- Works by Sinclair Lewis at Project Gutenberg Australia
- ইন্টারনেট মুভি ডেটাবেজে Sinclair Lewis (ইংরেজি)
- ইন্টারনেট ব্রডওয়ে ডেটাবেজে Sinclair Lewis (ইংরেজি)
- his vigorous and graphic art of description and his ability to create, with wit and humour, new types of characters.
- Sinclair Lewis Society
- Autobiography ওয়েব্যাক মেশিনে আর্কাইভকৃত ১৮ মে ২০১৩ তারিখে
- NBC Biographies in Sound #43 They Knew Sinclair Lewis; Bennett Cerf and others discuss contradictions in Sinclair Lewis's Personality
- "Sinclair Lewis: The Man From Main Street" WBGU-PBS documentary
- Hutchisson, The Rise of Sinclair Lewis, 1920-1930, Penn State Press, 2001 আইএসবিএন ০-২৭১-০২১২৩-৩
- ফাইন্ড এ গ্রেইভে সিনক্লেয়ার লুইস (ইংরেজি)
- Booknotes interview with Richard Lingeman on Sinclair Lewis: Rebel From Mainstreet, March 10, 2002.
- Guide to the Material pertaining to biography of Sinclair Lewis, 1952-1962 at The Bancroft Library
টেমপ্লেট:PulitzerPrize Fiction 1926–1950 টেমপ্লেট:Sinclair Lewis
- পুঁজিবাদ বিরোধী
- ওয়েলশ বংশোদ্ভূত মার্কিন ব্যক্তি
- ১৮৮৫-এ জন্ম
- ১৯৫১-এ মৃত্যু
- ২০শ শতাব্দীর মার্কিন নাট্যকার
- ২০শ শতাব্দীর মার্কিন পুরুষ লেখক
- ২০শ শতাব্দীর মার্কিন ঔপন্যাসিক
- মার্কিন নাস্তিক
- ইতালিতে মার্কিন প্রবাসী
- মার্কিন পুরুষ ঔপন্যাসিক
- মার্কিন পুরুষ ছোটগল্পকার
- মার্কিন নোবেল বিজয়ী
- মার্কিন ছোট গল্পকার
- নোবেল বিজয়ী সাহিত্যিক
- ইয়েল বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাক্তন শিক্ষার্থী